ভাগ্নিকে ধর্ষণচেষ্টার পর হত্যা মামলার আসামি নাজিম ৩ দিনের রিমান্ডে
Published: 21st, April 2025 GMT
চট্টগ্রামের চন্দনাইশে ভাগ্নি তামান্না নাহিদ ইয়া আরজুকে ধর্ষণচেষ্টার পর হত্যা মামলার আসামি নাজিম উদ্দিনের তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। রোববার চট্টগ্রামের অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ গোলাম সরোয়ার রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
আসামি নাজিম সাতকানিয়া উপজেলার খাগরিয়া গ্রামের মৃত ছৈয়দ আহমেদের ছেলে। গত ৮ এপ্রিল রাতে চন্দনাইশ পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ গাছবাড়িয়া নয়াপাড়া আব্দুল হাকিমের ঘরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। নিহত তামান্না চন্দনাইশ উপজেলার কাঞ্চনাবাদ ইউনিয়নের কাঞ্চননগর গ্রামের বাসিন্দা।
বাদীপক্ষের আইনজীবী জুনাইদ শিবলী জানান, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে শুনানি শেষে আদালত ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। আসামি কারাগারে বন্দি রয়েছেন।
পুলিশ জানায়, ঈদের ছুটিতে শিক্ষার্থী তামান্না নানাবাড়ি বেড়াতে যায়। সে পটিয়া সরকারি কলেজের এইচএসসি সাবেক শিক্ষার্থী। তার মায়ের খালাতো ভাই নাজিমও নানা বাড়ি বেড়াতে যান। রাত ২টার দিকে আরজুকে বিছানায় দেখতে না পেয়ে তার নানা খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। একপর্যায়ে টয়লেটের মেঝেতে আরজু আক্তারের মুখে ওড়না ঢুকানো এবং গলায় ওড়না পেচানো অবস্থায় দেখতে পান। অভিযুক্ত নাজিম মেয়েটিকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন এবং পরবর্তীতে হত্যা করেন। আরজুর নানার চিৎকারে অভিযুক্ত নাজিম দা দিয়ে গুরুতর জখম করে ঘটনাস্থল থেকে দ্রুত পালিয়ে যায়।
গত ১১ এপ্রিল কক্সবাজার জেলার রামু থানার রশিদনগর ইউনিয়নের কাদমার পাড়া দুর্গম পাহাড়ি এলাকা থেকে নাজিমকে গ্রেপ্তার করে জেলা ডিবি পুলিশ।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে তরুণদের একীভূত কণ্ঠস্বর জরুরি: পরিবেশ উপদেষ্টা
বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে তরুণদের সক্রিয় ও সমন্বিত ভূমিকার ওপর জোর দিয়ে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, একীভূত কণ্ঠস্বর গড়ে তুলতে পারলে বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল ধ্বংস ও সংরক্ষণবিরোধী কার্যক্রম প্রতিরোধ করা আরো সহজ হবে।
তিনি বলেন, বন্যপ্রাণী উদ্ধার, পরিচর্যা ও প্রকৃতিতে পুনর্বাসনে তরুণদের যে ইতিবাচক মনোভাব দেখা যাচ্ছে, তা দেশের জন্য অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক। বন্যপ্রাণী নিরাপত্তা ও সংরক্ষণে সাধারণ মানুষের আগের তুলনায় সচেতনতা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
শনিবার (৬ ডিসেম্বর) দুপুরে ঢাকার আগারগাঁও বন ভবনে বন্যপ্রাণী, বন ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে নিয়োজিত স্বেচ্ছাসেবী ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রতিনিধিদের নিয়ে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
তরুণদের উদ্দেশে উপদেষ্টা বলেন, “বন্যপ্রাণী রক্ষায় একীভূত কণ্ঠস্বর অত্যন্ত প্রয়োজন। যারা বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল ধ্বংস করে অর্থনৈতিক যুক্তি তুলে ধরে জনসমর্থন নিতে চায়, তাদের প্রতিরোধে সচেতনতা, ভালোবাসা ও সঠিক তথ্য ছড়িয়ে দিতে হবে।”
উপদেষ্টা বলেন, “মানুষ ও প্রকৃতি পাশাপাশি টিকিয়ে রাখার নৈতিক মূল্যবোধ সামনে রেখে কাজ করতে হবে। আমাদের ধর্মীয় ও সামাজিক মূল্যবোধ জীবজগতের প্রতি সহমর্মিতা ও সংরক্ষণশীল আচরণের শিক্ষা দেয়। অসহায় মানুষ ও অসহায় প্রাণীর পাশে দাঁড়ানোই প্রকৃত মানবিকতা।”
সভায় পরিবেশ উপদেষ্টা ঘোষণা করেন, আগামী বছর ৬৪ জেলায় ৬৪ জন বন্যপ্রাণী কর্মীকে স্বীকৃতি প্রদান করা হবে।
তিনি বলেন, “এর মাধ্যমে নতুন প্রজন্ম আরও উৎসাহিত হবে এবং প্রতিটি জেলায় বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে একজন প্রতিনিধিত্বশীল কর্মী সামনে আসবেন।”
উপদেষ্টা আরো জানান, বন্যপ্রাণী অপরাধ মোকাবিলায় নতুন ইউনিট গঠনের অনুমোদন দিয়েছে সরকার। পাশাপাশি চলমান উদ্ধার কার্যক্রমে আধুনিক সরঞ্জাম ও পরিবহন সহায়তা নিশ্চিত করতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বায়োটেকনোলজির মহাপরিচালক ড. মো. ছগীর আহমেদ; জীববৈচিত্র্য বিশেষজ্ঞ ড. মোহাম্মদ আলী রেজা খান; রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি ও এ্যানিমেল সায়েন্সেস অনুষদের প্রতিষ্ঠাতা ডীন ড. মোঃ. জালাল উদ্দিন সরদার এবং বিবিসিএফ-এর প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান উপদেষ্টা ড. মোল্যা রেজাউল করিম।
অনুষ্ঠানে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে বিশেষ অবদানের জন্য ড. মোহাম্মদ আলী রেজা খানসহ বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কৃত করা হয়।
এর আগে বন উপদেষ্টা বাংলাদেশ সামরিক জাদুঘরে বাংলাদেশ এনার্জি কনফারেন্স ২০২৫–এর উদ্বোধনী অধিবেশনে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নেন। সেখানে তিনি সরকারি ভবনে কার্যকর রুফটপ সোলার স্থাপন, পরিবেশগত প্রভাব মূল্যায়ন করে উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ এবং সংশ্লিষ্ট পক্ষের মতামতের ভিত্তিতে স্বচ্ছ সিদ্ধান্ত গ্রহণের গুরুত্ব তুলে ধরেন।
ঢাকা/এএএম/ইভা