নিশোর যে অভিনয় ‘অন্য লেভেলের’ বললেন মেহজাবীন
Published: 19th, April 2025 GMT
এবার ঈদে মুক্তি পেয়েছে ছয়টি সিনেমা। তার মধ্যে দর্শকদের মাঝে সাড়া ফেলেছে আফরান নিশোর ‘দাগি’। শিহাব শাহীন পরিচালিত এই ছবিটি নিয়ে এখনও দর্শক উন্মাদনাও কম নয়। এরই মধ্যে সিনেমা দেশ জয় করে এখন বিশ্বমঞ্চে পৌঁছেছে। আবেগ ও পারিবারিক বন্ধনে ভরপুর ছবিটির বড় শক্তি শিল্পীদের অভিনয় বলে মনে করেন ছোট পর্দার অভিনেত্রী মেহজাবীন চৌধুরী।
সম্প্রতি প্রেক্ষাগৃহে ‘দাগি’ সিনেমা দেখে সামাজিক মাধ্যমে অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেছেন তিনি। সঙ্গে আপ্লুত হয়ে সিনেমার মূল কলাকুশলীদের প্রশংসাও করেন এই অভিনেত্রী।
মেহজাবীন লিখেছেন, ‘আফরান নিশো, কী অসাধারণ অভিনেতা! তিনি শুধু অভিনয়ই করেন না, নিজেই চরিত্র হয়ে ওঠেন। তিনি নিশানের চরিত্রে এতটাই আবেগ এনেছেন যে আপনি তার অসহায়ত্বের প্রতিটি অংশ অনুভব না করে থাকতে পারবেন না। নিশো ভাইয়া সবসময়ই দুর্দান্ত বটে, কিন্তু এই অভিনয় ছিল অন্য লেভেলের। এমন পরিবর্তনে আমি গর্বিত না হয়ে পারছি না।’
মেহজাবীন লেখেন, ‘তমা মির্জার অভিনয়ে একটি নীরব শক্তি রয়েছে, যা আকর্ষণ করে। তমা সবসময় শান্ত ও ধারাবাহিকতার সঙ্গে থাকে। তার উপস্থিতি সেখানকার প্রতিটি দৃশ্যকে ভারী করে তুলেছে, সূক্ষ্মভাবে দর্শকদের মনোযোগ ধরে রেখেছে।’
সুনেরাহ প্রসঙ্গে মেহজাবীন লেখেন, ‘ছবিতে তাজা বাতাসের শ্বাস, অনায়াসে মনোমুগ্ধকর। আমি সত্যিই তার চরিত্রটির জন্য নিজেকে আগ্রহী করে তুলেছি।’
সব শেষে মেহজাবীন লেখেন, ‘দাগি শুধু একটি ছবি নয়; এটি একটি অভিজ্ঞতা। এটি এমন এক ধরণের সিনেমা যা আপনাকে গল্প বলার গুরুত্বকে মনে করিয়ে দেবে; যাতে রয়েছে শক্তিশালী প্লট, নানা চরিত্র এবং দুর্দান্ত অভিনয়। যদি আবেগে জড়িয়ে আপনার হৃদয়কে নাড়া দিতে চান, তাহলে হলগুলোতে যান এবং দাগি দেখুন।’
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আফর ন ন শ ম হজ ব ন চ ধ র ম হজ ব ন ল খ
এছাড়াও পড়ুন:
কাজের আনন্দই জীবনের সার্থকতা
জন্মদিনের অনুষ্ঠান নয়, তবে অনানুষ্ঠানিক আয়োজনটি ছিল সে উপলক্ষেই। আলোকিত মানুষ গড়ার কারিগর, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা শিক্ষাবিদ ও সুবক্তা অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের জন্মদিন ছিল গত ২৫ জুলাই। তাঁর অগণিত অনুরাগীরা চেয়েছিলেন তাঁকে নিয়ে জন্মদিনের অনুষ্ঠানে মিলিত হতে। উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের যে হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটে গেছে, তারপর আর জন্মদিনের অনুষ্ঠান করতে কিছুতেই সম্মত হননি তিনি।
শুক্রবার সন্ধ্যায় বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ষষ্ঠতলায় কেন্দ্রের প্রাক্তনী ও তাঁর কিছু ঘনিষ্ঠজন আলাপচারিতার এক ঘরোয়া আয়োজন করেছিলেন আবদুল্লাহ আবু সায়ীদকে নিয়ে। সেখানে তিনি বললেন, কাজের মধ্য দিয়ে জীবনে যে আনন্দ পেয়েছেন, সেটিই জীবনের সার্থকতা। এই আনন্দই তাঁকে অনুপ্রাণিত করে, শক্তি জোগায়।
এ আয়োজনে অংশগ্রহণকারীরা অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদকে বিভিন্ন প্রশ্ন করেছেন। তিনি তাঁর চিরপরিচিত সরস অথচ বুদ্ধিদীপ্ত গভীর তাৎপর্যময় কথায় উত্তর দিয়েছেন। কবিতা, সাহিত্য, শিল্প থেকে শিক্ষা, ইতিহাস, দর্শন, ধর্ম, রাজনীতি, অর্থনীতি, সংগঠন, প্রেম–ভালোবাসা—সবকিছু উঠে আসে প্রশ্নোত্তরভিত্তিক কথোপকথনে। রবীন্দ্রনাথ, নজরুল থেকে শুরু করে বিশ্বসাহিত্যের বহু কালজয়ী লেখকের রচনা থেকে প্রচুর উদ্ধৃতি দিয়েছেন তিনি। এক অন্তরঙ্গ প্রাণবন্ত আবহ বিরাজমান ছিল সন্ধ্যা থেকে অনেকটা রাত অবধি এই আয়োজনে।
আবৃত্তিশিল্পী জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় শুরুতেই আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের একটি কবিতা আবৃত্তি করে জানতে চান, তিনি কবিতার চর্চা করেননি কেন? জবাবে তিনি বলেন, কবি শামসুর রাহমান একবার তাঁকে বলেছিলেন, তাঁর মধ্যে কবিত্বের ঘাটতি আছে। তাঁর নিজেরও সে রকম মনে হয়েছে। তারপর সাহিত্য পত্রিকা কণ্ঠস্বর প্রকাশ ও অনেক রকম কাজ করতে গিয়ে আর কবিতা লেখা হয়ে ওঠেনি।
অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য প্রশ্ন করেন, এখন একটা কঠিন সময় যাচ্ছে। তরুণ প্রজন্মকে কীভাবে দেখেন, কী আশা করেন তাদের কাছে?
আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, ‘তরুণেরা কী হবে, তা তরুণদের ওপরে নির্ভর করে না। সেটা নির্ভর করে আমরা তাদের কী বানাতে চাই, তার ওপর। দেখতে হবে তরুণদের গড়ার মতো আমাদের ক্ষমতা কতটা আছে। অর্থাৎ শিক্ষক কেমন হবে, তার ওপরে নির্ভর করে তাঁর ছাত্র কেমন হবে। সক্রেটিস শিক্ষক ছিলেন বলে ছাত্র প্লেটো হয়েছেন। প্লেটোর শিক্ষা পেয়ে ছাত্র অ্যারিস্টটল হতে পেরেছেন। বড়দের যদি বড়ত্ব না থাকে, তবে ছোটরা বড় হতে পারে না। দুর্ভাগ্য যে আমরা বড়রা তাদের সামনে আদর্শ দাঁড় করাতে পারিনি। ফলে এখন বড়দেরই ছোটদের পেছনে দাঁড়াতে হচ্ছে।’
ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহ্ফুজ আনাম জানতে চান, তিনি এত বিচিত্র ধরনের এত বিপুল কাজ করেছেন। এই প্রাণশক্তি পান কেমন করে?
উত্তর দিতে গিয়ে আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, ‘শক্তি আসে আনন্দ থেকে। কাজ করতে পারাটাই আনন্দের। আর সব সময় আশাবাদী থাকি। আশা কখনো শেষ হয় না। আশা শেষ মানে আমি শেষ।’
আলাপচারিতায় আরও অংশ নেন দুদক চেয়ারম্যান এম এ মোমেন, ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ, চিকিৎসক আমজাদ হোসেন, অভিনয়শিল্পী খায়রুল আলম সবুজ, কথাশিল্পী আনিসুল হক, ছড়াকার আমিরুল ইসলাম, উপস্থাপক আবদুন নূর তুষার, অভিনয়শিল্পী আফসানা মিমি, মশিউর রহমান, আলী নকী প্রমুখ। সঞ্চালনা করেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রাক্তনী খাদিজা রহমান।