ভারতীয় এই সুন্দরীও ‘মেট গালায়’ বাহারি সাজে হাজির হবেন
Published: 4th, May 2025 GMT
আবারও ফ্রান্সের কান চলচ্চিত্র উৎসবে অংশ নিচ্ছেন বলিউড অভিনেত্রী কিয়ারা আদভানি। এবার তাঁকে ‘মেট গালা ২০২৫’-এর লালগালিচায় দেখা যাবে। সেখানে জনপ্রিয় ফ্যাশন ডিজাইনার গৌরব গুপ্তার পোশাকে নিজেকে সাজাতে চলেছেন কিয়ারা।
সম্প্রতি ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আজকাল ডট ইন এই তথ্য জানিয়েছে। আরও জানিয়েছে, গত বছর ‘কান চলচ্চিত্র উৎসব’-এর লালগালিচায় অভিষেক হয়েছিল কিয়ারার। এবার ‘মেট গালা’য় নতুন রূপে ধরা দিতে চলেছেন এই অভিনেত্রী। সে কারণে আলাদাভাবে প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেছেন।
এদিকে শিগগিরই সিদ্ধার্থ-কিয়ারা তারকা দম্পতির ঘরে আসতে চলেছে নতুন অতিথি। সেই অতিথির জন্য সবকিছু চাই নতুন– এই ভাবনা থেকেই ক’দিন আগে নতুন বাড়ির আবদার করেছিলেন হবু মা কিয়ারা আদভানি। ঠিকানা বদলে নতুন বাড়িতে যাওয়ার বিষয়ে আপত্তি করেননি তাঁর স্বামী অভিনেতা সিদ্ধার্থ মালহোত্রা। সেই বাড়ির অন্দরসজ্জার দায়িত্ব নিয়েছিলেন বলিউড বাদশাহ শাহরুখ খানের স্ত্রী গৌরী খান। সব মিলিয়ে নতুন অতিথির জন্য জমকালো আয়োজন করে রাখছেন কিয়ারা। তবে অন্তঃসত্তা হলেও এখনও অভিনয়ের বিরতিতে যাননি। হাতে থাকা ‘টক্সিক’ ও ‘ওয়ার টু’ সিনেমার যে ক’টি দৃশ্যের শুটিং বাকি আছে, তা শেষ করে অভিনয়ে বিরতি নেবেন বলে জানিয়েছেন। তবে ‘ডন থ্রি’ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন।
সাম্প্রতিক সময়ে একের পর এক সিনেমা হিট হওয়ায় বলিউডের ডাকসাইটে পরিচালক, প্রযোজকদের প্রিয় পাত্রী হয়ে উঠেছিলেন কিয়ারা আদভানি। সে কারণে পরিচালক ফারহান আখতার তাঁর ‘ডন থ্রি’ সিনেমার মুখ্য অভিনেত্রীর চরিত্রে কিয়ারাকে নির্বাচন করেছিলেন। কিয়ারা চেয়েছিলেন এমন একটি সিনেমার অংশ হতে। মাতৃত্বের কারণে শেষমেশ সিনেমাটি ছাড়তে হয়েছে তাঁকে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ক য় র আদভ ন
এছাড়াও পড়ুন:
শুভেচ্ছার মোড়কে ছাপা রাজনীতি
ঈদুল আজহা উদযাপিত হয়েছে, বেশি দিন হয়নি। নির্বাচন সামনে রেখে এই ঈদে যেমন দেখা গেল শুভেচ্ছার রাজনীতি, তেমনটি এর আগেও আমরা দেখেছি। এলাকায় একই ব্যক্তির ব্যানার-ফেস্টুন-বিলবোর্ডজুড়ে মুখচ্ছবি আর নাম-পরিচয়! একদিকে ঈদের অনাবিল আনন্দ, অন্যদিকে রাস্তায় হঠাৎ দেখা যায়, ‘অমুক সাহেবের পক্ষ থেকে ঈদ মোবারক’ কিংবা ‘জনপ্রতিনিধি পদপ্রার্থী তমুক ভাইয়ের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা’। অবশ্য শুধু ঈদে নয়, এর বাইরেও এ ধরনের শুভেচ্ছা দেখা যায়। তবে ঈদ মুসলমানদের প্রধান দুটি ধর্মীয় উৎসব, সেহেতু এ সময়ে প্রবণতা বেশি থাকে।
এত বড়মাপের আয়োজন, ছাপানো, টাঙানো সবই ব্যয়সাধ্য। সাধারণ একজন রাজনৈতিক কর্মী কীভাবে এত খরচ করেন? নাকি এটি ভবিষ্যতের বিনিয়োগ? রাজনৈতিক পুঁজি সঞ্চয়ের একটি চতুর পদ্ধতি? যারা ভোট চান, তারা জানেন ঈদ হলো মানুষের অনুভূতির সময়। এ সময়কে কাজে লাগিয়ে মানুষের মাঝে নিজের উপস্থিতি জানান দেওয়া যায় নীরবে, আত্মীয়ের মতো করে। তাই ‘ঈদ মোবারক’ লেখার চেয়েও বড় করে লেখা থাকে প্রার্থীর নাম, তার ছবি, দলের প্রতীক কিংবা নেতার ছবির পাশে নিজের ঠাঁই। এক অর্থে, এটি নিজের চেহারা ও অবস্থানকে জনগণের মনে গেঁথে দেওয়ার কৌশল; ঈদের মোড়কে!
এত ব্যানার-ফেস্টুনের মাঝে ঈদের মূল বার্তাটি কোথায়? রাস্তার পাশে পড়ে থাকা ছেঁড়া ব্যানার, বাতাসে উড়তে থাকা ছিন্ন ফেস্টুন কি ঈদের শোভা বাড়ায়, নাকি নগরজীবনে দৃষ্টিকটু মাত্রা যোগ করে? প্রশাসন অনেক সময় এগুলো অপসারণে উদ্যোগী হলেও প্রভাবশালী মহলের নাম লেখা থাকলে সে ব্যানার ছোঁয়া যেন সাহসের ব্যাপার। ফলে শহরের সৌন্দর্য বা সজ্জা হয়ে দাঁড়ায় রাজনীতির বিজ্ঞাপনস্থল।
এই প্রবণতা শুধু শহরে নয়, গ্রাম-গঞ্জেও ছড়িয়ে পড়েছে। ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য কিংবা সম্ভাব্য চেয়ারম্যানও ঈদের আগে ছবি পাঠিয়ে দেন ছাপাখানায়। বাজারের মোড়ে তাদের ফেস্টুন ঝুলে যায়। সঙ্গে যুক্ত থাকে দলের প্রতীক, স্থানীয় নেতার নাম এবং অবশ্যই ঈদের শুভেচ্ছা। মানুষের অনুভূতিকে ব্যবহার করে নিজেকে পরিচিত ও প্রভাবশালী করে তোলার এক নীরব প্রচারকৌশল এটি। তবে সবাই কি এসব ব্যানার-ফেস্টুনে বিরক্ত হন? অনেক সাধারণ মানুষও এটিকে স্বাভাবিকভাবে নেন। তারা বলেন, ‘যাক, অন্তত মনে তো করেছে!’ এই মানসিকতা রাজনৈতিক কর্মীদের উৎসাহিত করে। কিন্তু আশঙ্কা থেকে যায়, এই ছদ্ম-শুভেচ্ছার মাঝে যদি সত্যিকারের দায়বদ্ধতা না থাকে, তবে জনগণ কবে বুঝবে, তারা প্রতারিত হচ্ছে?
এটা ঠিক, যে কেউ ঈদে শুভেচ্ছা জানাতে পারেন। সামাজিক মাধ্যম থেকে শুরু করে ব্যক্তি পর্যায়ে কার্ড পাঠানো হৃদয় ছোঁয়া বার্তার অভাব নেই। কিন্তু যান্ত্রিকভাবে, দখলদারির মতো করে শহর কিংবা গ্রামজুড়ে মুখের ছবি ঝুলিয়ে দেওয়া কতটা শোভন? এসব ব্যানার-ফেস্টুনের মাধ্যমে কে কোথায় কতটা প্রভাব বিস্তার করতে পারছেন, তার একটি ম্যাপ তৈরি হয়। কার ব্যানার সবচেয়ে বড়, কার ছবি কেন্দ্রীয় স্থানে, এসব বিশ্লেষণ করেই স্থানীয় রাজনীতিতে কে কতটা শক্তিশালী, তা বোঝা যায়। ফলে ঈদ এক সময় হয়ে পড়ে রাজনৈতিক পরিমাপের বারোমাসি দিনপঞ্জির একটি কৌশলগত দিন। এখন সময় এসেছে এই প্রবণতা নিয়ে ভাববার।
ঈদ আমাদের আত্মশুদ্ধি, ত্যাগ ও ভালোবাসার উৎসব। এটি হোক মানুষের হৃদয়ে পৌঁছানোর এক আন্তরিক উপলক্ষ। নিছক ব্যানার-ফেস্টুনে আটকে না থাকুক এই পবিত্র বার্তা। শুভেচ্ছা জানানো হোক নিঃস্বার্থ ভালোবাসা দিয়ে; চোখে পড়ার জন্য নয়; হৃদয়ে গেঁথে যাওয়ার জন্য। সত্যিকারের নেতৃত্ব তো জন্ম নেয় মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে; কৃত্রিম ব্যানারে নয়। রাজনীতি যদি মানুষের সেবার মাধ্যম হয়, তবে ঈদের সময় সেই সেবা প্রতিফলিত হোক কাজে; শুধু মুখে কিংবা ব্যানারে নয়। তাহলেই ঈদ, রাজনীতি দুটোই পাবে প্রকৃত সম্মান।
জুয়েল হাসান: প্রকৌশলী