রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে গতকাল বুধবার বৃষ্টি হয়েছে। তপ্ত বৈশাখের এ বৃষ্টিতে তাপও কমে গেছে অনেকটা। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, আজ বৃহস্পতিবারও দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হতে পারে।

এর মধ্যে পাঁচ বিভাগে বৃষ্টির পরিমাণ হতে পারে অপেক্ষাকৃত বেশি। আজ রাজধানীতেও বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। আগামীকাল শুক্রবারও বৃষ্টি থাকতে পারে বলেই আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে।

সকাল থেকে গতকাল রাজধানীর আকাশ ছিল ঝলমলে। গরমও কম ছিল না। তবে দুপুরের পর থেকেই রাজধানীর আকাশে মেঘ জমতে শুরু করে। বেলা তিনটা থেকেই শুরু হয় বৃষ্টি। এরপর রাত প্রায় আটটা পর্যন্ত থেমে থেমে বৃষ্টি হয়। রাজধানীতে তিন ঘণ্টায় রাজধানীতে ৩১ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এ হিসাব বেলা তিনটা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত। গতকাল রাজধানীতে যতটা বৃষ্টি হয়েছে, তা ছিল এ মাসে রাজধানীতে সর্বোচ্চ।

তবে শুধু রাজধানীতে নয়, বৃষ্টি হয়েছে দেশের বিভিন্ন স্থানে। গতকাল দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয় কক্সবাজারে, ৬০ মিলিমিটার। এ ছাড়া অন্য জায়গাগুলোর মধ্যে কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে ২৫, শ্রীমঙ্গলে ২২, সাতক্ষীরায় ১৭, কুমিল্লায় ১৭ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়।

আজ রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু জায়গায় এবং রংপুর, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের দু–এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি হতে পারে। বৃষ্টির সঙ্গে থাকতে পারে বজ্রঝড়। কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী বৃষ্টির কথাও বলেছে আবহাওয়া অফিস।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো.

শাহীনুল ইসলাম গতকাল সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, বৃহস্পতিবার (আজ) বৃষ্টি বুধবারের চেয়ে কিছুটা বাড়তে পারে। তবে বিষয়টি এমন না যে দেশের সর্বত্রই বৃষ্টি হবে। শুক্রবারও দেশের কিছু স্থানে বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে।

তাপপ্রবাহের পর রাজধানীতে বৃষ্টি কাঙ্ক্ষিত ছিল। এতে কিছুটা সময় হলেও কমবে তাপ। তাতে এ বৃষ্টিতে নগরবাসীদের অনেকেই স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। তবে বিকেলের দিকে বৃষ্টি হওয়ায় সমস্যায় পড়েছেন অফিসফেরত মানুষ। কারণ, অনেকেই ছাতা নিয়ে বাইরে বের হননি।

এই বৈশাখের কালবৈশাখীর সময় বৃষ্টির ধরনই এমন। প্রচণ্ড গরম, হঠাৎ মেঘ, প্রবল বৃষ্টি। তাতে কিছুটা ঠান্ডা হয় চারপাশ। আবার গরম পড়ে।

গতকাল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় সিলেটে, ২৬ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রাজধানীতে গতকাল তাপমাত্রা ছিল ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বৃষ্টির পর এ তাপমাত্রা কমে আসে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গতক ল

এছাড়াও পড়ুন:

সবার নজরের বাইরে থাকা চৈতী দেশের জন্য আনল স্বর্ণপদক

একটু বড় হওয়ার পর মেয়েকে দেখে চিন্তায় পড়ে যান মা–বাবা। অন্য শিশুদের মতো বাড়ছে না সে। হাত–পা ছোট, উচ্চতাও থমকে গেছে। পরে বুঝতে পারেন—চৈতী বামন।

যে মেয়েকে নিয়ে একসময় দুশ্চিন্তার পাহাড়ে আটকা পড়েছিল পরিবার, আজ সেই চৈতীই আনন্দের আলো ছড়াচ্ছে। দেশের জন্য প্রথমবারের মতো এশিয়ান ইয়ুথ প্যারা গেমসে স্বর্ণপদক এনে দিয়েছে চৈতী রানী দেব।

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার ভূনবীর গ্রামের শিলু রানী দেব ও সত্য দেবের মেয়ে চৈতীর বয়স ১৩ বছর। উচ্চতা মাত্র ৩ ফুট ৭ ইঞ্চি। কিন্তু তার লক্ষ্য নিজেকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাওয়া । সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে চলমান এশিয়ান ইয়ুথ প্যারা গেমস ২০২৫–এ বর্শা নিক্ষেপ ও ১০০ মিটার দৌড়ে সে জিতে নিয়েছে দুটি স্বর্ণপদক। ৭ ডিসেম্বর এই প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে, চলবে ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

চৈতীর প্রতিভা আছে। অনুশীলনে সে খুব আন্তরিক। সে কিছু করতে চায়। আশা করছি, ওকে দিয়ে একটা ভালো ফলাফল পাবমেহেদী হাসান, বিকেএসপির প্রধান প্রশিক্ষক

চৈতীর স্বর্ণপদক পাওয়ার বিষয়টি দুবাই থেকে প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন স্পোর্টস ফর হোপ অ্যান্ড ইনডিপেনডেন্সের (শি) প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী শারমিন ফারহানা চৌধুরী।

যে মেয়েকে সবাই দেখত শুধু উচ্চতায়

ভূনবীর দশরথ হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী চৈতী একসময় গ্রামবাসীর নজরে পড়ত শুধু তার খর্বাকৃতির জন্য। খেলাধুলায় তার যে অসাধারণ প্রতিভা আছে, তা ছিল চোখের আড়ালে।

তবে এই ছবি এখন বদলে গেছে। গ্রামবাসী বাড়িতে এসে খোঁজ নেন। শিক্ষকেরা খেলতে উৎসাহ দেন, ছবি তোলেন। স্কুলে সে এখন ‘তারকা’।

দুবাইয়ে বর্শা নিক্ষেপে স্বর্ণপদক জয়ের পর চৈতী

সম্পর্কিত নিবন্ধ