বৈশাখের প্রথম প্রহরে সন্তানের মুখ দর্শন যেন সারা বছরের সুখ
Published: 16th, April 2025 GMT
পহেলা বৈশাখের প্রথম প্রহরে সন্তান জন্ম নেবে-এমন ভাবনা ছিল না আবিদুর রহমান ও জবা বেগম দম্পতির। সমকালের প্রজন্ম বরণের খবর তাদের ভাবনায় ফেলে। সত্যিইতো তাদের সন্তান বাংলা নববর্ষের প্রথম প্রহরে পৃথিবীর আলো দেখে। বছরের শুরুতে সন্তানের মুখখানা দর্শনে এ দম্পতি যেন সারা বছরের সুখ পেলেন। পেশায় গাড়ি চালক আবিদুর রহমান ও গৃহিনী জবা বেগম নগরীর আখালিয়াঘাটের বাসিন্দা। দেড় বছর আগে পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ে হয়। নিজেরা হাইস্কুলের গণ্ডি পেরুতে না পারলেও প্রথম সন্তানকে নিয়ে স্বপ্ন দেখছেন। এ ক্ষেত্রে সন্তানের ইচ্ছাকে গুরুত্ব দেবেন বলে জানিয়েছেন।
জবা বেগম গর্ভবতী হওয়ার পর মাঝেমধ্যে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মডেল ক্লিনিক থেকে সেবা নিতেন। সময় ঘনিয়ে আসলে ডাক্তারের পরামর্শে চৈত্রের খরতাপের ভরদুপুরে হাসপাতালে ভর্তি করেন পিতা আবিদ। প্রায় ১৮ ঘণ্টা পর নতুন বছরের শুরুতে ভোর ৬টায় সন্তানের মুখ দেখেন আবিদ ও জবা। প্রথমে সন্তানকে কোলে নিয়ে আদর করেন পিতা আবিদুর রহমান। পরে নানী বিলকিস বেগম। হাসপাতালের পার্শ্ববর্তী মধুশহীদ এলাকা শিশুর নানার বাড়ি হওয়ায় মেয়ের সাথেই ছিলেন তিনি। দাদী অসুস্থ থাকায় হাসপাতালে যেতে পারেননি। ওইদিন বিকেলে বাসায় যাওয়ার পর নাতিনকে আদর করেন তিনি।
পহেলা বৈশাখে সরকারি ছুটি থাকায় ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিবেশ ছিল ভিন্ন রকম। বিশেষ করে লেভার ওয়ার্ডে ওই দিন ডেলিভারি করাতে গিয়ে বেগ পেতে হয় আবিদ-জবা দম্পতিকে। তবে সন্তানের মুখ দেখে ভুলে যান সব কষ্ট। জবা বেগম জানান আল্লাহর রহমতে সন্তান সহিসালামত আছে। লেভার পেইন হয়েছে দীর্ঘক্ষণ। সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করা জবা জানান মেয়েকে উচ্চ শিক্ষিত করবেন। হাসপাতাল থেকে পহেলা বৈশাখ বিকেলে বাড়ি যাওয়ার পর তার নাম রাখেন তিনি।
অবিদুর রহমান সমকালকে জানান নববর্ষের শুরুতে তার শিশু জন্ম নেওয়ায় তিনি অনেক খুশি। ভবিষ্যতে মেয়েকে লেখাপড়া করাবেন। মেয়ের ইচ্ছা অনুযায়ী পছন্দের বিষয়ে পড়াবেন। সন্তানের খুশিতে তিনি কয়েকদিন গাড়ি চালাবেন না। সন্তানের পাশে থাকবেন। এছাড়া সন্তান ও স্ত্রীর জন্য সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন তিনি।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: দ র রহম ন প রথম বছর র
এছাড়াও পড়ুন:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তরুণ গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় মামলা, গ্রেপ্তার ৫
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলায় দুর্বৃত্তদের গুলিতে মো. রাব্বি মিয়া (২০) নামের এক তরুণ আহত হওয়ার ঘটনায় ১০ জনের নামে মামলা হয়েছে। গুলির ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শনিবার সকালে আহত রাব্বির মা জোহরা খাতুন বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
গুলিবিদ্ধ রাব্বি উপজেলার শাহবাজপুর গ্রামের হেলাল মিয়ার ছেলে। বর্তমানে রাব্বি পরিবারের সঙ্গে নবীনগর পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মাঝিকাড়া এলাকায় ভাড়া থাকেন। তিনি পেশায় একজন অ্যাম্বুলেন্সচালক।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন নবীনগর উপজেলার টিঅ্যান্ডটিপাড়ার বাসিন্দা মো. আতাউর রহমান (৪৮), জাহিদ মিয়া (১৯), জুবায়েদ মুন্সী (১৯), মো. আহসান উল্লাহ (৪৪) ও মো. জসিম উদ্দিন (৪৪)। তাঁরা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) মো. খুরশিদ আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ নভেম্বর টিঅ্যান্ডটিপাড়ার বাসিন্দা মো. সানি (২০) ও একই পাড়ার মো. জিসানের মধ্যে কথা–কাটাকাটি ও তর্ক হয়। একপর্যায়ে ঝগড়ার সময় সানি জিসানকে ছুরিকাঘাত করেন। এ ঘটনার জেরে উভয় পক্ষ সালিস ডাকে। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা সোয়া ছয়টার দিকে নবীনগর পৌর এলাকার কালীবাড়ি মোড়ের জমিদারবাড়ির মাঠে সানিসহ তাঁর লোকজন ও জিসানসহ তাঁর লোকজন সালিসে বসেন।
গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত রাব্বি সানির পক্ষের সমর্থক। তবে সালিসের রায়ে সানি ও তাঁর লোকজন সম্মত হননি। সালিস ছেড়ে ওঠার সময় জিসানসহ তাঁর লোকজন সানির লোকজনের ওপর হামলা চালান। একপর্যায়ে জিসান বন্দুক বের করে গুলি করেন। এতে রাব্বি গুলিবিদ্ধ হন এবং প্রতিপক্ষের হামলায় সানি আহত হন।
গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয় লোকজন রাব্বিকে উদ্ধার করে নবীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে নিয়ে যান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
নবীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান বলেন, তরুণের বুকের বাঁ পাশের পাঁজরে গুলি লেগেছে।
নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল মধ্যরাত পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে গুলির ঘটনার সঙ্গে জড়িত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মামলার অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।