শ্রীমঙ্গলে ফাগুয়া উৎসবে উঠে এল চা জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রা
Published: 12th, April 2025 GMT
চা–বাগানের শ্রমিক কলোনির সামনে ফুটবল মাঠের মাঝখানে নানা রঙের কাপড় দিয়ে তৈরি করা হয়েছে দর্শকসারি। মাঠের একপাশে উঁচু মঞ্চে উঠলেন অতিথিরা। তাঁদের বক্তব্যের পর মঞ্চ থেকে শুকনো রং ছিটিয়ে শুরু হয় ফাগুয়া উৎসব। এরপর একে একে মঞ্চে ওঠেন চা জনগোষ্ঠী শিল্পীরা। নানা গানে ও নৃত্যে তুলে ধরেন তাঁদের জীবনকাহিনি।
শনিবার বিকেলে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের ফুলছড়া চা–বাগানের মাঠে এমন দৃশ্য দেখা যায়। জেলা প্রশাসন ও ফাগুয়া উৎসব উদ্যাপন পরিষদের আয়োজনে এবং সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় আয়োজিত উৎসবে ভার্চ্যুয়াল মাধ্যমে যুক্ত হয়ে বক্তব্য দেন অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কৃতি উপদেষ্টা ও নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইসলাম উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম সদস্যসচিব ও ফাগুয়া উৎসব উদ্যাপন পরিষদের আহ্বায়ক প্রীতম দাস। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন জেলা প্রশাসক মো.
চা জনগোষ্ঠীর শিল্পীরা গুরুবন্দনা (ভোজপুরি), কুমুর দ্বৈত (বাড়াইক), হালি গীত (ভোজপুরি), পত্র সওরা (উড়িষ্যা), ডাল ও কাঠি নৃত্য (তেলেও), চড়াইয়া নৃত্য (উড়িষ্যা), কমেডি (ভোজপুরি), হাঁড়ি নৃত্য (উড়িষ্যা), ঝুমুর (মাহাতো কুর্মী), বিরহা, হোলি গীত (ভোজপুরি), হোড়কা বাদ্যযন্ত্রের সাহায্যে, হোলি গীত (গড় সম্প্রদায়) ইত্যাদি পরিবেশন করে।
উৎসব দেখতে আসা ফাল্গুনী রায় বলেন, ‘এখানে এসে অনেক ভালো লাগল। চা জনগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক পরিবেশনা দেখলাম। কত রঙিন এই উৎসব। এসে অনেক আনন্দ পেয়েছি।’ চা জনগোষ্ঠী আদিবাসী ফোরামের সভাপতি পরিমল সিং বাড়াইক বলেন, ‘ফাগুয়া আমাদের দ্বিতীয় বৃহত্তম উৎসব। দুর্গাপূজার পর এটিই চা–বাগানের বড় উৎসব। আমরা চা–শ্রমিকেরা এই উৎসবে অনেক আনন্দ করি।’
পরিমল সিং বলেন, চা জনগোষ্ঠীর মধ্যে নানা ভাষাভাষী মানুষ আছে। আলাদা আলাদা সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডল আছে। ধীরে ধীরে চা জনগোষ্ঠীর অনেক ভাষা ও সংস্কৃতি হারিয়ে যাচ্ছে। সরকার এসব সংস্কৃতি ধরে রাখতে উদ্যোগী না হলে অচিরেই হারিয়ে যাবে। তাঁরা চা জনগোষ্ঠীর জন্য সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্স গড়ে তোলার দাবি জানান।
ফাগুয়া উৎসব উদ্যাপন পরিষদের প্রীতম দাশ প্রথম আলোকে বলেন, মৌলভীবাজারে বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি চা–বাগান আছে। এসব বাগানে সবচেয়ে বেশি চা জনগোষ্ঠীর বসবাস। তাঁদের নিজস্ব কৃষ্টি-সংস্কৃতি আছে। চা–শ্রমিকদের সংস্কৃতি ধরে রাখতে তাঁরা নানা সময়ে অনুষ্ঠান করে থাকেন। ফাগুয়া উৎসব বড় হওয়ায় বড় করে অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছেন। অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে চা জনগোষ্ঠীর শিল্পীরা তাঁদের নিজস্ব সংস্কৃতি তুলে ধরেছেন।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
হু হু করে বাড়ছে অপরিকল্পিত ভবন, মিলছে না ময়লা ফেলার জায়গা
ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম বলেন, দেশের পুরোনো জেলার মধ্যে ময়মনসিংহ অন্যতম। এখানকার ইতিহাস ও ঐতিহ্য তাই বহন করে। কিন্তু এ নগরীর রাস্তাগুলো খুব সরু। পাশাপাশি দুটি গাড়ি চলতে পারে না। হু হু করে গড়ে ওঠা ভবনগুলোও অপরিকল্পিত। নেই ময়লা ফেলার ভাগাড়। ডাম্পিং স্টেশনের জন্য জায়গা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
শুক্রবার বিকেল ৫টার দিকে প্রেস ক্লাবের তৃতীয় ও চতুর্থ তলার হলরুমে প্রথমবারের মতো আয়োজিত ফল উৎসবে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জেলা প্রশাসক। তিনি বলেন, এসব নিয়ে সবাইকে ভাবতে হবে। এগিয়ে আসতে হবে রাজনীতিবিদদের। আমাদের মধ্যে বিভক্তি ও ভিন্ন মত থাকবে। তবে দেশের প্রশ্নে উন্নয়নের প্রশ্নে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। এতে সাংবাদিকদের সহযোগিতা অপরিহার্য।
মৌসুমি ফল নিয়ে ফল উৎসব করেছে ময়মনসিংহ প্রেস ক্লাব। এর মধ্যে রয়েছে আম, কাঁঠাল, লিচু, লটকন, বরই, জাম, আনারসসহ বাহারি ফল। এ সময় মৌসুমি ফলের ঘ্রাণে ক্লাব আঙিনায় এক মোহনীয় পরিবেশ সৃষ্টি হয়।
ফল উৎসবে সভাপতিত্ব করেন প্রেস ক্লাবের সহসভাপতি নওয়াব আলী। সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রেস ক্লাবের সহসভাপতি অধ্যাপক আবুল কাশেম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) গোলাম মাসুম প্রধান, সিভিল সার্জন ডা. সাইফুল ইসলাম, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব রোকনুজ্জামান সরকার রোকন, জেলা জামায়াতের আমির আব্দুল করিম, মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাহাবুবুর রহমান প্রমুখ।