পহেলা বৈশাখের প্রথম প্রহরে সন্তান জন্ম নেবে-এমন ভাবনা ছিল না আবিদুর রহমান ও জবা বেগম দম্পতির। সমকালের প্রজন্ম বরণের খবর তাদের ভাবনায় ফেলে। সত্যিইতো তাদের সন্তান বাংলা নববর্ষের প্রথম প্রহরে পৃথিবীর আলো দেখে। বছরের শুরুতে সন্তানের মুখখানা দর্শনে এ দম্পতি যেন সারা বছরের সুখ পেলেন। পেশায় গাড়ি চালক আবিদুর রহমান ও গৃহিনী জবা বেগম নগরীর আখালিয়াঘাটের বাসিন্দা। দেড় বছর আগে পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ে হয়। নিজেরা হাইস্কুলের গণ্ডি পেরুতে না পারলেও প্রথম সন্তানকে নিয়ে স্বপ্ন দেখছেন। এ ক্ষেত্রে সন্তানের ইচ্ছাকে গুরুত্ব দেবেন বলে জানিয়েছেন।

জবা বেগম গর্ভবতী হওয়ার পর মাঝেমধ্যে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মডেল ক্লিনিক থেকে সেবা নিতেন। সময় ঘনিয়ে আসলে ডাক্তারের পরামর্শে চৈত্রের খরতাপের ভরদুপুরে হাসপাতালে ভর্তি করেন পিতা আবিদ। প্রায় ১৮ ঘণ্টা পর নতুন বছরের শুরুতে ভোর ৬টায় সন্তানের মুখ দেখেন আবিদ ও জবা। প্রথমে সন্তানকে কোলে নিয়ে আদর করেন পিতা আবিদুর রহমান। পরে নানী বিলকিস বেগম। হাসপাতালের পার্শ্ববর্তী মধুশহীদ এলাকা শিশুর নানার বাড়ি হওয়ায় মেয়ের সাথেই ছিলেন তিনি। দাদী অসুস্থ থাকায় হাসপাতালে যেতে পারেননি। ওইদিন বিকেলে বাসায় যাওয়ার পর নাতিনকে আদর করেন তিনি।

পহেলা বৈশাখে সরকারি ছুটি থাকায় ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিবেশ ছিল ভিন্ন রকম। বিশেষ করে লেভার ওয়ার্ডে ওই দিন ডেলিভারি করাতে গিয়ে বেগ পেতে হয় আবিদ-জবা দম্পতিকে। তবে সন্তানের মুখ দেখে ভুলে যান সব কষ্ট। জবা বেগম জানান আল্লাহর রহমতে সন্তান সহিসালামত আছে। লেভার পেইন হয়েছে দীর্ঘক্ষণ। সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করা জবা জানান মেয়েকে উচ্চ শিক্ষিত করবেন। হাসপাতাল থেকে পহেলা বৈশাখ বিকেলে বাড়ি যাওয়ার পর তার নাম রাখেন তিনি।

অবিদুর রহমান সমকালকে জানান নববর্ষের শুরুতে তার শিশু জন্ম নেওয়ায় তিনি অনেক খুশি। ভবিষ্যতে মেয়েকে লেখাপড়া করাবেন। মেয়ের ইচ্ছা অনুযায়ী পছন্দের বিষয়ে পড়াবেন। সন্তানের খুশিতে তিনি কয়েকদিন গাড়ি চালাবেন না। সন্তানের পাশে থাকবেন। এছাড়া সন্তান ও স্ত্রীর জন্য সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন তিনি।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: দ র রহম ন প রথম বছর র

এছাড়াও পড়ুন:

যেকোনো উৎসবকে রাজনৈতিক প্রভাবের ঊর্ধ্বে রাখার আহ্বান বাংলা একাডেমির মহাপরিচালকের

কেবল বাংলা নববর্ষই নয়, যেকোনো উৎসবকে রাজনৈতিক প্রভাবের ঊর্ধ্বে রাখার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম। 

মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগের ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে "বাংলা নববর্ষ: ইতিহাস, সংস্কৃতি ও উত্তরাধিকার" শীর্ষক এক সেমিনারে বাংলা নববর্ষের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট, সাংস্কৃতিক তাৎপর্য ও সামাজিক প্রভাব নিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ অনুরোধ করেন।

সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম বলেন, কেবল বাংলা নববর্ষই নয়, যেকোনো উৎসবকে রাজনৈতিক প্রভাবের ঊর্ধ্বে রাখা জরুরি। রাজনীতির সঙ্গে রাষ্ট্র ও সমাজের সম্পর্ক সঠিকভাবে গড়ে উঠলে কোনো উৎসবই নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত হয় না। মানুষের দৈনন্দিন জীবনে সাংস্কৃতিক চিন্তা-চেতনার যে স্বকীয়তা রয়েছে, তা অক্ষুণ্ন রাখাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত। বুদ্ধিভিত্তিক ও সচেতন উদ্যোগের মাধ্যমে ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখা সম্ভব। বাংলা নববর্ষের প্রতি জনগণের গভীর অনুরাগ রয়েছে, তাই এটিকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখতে হবে।

সেমিনারে আইআরডিসি’র সাধারণ সম্পাদক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ তাজাম্মুল হকের সঞ্চালনায় সভাপতিত্ব করেন 
আইআরডিসি-এর সভাপতি ও ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বিলাল হোসাইন।

সেমিনারে ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. নাছির আহমেদ তার মূল প্রবন্ধে বাংলা নববর্ষের ঐতিহাসিক বিবর্তন এবং নববর্ষ উদযাপনের ঐতিহ্য ও উত্তরাধিকার নিয়ে দুই পর্বে বিশদ আলোচনা করেন। তিনি বলেন, বাংলা নববর্ষ কেবল বাঙালিদের উৎসব নয়, বরং এটি ধর্ম, গোত্র ও সম্প্রদায় নির্বিশেষে সকল বাংলাদেশির একটি সমন্বিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এছাড়া, বাংলা সনের উৎপত্তি, এর অর্থনৈতিক প্রাসঙ্গিকতা এবং ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক মাত্রা নিয়েও তিনি গভীরভাবে আলোকপাত করেন।

এছাড়াও ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. রইছ উদ্‌দীন এবং বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. ফজলে এলাহি চৌধুরী প্যানেল আলোচক হিসেবে বক্তব্য প্রদান করেন। তাঁরা বাংলা নববর্ষের আন্তর্জাতিক ও  সামাজিক সংহতি এবং সাংস্কৃতিক বিকাশে এর ভূমিকা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ মতামত তুলে ধরেন। একইসাথে বাংলা নববর্ষের বহুমাত্রিক তাৎপর্য ও এর প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে গঠনমূলক আলোচনা করেন।

এসময় সেমিনারে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, গবেষক উপস্থিত ছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • উপহার পেল পহেলা বৈশাখে জন্ম নেওয়া জেরিনের পরিবার
  • ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখতে উৎসবকে রাজনীতি মুক্ত রাখতে হবে: মোহাম্মদ আজম
  • দৃশ্যপটে ‘আনন্দ’, মঙ্গল কোথায়
  • যেকোনো উৎসবকে রাজনৈতিক প্রভাবের ঊর্ধ্বে রাখার আহ্বান বাংলা একাডেমির মহাপরিচালকের