কক্সবাজার-মহেশখালী রুটে সি-ট্রাকের যাত্রা শুরু বৃহস্পতিবার
Published: 23rd, April 2025 GMT
কক্সবাজার-মহেশখালী নৌ রুটে নিয়মিতভাবে সি-ট্রাক চলাচল শুরু হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টায় কক্সবাজার শহরের বাঁকখালী নদীর ৬ নম্বর জেটিঘাট থেকে ‘এমটি ভাষা শহীদ জব্বার’ নামে সি-ট্রাক চলাচল শুরু করবে। অন্তর্বর্তী সরকারের নৌপরিবহন উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন সি-ট্রাক চলাচল উদ্বোধন করবেন।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) জানিয়েছে, কক্সবাজার থেকে মহেশখালী রুটে প্রতিদিন তিনটি ট্রিপ পরিচালনা করবে ২৫০ জন যাত্রী ধারণক্ষমতাসম্পন্ন সি-ট্রাকটি।
আরো পড়ুন:
মজুচৌধুরীর হাট লঞ্চঘাটে কর্মস্থলে ফেরা মানুষের ভিড়
ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে কাজে আন্তরিক হওয়ার আহ্বান নৌপরিবহন উপদেষ্টার
ভাড়ার বিষয়ে জানানো হয়, ৬ নম্বর ঘাট থেকে মহেশখালী যেতে একজন যাত্রীর ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০ টাকা। নুনিয়ারছড়া ঘাট থেকে মহেশখালী যেতে জনপ্রতি ভাড়া হবে ৪০ টাকা।
মহেশখালীবাসীর দীর্ঘদিনের প্রত্যাশিত এই সেবা চালু হওয়ায় দ্বীপজুড়ে আনন্দ বিরাজ করছে। স্থানীয়রা মনে করছেন, এতে বর্ষাকালে ঝুঁকিপূর্ণ যাত্রা ও দুর্ঘটনার আশঙ্কা কমবে। তবে, সরকারি সেবার আওতায় পরিচালিত সি-ট্রাকের ভাড়া কিছুটা বেশি বলে মনে করছেন অনেকেই।
কোস্ট ফাউন্ডেশনের মহেশখালী অঞ্চলের কর্মকর্তা অধ্যাপক মকবুল আহমদ বলেন, “সরকারি গেজেট অনুযায়ী নৌপথে যাত্রীপ্রতি কিলোমিটারে ভাড়া নির্ধারণ আছে ২ টাকা ৮৫ পয়সা। মহেশখালী-কক্সবাজার রুটের দৈর্ঘ্য ৮.
মহেশখালী উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীনও ভাড়া পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছেন।
বিআইডব্লিউটিএ কক্সবাজার (কস্তুরাঘাট) নদীবন্দরের সহকারী পরিচালক মো. খায়রুজ্জামান বলেন, “যাত্রীদের দাবির বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।”
তিনি আরো বলেন, “কক্সবাজার থেকে প্রতিদিন সকাল সাড়ে ৮টা, দুপুর ১২টা ও সন্ধ্যা ৬টায় সি-ট্রাক ছাড়বে। মহেশখালী থেকে ছাড়বে সকাল সাড়ে ৭টা, সকাল ১১টা ও বিকেল ৫টায়।”
মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. হেদায়েত উল্লাহ বলেন, “যাত্রীসেবার মান উন্নয়নে মহেশখালী জেটিঘাটে সিসি ক্যামেরা স্থাপন এবং যাত্রী ছাউনিতে বৈদ্যুতিক পাখার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”
ঢাকা/তারেকুর/মাসুদ
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
দৌলতদিয়ায় ফেরির ধাক্কায় ভেঙে গেছে পন্টুনের কবজা, যানবাহন পারাপার ব্যাহত
তীব্র স্রোতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেরির ধাক্কায় ভেঙে গেছে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া ফেরিঘাটের ৩ নম্বর পন্টুনের কবজা। ফলে বন্ধ হয়ে গেছে ঘাটটি। গতকাল সোমবার দিবাগত রাত পৌনে ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
বর্তমানে দৌলতদিয়ায় শুধু ৪ নম্বর ঘাট চালু আছে। এতে যানবাহন পারাপারে মারাত্মক বিঘ্ন ঘটছে এবং সৃষ্টি হয়েছে দীর্ঘ যানজটের।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা কার্যালয় ও ঘাট-সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গতকাল বিকেল থেকে দৌলতদিয়া প্রান্তে পদ্মায় তীব্র স্রোত দেখা দেয়। সন্ধ্যার পর এর তীব্রতা আরও বাড়ে। রাত ১১টার দিকে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া থেকে ছেড়ে আসা রো রো ফেরি শাহ পরান দৌলতদিয়ায় পৌঁছে নিয়ন্ত্রণে রাখতে না পারায় ফেরিটি প্রচণ্ড বেগে ৩ নম্বর ঘাটের পন্টুনে ধাক্কা দিলে কবজা ভেঙে যায়। এর পর থেকে ঘাটটি বন্ধ করে দেওয়া হয়।
এর আগে ২৩ আগস্ট থেকে তীব্র স্রোতের কারণে দৌলতদিয়ার ৭ নম্বর ঘাটও বন্ধ রয়েছে। বর্তমানে চারটি ঘাটের মধ্যে কেবল ৪ নম্বর ঘাট সচল রয়েছে। সেখানে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে যাত্রীবাহী পরিবহন এবং জরুরি কিছু পণ্যবাহী গাড়ি পার করা হচ্ছে। তবে সাধারণ পণ্যবাহী গাড়ি পারাপার বন্ধ রাখা হয়েছে।
দৌলতদিয়া জিরো পয়েন্টে (৩ নম্বর ঘাট) দায়িত্বরত বিআইডব্লিউটিসির নিরাপত্তা পরিদর্শক ইদ্রিস আলী ভূঁইয়া বলেন, গতকাল রাতে ফেরি শাহ পরান ঘাটে ভেড়ার সময় প্রচণ্ড ধাক্কায় পন্টুনের কবজা ভেঙে যায়। তখন থেকে ঘাটটি বন্ধ রাখা হয়।
এদিকে সংসদীয় আসন পুনর্বিন্যাসের প্রতিবাদে ফরিদপুরের ভাঙ্গায় কয়েক দিন ধরে সড়ক অবরোধ করা হচ্ছে। এতে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলা থেকে অনেক গাড়ি দৌলতদিয়া ঘাট দিয়ে পারাপার হচ্ছে। এ কারণেও দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় গাড়ির চাপ পড়ছে। আজ মঙ্গলবার সকালে দৌলতদিয়া প্রান্তে প্রায় দুই কিলোমিটার লম্বা গাড়ির লাইন তৈরি হয়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গাড়ির লাইন আরও লম্বা হচ্ছে। দীর্ঘ সময় আটকে থাকায় চালকসহ যাত্রীদের বাড়তি ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।
সৌহার্দ্য পরিবহনের ঘাট তত্ত্বাবধায়ক মনির হোসেন বলেন, ‘শুধু একটি ঘাট চালু থাকায় যানবাহন স্বাভাবিকভাবে পার হতে পারছে না। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল থেকে আসা ঢাকামুখী গাড়ি আটকে দীর্ঘ লাইন তৈরি হয়েছে। আমাদের চারটি যাত্রীবাহী বাস চার ঘণ্টার বেশি সময় ধরে আটকে আছে। বাসগুলো ফেরিতে উঠতে চার থেকে পাঁচ ঘণ্টার মতো সময় লাগছে।’
বিআইডব্লিউটিসির দৌলতদিয়া কার্যালয়ের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বলেন, তীব্র স্রোতের কারণে ফেরি পারাপারে অনেক বেশি সময় লাগছে। গতকাল রাত পৌনে ১২টার দিকে ৩ নম্বর ঘাটের পন্টুন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এখন শুধু ৪ নম্বর ঘাট চালু রয়েছে। যাত্রীবাহী বাস ও কিছু জরুরি গাড়ি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পার করা হচ্ছে। সাধারণ পণ্যবাহী গাড়ি আপাতত পার করা যাচ্ছে না।