সব ধর্মীয় আচার-আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করার মাধ্যমে পোপ ফ্রান্সিসকে সমাহিত করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে ভ্যাটিকান কর্তৃপক্ষ। ভ্যাটিকানের সীমানার বাইরে সান্তা মারিয়া মাজ্জোরে ব্যাসিলিকায় তাকে সমাহিত করা হয়। গত ১০০ বছরের মধ্যে এই প্রথম কোনো পোপকে ভ্যাটিকানের বাইরে সমাহিত করা হলো।
শনিবার পোপের শেষকৃত্যানুষ্ঠানে চার লাখের বেশি মানুষ অংশ নেয় বলে নিশ্চিত করেছে ভ্যাটিকান কর্তৃপক্ষ। খবর বিবিসির
এক বিবৃতিতে ভ্যাটিকান বলেছে, এক শতাব্দীরও বেশি সময়ের মধ্যে পোপই প্রথম যাকে ভ্যাটিকানের বাইরে সমাহিত করা হয়েছে এবং সমাধিস্থ করার সময় কেবল পোপের নিকটতম ব্যক্তিদেরই সেখানে অংশ নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়।
ইতালির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাত্তেও পিয়ান্তেদোসি মতে, পোপ ফ্রান্সিসের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার জন্য আজ ভ্যাটিকান সিটিতে কমপক্ষে চার লাখ মানুষ জড়ো হয়েছিল এবং তার কফিনটি দাফনের জন্য সান্তা মারিয়া মাজ্জোরে ব্যাসিলিকায় নিয়ে যাওয়া দেখার জন্য রাস্তায় সারিবদ্ধ হয়েছিল।
তিনি বলেন, আমরা অনুমান করছি সেন্ট পিটার্স স্কয়ারে উপস্থিত এবং পথের পাশে থাকা লোকদের সংখ্যা চার লাখের কম নয়।
এই শেষকৃত্যানুষ্ঠানে যোগ দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, যুক্তরাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ের স্টারমার, ফ্রান্সের ইমানুয়েল ম্যাক্রো, বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসসহ বিশ্ব নেতারা।
আর্জেন্টিনায় জন্ম নেওয়া ফ্রান্সিস ৮৮ বছর বয়সে গত সপ্তাহে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। তার মৃত্যুর পরপরই প্রায় দেড়শ কোটি অনুসারীর ক্যাথলিক চার্চ পোপ বিদায়ের প্রাচীন রীতি ও আনুষ্ঠানিকতা শুরু করে।
শ্রদ্ধা জানাতে বুধবার সকাল থেকে শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত পোপের মরদেহ ষোড়শ শতাব্দীতে নির্মিত সেইন্ট পিটার’স ব্যাসিলিকায় শায়িত রাখা হয়। এই সময়ের মধ্যে প্রায় আড়াই লাখ মানুষ তার কফিনকে আবর্তন করেছে বলে জানিয়েছে ভ্যাটিকান।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
সবার নজরের বাইরে থাকা চৈতী দেশের জন্য আনল স্বর্ণপদক
একটু বড় হওয়ার পর মেয়েকে দেখে চিন্তায় পড়ে যান মা–বাবা। অন্য শিশুদের মতো বাড়ছে না সে। হাত–পা ছোট, উচ্চতাও থমকে গেছে। পরে বুঝতে পারেন—চৈতী বামন।
যে মেয়েকে নিয়ে একসময় দুশ্চিন্তার পাহাড়ে আটকা পড়েছিল পরিবার, আজ সেই চৈতীই আনন্দের আলো ছড়াচ্ছে। দেশের জন্য প্রথমবারের মতো এশিয়ান ইয়ুথ প্যারা গেমসে স্বর্ণপদক এনে দিয়েছে চৈতী রানী দেব।
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার ভূনবীর গ্রামের শিলু রানী দেব ও সত্য দেবের মেয়ে চৈতীর বয়স ১৩ বছর। উচ্চতা মাত্র ৩ ফুট ৭ ইঞ্চি। কিন্তু তার লক্ষ্য নিজেকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাওয়া । সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে চলমান এশিয়ান ইয়ুথ প্যারা গেমস ২০২৫–এ বর্শা নিক্ষেপ ও ১০০ মিটার দৌড়ে সে জিতে নিয়েছে দুটি স্বর্ণপদক। ৭ ডিসেম্বর এই প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে, চলবে ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
চৈতীর প্রতিভা আছে। অনুশীলনে সে খুব আন্তরিক। সে কিছু করতে চায়। আশা করছি, ওকে দিয়ে একটা ভালো ফলাফল পাবমেহেদী হাসান, বিকেএসপির প্রধান প্রশিক্ষকচৈতীর স্বর্ণপদক পাওয়ার বিষয়টি দুবাই থেকে প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন স্পোর্টস ফর হোপ অ্যান্ড ইনডিপেনডেন্সের (শি) প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী শারমিন ফারহানা চৌধুরী।
যে মেয়েকে সবাই দেখত শুধু উচ্চতায়ভূনবীর দশরথ হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী চৈতী একসময় গ্রামবাসীর নজরে পড়ত শুধু তার খর্বাকৃতির জন্য। খেলাধুলায় তার যে অসাধারণ প্রতিভা আছে, তা ছিল চোখের আড়ালে।
তবে এই ছবি এখন বদলে গেছে। গ্রামবাসী বাড়িতে এসে খোঁজ নেন। শিক্ষকেরা খেলতে উৎসাহ দেন, ছবি তোলেন। স্কুলে সে এখন ‘তারকা’।
দুবাইয়ে বর্শা নিক্ষেপে স্বর্ণপদক জয়ের পর চৈতী