আনচেলত্তির ব্রাজিল দলের ১০ ফুটবলারের নাম ফাঁস
Published: 19th, May 2025 GMT
ব্রাজিল জাতীয় দলের কোচ হয়েছেন কার্লো আনচেলত্তি। ২৬ মে তাকে ব্রাজিল ফুটবল কনফেডারেশন (সিবিএফ) আনুষ্ঠানিকভাবে পরিচয় করিয়ে দেবে। ওই দিনই বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে ইকুয়েডর ও প্যারাগুয়ের বিপক্ষে ম্যাচের ২৩ সদস্যের দল ঘোষণা করবেন ডন কার্লো। ম্যাচ দুটি যথাক্রমে ৬ ও ১১ জুন মাঠে গড়াবে।
আনুষ্ঠানিক দল ঘোষণার আগে সিবিএফ ফিফার কাছে ২৮ জনের প্রাথমিক দল জমা দিয়েছে। ব্রাজিলের সংবাদ মাধ্যম গ্লোবো জানিয়েছে, প্রাথমিক দল জমা দেওয়ার আগে অনলাইনে ব্রাজিলের নতুন কোচ আনচেলত্তির সঙ্গে বৈঠক করেন সিবিএফের সমন্বয়ক রদ্রিগো কায়তানো।
ওই বৈঠকে ৫০ জনের মতো ফুটবলারের একটি তালিকা পেশ করেন কায়তানো। গত মার্চের সূচির আগে ৫২ জনের প্রাথমিক দল দেওয়া হয়েছিল। এবারের দলে আছেন ব্রাজিলের হয়ে ২০১৪ বিশ্বকাপ খেলা মিডফিল্ডার অস্কার, ২০১৮ বিশ্বকাপে দারুণ ছন্দে থাকা ফিলিপে কুতিনহোর নাম। এছাড়া ফায়েনর্ডে খেলা ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড ইগর পায়েক্সো, করিস্থিয়ানে খেলা ২৬ বছর বয়সী গোলরক্ষক হুগো সৌজা, ফ্লামেঙ্গোর ডিফেন্ডার দানিলো ও অ্যালেক্স সান্দ্রো আছেন প্রাথমিক দলে।
কার্লো আনচেলত্তির কাছে পেশ করা দলের ১০ থেকে ১২ জন ফুটবলারের নাম ফাঁস করেছে ব্রাজিলের সংবাদ মাধ্যম। এর মধ্যে গ্লোবো নেইমার জুনিয়র, অস্কার, ফ্যারবিকো ব্রুনো, হুগো সৌজা ও ফ্লামেঙ্গোর ছয় ফুটবলার দানিলো, ওয়েলসি, লিও অর্টিজ, অ্যালেক্স সান্দ্রো, জেরসন ও পেদ্রোর নাম প্রকাশ করেছে।
কার্লো আনচেলত্তি নাকি আলাদা করে লিলিতে খেলা ব্রাজিলের দীর্ঘদেহি ডিফেন্ডার অ্যালেক্সহান্দ্রো রিবেইরোর বিষয়ে খোঁজ নিতে বলেছিলেন। এছাড়া ফায়েনর্ডে খেলা ও ডাচ লিগে সর্বাধিক ১৮ গোল করা ও ১৪ গোলে সহায়তা দেওয়া ফরোয়ার্ড ইগার পায়েক্সার কথাও বলেছিলেন ডন কার্লো। তাদের নাম ৫০ জনের প্রাথমিক দলের পাশাপাশি ২৮ জনের প্রাথমিক দলেও থাকতে পারে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব র জ ল ফ টবল ফ টবল র
এছাড়াও পড়ুন:
ঈদে স্ত্রী ও বাবা-মাকে নিয়ে যান শ্বশুরবাড়ি, ফিরে দেখেন ঘর থেকে কোটি টাকার স্বর্ণালংকার চুরি
তরুণ ব্যবসায়ী আসিফ তাঁর স্ত্রী ও বাবা-মাকে নিয়ে রাজধানীর ডেমরার মুসলিমনগরে নিজেদের ছয়তলা বাড়ির তৃতীয় তলায় বসবাস করেন। ঈদুল আজহার দুই দিন পর (৯ জুন) আসিফ তাঁর স্ত্রী, বাবা-মাকে নিয়ে মুন্সিগঞ্জে শ্বশুরবাড়িতে যান। এক দিন শ্বশুরবাড়িতে থেকে ১০ জুন রাত আটটায় মা খালেদা আক্তারকে সঙ্গে নিয়ে আসিফ ডেমরার নিজের বাসায়। আসিফ দেখতে পান শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার আগে দরজার তালা যেমন লাগিয়ে গিয়েছিলেন, ঠিক তেমনই রয়েছে। কিন্তু ঘরে ঢুকে তাঁরা দেখতে পান, ড্রয়িং রুমের মেঝেতে এলোমেলোভাবে জামাকাপড় পড়ে আছে।
আসিফের মা দেখতে পান, তাঁর কক্ষের আলমারি ভাঙা। তখন আলমারির বিশেষ জায়গায় লুকিয়ে রাখা স্বর্ণালংকার খুঁজতে থাকেন তিনি। কোথাও স্বর্ণালংকারের ব্যাগ খুঁজে না পেয়ে চিৎকার করে কাঁদতে শুরু করেন। আসিফ তখন মাকে সান্ত্বনা দিতে থাকেন। পরে আসিফ নিজের শয়নকক্ষে গিয়ে দেখতে পান, বাসার কাপড়চোপড় এলোমেলোভাবে পড়ে আছে। আলমারির দরজার তালা ভাঙা। তখন আলমারিতে রাখা স্ত্রীর স্বর্ণালংকারের ব্যাগ দেখতে না পেয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েন। আসিফ তখন বাসার অন্য আরেকটি আলমারির দিকে খেয়াল করেন। দেখতে পান সেই আলমারির তালাও ভাঙা। আলমারির বিশেষ জায়গায় লুকিয়ে রাখা স্বর্ণালংকারের সেই ব্যাগও সেখানে নেই। স্ত্রী, মা, নানি, মামির সব স্বর্ণালংকার চুরি হওয়ায় আসিফ তখন আরও হতাশ হয়ে পড়েন।
একপর্যায়ে আসিফ বাসার তৃতীয় তলার আরেকটি শয়নকক্ষের জানালার একটি গ্রিল কাটা অবস্থায় দেখতে পান। আসিফের মা সেখানে এসে তাঁকে বলেন, ‘আসিফ, আমাদের সর্বনাশ হয়ে গেছে…।’
আসিফ তখন মুন্সিগঞ্জে অবস্থান করা তাঁর স্ত্রীকে ফোন করে বাসায় চোর ঢোকার তথ্য জানান। আসিফের ফোন পেয়ে তাঁর স্ত্রী ওই রাতেই মুন্সিগঞ্জ থেকে ডেমরার বাসায় চলে আসেন। আলমারিতে বিশেষ জায়গায় লুকিয়ে রাখা স্বর্ণালংকারের ব্যাগটি দেখতে না পেয়ে কাঁদতে থাকেন তিনি। আসিফের স্ত্রীর কান্না দেখে তাঁর মা খালেদাও তখন আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন। পুত্রবধূকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকেন তিনি।
এ বিষয়ে আসিফ প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঈদের সময় আমার শ্বশুরবাড়ি যাওয়াটাই কাল হয়েছে। আমার ভাবনাতেই ছিল না, আমরা বাসায় না থাকলে বাসার গ্রিল কেটে চোর ঢুকবে।’ তিনি বলেন, ‘আমার স্ত্রীর ২৮ ভরি স্বর্ণ চুরি হয়েছে। আর মায়ের ২১ ভরি। আমার নানির সাড়ে চার ভরি আর মামির সাড়ে ছয় ভরি স্বর্ণ চুরি হয়েছে। মোট আমাদের বাসা থেকে এক কোটি টাকা (৬০ ভরি স্বর্ণ) মূল্যের স্বর্ণালংকার চুরি হয়েছে।’
আসিফদের শয়নকক্ষের যে জানালার গ্রিল কাটা, সেখানে আর কোনো ভবন নেই। বেশ দূরে রয়েছে একটা ভবন। আসিফ বলেন, ‘আমাদের বাসার প্রবেশপথে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা (সিসি ক্যামেরা) রয়েছে। কিন্তু সেটি যে নষ্ট ছিল, সেটা আমাদের জানা ছিল না। আর বাসার পেছনে থাকা তৃতীয় তলার শয়নকক্ষের জানালার গ্রিল কেটে চোর ঢুকেছে। ওই পাশে কোনো সিসি ক্যামেরা নেই।’
চোর শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ
ঘরে চুরি হওয়ার তিন দিনের মাথায় গত ১৩ জুন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে ডেমরা থানায় মামলা করেন আসিফ। এরপর এক মাস হতে চললেও কোটি টাকার স্বর্ণ চুরির সঙ্গে জড়িত কাউকে শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ। এতে চরম হতাশ হয়ে পড়েছেন আসিফ।
আক্ষেপ করে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘চুরির এত দিন পার হয়ে গেল, পুলিশ কাউকে ধরতে পারল না। চুরি যাওয়া স্বর্ণালংকার উদ্ধার না হওয়ায় আমার স্ত্রী ও মায়ের মন অনেক খারাপ। প্রায় সময় মা আমার কান্নাকাটি করেন। স্ত্রীর মনেও অনেক ক্ষোভ জন্মেছে, কেন পুলিশ চোর ধরতে পারছে না?’
আসিফ জানান, ১০ জুন রাতে বাসায় ঢুকে যখন তাঁরা বুঝতে পারেন স্বর্ণালংকার চুরি হয়ে গেছে, তখন জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ ফোন করেন। ডেমরা থানা থেকে পুলিশ সদস্যরা আসেন রাত ১০টার পর। তিনতলার যে কক্ষের জানালার গ্রিল কাটা হয়েছে, সেটির ছবি তোলেন তাঁরা। পরে চুরি যাওয়া ৬০ ভরি স্বর্ণালংকার আর নগদ ৫ লাখ টাকা চুরি হওয়ার তথ্য লিখে নিয়ে যান পুলিশ সদস্যরা।
এ মামলা তদন্তের অগ্রগতি জানতে চাইলে ডেমরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহমুদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, বাসা থেকে ৬০ ভরি স্বর্ণালংকার চুরির ঘটনাটি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। বাসার কাছের একটি সিসিটিভির ফুটেজ জোগাড় করে বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। তাতে একজন যুবকের উপস্থিতি দেখা গেছে। তাঁকে শনাক্ত করা এবং চোর খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।