মস্কোতে ঢাকার ‘মাস্তুল’ সিনেমার ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ার
Published: 24th, April 2025 GMT
মস্কো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের ৪৭তম আসরে বাংলাদেশের ‘মাস্তুল’ চলচ্চিত্রের ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ার হয়েছে। বৃহস্পতিবার উৎসবের শেষ দিনে স্থানীয় সময় রাতে রয়েছে ‘মাস্তুল’-এর আরও একটি প্রদর্শনী আছে বলেন জানান নির্মাতা মোহাম্মদ নূরুজ্জামান।
মঙ্গলবার প্রিমিয়ারে ছিলেন চলচ্চিত্রটির নির্মাতা মোহাম্মদ নূরুজ্জামান, অভিনেতা ফজলুর রহমান বাবু, দীপক সুমন ও চিত্রগ্রাহক আরিফুজ্জামান।
জলে ভাসমান জাহাজিদের গল্প নিয়ে নির্মিত ‘মাস্তুল’-এ আরও অভিনয় করেছেন আমিনুর রহমান মুকুল, আরিফ হাসান, সিফাত বন্যা প্রমুখ।
অভিনেতা ফজলুর রহমান বাবু গণমাধ্যমকে বলেন, ‘মস্কোর মতো এত বড় উৎসবে হাজির হতে পারা যে কারও জন্যই সৌভাগ্যের, আমি নিজের অভিনীত কাজ দিয়ে এই উৎসবে হাজির হতে পারায় সৌভাগ্যবান মনে করছি। এই ছবিতে সুযোগ পাওয়াকেও আমি সৌভাগ্যের মনে করি।’
আরেক অভিনেতা দীপক সুমন বলেন, ‘দর্শক এত নিখুঁতভাবে সবকিছু পর্যবেক্ষণ করেছেন, সেটা দেখে আমি বিস্মিত হয়েছি। একজন ভিনদেশি দর্শক তো আমাকে জিজ্ঞেসই করে ফেললেন যে ‘আমি সত্যি সত্যি জাহাজে জব করি কি না! দর্শক ও ক্রিটিকদের এমন ভাবনা নিঃসন্দেহে আমার জন্য বড় প্রাপ্তির।’
নির্মাতা নূরুজ্জামান বলেন, ‘আমার সবচেয়ে যে বিষয়টি তৃপ্তির লেগেছে, সেটা হলো উৎসবের প্রজেকশন সিস্টেম। এত দারুণ স্ক্রিন, এত বিশাল! সেই সঙ্গে সাউন্ডসহ টেকনিক্যাল সব বিষয়ে ভীষণ তৃপ্তি পেয়েছি “মাস্তুল”-এর প্রিমিয়ারে। সব ঠিক থাকলে ২৬ এপ্রিল ঢাকায় ফিরবে টিম ‘মাস্তুল’।’
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: চলচ চ ত র
এছাড়াও পড়ুন:
তুলশীগঙ্গার তীরে সন্ন্যাসতলীর শতবর্ষী ঘুড়ির মেলা
জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার মামুদপুর ইউনিয়নের মহব্বতপুর গ্রাম ঘেঁষে তুলশীগঙ্গা নদীর অদূরে সন্ন্যাসতলীর বটতলা। জায়গাটিতে প্রায় একশ বছর আগে থেকে বাংলা জ্যৈষ্ঠ মাসের শেষ শুক্রবার আয়োজন হয় ঘুড়ির মেলা। এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি। অন্তত ৫০ গ্রামের হাজারো মানুষের উপস্থিতিতে শুক্রবার সন্ন্যাসতলী ঘুড়ি উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মেলার দিনক্ষণ মনে রেখে সময়মতো দোকানিদের পাশাপাশি দর্শনার্থীরা ভিড় জমান নিভৃত পল্লীতে। আগে মেলার দিন বৃষ্টি হওয়া যেন নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছিল। কিন্তু এবার ব্যতিক্রম ঘটনা ঘটেছে। প্রচণ্ড গরম ও তাপপ্রবাহের মধ্যেই চলে এ আয়োজন। বৈরী পরিবেশের কারণে উৎসবের স্বাভাবিক কর্মকাণ্ডে কিছুটা ব্যাঘাত ঘটেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
স্থানীয় প্রবীণ বাসিন্দারা বলছেন, সন্ন্যাসতলীর এ ঘুড়ি উৎসব শুরুর দিন বিকেলে বটতলায় স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায় সন্ন্যাস পূজা পালন করেন। তাদের এ পূজা-অর্চনা ঘিরেই মূলত এ মেলার উৎপত্তি। তবে শুরুর কথা কেউ বলতে পারেননি। প্রবীণরা শুধু জানেন, একশ বছরের বেশি সময় ধরে তারা এ মেলার আয়োজন দেখে আসছেন।
মেলার নিজস্ব জায়গা না থাকলেও এর ব্যাপ্তি প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে। প্রচণ্ড গরমের মধ্যেই এক দিনের এ মেলা ঘিরেই জেলার জামালগঞ্জ চারমাথা থেকে ঐতিহাসিক আছরাঙ্গাদীঘি পর্যন্ত রকমারি পণ্যের দোকান বসে। এখান থেকে সংসারের প্রয়োজনীয় বিভিন্ন আসবাব থেকে শুরু করে ছোট মাছ ধরার বাঁশের তৈরি পণ্য খলসানি, টোপা, ডালা, চালুন কিনে নেন অনেকে।
সুতার তৈরি তৌরা জাল, গৃহস্থালি কাজে ব্যবহৃত দ্রব্যাদি, বিভিন্ন ধরনের খেলনা, মিষ্টান্ন, প্রসাধনী, মাটির তৈজসপত্রসহ বিভিন্ন সামগ্রী বিক্রি হয়। শিশুদের বিনোদনের জন্য ছিল নাগরদোলার ব্যবস্থাও। আর মেলার বড় আকর্ষণ ঘুড়ি ওড়ানো ও বিক্রি। পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন জেলা থেকে ব্যবসায়ীরা এসেছিলেন ঘুড়ি বিক্রি করতে।
প্রচণ্ড গরমের পাশাপাশি তেমন হাওয়া-বাতাস না থাকায় এবার ঘুড়ি ওড়ানোর প্রতিযোগিতা সেভাবে জমে ওঠেনি। তবে ঘুড়ি বেচাকেনা ও শিশু-কিশোরদের উচ্ছ্বাস ছিল চোখে পড়ার মতো। এ উপলক্ষে আসা হাজার হাজার দর্শনার্থীর নিরাপত্তার জন্য মেলায় সার্বক্ষণিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের টহল ছিল।
আদমদীঘির শিববাটি গ্রামের ঘুড়ি ব্যবসায়ী সালাম হোসেনের ভাষ্য, সন্ন্যাসতলীর মেলা বড় হওয়ায় তিনি এসেছেন ঘুড়ি বিক্রির জন্য। মেলায় প্রত্যাশা অনুযায়ী ঘুড়ি বিক্রি করতে পেরে তিনি খুশি। জয়পুরহাটের পার্বতীপুর এলাকার ঘুড়ি ব্যবসায়ী মফিজ উদ্দিন ও মজনু সরদার বলেন, পূর্বপুরুষের আমল থেকে এ মেলার কথা শুনে আসছেন তারা।
মেলা উদযাপন ও পূজা কমিটির সদস্য মহব্বতপুর গ্রামের মন্টু মণ্ডল বলেন, মেলাটি হিন্দু সম্প্রদায়ের হলেও এটি আসলে সব ধর্মালম্বীর মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে।
মামুদপুর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মিলন হোসেনের ভাষ্য, এক দিনের আয়োজনে যে এত লোকের সমাগম হতে পারে, তা চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন। মেলায় যেন অনৈতিক কর্মকাণ্ড না হয়, সে ব্যাপারে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
ক্ষেতলাল থানার ওসি মোহাম্মদ ফরিদ হোসেন বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এবং মেলায় আসা দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ প্রশাসন সতর্ক আছে। মেলায় অনৈতিক আচরণ লক্ষ্য করা গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।