মণিপুরি শাড়ি, গামছা, লিচু, আম, মধুসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ২৪টি পণ্যকে জিআই (ভৌগোলিক নির্দেশক) নিবন্ধন সনদ দেওয়া হয়েছে। গতকাল বুধবার রাজধানীর বেইলি রোডে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে বিশ্ব মেধাসম্পদ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সভায় এই সনদ দেওয়া হয়। শিল্প মন্ত্রণালয়ের পেটেন্ট, শিল্প-নকশা ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তর এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। 

সভায় শিল্প সচিব ওবায়দুর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচক ছিলেন সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। মেধাসম্পদ দিবসের ওপর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন শিল্পী, অভিনেত্রী ও সংগীত পরিচালক আরমিন মুসা। 

সভায় শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেন, দেশের প্রথম পণ্য হিসেবে জিআই স্বীকৃতি পেয়েছে জামদানি শাড়ি। এর পর থেকে এখন পর্যন্ত ৫৫টি পণ্য জিআই স্বীকৃতি পেল। জিআই পণ্য দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্যকে লালন করে। এই পণ্যের বাজারজাতকারীদের ন্যায্য স্বীকৃতি এবং পারিশ্রমিক নিশ্চিত করতে হবে। ফলে স্থানীয় উদ্যোক্তা বা উৎপাদনকারীদের ক্ষমতায়ন হবে।

এ সময় তিনি জিআই পণ্যের তালিকা সমৃদ্ধ করার পর সেগুলো বাণিজ্যিকভাবে বিকশিত করার আহ্বান জানান। 

মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক উৎসব গান। এ দেশের মানুষ গানের মাধ্যমে ভাব প্রকাশ করে, যা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে আছে। সংগীত নিয়ে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় বড় প্রকল্পের কাজ করছে। দেশের মানুষ কিছু দিনের মধ্যে তা দেখতে পাবে। সংগীতের কপিরাইট নিশ্চিত করতে হবে। 

নিবন্ধন সনদপ্রাপ্ত ২৪টি ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য হলো– নরসিংদীর লটকন, মধুপুরের আনারস, ভোলার মহিষের দুধের কাঁচা দই, মাগুরার হাজরাপুরী লিচু, সিরাজগঞ্জের গামছা, সিলেটের মণিপুরি শাড়ি, মিরপুরের কাতান শাড়ি, ঢাকাই ফুটি কার্পাস তুলা, কুমিল্লার খাদি, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ছানামুখী মিষ্টি, গোপালগঞ্জের ব্রোঞ্জের গয়না, সুন্দরবনের মধু, শেরপুরের ছানার পায়েস, সিরাজগঞ্জের লুঙ্গি, গাজীপুরের কাঁঠাল, কিশোরগঞ্জের রাতাবোরো ধান, অষ্টগ্রামের পনির, বরিশালের আমড়া, কুমারখালীর বেডশিট, দিনাজপুরের বেদানা লিচু, মুন্সীগঞ্জের পাতক্ষীর, নওগাঁর নাকফজলি আম, টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের জামুর্কির সন্দেশ এবং ঢাকাই ফুটিকার্পাস তুলার বীজ ও গাছ। 

সভায় এসব জিআই সনদ বাংলাদেশ তাঁত বোর্ড, সংশ্লিষ্ট জেলার জেলা প্রশাসক ও নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার নাকফজলি আমচাষি সমবায় সমিতির কাছে হস্তান্তর করা হয়। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: জ আই স

এছাড়াও পড়ুন:

৪৫ কেজি মণ হিসাবে আম কিনে ৪০ কেজিতে বিক্রি, ঠকছেন গৃহস্থ ও খুচরা ক্রেতা

জয়পুরহাটে গৃহস্থদের কাছ থেকে ৪৫ কেজিতে ১ মণ হিসাবে নাকফজলি আম কিনে তুলনামলূক বেশি দাম ও কম পরিমাণে (৪০ কেজিতে ১ মণ ধরে) বিক্রির অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও পাইকারী বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের অভিযোগ, ৪৫ কেজি নাকফজলি আম ৭০০ থেকে ৮০০ টাকায় কিনে খুচরা বাজারে ৪০ কেজি হিসাবে ১ মণ ১ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এতে গৃহস্থ ও খুচরা ক্রেতা উভয়ই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।  

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, জয়পুরহাটের আক্কেলপুর পৌর শহরের রেলগেট এলাকায় এভাবেই সিন্ডিকেট করে আম কেনাবেচা হচ্ছে। খুচরা ক্রেতা ও গৃহস্থরা আম ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য প্রশাসনের নজরদারির দাবি করেছেন।

প্রতিবেশী নওগাঁর বদলগাছী উপজেলায় প্রচুর পরিমাণে নাকফজলি আমের উৎপাদন হয়। সেখানকার এই আম অন্য এলাকার চেয়ে সুস্বাদু। প্রতিবছর আমের মৌসুমে জয়পুরহাটের আক্কেলপুর পৌর শহরের কিশোর মোড় থেকে রেলগেট পর্যন্ত সড়কে এই আমের পাইকারি বাজার বসে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। প্রতিদিন ভোর ৫টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত আম কেনাবেচা হয়। বিভিন্ন এলাকা থেকে পাইকারেরা সেখানে গিয়ে আম কেনেন।

আজ শনিবার সকালে আক্কেলপুর পৌর শহরের রেলগেট এলাকায় কয়েকজন গৃহস্থ ও খুচরা আম ক্রেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঈদের আগে নাকফজলি আম ১ হাজার ৪০০ টাকা মণে বিক্রি হয়েছে। ঈদের পর নাকফজলি আমের আমদানি বেড়েছে। এ কারণে আমের মণ ৬০০ থেকে ৪০০ টাকা কমেছে। ৪০ কেজিতে মণ হলেও পাইকারেরা গৃহস্থদের কাছ থেকে ৪৫ কেজি মণে আম কিনছেন। কিন্তু পাইকারেরা দোকানে সেই আম ৪০ কেজিতে মণ ধরে ১ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি করছেন।

বদলগাছীর ভান্ডারপুর গ্রামের আমচাষি সাইফুল ইসলাম বলেন, আক্কেলপুর বাজারে ৮০০ টাকা দরে ৩ মণ নাকফজলি আম বিক্রি করেছেন। ৩ মণ আমে ১৫ কেজি বেশি দিতে হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরেই এটি চলে আসছে, যা অন্যায়। এ বিষয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন তিনি।

অন্যদিকে রেলগেট এলাকা থেকে (৪০ কেজিতে মণ ধরে) ১ মণ নাকফজলি আম ১ হাজার ২০০ টাকায় কেনার দাবি করেন খুচরা বিক্রেতা কামরুল ইসলাম। তিনি বলেন, দোকানিরা প্রতি মণে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা লাভ করছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নিষেধাজ্ঞার মধ্যে বহর নিয়ে সাবেক যুবদল নেতার সুন্দরবন ভ্রমণ
  • ৪৫ কেজি মণ হিসাবে আম কিনে ৪০ কেজিতে বিক্রি, ঠকছেন গৃহস্থ ও খুচরা ক্রেতা