ছয় দফা ও কুমিল্লায় হামলার প্রতিবাদে ৫০টি ইনস্টিটিউটে মহাসমাবেশ করেছেন পলিটেকনিক শিক্ষার্থীরা। এসব সমাবেশ থেকে কারিগরি ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের নেতারা আগামীতে কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন।

এদিকে, জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের পদোন্নতি-সংক্রান্ত হাইকোর্টের দেওয়া রায় স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে করা আবেদনের শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি মো.

রেজাউল হক রোববার এ আদেশ দেন। একই সঙ্গে আবেদনটি আগামী ১৮ মে আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানি করতে বলা হয়েছে।

রাজধানী ঢাকায় রোববার দুপুর ১২টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত আগারগাঁওয়ে ঢাকা মহিলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে মহাসমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা। অবিলম্বে ছয় দফা মেনে নিতে তারা সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

সমাবেশ শেষে এ আন্দোলনের অন্যতম প্রতিনিধি ও ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী মাশফিক ইসলাম দেওয়ান সমকালকে বলেন, ‘শিগগির সারাদেশের পলিটেকনিকে থাকা আমাদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী কর্মসূচি ঠিক করব। আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে সেটা জানিয়ে দেওয়া হবে। তার আগে আমাদের দাবি সরকার মেনে নেবে বলে বিশ্বাস করি। অন্যথায় আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।’

এর আগে আজ সকাল থেকে শিক্ষার্থীরা ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সামনে জড়ো হতে শুরু করেন। বেলা ১১টার দিকে সেখান থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে তারা আগারগাঁওয়ে ঢাকা মহিলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সামনে সমাবেশস্থলে যান।

সমাবেশে শিক্ষার্থীদের হাতে দাবি-দাওয়া সংবলিত বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড দেখা যায়। তাতে লেখা ছিল, ‘মামা থেকে মাস্টার, মামা বাড়ির আবদার’, ‘চব্বিশের হাতিয়ার, গর্জে ওঠো আরেকবার’ ইত্যাদি। ‘আমি কে তুমি কে, ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার,’ ‘তেরোর হাতিয়ার, গর্জে ওঠো আরেকবার’, ‘দেশ গড়ার হাতিয়ার, ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার,’ ‘এক হও এক হও, পলিটেকনিক এক হও’ স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে সমাবেশ এলাকা।
এ ছাড়া আজ খুলনা, সিলেট, পটুয়াখালী, বগুড়া, কুমিল্লা ও লক্ষ্মীপুর থেকে সমকাল প্রতিনিধি ও ব্যুরো পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের সমাবেশের খবর পাঠিয়েছেন।

কয়েক মাস ধরে আন্দোলন করছেন চার লাখেরও বেশি পলিটেকনিক শিক্ষার্থী। তাদের দাবির মধ্যে রয়েছে– জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের পদোন্নতির রায় বাতিল, ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্স চার বছর, পাস করা শিক্ষার্থীদের নিম্ন পদে নিয়োগ দিলে ব্যবস্থা, কারিগরি সেক্টর পরিচালনায় বাইরের জনবল নিয়োগ নিষিদ্ধ, আলাদা মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠন এবং টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইনস ট র ক

এছাড়াও পড়ুন:

কেনিয়া: মাউ মাউ বিদ্রোহ ও স্বাধীনতার গর্জন

আফ্রিকার দিগন্তজোড়া সাভানা আর বন্য প্রকৃতির দেশ কেনিয়া। কিন্তু এই শান্ত প্রকৃতির আড়ালে লুকিয়ে আছে রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের এক উত্তপ্ত ইতিহাস। আজ ১২ ডিসেম্বর কেনিয়ার ‘জামহুরি দিবস’ (Jamhuri Day)। সোয়াহিলি ভাষায় ‘জামহুরি’ শব্দের অর্থ ‘প্রজাতন্ত্র’। এই দিনটি কেনিয়াবাসীর কাছে দ্বিগুণ আনন্দের—কারণ, ১৯৬৩ সালের এই দিনে তারা ব্রিটিশদের হাত থেকে স্বাধীনতা লাভ করে এবং ঠিক এক বছর পর ১৯৬৪ সালের একই দিনে দেশটি প্রজাতন্ত্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।

কেনিয়ার এই বিজয়ের পথ মোটেও মসৃণ ছিল না। ১৯৫০-এর দশকে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে গড়ে ওঠা ‘মাউ মাউ বিদ্রোহ’ (Mau Mau Uprising) ছিল এই স্বাধীনতার মূল চালিকাশক্তি। জঙ্গল ও পাহাড়ের আড়াল থেকে সাধারণ কৃষকেরা ব্রিটিশদের আধুনিক অস্ত্রের বিরুদ্ধে দা, কুড়াল আর পুরোনো বন্দুক নিয়ে রুখে দাঁড়িয়েছিল। ব্রিটিশরা হাজার হাজার স্বাধীনতাকামীকে বন্দী করে, হত্যা করে ও নির্যাতন চালায়। কিন্তু মাউ মাউ যোদ্ধাদের সেই আত্মত্যাগ বৃথা যায়নি। তাদের সেই রক্তস্রোতই শেষ পর্যন্ত ব্রিটিশদের কেনিয়া ছাড়তে বাধ্য করে।

কেনিয়াবাসী ঘটা করে উদ্‌যাপন করে ‘জামহুরি দিবস’

সম্পর্কিত নিবন্ধ