ঢাকার সাভারের আশুলিয়ায় ‘ন্যাচারাল উল ওয়্যারস লিমিটেড’ নামের একটি কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার কারখানার ফটকে সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) সৈয়দ মিলাদুল হুদা স্বাক্ষরিত এক নোটিশে আজ শনিবার থেকে কারখানাটি বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

পূর্বঘোষণা ছাড়াই কারখানা বন্ধ ঘোষণার প্রতিবাদে এবং খুলে দেওয়ার দাবিতে কারখানার পাশে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত অবস্থান নেন শ্রমিকেরা।

কারখানার ফটকে টানানো নোটিশে বলা হয়, ‘ন্যাচারাল উল ওয়্যারস লিমিটেডে কর্মরত শ্রমিক, কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের অবগতির জন্য জানানো যাইতেছে যে সব বেতন–ভাতা ও ওভারটাইম পরিশোধের পরেও শ্রমিকদের দাঙ্গাহাঙ্গামা, জোরপূর্বক কাজ বন্ধ রাখা ও বেআইনি ধর্মঘট, অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে শ্রমিক, কর্মচারী, কর্মকর্তা ও কারখানার সার্বিক নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬-এর ধারা ১৩ (১) অনুযায়ী ২৬ এপ্রিল শনিবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কারখানা লে-অফ ঘোষণা করা হলো। কারখানা পরিচালনার ক্ষেত্রে অনুকূল পরিবেশ তৈরি হলে নোটিশের মাধ্যমে কারখানা খোলার তারিখ পরে জানানো হবে।’

এদিকে কারখানা বন্ধের প্রতিবাদে ও দ্রুত কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে আজ সকালে কারখানার পাশে একটি মাঠে অবস্থান নেন শ্রমিকেরা। পরে বেলা সাড়ে ১২টার দিকে তাঁরা সেখান থেকে চলে যান। কারখানার শ্রমিকেরা অভিযোগ করেন, মিথ্যা অভিযোগ তুলে কারখানা কর্তৃপক্ষ কোনো ধরনের পূর্বঘোষণা ছাড়াই কারখানা বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কারখানার এক শ্রমিক প্রথম আলোকে বলেন, মূলত বেতন নিয়ে সমস্যা। প্রতি মাসের ৭ থেকে ১০ তারিখের মধ্যে বেতন দেওয়ার কথা। কিন্তু কয়েক মাস ধরে সময়মতো বেতন দিচ্ছে না। প্রতি মাসেই আন্দোলন করে বেতন নিতে হয়। গত মার্চ মাসের বেতন চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে পরিশোধের কথা থাকলেও মালিকপক্ষ একটি সেকশনের বেতন দেয়। বাকিদের ২২ এপ্রিল দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বেতন না দেওয়ায় সবাই কাজ বন্ধ করে দেন। পরদিন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় অন্য শ্রমিকদের বেতন দেওয়া হয়। আজ (শনিবার) সকালে কারখানার এসে দেখেন কারখানা বন্ধ।

আরেক শ্রমিক বলেন, কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে সকাল থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত কারখানার পাশের মাঠে অবস্থান নিয়েছিলেন শ্রমিকেরা। মালিকের সঙ্গে কথা বলে কারখানা কবে খুলবে জানাবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

এ ব্যাপারে কারখানা কর্তৃপক্ষের কারও সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। আশুলিয়া শিল্পাঞ্চল পুলিশ-১-এর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোমিনুল ইসলাম ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, বৃহস্পতিবার বেতন পরিশোধ নিয়ে কারখানায় উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল রাতে কারখানা বন্ধের একটি নোটিশ টাঙিয়ে দেয় কর্তৃপক্ষ। শ্রমিকেরা আজ সকালে এসে কারখানা বন্ধ দেখতে পেয়ে পাশের মাঠে অবস্থান নেন। পরে তাঁরা চলে যান। মালিকপক্ষ ও শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনার মধ্য দিয়ে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা চলছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অবস থ ন ন র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

সচিবালয়ে আবারও বিক্ষোভ কর্মচারীদের

‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ বাতিলের দাবিতে ঈদের ছুটি শেষে অফিস খোলার একদিন পর আজ সোমবার আবারও সচিবালয়ের ভেতর বিক্ষোভ করছেন সচিবালয়ের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের আন্দোলনকারী কর্মচারীরা। বিক্ষোভ শেষে আজ সরকারের আরও তিন উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দেওয়ার কথা রয়েছে।

পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী, কর্মচারীরা মিছিল করে সচিবালয়ের বাদামতলায় জমায়েত হন। সেখানে তারা অধ্যাদেশটি বাতিলের দাবিতে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দেন। পরে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নতুন ভবনের নিজে জড়ো হয়ে অধ্যাদেশটি বাতিলের দাবি জানান। তাঁদের স্লোগান ছিল ' অবৈধ কালো আইন মানি না' ইত্যাদি।

‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ বাতিলের দাবিতে বেশ কিছু দিন ধরে ধরে আন্দোলন করছেন সচিবালয়ে কর্মরত বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মচারীরা। আন্দোলন চলার মধ্যেই অধ্যাদেশটি জারি করে সরকার। এর পর থেকে বিক্ষোভ, কর্মবিরতি ও স্মারকলিপি দেওয়ার মতো কর্মসূচি পালন করছেন আন্দোলনকারী কর্মচারীরা।

ঈদের ছুটি শুরু আগে কর্মচারীরা অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ,আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, খাদ্য ও ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ, সড়ক পরিবহন ও সেতু এবং রেলপথ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, খাদ্য, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন ও পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, স্থানীয় সরকার, পল্লি উন্নয়ন ও সমবায় এবং যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বরাবর স্মারকলিপি জমা দেন।

তারই ধারাবাহিকতায় আজ স্বরাষ্ট্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, গৃহায়ন ও গণপূর্ত এবং শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান এবং সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদের কাছে স্মারকলিপি দেওয়ার কথা রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ