নিকোলাস পুরানের খেলার ভাষাই একটি—ছক্কা। ম্যাচ, প্রতিপক্ষ, বোলার—ওসব তিনি দেখেন না! উইকেটে এসেই তিনি শুধু ছক্কার ঝড় তোলেন। আজ গুজরাট টাইটানসের বিপক্ষে ছক্কা মেরেছেন ৭টি। করেছেন ২৩ বলে ফিফটি। এই ফিফটিতে গুজরাটের ১৮১ রানের লক্ষ্য লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টস তাড়া করেছে ৬ উইকেট ও ৩ বল হাতে রেখে। টুর্নামেন্টে এটি লক্ষ্ণৌর চতুর্থ জয়।
এবারের টুর্নামেন্টে পুরানের ছক্কা এখন ৩১টি। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ছক্কা মিচেল মার্শের—১৫টি। পুরানের টুর্নামেন্ট শুরু হয় ২৪ বলের ফিফটিতে। দিল্লির বিপক্ষে সেই ম্যাচে পুরান করেন ৩০ বলে ৭৫ রান।
দ্বিতীয় ম্যাচে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিপক্ষে পুরান ফিফটি করেন ১৮ বলে। সেই ইনিংসে ২৫ বলের মধ্যে ১২টিতেই চার-ছক্কা মারেন এই ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ক্রিকেটার। পরের দুই ম্যাচে ফিফটি না পাওয়া পুরান কলকাতার বিপক্ষে আইপিএলে ক্যারিয়ার-সেরা ৮৭ রানের ইনিংস খেলেন। ২১ বলে ফিফটি করেন। আজ করেছেন ৩৪ বলে ৬১ রান।
লক্ষ্ণৌর একানা স্টেডিয়ামে এদিন পুরানের সঙ্গে ঝড় তোলেন ওপেনার এইডেন মার্করামও। ৩১ বলে ৫৮ রান করেন তিনি। এমন দুটি ইনিংস ও আয়ুশ বাদোনির ২০ বলে ২৮ রানে সহজে জিতেছে লক্ষ্ণৌ।
লক্ষ্ণৌর বোলারদের কৃতিত্বটাও অনেক বেশি। টসে হেরে আগে ব্যাট করা গুজরাটের দুই ওপেনার সাই সুদর্শন ও শুবমান গিল প্রথম ১২ ওভারে কোনো উইকেট না হারিয়েই তোলেন ১২০ রান। ৩৮ বলে ৬০ রান করেন গিল। সুদর্শন করেন ৩৭ বলে ৬০ রান।
গুজরাটের দুই ওপেনার বিদায়ের পরই ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেন লক্ষ্ণৌর বোলাররা। শেষ ৮ ওভারে গুজরাট তুলতে পারে মাত্র ৬০ রান। লক্ষ্ণৌর হয়ে দুটি করে উইকেট নিয়েছেন রবি বিষ্ণয় ও শার্দূল ঠাকুর।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন
চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।
লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।
চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।
লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।
প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।
লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’
তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?