আগামী বছর শ্রদ্ধা জানানোর আগে বিচারের বড় অংশ সম্পন্ন হবে: শ্রমসচিব
Published: 24th, April 2025 GMT
রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের প্রতি আগামী বছর শ্রদ্ধা জানানোর আগেই ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের বড় একটি অংশ সম্পন্ন করা হবে বলে জানিয়েছেন শ্রমসচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান। বৃহস্পতিবার দুপুরে সাভার বাসস্ট্যান্ডের অদূরে ধসে পড়া রানা প্লাজার সামনে নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে অস্থায়ী প্রতিবাদ-প্রতিরোধ শহীদবেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে এসে তিনি সাংবাদিকদের এ কথাগুলো বলেন।
শ্রমসচিব বলেন, এই মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি জরুরি হলো রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিদের বিচার করা, যেটি গত ১২ বছরে হয়নি। ইতিমধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আগামী বছর নিহত ব্যক্তিদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর আগেই বিচারের একটি বড় অংশ সম্পন্ন করা হবে। এর বাইরে আহত শ্রমিকদের পুনর্বাসন, চিকিৎসা কীভাবে করা যায়, সে ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। সরকার, শ্রমিক ও মালিক একসঙ্গে কাজ করছে শোভন কর্মপরিবেশের জন্য। শ্রমিকদের অধিকার নিশ্চিত করা গেলে দেশের উন্নয়ন হবে।
এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, ‘রানা প্লাজা ধসের এক যুগ পার হলো। এরপরও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যে শ্রম অধিকার রয়েছে, সেটি আমরা এখনো পুরোপুরি বাস্তবায়ন করতে পারিনি। রানা প্লাজার ঘটনা সারা বিশ্বকে দেখিয়ে দিয়েছে, বাংলাদেশে শ্রম অধিকার মানা হয়নি। রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় রানা প্লাজার মালিক, এই ভবন নির্মাণের অনুমতি যাঁরা দিয়েছেন তাঁরা এবং এর সঙ্গে সরকারি যে দপ্তরগুলো যুক্ত ছিল, তাঁদের সবার অবহেলা ছিল।’
শ্রমসচিব আরও বলেন, ‘এ ঘটনার পর বিশ্বব্যাপী যখন হইচই পড়ে গেল, আমাদের ব্র্যান্ড বায়াররা আসল, অ্যাকোর্ড অ্যালায়েন্স আসল, এর মধ্যে যেটি হলো আমাদের কারখানাগুলো বিশেষ করে আরএমজি ফ্যাক্টরিগুলো কমপ্লায়েন্সের আওতায় এসেছে। জুরাইন কবরস্থানে অজ্ঞাতনামা হিসেবে ২৫১টি মরদেহ দাফন করা হয়েছে। আমার মনে হয় সরকারের পক্ষ থেকে এবারই প্রথম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে রানা প্লাজায় নিহত শ্রমিকদের শ্রদ্ধা জানানো হলো।’
মামলার নথিপত্রের তথ্যমতে, ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় ১ হাজার ১৩৫ জন নিহত এবং ১ হাজার ১৬৯ জন গুরুতর আহত হয়ে পঙ্গু হন। ওই ঘটনায় মোট মামলা হয়েছিল ২০টি। এর মধ্যে তিনটি ফৌজদারি মামলা। শ্রমিক নিহতের ঘটনায় রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানাসহ অন্যদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা করে পুলিশ।
আর ইমারত নির্মাণ আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে একটি মামলা করে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) এবং ভবন নির্মাণসংক্রান্ত দুর্নীতির অভিযোগে একটি মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। হত্যা মামলাটি বর্তমানে ঢাকার জেলা জজ আদালতে বিচারাধীন। অন্য দুটি মামলা ঢাকার আদালতে বিচারাধীন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: শ রমসচ ব
এছাড়াও পড়ুন:
সবাই ভেবেছিলেন কিশোরী ডুবে গেছে, ১০ দিন পর ফোন করে জানাল সে গাজীপুরে আছে
১০ দিন আগে কুষ্টিয়ার কুমারখালীর মরা কালিগঙ্গা নদীতে গোসল করতে গিয়েছিল কিশোরী সোহানা খাতুন। বাড়িতে ফিরে না আসায় পরিবারের সদস্য ও এলাকাবাসী তাকে খুঁজতে শুরু করেন। পরে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল নদীতে অভিযান চালিয়েও তার সন্ধান পায়নি। তবে গত বুধবার রাতে মাকে ফোন করেছে সোহানা; জানিয়েছে সে গাজীপুরে প্রাক্তন স্বামীর কাছে আছে।
নিখোঁজ হওয়া কিশোরীর নাম সোহানা খাতুন। তার বাড়ি কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার বাগুলাট ইউনিয়নের বাঁশগ্রাম কারিগর পাড়ায়। তার বাবা গোলাম মওলা ও মা শিরিনা খাতুন।
পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯ জুলাই দুপুরে বাড়ির পাশের মরা কালিগঙ্গা নদীতে গোসল ও কাপড় ধুতে গিয়েছিল সোহানা। দীর্ঘ সময়েও না ফেরায় তার মা নদীর ধারে যান; দেখেন, সোহানার কাপড় পড়ে আছে। এরপর স্বজন ও এলাকাবাসী তাকে খুঁজতে শুরু করেন। খবর পেয়ে ওই রাতে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল নদীতে উদ্ধার অভিযান চালায়। পরদিন খুলনা ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল ১২ ঘণ্টা অভিযান চালিয়েও তার সন্ধান না পেয়ে অভিযান স্থগিত করে। ২১ জুলাই এক কবিরাজ এনে নদীতে খোঁজার চেষ্টাও করেন সোহানার বাবা–মা।
এমন অবস্থায় বুধবার রাতে হঠাৎ সোহানা তার মায়ের ফোনে কল দিয়ে জানায়, সে ঢাকার গাজীপুরে তার প্রাক্তন স্বামীর কাছে রয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান সোহানার বাবা গোলাম মওলা। তিনি বলেন, ‘প্রথমে ভেবেছিলাম, মেয়ে নদীতে ডুবে গেছে। সবাই মিলে খোঁজাখুঁজি করেছি। এমনকি কবিরাজও এনেছিলাম। কিন্তু হঠাৎ বুধবার আমার স্ত্রীকে ফোন দিয়ে জানায়, সে প্রাক্তন স্বামীর কাছে আছে। আমরা বিষয়টি গতকাল রাতে পুলিশকে জানিয়েছি।’ বিষয়টি বুঝতে না পেরে সবাইকে কষ্ট দেওয়ার জন্য তিনি ক্ষমা চান।
স্থানীয় লোকজন জানান, প্রায় দুই বছর আগে খালাতো ভাই কুতুব উদ্দিনের সঙ্গে পালিয়ে যায় সোহানা এবং দুজন বিয়ে করে। তবে বনিবনা না হওয়ায় তিন মাস আগে সোহানা তাকে তালাক দিয়ে বাবার বাড়ি চলে আসে। নদীতে নিখোঁজ হওয়ার ‘নাটক’ করে সে পালিয়ে গেছে।
এ বিষয়ে কুমারখালী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আমিরুল ইসলাম বলেন, শুরুতে পরিবারের লোকজন জানিয়েছিল, নদীতে গোসলে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছে সোহানা। গতকাল আবার তার বাবা জানিয়েছে, মেয়ে গাজীপুরে প্রাক্তন স্বামীর কাছে আছে।