রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের প্রতি আগামী বছর শ্রদ্ধা জানানোর আগেই ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের বড় একটি অংশ সম্পন্ন করা হবে বলে জানিয়েছেন শ্রমসচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান। বৃহস্পতিবার দুপুরে সাভার বাসস্ট্যান্ডের অদূরে ধসে পড়া রানা প্লাজার সামনে নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে অস্থায়ী প্রতিবাদ-প্রতিরোধ শহীদবেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে এসে তিনি সাংবাদিকদের এ কথাগুলো বলেন।

শ্রমসচিব বলেন, এই মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি জরুরি হলো রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিদের বিচার করা, যেটি গত ১২ বছরে হয়নি। ইতিমধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আগামী বছর নিহত ব্যক্তিদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর আগেই বিচারের একটি বড় অংশ সম্পন্ন করা হবে। এর বাইরে আহত শ্রমিকদের পুনর্বাসন, চিকিৎসা কীভাবে করা যায়, সে ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। সরকার, শ্রমিক ও মালিক একসঙ্গে কাজ করছে শোভন কর্মপরিবেশের জন্য। শ্রমিকদের অধিকার নিশ্চিত করা গেলে দেশের উন্নয়ন হবে।

এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, ‘রানা প্লাজা ধসের এক যুগ পার হলো। এরপরও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যে শ্রম অধিকার রয়েছে, সেটি আমরা এখনো পুরোপুরি বাস্তবায়ন করতে পারিনি। রানা প্লাজার ঘটনা সারা বিশ্বকে দেখিয়ে দিয়েছে, বাংলাদেশে শ্রম অধিকার মানা হয়নি। রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় রানা প্লাজার মালিক, এই ভবন নির্মাণের অনুমতি যাঁরা দিয়েছেন তাঁরা এবং এর সঙ্গে সরকারি যে দপ্তরগুলো যুক্ত ছিল, তাঁদের সবার অবহেলা ছিল।’

শ্রমসচিব আরও বলেন, ‘এ ঘটনার পর বিশ্বব্যাপী যখন হইচই পড়ে গেল, আমাদের ব্র্যান্ড বায়াররা আসল, অ্যাকোর্ড অ্যালায়েন্স আসল, এর মধ্যে যেটি হলো আমাদের কারখানাগুলো বিশেষ করে আরএমজি ফ্যাক্টরিগুলো কমপ্লায়েন্সের আওতায় এসেছে। জুরাইন কবরস্থানে অজ্ঞাতনামা হিসেবে ২৫১টি মরদেহ দাফন করা হয়েছে। আমার মনে হয় সরকারের পক্ষ থেকে এবারই প্রথম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে রানা প্লাজায় নিহত শ্রমিকদের শ্রদ্ধা জানানো হলো।’

মামলার নথিপত্রের তথ্যমতে, ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় ১ হাজার ১৩৫ জন নিহত এবং ১ হাজার ১৬৯ জন গুরুতর আহত হয়ে পঙ্গু হন। ওই ঘটনায় মোট মামলা হয়েছিল ২০টি। এর মধ্যে তিনটি ফৌজদারি মামলা। শ্রমিক নিহতের ঘটনায় রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানাসহ অন্যদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা করে পুলিশ।

আর ইমারত নির্মাণ আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে একটি মামলা করে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) এবং ভবন নির্মাণসংক্রান্ত দুর্নীতির অভিযোগে একটি মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। হত্যা মামলাটি বর্তমানে ঢাকার জেলা জজ আদালতে বিচারাধীন। অন্য দুটি মামলা ঢাকার আদালতে বিচারাধীন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: শ রমসচ ব

এছাড়াও পড়ুন:

আজ মুখোমুখি শ্রীলঙ্কা-আফগানিস্তান, যে ম্যাচে ঝুলছে বাংলাদেশের ভাগ্য

এশিয়া কাপে আজকের রাত যেন এক নাটকীয় অধ্যায়। ‘বি’ গ্রুপের শেষ ম্যাচে আবুধাবির মাঠে মুখোমুখি হবে শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তান। বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৮টায় শুরু হওয়া এই লড়াই কেবল দুই দলের নয়, এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে বাংলাদেশের ভাগ্যও। কোটি টাইগার সমর্থক তাই আজ তাকিয়ে থাকবে টিভি পর্দায়। কারণ, এই ম্যাচেই নির্ধারিত হবে, বাংলাদেশ কি সুপার ফোরে উড়াল দেবে, নাকি গ্রুপ পর্বেই শেষ হবে স্বপ্নযাত্রা।

গ্রুপের সমীকরণ এখন টানটান নাটকের মতো। তিন ম্যাচে পূর্ণ ৪ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে শ্রীলঙ্কা। সমান ৪ পয়েন্ট থাকলেও রান রেটে পিছিয়ে দ্বিতীয় স্থানে বাংলাদেশ। আফগানিস্তানের ঝুলিতে আছে ২ পয়েন্ট; এক জয় ও এক হারের ফল। হংকং অবশ্য তিন ম্যাচেই হেরে অনেক আগেই বিদায় নিয়েছে।

আরো পড়ুন:

আমিরাতকে হারিয়ে সুপার ফোরে পাকিস্তান

আরব আমিরাতকে ১৪৭ রানের টার্গেট দিল পাকিস্তান

এখন হিসাবটা এমন—
আফগানিস্তান হেরে গেলে বাংলাদেশ নিশ্চিতভাবেই সুপার ফোরে।
আফগানিস্তান জিতলে সমীকরণ জটিল হবে। তখন শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশের পয়েন্ট সমান ৪ হলেও নেট রান রেটে স্পষ্ট এগিয়ে থাকবে আফগানরা (২.১৫০)। শ্রীলঙ্কার রান রেট ১.৫৪৬, আর বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে -০.২৭০-তে।

অর্থাৎ আফগানিস্তান যদি জেতে, তবে বাংলাদেশকে তাকিয়ে থাকতে হবে এক অসম্ভব সমীকরণের দিকে। সেটা হলো- লঙ্কানদের অন্তত ৭০ রানের ব্যবধানে হারতে হবে এবং তা করতে হবে ৫০ বল হাতে রেখে। অন্যথায় রান রেটের খেলায় পিছিয়েই থাকতে হবে টাইগারদের। তবে বৃষ্টি যদি হানা দেয় কিংবা ম্যাচ কোনো কারণে পরিত্যক্ত হয়, তাহলে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা দু’দলই নিশ্চিতভাবেই চলে যাবে সুপার ফোরে।

ম্যাচকে ঘিরে দুই শিবিরেই চাপ-উত্তেজনার আবহ। আফগানিস্তানের অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার গুলবাদিন নাইব মনে করেন, চাপটা আসলে শ্রীলঙ্কার ওপরই বেশি, “আমরা এসব টুর্নামেন্ট খেলতে অভ্যস্ত, আমাদের কোনো চাপ নেই। শ্রীলঙ্কা ভালো দল ঠিকই, তবে তারাও চাপে থাকবে। আমার মনে হয় দারুণ একটা ম্যাচ হবে।”

অন্যদিকে শ্রীলঙ্কার অলরাউন্ডার দাসুন শানাকা বাংলাদেশ প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “প্রতিটি ম্যাচই আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। হ্যাঁ, বাংলাদেশের সমর্থকরা আমাদের জয়ের জন্য অপেক্ষা করছে। আমরাও জয়ের লক্ষ্যেই মাঠে নামব।”

হংকংয়ের বিপক্ষে জিতলেও শ্রীলঙ্কাকে ঘাম ঝরাতে হয়েছিল। সেই অভিজ্ঞতা বলছে, আফগানিস্তানের বিপক্ষে জয়টা সহজ হবে না তাদের জন্যও। শেষ পর্যন্ত কারা হাসবে জয়ের হাসিতে, আর কোন সমীকরণে দাঁড়াবে বাংলাদেশের ভাগ্য; এই প্রশ্নের উত্তরই দেবে আজকের আবুধাবির রাত।

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ