কলম্বাস ক্রুর লোয়ার ডট কম স্টেডিয়ামের ধারণ ক্ষমতা ২০ হাজারের চেয়ে খানিকটা বেশি। তবে শনিবার (১৯ এপ্রিল) দিবাগত রাতে মেজর লিগ সকারে (এমএলএস) ইন্টার মায়ামির বিপক্ষে ম্যাচে তো মেসি খেলবেন! আর্জেন্টাইন মহাতারকার খেলা দেখতে হবে উপচে পড়া ভিড়। বাধ্য হয়েই স্টেডিয়াম সরাল কলম্বাস।

ম্যাচটি কলম্বাস শহর থেকে প্রায় ১৪৫ মাইল উত্তরে, ক্লিভল্যান্ড ব্রাউনস স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়। এটি এক এনএফএল দলের মাঠ, যার মালিক আবার কলম্বাস ক্রুর মালিক জিমি ও ডি হাসল্যাম। ক্লিভল্যান্ড ব্রাউনসের ৬৭,৪৩১ ধারণক্ষমতাসম্পন্ন স্টেডিয়ামে ৬০,৬১৪ জন দর্শক উপস্থিত ছিলেন।

রেকর্ড দর্শকের সামনে মায়ামি এমএলএসে তাদের অপরাজিত থাকার যাত্রা অব্যাহত রেখেছে। শনিবার ক্লিভল্যান্ডে কলম্বাস ক্রুর বিপক্ষে ১–০ ব্যবধানে জয় পেয়েছে মেসির দল। ম্যাচের একমাত্র গোলটি আসে প্রথমার্ধে, বেনজামিন ক্রেমাসচির হেড থেকে।

লুইস সুয়ারেজের শুরু করা একটি দ্রুতগতির প্রতিআক্রমণ থেকে গোলটি আসে ম্যাচের ৩০তম মিনিটে। ডান দিক দিয়ে দুর্দান্ত দৌড়ে এসে মার্সেলো ওয়েইগান্ট একটি নিখুঁত ক্রস দেন, যেটি ডাইভিং হেডে জালে পাঠান ক্রেমাসচি। গোলরক্ষক অস্কার উস্তারি তিনটি গুরুত্বপূর্ণ সেভ করে ক্লিন শিট নিশ্চিত করেন।

এই জয়ের ফলে মায়ামি ৮ ম্যাচে ৫ জয় ও ৩ ড্রয়ে এখনও অপরাজিত মায়ামি। মেসিরা ১৮ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তৃতীয় স্থানে আছে। কলম্বাস ক্রুরও সমান ১৮ পয়েন্ট। ম্যাচ হেরে তারা ক্লাব ইতিহাসে মৌসুমের শুরুতে সবচেয়ে দীর্ঘ অপরাজিত থাকার রেকর্ড ভাঙার সুযোগ হারিয়েছে। ক্রু এর আগে ২০১০ সালে মৌসুমের শুরুতে টানা আট ম্যাচ অপরাজিত ছিল।

মায়ামির গোলটি আসে এক মিনিট আগেই উস্তারির একটি গুরুত্বপূর্ণ সেভ করে। ম্যাক্স আরফস্টেনের কাছ থেকে নেওয়া একটি শট ঠেকান তিনি। বিরতির আগ মুহূর্তে মেসি স্কোর বাড়ানোর কাছাকাছি গিয়েছিলেন। ২৫ গজ দূর থেকে একটি বাঁকানো শট অল্পের জন্য পোস্টের বাইরে দিয়ে চলে যায়।

বিরতির পর আক্রমণাত্মকভাবে মাঠে নামে কলম্বাস। ৪৬তম মিনিটে দিয়েগো রোসি একটি শক্তিশালী শট নেন, যেটি উস্তারি চমৎকারভাবে ঠেকান। ছয় মিনিট পরে রোসি আরেকটি সুযোগ পেলেও সেটি অনেক দূরে লক্ষ্যভ্রষ্ট করেন।

শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত সমতা ফেরাতে চেষ্টার ত্রুটি রাখেনি ক্রু। যোগকরা সময়ে শেষ সুযোগ পেয়েছিল তারা। আন্দ্রেস হেরেরার ক্রস থেকে ড্যানিয়েল গাজদাগ বলটিতে পা ছুঁইয়ে দেন, কিন্তু তা অল্পের জন্য জালের ঠিকানা পায়নি।

ঢাকা/নাভিদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর কলম ব স ক র র অপর জ ত

এছাড়াও পড়ুন:

হয়রানির অবসান চান ব্যবসায়ীরা

কর আদায়ের নামে হয়রানি ও জটিলতার অবসান চেয়েছেন শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ীরা। একই সঙ্গে উৎপাদন পরিচালনার জন্য বিদ্যুৎ ও গ্যাস নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন তারা। আগামী অর্থবছরের বাজেট সামনে রেখে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইর যৌথ আয়োজনে এনবিআরের পরামর্শক কমিটির ৪৫তম সভায় এ দুটি বিষয়ে ব্যবসায়ীদের উদ্বেগ ছিল বেশি। 

রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে গতকাল বুধবার অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান সভাপতিত্ব করেন। সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ এবং ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান মইনুল খান। সঞ্চালনা করেন এফবিসিসিআইর প্রশাসক হাফিজুর রহমান।
ব্যবসায়ীদের মধ্যে বিকেএমইএ সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ভ্যাট আদায়ে কিছু অযৌক্তিক কাগজপত্র জমা দিতে হয়। এগুলো ভ্যাট কর্মকর্তারা আটকে রেখে অযথা সময়ক্ষেপণ করেন। এতে ব্যবসায়ীরা নানা ঝামেলায় পড়েন। এসব পরিহার করতে হবে। 

ব্যবসা-বাণিজ্যে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা বেড়েছে উল্লেখ করে বিটিএমএ সভাপতি শওকত আজিজ বলেন, এক সময় বস্ত্র খাতের যন্ত্রাংশ আমদানিতে ছাড়পত্র বিটিএমএর পক্ষ থেকেই দেওয়া হতো। কিন্তু এনবিআর পুরো বিষয়টি নিজের হাতে নেওয়ার পর জটিলতা বেড়েছে। প্রতিটি ধাপে ছাড়পত্র নিতে হয়। দেখা যায়, ৩০ হাজার টাকা শুল্ককর জমা দিতে ৫০ হাজার টাকা ঘুষ দিতে হয়।

মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল বলেন, তারা কুমিল্লা অর্থনৈতিক অঞ্চলে ৬০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করেও দুই বছরে গ্যাস ও বিদ্যুৎ পাচ্ছেন না। তার ভাষায় ‘আমরা বিদেশিদের বিনিয়োগের জন্য ডাকছি। অথচ নিজের দেশের উদ্যোক্তারা জ্বালানি সংকটে ভুগছেন।’

মোস্তফা কামাল বলেন, রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর অনেকের ব্যাংক হিসাব এবং করনথি তল্লাশি করা হচ্ছে। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া ঢালাওভাবে তল্লাশি করে ব্যবসায়ীদের যাতে হয়রানি করা না হয়, সে জন্য এনবিআরের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি। 

বিজিএমইএর প্রশাসক আনোয়ার হোসেন বলেন, এইচএস কোড নিয়ে বেশ কিছু জটিলতা রয়েছে। এগুলো দূর করতে হবে। তিনি বলেন, ফাইবার রিসাইকেলের ক্ষেত্রে মোট ২২ শতাংশ ভ্যাট রয়েছে। অথচ অন্যান্য দেশ এ ক্ষেত্রে প্রণোদনা দেন। তাই তিনি এ ভ্যাট অব্যাহতির দাবি জানান। 

এমসিসিআইর সিনিয়র সহসভাপতি হাবিবুল্লাহ এন করিম বলেন, করের আওতা সম্প্রসারণের আলোচনা হলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। এতে যারা কর দেন, তাদের ওপর প্রতিনিয়ত চাপ বাড়ছে। এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ দরকার। তাছাড়া ব্যবসা পরিচালনার অনেক খরচ অনুমোদন হয় না। তাই ঘোষিত হারের চেয়ে কার্যকর কর অনেক বেড়ে যায়। 

ঢাকা চেম্বারের সিনিয়র সহসভাপতি রাজীব চৌধুরী বলেন, সরকারের মোট রাজস্বের ৮৪ শতাংশ আসছে ঢাকা এবং চট্টগ্রাম থেকে। অন্যান্য জেলা থেকে রাজস্ব আসছে না। এসব জেলা থেকে কর আদায় বাড়াতে হবে। একই সঙ্গে তিনি কর প্রদান সহজ করার ওপর জোর দেন। 

সভায় ব্যবসা ও বাণিজ্যের পরিবেশ উন্নয়নে সরকার বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে বলে জানান বিডা ও বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী। তিনি  সুনির্দিষ্ট এবং গঠনমূলক বাজেট প্রস্তাবনা দেওয়ার জন্য ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানান। 

ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে আসন্ন ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য আয়কর, ভ্যাট ও শুল্ক-সংক্রান্ত বেশ কিছু প্রস্তাব তুলে ধরেন এফবিসিসিআইর প্রশাসক হাফিজুর রহমান। ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের জন্য বার্ষিক করমুক্ত আয়সীমা ১ লাখ টাকা বাড়িয়ে সাড়ে ৪ লাখ টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়। তৈরি পোশাকসহ সব রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে কর হার ১ শতাংশ থেকে কমিয়ে আগের মতো ০.৫০ শতাংশ নির্ধারণ করা, কার্যকরি কর হার কমিয়ে আনা এবং শিল্প পরিচালনার ব্যয় কমানোতে আমদানি পর্যায়ে অগ্রিম আয়করের (এআইটি) হার ধাপে ধাপে কমিয়ে আনার প্রস্তাব দেওয়া হয়। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ