নাটোরে ১৬ বছর বয়সী এক কিশোরের বিরুদ্ধে খোরশেদ আলী নামে এক রিকশাচালককে ছুরিকাঘাতে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। নাটোর সদর উপজেলার দিঘাপতিয়া ইউনিয়নের তেগাছি গ্রামে আজ বুধবার সন্ধা সাড়ে সাতটার দিকে খোরশেদ আলীকে ছুরিকাঘাত করা হয়। তাকে হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত খোরশেদ আলী (২৫) দিঘাপতিয়া ইউনিয়নের ইউনুছ আলীর ছেলে। অভিযুক্ত কিশোর (১৬) একই ইউনিয়নের বাসিন্দা এবং এবারের এসএসসি পরীক্ষার্থী।

নাটোর সদর থানা সূত্রে জানা যায়, খোরশেদ আলী ঢাকায় রিকশা চালান। সম্প্রতি তিনি বাড়িতে এসেছেন। ওই কিশোরের একটি মুঠোফোন কয়েক দিন আগে হারিয়ে যায়। এ ঘটনার জন্য সে খোরশেদ আলীকে সন্দেহ করেন। বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে ওই ঘটনার জের ধরে নিজ এলাকায় তার সঙ্গে খোরশেদ আলীর বাক্‌বিতণ্ডা শুরু হয়। একপর্যায়ে ওই কিশোর খোরশেদের গলায় ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায় বলে অভিযোগ। পরে স্থানীয় লোকজন খোরশেদ আলীকে উদ্ধার করে নাটোর সদর হাসপাতালে নিয়ে আসে। এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তবে ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত কিশোর গা–ঢাকা দিয়েছে। তাকে ধরতে পুলিশের বিভিন্ন দল মাঠে নেমেছে। এ ঘটনায় নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মৌখিক অভিযোগ করা হলেও লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়নি। অভিযোগ লেখার প্রস্তুতি চলছে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ফুটবলার প্রতিমা এগিয়ে যাচ্ছেন, পাশে আছে কিশোর আলোসহ অনেকে

একটি পরিবারের ওপর নেমে আসা অপ্রত্যাশিত চাপ আর হতাশাকে দূর করেছে একটি সংবাদ। বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৫ ও অনূর্ধ্ব-১৭ জাতীয় ফুটবল দলের খেলোয়াড় প্রতিমা মুন্ডার পড়াশোনা ও খেলাধুলা থমকে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল মাত্র ৪৭ হাজার টাকার জন্য। প্রথম আলোয় প্রতিবেদন প্রকাশের পর মিলেছে সহযোগিতা, পরিশোধ হয়ে গেছে বিকেএসপির বকেয়া।

এতে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন প্রতিমার মা সুনিতা মুন্ডা। তাঁদের ওপর থেকে নেমে গেছে বড় ধরনের আর্থিক চাপ।

গত ২৫ সেপ্টেম্বর বিকেএসপি প্রতিমার অভিভাবককে পাঠানো চিঠিতে জানিয়েছিল, তাঁদের মেয়ের বকেয়া বেতন ৪৬ হাজার ৮৪০ টাকা। সেই চিঠিতেই সতর্ক করে বলা হয়, ছয় মাসের বেশি বেতন বকেয়া থাকলে চূড়ান্ত সতর্কীকরণ, আর ১২ মাসের বেশি বকেয়া থাকলে বহিষ্কারের বিধান আছে। অর্থাভাবে যখন অনিশ্চিত হয়ে উঠেছিল প্রতিমার ভবিষ্যৎ, ঠিক সেই সময় ১১ অক্টোবর প্রথম আলোয় প্রকাশিত হয় তাঁদের পরিবারের সংগ্রামের গল্প।

আরও পড়ুনবকেয়া বেতন চেয়ে বিকেএসপির চিঠি, ফুটবলার প্রতিমার পড়াশোনা বন্ধের পথে ১১ অক্টোবর ২০২৫

প্রতিবেদনটি পাঠকের হৃদয়ে নাড়া দেয়। কিশোর আলোর পক্ষ থেকে প্রতিমার বকেয়া পরিশোধের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ওই দিনই বিকেলে সাতক্ষীরার তালা উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামে গিয়ে প্রথম আলোর সাতক্ষীরার নিজস্ব প্রতিবেদক কল্যাণ ব্যানার্জি প্রতিমা ও তাঁর মা সুনিতা মুন্ডার হাতে ৫০ হাজার টাকা তুলে দেন। মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও শিশুসাহিত্যিক ফরিদুর রেজা সাগরের সৌজন্যে নেওয়া হয় এই উদ্যোগ। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ব্যবসায়ী সহায়তা করেন আরও ১০ হাজার টাকা। তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দীপা রানী সরকার দেন পাঁচ হাজার টাকা ও একটি ফুটবল।

সহায়তা পেয়ে স্বস্তি ফিরেছে পরিবারে। মুঠোফোনে প্রতিমা বলেন, ‘এখন আর কোনো অনিশ্চয়তা নেই। বিকেএসপির পাওনা ৪৬ হাজার ৮৪০ টাকা পরিশোধ করে দিয়েছি। আমি ভালো আছি, মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা আর অনুশীলন করছি।’

সাতক্ষীরার তালা উপজেলার প্রতিমা মুন্ডা ও তাঁর মা সুনিতা মুন্ডার হাতে কিশোর আলোর পক্ষ থেকে ৫০ হাজার টাকা তুলে দেওয়া হয়। মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও শিশুসাহিত্যিক ফরিদুর রেজা সাগরের সৌজন্যে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়

সম্পর্কিত নিবন্ধ