অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ এনে বন্দরের মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ফ্যাসিস্ট দোসর মঞ্জুর আলম মঞ্জু’র বিরুদ্ধে অনাস্থা জানিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর আবেদন করেছেন উল্লেখিত ইউনিয়ন পরিষদের  ১১ জন ইউপি সদস্য। 

সোমবার (২৮ এপ্রিল) উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর এ অভিযোগ দায়ের  করা হয় । এর আগে সকালে  ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে এক সভায় সকল সদস্যের সম্মতিক্রমে  ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মঞ্জুকে অনাস্থা এবং ২নং প্যানেল চেয়ারম্যান কাজী মনির হোসেনকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসাবে প্রস্তাবনা গৃহীত হয়।

১১ সদস্যের স্বাক্ষরিত অভিযোগ সূত্রে   জানাগেছে, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মঞ্জুর আলমের অন্যান্য সদস্যের সঙ্গে  কাজ কর্মে বনিবনা হচ্ছিল না। ।  ব্যক্তিগত কাজে এখানে সেখানে ঘুরে বেড়ান। এর ফলে জন্ম নিবন্ধন সহ বিভিন্ন নাগরিক সেবায় ভোগান্তিতে সাধারণ মানুষ । 

ট্রেড লাইসেন্সে  নির্ধারিত ফি ছাড়াও অতিরিক্ত  অর্থ আদায় সহ সেচ্ছাচারিতা ও অনিয়মের  অভিযোগ আনা হয়েছে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মঞ্জুর আলমের বিরুদ্ধে।

এ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মাকসুদ হোসেন পদত্যাগ করে  উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অংশ নেওয়ায় শূন্য পদে  জাতীয় পার্টির এমপি সেলিম ওসমানের দলীয় ক্ষমতায় মঞ্জুর আলম ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব গ্রহন করেন।

ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মঞ্জুর  আলম  জানান, 'অনাস্থার বিষয়ে এখনো কেউ অবগত করেনি বা ডকুমেন্ট পাইনি। আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ তদন্ত প্রমানিত  হলে  উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ আমার বিরুদ্ধে বিভাগীয়  ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। আনীত অভিযোগ অসত্য হলে এ বিষয়টি আমার দেখার আছে'।

বন্দর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ( ইউএনও) মো.

মোস্তাফিজুর রহমান জানান, মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মঞ্জুর আলমকে অনাস্থা চেয়ে  ১১ সদস্যের স্বাক্ষরিত একটি অনাস্থা অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে'। 
 

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ সদস য র স অন স থ উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার

অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় ওই চারজনের কারণ দর্শানো নোটিশের জবাবের শুনানি শেষে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বহিষ্কৃত সদস্যরা হলেন আইনজীবী আবদুর রাজ্জাক, সৈয়দ কবির হোসেন, রফিকুল ইসলাম রফিক ও তরফদার আবদুল মুকিত। তাঁদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত আদালতের সব কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।

এ সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম এ গফুর বলেন, ‘অভিযোগ প্রমাণিত হওয়াতে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কেউ সমিতির নিয়মনীতির ঊর্ধ্বে নন। বৃহস্পতিবার ওই চার সদস্যকে বহিষ্কারের বিষয়টি নোটিশ দিয়ে জানানো হবে।’

সমিতি সূত্রে জানা গেছে, যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য সৈয়দ কবির হোসেনের (জনি) কাছে ৩৫ লাখ টাকায় শহরের বারান্দীপাড়া কদমতলা এলাকায় জমি বিক্রি করেন ইমরান হাসান। জমি রেজিস্ট্রির আগে সব টাকা পরিশোধের কথা থাকলেও সৈয়দ কবির হোসেন ১০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন। বাকি ২৫ লাখ টাকা না দিয়ে টালবাহানা করতে থাকেন। পরে তিনি আরও ১৭ লাখ টাকা দেন। বাকি ৮ লাখ টাকা চাইলে হুমকি দিতে থাকেন কবির হোসেন। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে ইমরান হাসান আইনজীবী সমিতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।

সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর শুনানি শেষে কবির হোসেনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কবির হোসেনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।

এ বিষয়ে আইনজীবী কবির হোসেন বলেন, ‘বহিষ্কারের বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে যে বিষয়ে আমাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে, সেই বিষয়ে অভিযুক্ত আমি নই। তারপরও আইনজীবী সমিতি আমার অভিভাবক; তারা যে ব্যবস্থা নিয়েছে, তার বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।’

অন্যদিকে অভয়নগরের নওয়াপাড়ার জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশন পাওনা টাকা আদায়ে আবদুর রাজ্জাককে মামলার আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছিল। ২০১৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত আবদুর রাজ্জাক আটটি চেকের মামলা পরিচালনা করেন। এসব মামলার রায় ও আপিল বাদীর অনুকূলে যাওয়ার পর আটটি চেকের ৪১ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে নেন আবদুর রাজ্জাক। এ টাকা জয়েন্ট ট্রেডিং কর্তৃপক্ষকে না দিয়ে তিনি ঘোরাতে থাকেন। চলতি বছরের ৪ জুন তিনি ১৫ লাখ টাকার একটি চেক দেন। চেকটি ব্যাংকে জমা দিলে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় নগদায়ন করা যায়নি। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল ওহাব গত ২৮ জুলাই আবদুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে যশোর আইনজীবী সমিতি‌ বরাবর অভিযোগ করেন।

এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আবদুর রাজ্জাককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় যশোর আইনজীবী সমিতি। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় আবদুর রাজ্জাককে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এ ছাড়া রফিকুল ইসলাম রফিক তাঁর সহকর্মীর সঙ্গে অসদাচরণ ও মামলা করতে টাকা ও কাগজপত্র নিয়ে মামলা না করায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। আইনজীবী তরফদার আবদুল মুকিতের বিরুদ্ধেও নানা ধরনের অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে তাঁকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ