রাজবাড়ীতে পদ্মা ও যমুনা নদীর মোহনার দুটি কাতলা মাছ বিক্রি হয়েছে প্রায় এক লাখ টাকায়। আজ রোববার সকালে গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ফেরিঘাটের অদূরে রাখালগাছি এলাকায় মাছ দুটি ধরা পড়ে। মাছ দুটির ওজন ৩২ কেজি ৬০০ গ্রাম ও ২৫ কেজি ২০০ গ্রাম।

মৎস্যজীবীরা জানান, পানি বাড়তে থাকায় পদ্মা নদীতে মাছের বিচরণ বেড়েছে। মাঝেমধ্যে কাতলা, রুই, পাঙাশ মাছ ধরা পড়ছে। আজ সকালে রাজবাড়ীর সীমান্তবর্তী গোয়ালন্দের রাখালগাছি এলাকায় পদ্মা ও যমুনা নদীর মোহনা জাল ফেলেন জেলেরা। কিছুক্ষণ পর জালে ঝাঁকি দিলে বুঝতে পারেন বড় মাছ আটকা পড়েছে। জাল টেনে নৌকায় তুলতেই দেখেন বিশাল আকারের এক কাতলা। তাঁরা মাছটি বিক্রির জন্য নিয়ে আসেন দৌলতদিয়া সাইফুল্লাহর আড়তে। এ সময় ওজন দিয়ে দেখা যায় এর ওজন ৩২ কেজি ৬০০ গ্রাম হয়েছে। নিলামে তোলা হলে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে চান্দু মোল্লা কাতলাটি কেনেন।

এ ছাড়া সকালে মানিকগঞ্চের জাফরগঞ্জ এলাকার জেলে মমিন মন্ডল একই এলাকায় জাল ফেলে বড় আরেকটি কাতলা পান। তিনি মাছটি বিক্রির জন্য দৌলতদিয়া বাজারের কেসমত মোল্লার আড়তে আনেন। মাছটির ওজন হয় ২৫ কেজি ২০০ গ্রাম। পরে নিলামে তোলা হলে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে মাছটি কেনেন চান্দু মোল্লা।

দৌলতদিয়ার ৫ নম্বর ফেরিঘাট এলাকার চাঁদনী-আরিফা মৎস্যভান্ডারের স্বত্বাধিকারী চান্দু মোল্লা বলেন, বড় কাতলাটি কোন জেলের জালে ধরা পড়েছে জানা নেই। সাইফুল্লাহর আড়ত থেকে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নিলামে তোলা হলে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে তিনি ১ হাজার ৬০০ টাকা কেজি দরে ৫২ হাজার টাকায় কেনেন। পরে মুঠোফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ করে ঢাকার এক ব্যবসায়ীর কাছে কেজিপ্রতি ১০০ টাকা করে লাভে ১ হাজার ৭০০ টাকা কেজি দরে মোট ৫৫ হাজার ৪০০ টাকায় বিক্রি করেন।

আরও পড়ুনদৌলতদিয়ায় পদ্মা নদীতে ধরা পড়ল ২৮ কেজির কাতলা, অর্ধলক্ষাধিক টাকায় বিক্রি২১ ঘণ্টা আগে

দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বাজারের কেসমত মোল্লার আড়ত থেকে ২৫ কেজি ২০০ গ্রাম ওজনের কাতলাটিও চান্দু মোল্লা নিলামে ১ হাজার ৫০০ টাকা কেজি দরে ৩৭ হাজার ৮০০ টাকায় কেনেন। এ  মাছটিও ঢাকার এক ব্যক্তির কাছে কেজিপ্রতি ১০০ টাকা করে লাভে ১ হাজার ৬০০ টাকা কেজি দরে ৪০ হাজার ৩০০ টাকায় বিক্রি করেন। তিনি কাতলা দুটি প্রায় ৮৯ হাজার ৯০০ টাকায় কিনে ৯৫ হাজার ৭০০ টাকায় বিক্রি করেন।

চান্দু মোল্লা বলেন, গতকাল শনিবারও তিনি প্রায় ২৮ কেজি ওজনের একটি কাতলা ৫০ হাজার ৪০০ টাকায় কিনে ৫৩ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি করেছেন। বর্তমানে পদ্মা ও যমুনা নদীতে বড় মাছ, বিশেষ করে বড় কাতলা বেশি ধরা পড়ছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: দ লতদ য় র আড়ত

এছাড়াও পড়ুন:

বদ নজরের দোয়া: ইসলামের দৃষ্টিতে ব্যাখ্যা

‘বদ নজর’ ইসলামে একটি বাস্তব সত্য, যা মানুষের ঈর্ষা, হিংসা বা অতিরিক্ত প্রশংসার মাধ্যমে অন্যের ক্ষতি করতে পারে। কোরআন ও হাদিসে বদ নজরের বাস্তবতা এবং এর থেকে সুরক্ষা লাভের উপায় উল্লেখ করা হয়েছে।

তাই মুসলমানদের জন্য বদ নজর থেকে রক্ষার দোয়া ও আমল জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

বদ নজরের বাস্তবতা

আল্লাহ তা’আলা বলেন, “আর নিশ্চয় যারা অবিশ্বাস করেছে, তারা যখন কোরআন শোনে তখন প্রায় তাদের দৃষ্টির দ্বারা তোমাকে পতিত করবে। আর তারা বলে: ‘সে তো অবশ্যই পাগল।’” (সুরা কলাম, আয়াত: ৫১)

রাসুল (সা.) বলেছেন: “চোখ লাগা (বদ নজর) সত্য।” (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২১৮৮)

আরও পড়ুনশিশুদের বদ নজর থেকে বাঁচাতে১৫ আগস্ট ২০২৫বদ নজর থেকে বাঁচার দোয়া

রাসুল (সা.) বদ নজর থেকে বাঁচার জন্য বিভিন্ন দোয়া শিখিয়েছেন। এর মধ্যে কয়েকটি প্রসিদ্ধ দোয়া হলো:

১. বদ নজর থেকে শিশুদের রক্ষার দোয়া

রাসুল (সা.) হাসান ও হুসাইন (রা.)-এর জন্য এই দোয়া পড়তেন:

উচ্চারণ: উ‘ঈযুকুমা বি কালিমাতিল্লাহিত্তাম্মাতি মিন কুল্লি শাইতানিন, ওয়া হাম্মাতিন, ওয়া মিন কুল্লি ‘আইনিল লাম্মাহ।

অর্থ: “আমি তোমাদের উভয়কে আল্লাহর পূর্ণাঙ্গ কালিমার মাধ্যমে আশ্রয় দিচ্ছি, প্রত্যেক শয়তান, বিষাক্ত প্রাণী এবং ক্ষতিকর বদ নজর থেকে।” (সুনান আত-তিরমিজি, হাদিস: ২০৬০)

২. বদ নজর থেকে রক্ষার সাধারণ দোয়া

উচ্চারণ: আ‘ঊযু বি কালিমাতিল্লাহিত্তাম্মাতি মিন শার্রি মা খালাক।

অর্থ: “আমি আল্লাহর পূর্ণাঙ্গ কালিমার মাধ্যমে তাঁর সৃষ্টির অশুভ দিক থেকে আশ্রয় চাই।” (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২৭০৮)

৩. বদ নজর দূর করার আমল

রাসুল (সা.) বলেছেন, “যখন তোমাদের কেউ তার ভাইয়ের মধ্যে এমন কিছু দেখে যা তাকে ভালো লাগে, তখন সে যেন তার জন্য বরকতের দোয়া করে। কারণ বদ নজর সত্য।” (সুনান ইবনে মাজাহ, হাদিস: ৩৫০৯)

এক্ষেত্রে দোয়া করা যায়—

উচ্চারণ: বারাকাল্লাহু ফীক।

অর্থ: “আল্লাহ তোমার জন্য বরকত দান করুন।”

আরও পড়ুনদোয়া কবুলের জায়গা০৪ জুন ২০২৪বদ নজর প্রতিরোধে করণীয়

১. সকালে-সন্ধ্যায় জিকির–আজকার পাঠ করা (যেমন আয়াতুল কুরসি, সুরা ফালাক, সুরা নাস)।

২. অন্যের প্রশংসায় বরকতের দোয়া করা।

৩. আল্লাহর উপর ভরসা রাখা এবং তাওয়াক্কুল করা।

বদ নজর মানুষের জন্য বাস্তব ক্ষতির কারণ হতে পারে। তবে আল্লাহর উপর ভরসা, কোরআনের আয়াতসমূহ পাঠ এবং রাসুল (সা.)-এর শিখানো দোয়া পাঠের মাধ্যমে মুসলমান সহজেই এর ক্ষতি থেকে বাঁচতে পারে।

তাই প্রতিদিনের জীবনে বদ নজর প্রতিরোধের দোয়াগুলো নিয়মিত পড়া প্রতিটি মুমিনের দায়িত্ব।

আরও পড়ুনসন্তান প্রতিপালনে মহানবী (সা.)-এর ১০টি নির্দেশনা২০ আগস্ট ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ