চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জনবল ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জামের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটিতে কিছু চিকিৎসা সরঞ্জাম থাকলেও দক্ষজনবল না থাকার কারণে সেগুলো ব্যবহৃত হচ্ছে না। দিনে দিনে সরঞ্জামগুলো অকেজো হয়ে পড়ছে। ফলে সরকারি এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগিরা তাদের কাঙ্খিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এখানে চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া হলেও তারা বেশি দিন থাকতে চান না। ফলে শূন্যই থাকে পদগুলো।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, ভোলাহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৩৭টি পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন ৯১ জন। ৪৬ জনের পদ ফাঁকা রয়েছে। জুনিয়র কনসালটেন্ট, আবাসিক মেডিকেল অফিসার, মেডিকেল অফিসার, সহকারী সার্জনসহ ১৬টি শূন্য আছে। নেই নার্সিং সুপারভাইজারও। প্রধান সহকারী কাম হিসাবরক্ষক, পরিসংখ্যানবিদ, স্টোর কিপার, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর, হেলথ এডুকেটর, কম্পিউটার অপারেটর, স্যাকমো, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ফিজিও), মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ইপিআই), স্বাস্থ্য সহকারীসহ মোট ৬১টি পদের মধ্যে ১৬টিই শূন্য। এছাড়া চতুর্থ শ্রেণির নিরাপত্তা কর্মী, এমএলএসএস, মালি, ওয়ার্ডবয়, কুক, আয়া, ঝাড়ুদারসহ ২০টি পদের মধ্যে ১৩টিই শূন্য রয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভোলাহাট উপজেলাটি জেলার মধ্যে সবচেয়ে ছোট এবং ভারতীয় সীমান্তবর্তী উপজেলাগুলোর একটি। জেলা শহর থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরে উপজেলাটির অবস্থান। এখানে দেড় লক্ষ মানুষের বসবাস। তাদের জন্য আছে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট একটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটিতে জনবলের অভাবে স্বাস্থ্যসেবা ব্যহত হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট জানান, যথাযথ নিয়মেই ভোলাহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসকসহ অন্য পদের জনবলকে নিয়োগ দেওয়া হয়। কিন্তু এখানে কাজ করতে অনাগ্রহে ফলে অন্য জায়গায় বদলির সিদ্ধান্ত নেন তারা। ফলে ফলে শূন্যপদ সহজে পূরণ হয় না। সেজন্য রোগিরা এখানে কাঙ্খিত সেবা পান না। বাধ্য হয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহর বা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যেতে হয় তাদের। 

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আধুনিক কিছু চিকিৎসা সরঞ্জাম থাকলেও দক্ষজনবলের অভাবে সেগুলো ব্যবহৃত হচ্ছে না। প্রশিক্ষিত চিকিৎসক না থাকায় কেউ সেগুলো চালানোর দায়িত্ব নিতে পারছেন না। ফলে রোগিরা আধুনিক চিকিৎসা সুবিধা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন। বহির্বিভাগে ৪৭ প্রকার ওষুধের নাম লিখা থাকলেও রোগীদের দেওয়া হয় ২০-২৫ প্রকার ওষুধ। বহির্বিভাগে দৈনিক প্রায় ৩০০ করে রোগী হয়। দীর্ঘ লাইনে ভোগান্তিতে পড়ে রোগীরা। অধিক পরিমাণ রোগি দেখার চাপে থাকতে হয় চিকিৎকদের।

ভোলাহাট উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.

মাহাবুব হাসান বলেন, “স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেটি দীর্ঘদিন ধরে জনবল সংকট। একটি বড় সমস্যা। চিকিৎসকরা এখানে কাজ করতে অনিহা প্রকাশ করেন। জনবলের অনেক পদ শূন্য থাকায় আমাদেরকে সীমিত জনবল দিয়েই প্রতিদিন গড়ে তিন শতাধিকেরও বেশি রোগিকে চিকিৎসা দিতে হয়। আমি নিজেও প্রতিদিন রোগী দেখি যাতে কেউ সেবা থেকে বঞ্চিত না হয়।” 

তিনি আরও বলেন, “আমাদের এখানে কিছু আধুনিক যন্ত্রপাতি থাকলেও অভিজ্ঞ ও প্রশিক্ষিত জনবলের অভাবে সেগুলো ব্যবহার করা যাচ্ছে না। আমরা সরকারের সরবরাহ অনুযায়ী সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি রোগীদের প্রয়োজনীয় ওষুধ সরবরাহ করতে।”

ঢাকা/শিয়াম/এস

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ব স থ য কমপ ল ক স ভ ল হ ট উপজ ল সরঞ জ ম জনবল র থ কল ও সহক র

এছাড়াও পড়ুন:

গুলি ছুড়ে প্রহরীদের ভয় দেখিয়ে বনের গাছ কেটে নিল দুর্বৃত্তরা

হবিগঞ্জে বনে ঢুকে ফাঁকা গুলি ছুড়ে ও বনপ্রহরীদের ভয় দেখিয়ে ২০ থেকে ২৫টি গাছ কেটে নিয়ে গেছে একদল দুর্বৃত্ত। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে তিনটায় জেলার চুনারুঘাট উপজেলায় অবস্থিত দেশের অন্যতম বনাঞ্চল রেমা–কালেঙ্গায় এ ঘটনাটি ঘটে।

বন বিভাগের হবিগঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক মো. জয়নাল আবেদীন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের জনবল কম। যে কারণে ৫০ থেকে ৬০ জনের বনদস্যু দল বনের ভেতরে ঢুকে আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে ফাঁকা গুলি ছুড়ে আতঙ্ক তৈরি করে এ ঘটনাটি ঘটিয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে।’

১ হাজার ৮০০ একর আয়তনের এই সংরক্ষিত বনের ভেতরে সেগুনগাছসহ নানা প্রজাতির গাছগাছালি রয়েছে। সম্প্রতি এ বনের গাছ কেটে নেওয়াসহ নানা অপরাধের ঘটনা ঘটছে।

বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গতকাল দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে বনের হিমানিয়া বাজারসংলগ্ন এলাকা দিয়ে ৫০ থেকে ৬০ দুর্বৃত্ত প্রবেশ করে। তারা বনে ঢুকে প্রথমে ফাঁকা গুলি ছোড়ে। গুলির আওয়াজ শুনে বনপ্রহরীরা এগিয়ে গেলে তাঁদের লক্ষ্য করেও গুলি চালায় দুর্বৃত্তরা। এ সময় প্রহরীরা পাল্টা গুলি চালান। একপর্যায়ে বনদুস্যদের তাড়া খেয়ে বনপ্রহরীরা ঘটনাস্থল থেকে চলে যান। এ সময় দুর্বৃত্তরা বনের ভেতর থেকে একে একে ২০ থেকে ২২টি সেগুনগাছ কেটে ট্রাক্টরে নিয়ে পালিয়ে যায়। বিষয়টি জানাজানি হলে আজ শুক্রবার সকালে বন বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

রেমা–কালেঙ্গা বন কর্মকর্তা (রেঞ্জার) আবদুল খালেক বলেন, প্রহরীদের লক্ষ্য করে দুর্বৃত্তরা গুলি ছুড়লে তাঁরা পিছু হটেন। কারণ, এ সময় মাত্র তিন প্রহরী দায়িত্বরত ছিলেন। এর বিপরীতে দুর্বৃত্তরা ছিল বেশ সংঘবদ্ধ। বন কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘বনদস্যুরা বেশি গাছ নিতে পারেনি। সেগুন ও আকাশমণি জাতের ২০ থেকে ২২টি গাছ নিয়ে গেছে। আমরা কিছু উদ্ধার করতে পেরেছি। দুর্বৃত্তরা আধুনিক করাত ব্যবহার করে। এই করাত দিয়ে তিন থেকে চার মিনিটে একটি কাছ কাটা যায়।’

হবিগঞ্জ বন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক মো. জয়নাল আবেদীন জানান, এত বড় বন কমসংখ্যক জনবল দিয়ে সংরক্ষণ করা কঠিন। এ ছাড়া বনের কর্মকর্তা ও বনপ্রহরী সবাই এ বনে নতুন যোগদান করেছেন। যে কারণে তাঁরা কিছু বুঝে ওঠার আগেই এ ঘটনাটি ঘটে। তিনি বলেন, কী পরিমাণ গাছ কেটে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা, তা নির্ণয় ও তদন্তকাজ চলছে। পাশাপাশি এ বিষয়ে আইনগত পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রেডক্রসে চাকরি, বেতন ৬০ হাজার
  • আড়ংয়ে বিবিএ অথবা স্নাতকে চাকরির সুযোগ
  • গুলি ছুড়ে প্রহরীদের ভয় দেখিয়ে বনের গাছ কেটে নিল দুর্বৃত্তরা