ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চায় বাংলাদেশ লেবার পার্টি ও জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট। সোমবার রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলটির সঙ্গে পৃথক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তারা এ কথা জানায়।

 বৈঠকে বিএনপির পক্ষে দলটির লিয়াজোঁ কমিটির প্রধান ও স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আওয়াল মিন্টু উপস্থিত ছিলেন।

 বৈঠকের আলোচ্যসূচি নিয়ে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘জনগণের আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী যে এক দফার লড়াই আমরা করেছিলাম, সেটা ছিল মূলত ফ্যাসিবাদের বা স্বৈরাচারের পতন এবং নির্দলীয়, নিরপেক্ষ সরকারের অধীন জাতীয় সংসদ নির্বাচন। একটি অর্জিত হয়েছে, আরেকটি অর্জনের পথে আছে। এ ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে।’

বিকেল পাঁচটার পর বাংলাদেশ লেবার পার্টির সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে দলটির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরানের নেতৃত্বে সাত সদস্যের প্রতিনিধিদল অংশগ্রহণ করে। বৈঠক শেষে মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘এই সরকার আট মাস ধরে দায়িত্ব পালন করছে এবং অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে আমরা যাঁরা গণতন্ত্রকামী, সবার সম্মতিতে তাঁকে এ দায়িত্ব প্রদান করেছি। এ জন্য তাঁর কাছে আমাদের প্রত্যাশাও অনেক। তিনি আমাদের একটি সুষ্ঠু, সুন্দর ও নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দেবেন।’

 নির্বাচনের রোডম্যাপ দিতে সরকারকে তাগাদা দিয়ে লেবার পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমাদের দাবি হচ্ছে, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন দিতে হবে। এর মাধ্যমে দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে এ দেশের ভোটের অধিকারহারা মানুষগুলো তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে।’

বিএনপির সঙ্গে বাংলাদেশ লেবার পার্টির বৈঠক। সোমবার গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব এনপ র

এছাড়াও পড়ুন:

কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন

টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।

এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।

গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।

প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ