চৈত্র সংক্রান্তি বা চৈত্র মাসের শেষদিন আজ। বাংলা মাসের সর্বশেষ দিনটিকে সংক্রান্তির দিন বলা হয়। এছাড়াও আগামীকাল সোমবার পহেলা বৈশাখ, নতুন বাংলা বর্ষ ১৪৩২।
আবহমান বাংলার চিরায়িত বিভিন্ন ঐতিহ্যকে ধারণ করে আসছে এই চৈত্র সংক্রান্তি। বছরের শেষ দিন হিসেবে পুরাতনকে বিদায় ও নতুন বর্ষকে বরণ করার জন্য প্রতিবছর চৈত্র সংক্রান্তিকে ঘিরে থাকে বিভিন্ন অনুষ্ঠান-উৎসবের আয়োজন। মনে করা হয়, চৈত্র সংক্রান্তিকে অনুসরণ করেই পহেলা বৈশাখ উদযাপনের এত আয়োজন। তাই চৈত্র সংক্রান্তি হচ্ছে বাঙালির আরেক বড় অসাম্প্রদায়িক উৎসব।
চৈত্র সংক্রান্তির দিন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা শাস্ত্র মেনে স্নান, দান, ব্রত, উপবাস করে থাকেন। নিজ নিজ বিশ্বাস অনুযায়ী অন্য ধর্মাবলম্বীরাও নানা আচার-অনুষ্ঠান পালন করেন।
এছাড়াও চৈত্র সংক্রান্তি উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন গ্রামগঞ্জে নানা ধরনের মেলা ও উৎসব হয়। হালখাতার জন্য ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান সাজানো, লাঠিখেলা, গান, সংযাত্রা, রায়বেশে নৃত্য, শোভাযাত্রাসহ নানা অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে উদযাপিত হয় চৈত্র সংক্রান্তি।
চৈত্র সংক্রান্তির প্রধান উৎসব চড়ক। চড়ক গাজন উৎসবের একটি প্রধান অঙ্গ। এ উপলক্ষে গ্রামের শিবতলা থেকে শোভাযাত্রা শুরু করে অন্য গ্রামের শিবতলায় নিয়ে যাওয়া হয়। একজন শিব ও একজন গৌরী সেজে নৃত্য করে এবং অন্য ভক্তরা নন্দি, ভৃঙ্গী, ভূত-প্রেত, দৈত্য-দানব সেজে শিব-গৌরীর সঙ্গে নেচে চলে।
চৈত্র সংক্রান্তির মাধ্যমে পুরনো বছরকে বিদায় জানিয়ে সোমবার সফলতা ও সমৃদ্ধির প্রত্যাশায় দেখা দেবে নতুন ভোর। পুরনো বছরের সব জরাজীর্ণতা মুছে ফেলে বাঙালি মিলিত হবে পহেলা বৈশাখের সর্বজনীন উৎসবে। জরাজীর্ণতা, ক্লেশ ও বেদনার সব কিছুকে বিদায় জানানোর পাশাপাশি সব অন্ধকারকে বিদায় জানিয়ে আলোর পথে এগিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার থাকবে গোটা জাতির।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ন উৎসব
এছাড়াও পড়ুন:
শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে সিঙ্গাইরের ৭৭ মণ্ডপে অনুদান বিতরণ
মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর উপজেলার ৭৭টি পূজামণ্ডপে ২০ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। আজ বুধবার দুপুরে সিঙ্গাইর পৌর এলাকার আঙ্গারিয়ায় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সংশ্লিষ্টদের মধ্যে এ সহায়তা তুলে দেন বাংলাদেশে বেলারুশের অনারারি কনসাল ও লেদার ইন্ডাস্ট্রিজ অব বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অনিরুদ্ধ কুমার রায়।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ২৫ বছর ধরে মা শ্রীমতী গীতা রায়ের নামে দুর্গোৎসবে আর্থিক সহায়তা দিয়ে আসছেন অনিরুদ্ধ কুমার রায়।
সহায়তা পাওয়ার পর তারেবপুর ইউনিয়নের রাজেন্দ্রপুর শ্রীশ্রী সর্বজনীন দুর্গামন্দিরের সভাপতি মহানন্দ কীর্তনীয়া বলেন, পূজায় মণ্ডপে প্রতিমা তৈরিসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র কেনাকাটায় বেশ খরচ হয়। এই সহায়তা পূজায় কাজে আসবে।
সিঙ্গাইর পৌর এলাকার আঙ্গারিয়া এলাকায় বাসিন্দা ও জয়মণ্টপ ইউনিয়নের বানিয়ারা পঞ্চায়েত দুর্গামন্দিরের সাধারণ সম্পাদক চন্দ্র সরকার (৬০) বলেন, ‘আর ১০ দিন পরই দুর্গোৎসব। মণ্ডপে প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। তবে এখনো মা দুর্গাসহ অন্যান্য প্রতিমা সাজানো হয়নি। রংতুলির কাজ হয়নি। এই আর্থিক সহায়তা মা দুর্গার গয়না ও শাড়ি কিনতে সহায়তা করবে।’
অনিরুদ্ধ কুমার রায় বলেন, মা দুর্গা যেমন মহাশক্তির প্রতীক, সব অশুভশক্তি ও শত্রুর হাত থেকে রক্ষা করার প্রতীক; তেমনি পৃথিবীর প্রত্যেক মা বুক দিয়ে তাঁর সন্তানদের আগলে রাখেন। সন্তানেরও কর্তব্য মাকে ভক্তি, শ্রদ্ধা ও সেবা করা। সেই সঙ্গে মায়ের অপূরণীয় ঋণের কিছুটা হলেও পরিশোধের চেষ্টা করা। মায়ের প্রতি ভক্তি ও শ্রদ্ধার জায়গা থেকেই তিনি এই সহায়তা দিয়ে আসছেন।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব রথীন্দ্রনাথ দত্তের সঞ্চালনায় এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমদ চৌধুরী, বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক মানোয়ার হোসেন মোল্লা। এ ছাড়া বক্তব্য দেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ আলী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুল হাসান, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সত্যেনকান্ত পণ্ডিত ভজন, সিঙ্গাইর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জে ও এম তৌফিক আজম, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান, উপজেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ইতি রানী সাহা প্রমুখ।