চট্টগ্রামের চন্দনাইশে ভাগ্নি তামান্না নাহিদ ইয়া আরজুকে ধর্ষণচেষ্টার পর হত্যা মামলার আসামি নাজিম উদ্দিনের তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। রোববার চট্টগ্রামের অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ গোলাম সরোয়ার রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

আসামি নাজিম সাতকানিয়া উপজেলার খাগরিয়া গ্রামের মৃত ছৈয়দ আহমেদের ছেলে। গত ৮ এপ্রিল রাতে চন্দনাইশ পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ গাছবাড়িয়া নয়াপাড়া আব্দুল হাকিমের ঘরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। নিহত তামান্না চন্দনাইশ উপজেলার কাঞ্চনাবাদ ইউনিয়নের কাঞ্চননগর গ্রামের বাসিন্দা।

বাদীপক্ষের আইনজীবী জুনাইদ শিবলী জানান, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে শুনানি শেষে আদালত ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। আসামি কারাগারে বন্দি রয়েছেন।

পুলিশ জানায়, ঈদের ছুটিতে শিক্ষার্থী তামান্না নানাবাড়ি বেড়াতে যায়। সে পটিয়া সরকারি কলেজের এইচএসসি সাবেক শিক্ষার্থী। তার মায়ের খালাতো ভাই নাজিমও নানা বাড়ি বেড়াতে যান। রাত ২টার দিকে আরজুকে বিছানায় দেখতে না পেয়ে তার নানা খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। একপর্যায়ে টয়লেটের মেঝেতে আরজু আক্তারের মুখে ওড়না ঢুকানো এবং গলায় ওড়না পেচানো অবস্থায় দেখতে পান। অভিযুক্ত নাজিম মেয়েটিকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন এবং পরবর্তীতে হত্যা করেন। আরজুর নানার চিৎকারে অভিযুক্ত নাজিম দা দিয়ে গুরুতর জখম করে ঘটনাস্থল থেকে দ্রুত পালিয়ে যায়।

গত ১১ এপ্রিল কক্সবাজার জেলার রামু থানার রশিদনগর ইউনিয়নের কাদমার পাড়া দুর্গম পাহাড়ি এলাকা থেকে নাজিমকে গ্রেপ্তার করে জেলা ডিবি পুলিশ।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

ট্রাম্পের নতুন জাতীয় প্রতিরক্ষানীতির প্রশংসায় রাশিয়া

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন জাতীয় প্রতিরক্ষা কৌশলকে স্বাগত জানিয়েছে ক্রেমলিন। গতকাল রোববার ক্রেমলিন থেকে বলা হয়, এটি মূলত রাশিয়ার নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

মস্কো এই প্রথম শীতল যুদ্ধ সময়ের প্রবল প্রতিপক্ষের কোনো জাতীয় প্রতিরক্ষা কৌশলের এত প্রশংসা করল।

যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় প্রতিরক্ষা কৌশলে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের দৃষ্টিভঙ্গিকে ‘নমনীয় বাস্তববাদ’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।

এ ছাড়া সেখানে যুক্তরাষ্ট্রকে ১৯ শতকের ‘মনরো ডকট্রিন’ বা মনরো নীতি পুনর্জীবিত করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, ওই নীতিতে পশ্চিম গোলার্ধকে ওয়াশিংটনের প্রভাবক্ষেত্র হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল।

অর্থাৎ পশ্চিম গোলার্ধ (উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকা) যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাববলয়ে থাকবে এবং ইউরোপীয় শক্তি সেখানে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ করবে না।

যুক্তরাষ্ট্রের নতুন জাতীয় প্রতিরক্ষা কৌশলে সতর্ক করে বলা হয়েছে, ইউরোপ ‘সভ্যতার উচ্ছেদ’–এর মুখে রয়েছে, ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান যুক্তরাষ্ট্রের ‘মূল স্বার্থের’ একটি এবং ওয়াশিংটন রাশিয়ার সঙ্গে কৌশলগত স্থিতিশীলতা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে চায়।

রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন কৌশল নিয়ে প্রশ্ন করা হলে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, ‘যে সামঞ্জস্য আমরা দেখতে পাচ্ছি, তা অনেকভাবে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে মিলে যাচ্ছে।’

মস্কো ও ওয়াশিংটনের মধ্যে বৈশ্বিক রাজনীতির মূল ভিত্তি সম্পর্কে এমন প্রকাশ্য ও পূর্ণাঙ্গ মতৈক্য বিরল।

তবে ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর সাবেক সোভিয়েত প্রজাতন্ত্র থেকে পারমাণবিক অস্ত্র রাশিয়ায় ফেরত আনার বিষয়ে এবং ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পর দুদেশ ঘনিষ্ঠভাবে পরস্পরকে সহযোগিতা করেছিল।

ওয়াশিংটন ও মস্কো উভয়ের নজর চীনের দিকে

রাশিয়ার ২০১৪ সালে ক্রিমিয়া অধিগ্রহণ এবং ২০২২ সালে ইউক্রেনে আগ্রাসনের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নীতিতে মস্কোকে এক আগ্রাসন বা হুমকি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, যারা যুদ্ধের মাধ্যমে শীতল যুদ্ধ–পরবর্তী বিশ্বব্যবস্থাকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে।

কিন্তু এবার রাশিয়াকে সরাসরি হুমকি হিসেবে বর্ণনা না করে বরং মস্কোর সঙ্গে কৌশলগত স্থিতিশীলতা–সংক্রান্ত সহযোগিতার আহ্বান একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ বলে বর্ণনা করেছেন পেসকভ।

ট্রাম্পের জাতীয় প্রতিরক্ষা কৌশলে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলকে ‘অর্থনৈতিক ও ভূরাজনৈতিক সংঘর্ষের মূল ক্ষেত্রগুলোর একটি’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। নীতিতে বলা হয়েছে, তাইওয়ানকে কেন্দ্র করে চীনের সঙ্গে সংঘাত এড়াতে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের সামরিক শক্তি বৃদ্ধি করা হবে।

আরও পড়ুনমস্কো–ওয়াশিংটনের হটলাইন এখন আর চালু নেই: ক্রেমলিন২০ নভেম্বর ২০২৪

ইউক্রেনে যুদ্ধের জেরে পশ্চিমারা রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার পর মস্কো এশিয়া, বিশেষ করে চীনের দিকে মনোযোগ দিয়েছে। আর ইউরোপ রাশিয়ার তেল ও গ্যাসের ওপর নিজেদের নির্ভরশীলতা কমানোর চেষ্টা করেছে।

গত মার্চে ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘আমি নিজে, একজন ইতিহাসের শিক্ষার্থী হিসেবে, যা কিছু দেখেছি—প্রথমেই আমাদের যা শেখানো হয়, তা হলো রাশিয়া ও চীন একত্র হোক, এটা আপনি চাইতে পারেন না।’

আরও পড়ুনট্রাম্প আসলে ইউরোপের পিঠে ছুরি মেরেছেন২৮ নভেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ