এবার পদ্মা–যমুনার মোহনার দুই কাতলা বিক্রি হলো প্রায় লাখ টাকায়
Published: 4th, May 2025 GMT
রাজবাড়ীতে পদ্মা ও যমুনা নদীর মোহনার দুটি কাতলা মাছ বিক্রি হয়েছে প্রায় এক লাখ টাকায়। আজ রোববার সকালে গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ফেরিঘাটের অদূরে রাখালগাছি এলাকায় মাছ দুটি ধরা পড়ে। মাছ দুটির ওজন ৩২ কেজি ৬০০ গ্রাম ও ২৫ কেজি ২০০ গ্রাম।
মৎস্যজীবীরা জানান, পানি বাড়তে থাকায় পদ্মা নদীতে মাছের বিচরণ বেড়েছে। মাঝেমধ্যে কাতলা, রুই, পাঙাশ মাছ ধরা পড়ছে। আজ সকালে রাজবাড়ীর সীমান্তবর্তী গোয়ালন্দের রাখালগাছি এলাকায় পদ্মা ও যমুনা নদীর মোহনা জাল ফেলেন জেলেরা। কিছুক্ষণ পর জালে ঝাঁকি দিলে বুঝতে পারেন বড় মাছ আটকা পড়েছে। জাল টেনে নৌকায় তুলতেই দেখেন বিশাল আকারের এক কাতলা। তাঁরা মাছটি বিক্রির জন্য নিয়ে আসেন দৌলতদিয়া সাইফুল্লাহর আড়তে। এ সময় ওজন দিয়ে দেখা যায় এর ওজন ৩২ কেজি ৬০০ গ্রাম হয়েছে। নিলামে তোলা হলে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে চান্দু মোল্লা কাতলাটি কেনেন।
এ ছাড়া সকালে মানিকগঞ্চের জাফরগঞ্জ এলাকার জেলে মমিন মন্ডল একই এলাকায় জাল ফেলে বড় আরেকটি কাতলা পান। তিনি মাছটি বিক্রির জন্য দৌলতদিয়া বাজারের কেসমত মোল্লার আড়তে আনেন। মাছটির ওজন হয় ২৫ কেজি ২০০ গ্রাম। পরে নিলামে তোলা হলে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে মাছটি কেনেন চান্দু মোল্লা।
দৌলতদিয়ার ৫ নম্বর ফেরিঘাট এলাকার চাঁদনী-আরিফা মৎস্যভান্ডারের স্বত্বাধিকারী চান্দু মোল্লা বলেন, বড় কাতলাটি কোন জেলের জালে ধরা পড়েছে জানা নেই। সাইফুল্লাহর আড়ত থেকে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নিলামে তোলা হলে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে তিনি ১ হাজার ৬০০ টাকা কেজি দরে ৫২ হাজার টাকায় কেনেন। পরে মুঠোফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ করে ঢাকার এক ব্যবসায়ীর কাছে কেজিপ্রতি ১০০ টাকা করে লাভে ১ হাজার ৭০০ টাকা কেজি দরে মোট ৫৫ হাজার ৪০০ টাকায় বিক্রি করেন।
আরও পড়ুনদৌলতদিয়ায় পদ্মা নদীতে ধরা পড়ল ২৮ কেজির কাতলা, অর্ধলক্ষাধিক টাকায় বিক্রি২১ ঘণ্টা আগেদুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বাজারের কেসমত মোল্লার আড়ত থেকে ২৫ কেজি ২০০ গ্রাম ওজনের কাতলাটিও চান্দু মোল্লা নিলামে ১ হাজার ৫০০ টাকা কেজি দরে ৩৭ হাজার ৮০০ টাকায় কেনেন। এ মাছটিও ঢাকার এক ব্যক্তির কাছে কেজিপ্রতি ১০০ টাকা করে লাভে ১ হাজার ৬০০ টাকা কেজি দরে ৪০ হাজার ৩০০ টাকায় বিক্রি করেন। তিনি কাতলা দুটি প্রায় ৮৯ হাজার ৯০০ টাকায় কিনে ৯৫ হাজার ৭০০ টাকায় বিক্রি করেন।
চান্দু মোল্লা বলেন, গতকাল শনিবারও তিনি প্রায় ২৮ কেজি ওজনের একটি কাতলা ৫০ হাজার ৪০০ টাকায় কিনে ৫৩ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি করেছেন। বর্তমানে পদ্মা ও যমুনা নদীতে বড় মাছ, বিশেষ করে বড় কাতলা বেশি ধরা পড়ছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
রয়েল টিউলিপে এনসিপি নেতাদের অবস্থান, ষড়যন্ত্রের অভিযোগে বিএনপির
কক্সবাজারে ইনানীর সি পার্ল বিচ রিসোর্টে (পুরোনো নাম রয়েল টিউলিপ) জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতাদের অবস্থান এবং যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে বৈঠকের গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ার পর প্রতিবাদে সভা করেছে বিএনপির নেতাকর্মীরা। তাদের অভিযোগ, রয়েল টিউলিপে বসে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে।
মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) দুপুর ২টার দিকে রয়েল টিউলিপের সামনে প্রতিবাদ সভা করেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। এর আগে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে কক্সবাজারে পৌঁছান এনসিপির পাঁচ নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ, সার্জিস আলম, ডা. তাসমিন জারা, নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী ও খালেদ সাইফুল্লাহ।
প্রতিবাদ সভার নেতৃত্ব দেন উখিয়া উপজেলা বিএনপির সাবেক দপ্তর সম্পাদক সেলিম সিরাজী। তিনি বলেন, “বাংলাদেশের বিরুদ্ধে এখনো ষড়যন্ত্র থেমে নেই। যারা ভোটে ক্ষমতায় আসতে পারবে না, তারা এখানে বসে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। খুনি শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার এক বছর পূর্ণ হয়েছে আজ। সেই আনন্দের মুহূর্তে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের কারণে আমাদের এখানে প্রতিবাদে আসতে হয়েছে।”
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কক্সবাজার জেলা পুলিশের এক কর্মকর্তা রাইজিংবিডিকে বলেন, “এনসিপির নেতারা মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) সকাল ১১টা ২৫ মিনিটে বাংলাদেশ বিমান এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে কক্সবাজার আসেন। পরে ইনানীর সি পার্ল বিচ রিসোর্টের (রয়েল টিউলিপ) ৫০০১, ৫০০২ ও ৫০০৩ নম্বর কক্ষে অবস্থান নেন।”
তিনি আরও বলেন, “এই রিসোর্টে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত পিটার হাস নেই। এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক সারজিস আলমের স্ত্রীসহ তারা ঘুরতে এসেছেন।’’
ওই রিসোর্টের কক্ষ আগে থেকে বুকিং করা ছিল না বলেও জানান তিনি।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এনসিপির পাঁচ নেতার হঠাৎ কক্সবাজার আগমনের বিষয়টি প্রশাসন কিংবা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকেও অবগত করা হয়নি।
রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে যে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক বাংলাদেশস্থ রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে বৈঠক করতে কক্সবাজারে গিয়েছেন এই পাঁচ নেতা।
এনসিপি নেতাদের বহন করে বিমানবন্দর থেকে রয়েল টিউলিপে নিয়ে যাওয়া গাড়ির চালক নুরুল আমিন জানান, তার গাড়িতে করে হাসনাত আবদুল্লাহ, সারজিস আলম ও নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারীসহ দুইজন নারী- একজন সারজিস আলমের স্ত্রী এবং অপরজন সমন্বয়ক (তাসনিম জারা) রয়েল টিউলিপে যান।
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. সাইফ উদ্দিন শাহীন বলেন, “এনসিপির পাঁচ নেতা রয়েল টিউলিপে অবস্থান করছেন। তবে, এখানে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত পিটার হাস নেই। পুরো হোটেলে মাত্র তিনজন বিদেশি আছেন, তারা সবাই চীনের নাগরিক।”এদিকে এনসিপি নেতা খালেদ সাইফুল্লাহ একটি সংবাদমাধ্যমে বলেছেন, “আমরা এখানে পিটার হাস কিংবা অন্য কারো সাথে কোন মিটিং করিনি। এমনকি পিটার হাসের সঙ্গে আমাদের দেখাও হয়নি। আমরা কয়েকজন এখানে ঘুরতে এসেছি।”
তারেকুর//