সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে তালা ভেঙে হলে প্রবেশের ঘটনাকে স্পষ্টত বিশ্ববিদ্যালয় তথা দেশের আইনের লঙ্ঘন বলে আখ্যায়িত করেছে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) কর্তৃপক্ষ। আজ মঙ্গলবার রাতে কুয়েট কর্তৃপক্ষের পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হয়। 

কুয়েটের জনসংযোগ কর্মকর্তা শাহেদুজ্জামান শেখ এর পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কুয়েটের ১০১তম (জরুরি) সিন্ডিকেট সভায় গত ১৮ ও ১৯ ফেব্রুয়ারি সংঘটিত দুঃখজনক ঘটনায় শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৭ শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন ধরণের বিভ্রান্তিকর নামের তালিকা ও সংখ্যা দেখা যাচ্ছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে সকলকে জানানো যাচ্ছে যে, অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের নামের তালিকা কোথাও প্রকাশ করা হয়নি। তাই এসব তালিকা দেখে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য সব শিক্ষার্থীকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হচ্ছে। পরবর্তী সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুসারে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটি এই তদন্ত প্রতিবেদন পূর্ণাঙ্গ পর্যালোচনার মাধ্যমে শাস্তিবিষয়ক সিদ্ধান্ত নেবে।

সিন্ডিকেট সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী ২ মে হল খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও গুটিকয়েক শিক্ষার্থী তালা ভেঙে হলে প্রবেশ করেছে, যা স্পষ্টত বিশ্ববিদ্যালয় তথা দেশের আইনের লঙ্ঘন। ওই শিক্ষার্থীদের দেশের প্রচলিত আইনের প্রতি সম্মান রেখে সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্তের প্রতি আস্থা রাখার জন্য বলা হলো।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলা যাচ্ছে যে, তারা যেন কোনো ধরণের অপপ্রচারে প্রভাবিত না হয় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন, বিধি ও শৃঙ্খলা যথাযথভাবে অনুসরণ করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সুষ্ঠু শিক্ষার পরিবেশ বজায় রাখতে সকলের সহযোগিতা কাম্য।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আইন র

এছাড়াও পড়ুন:

এই সরকারের কি গণভোট দেওয়ার এখতিয়ার আছে, প্রশ্ন ফরহাদ মজহারের

বর্তমান সংবিধান মেনে শপথ নেওয়া অন্তর্বর্তী সরকারের গণভোট দেওয়ার এখতিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কবি ও চিন্তক ফরহাদ মজহার, যিনি জুলাই অভ্যুত্থানের পর এই সংবিধান বাতিল করার মত জানিয়েছিলেন।

সংবিধান সংস্কারে গণভোটের দিকে সরকারের এগিয়ে যাওয়ার মধ্যে আজ সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় এই প্রশ্ন তোলেন ফরহাদ মজহার। ‘নতুন বাংলাদেশ গঠনের চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক এই আলোচনা সভার আয়োজন করে ‘সেন্টার ফর ডেমোক্রেসি অ্যান্ড পিস স্টাডিজ’ নামের একটি প্ল্যাটফর্ম।

আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দিয়ে ফরহাদ মজহার বলেন, ‘গণভোট কে দেবে? এই সরকারের কি এখতিয়ার আছে গণভোট দেওয়ার? তিনি (প্রধান উপদেষ্টা) তো বলছেন, এই সংবিধান রক্ষা করব। কিসের গণভোট?’

পুরোনো সংবিধান রেখে নতুন বাংলাদেশ গড়া সম্ভব নয় মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘আপনি সংবিধান রাখবেন, আবার সংবিধানবিরোধী ভূমিকাও নেবেন, দুটো তো হতে পারে না।’

জুলাই অভ্যুত্থানের পর যখন অন্তর্বর্তী সরকার বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের কাছ থেকে শপথ নিয়েছিল, তখনই তা নিয়ে আপত্তি তুলেছিলেন ফরহাদ মজহার; যদিও উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হিসেবে তাঁর স্ত্রী ফরিদা আখতারও অন্তর্বর্তী সরকারে যোগ দেন।

ফরহাদ মজহার মনে করেন, গত বছর ৮ আগস্ট দেশে একটি ‘সাংবিধানিক প্রতিবিপ্লব’ হয়েছিল। বর্তমানে যাদের অন্তর্বর্তী সরকার নামে অভিহিত করা হচ্ছে, তারা শেখ হাসিনা সরকারের তৈরি করা সংবিধানের অধীনে শপথ নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের জায়গা হারিয়েছে। এখন একমাত্র গণপরিষদ গঠন করে গণপরিষদের সম্মতিতে গণভোট আয়োজন বৈধ হতে পারে।

ফরহাদ মজহার বলেন, ‘এই সরকার অন্তর্বর্তী সরকার নয়। এই সরকার উপদেষ্টা সরকার। এই উপদেষ্টা সরকারের একটাই কাজ, ঠিকমতো উপদেশ দেওয়া।...এদের কাছ থেকে বেশি কিছু পাওয়ার নেই। এখন তার উচিত হবে, যত দ্রুত সম্ভব যদি কছু দেওয়ার থাকে সে দিয়ে যাবে।’

এখন একমাত্র গণপরিষদ গঠন করে সেই পরিষদের সম্মতিতে কেবল গণভোট আয়োজন বৈধ হতে পারে, বলেন ফরহাদ মজহার।

গত বছরের ৫ আগস্ট অভ্যুত্থানের বিজয়ের পর আট তারিখের মধ্যে কোনো একটি অংশ ‘চরম বিশ্বাসঘাতকতা’ করেছে বলেও অভিযোগ করেন ফরহাদ মজহার। জুলাই অভ্যুত্থানে সৈনিকদের ভূমিকা থাকলেও ৫ আগস্টের পরে তাদের অবদানকে অস্বীকার করা হয়েছে বলেও তিনি দাবি করেন।

আলোচনা সভায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরের নায়েবে আমির হেলাল উদ্দিন বলেন, ছাত্ররা যে ন্যায়বিচারের দাবি করেছিল, দেশের নেতৃত্বে সৎ লোক না এলে কখনো সেই আকাঙ্ক্ষা পূরণ হবে না। এখনো টেন্ডারবাজি ও চাঁদাবাজি বন্ধ হচ্ছে না।

ঐকমত্য কমিশনের সংস্কার আলোচনায় দেশের সংখ্যালঘুদের কথা পৌঁছায়নি বলে অভিযোগ তোলেন জাতীয় হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক। আলোচনা সভায় তিনি বলেন, ‘সেই ১৯৪৭ সালের ৩৩% মাইনরিটি এখন তো বিলুপ্তির পথে। তো সেখানে তাদের তো দু’চারটা কথা শোনার দরকার ছিল, তারা কিন্তু সেটাও শুনল না।’

সেন্টার ফর ডেমোক্রেসি অ্যান্ড পিস স্টাডিজের নির্বাহী পরিচালক সাদেক রহমানের সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ নতুনধারা জনতার পার্টির চেয়ারম্যান মুহাম্মাদ আবদুল আহাদ নূর, গণমুক্তি জোটের চেয়ারম্যান শাহরিয়ার ইফতেখার, যুবনেতা এ বি এম ইউসুফ, সাবেক সামরিক কর্মকর্তা হাসিনুর রহমান, জামাল হায়দার, ফেরদৌস আজিজ, অধ্যাপক দেওয়ান সাজ্জাদ, এ আর খান প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ