দোহারে তরুণের হাত-পায়ের রগ কেটে দিল দুর্বৃত্তরা, হাসপাতালে মৃত্যু
Published: 21st, May 2025 GMT
ঢাকার দোহার উপজেলার শাইনপুকুর খরিয়া গ্রামে রাফি করিম খান (২৫) নামের এক তরুণের হাত-পায়ের রগ কেটে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
গত সোমবার রাতে রাফি করিমের হাত-পায়ের রগ কেটে শাইনপুকুর খরিয়া গ্রামের একটি মাঠে ফেলে যায় দুর্বৃত্তরা। স্বজনেরা তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলার একটি হাসপাতালে ও পরে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল রাতে তাঁর মৃত্যু হয়। রাফি করিম শাইনপুকুর খরিয়া গ্রামের মাসুদ করিম খানের একমাত্র ছেলে।
পুলিশ ও নিহত তরুণের স্বজনেরা জানান, সোমবার রাত ১০টার দিকে রাতের খাবার খেয়ে বাড়ির পাশে একটি দোকানে যান রাফি। এরপর আর বাসায় ফেরেননি। রাত একটার দিকে তাঁর মাকে একটি মুঠোফোন থেকে ফোন করে জানানো হয়, শাইনপুকুর মাঠে রাফির নিথর দেহ পড়ে আছে। স্বজনেরা হাত-পায়ের রগ কাটা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নেন। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে ঢাকায় পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল রাত দুইটার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়।
স্থানীয় লোকজনের ধারণা, মাদকসংক্রান্ত ঘটনার জেরে হয়তো তাঁকে হত্যার উদ্দেশ্যে এ ঘটনা ঘটতে পারে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, রাফি মা–বাবার একমাত্র ছেলে। বাবা অনেক সম্পত্তির মালিক। বাবার মৃত্যুর পর রাফিই সব দেখভাল করতেন। ওই সম্পত্তি গ্রাস করতে কোনো চক্র এ ঘটনা ঘটিয়েছে কি না, সেটাও খতিয়ে দেখা দরকার।
একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে শোকে নির্বাক মা আনোয়ারা খানম। ছেলের মৃত্যুর পর থেকে আহাজারি করছেন। তিনি বলেন, ‘প্রায় সাত বছর আগে স্বামীকে হারিয়ে তিন মেয়ে ও এক ছেলে নিয়ে সংসার করছিলাম। আমার ছেলেকে যারা এভাবে মেরেছে, তাদের বিচার চাই।’
রাফির ছোট বোন মুন আক্তার একটি কলেজের স্নাতক (সম্মান) তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। ভাই হত্যার বিচার চেয়ে তিনি বলেন, তাঁর ভাইকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার জন্য হাত-পায়ের রগ কেটে দেওয়া হয়েছে। কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে, রাফি হাসপাতালে একটি অডিও বার্তায় সব বলে গেছেন বলে জানান। পুলিশ বলেছে তদন্তের স্বার্থে এখনই প্রকাশ না করতে।
দোহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম বলেন, ময়নাতদন্ত শেষে লাশ হয়তো বিকেলে ফিরবে। দাফন শেষে পরিবারের লোকজন থানায় এসে এজাহার দেবেন বলে জানিয়েছেন। হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের বিষয়ে পুলিশ কাজ করছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: হ ত প য় র রগ ক ট শ ইনপ ক র অবস থ য় র একট
এছাড়াও পড়ুন:
নাচোলে বিএনপির দুই পক্ষের দ্বন্দ্বে প্রাণ গেল দুই ভাইয়ের
চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে বিএনপির দুই পক্ষের দ্বন্দ্বের জের ধরে এক পক্ষের হামলায় আহত দুই ভাই মারা গেছেন। বুধবার রাত পৌনে আটটার দিকে এক ভাই, পৌনে ১০টার দিকে আরেক ভাই মারা যান। গতকাল মঙ্গলবারের হামলায় আহত হয়ে তাঁরা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
নিহত ব্যক্তিরা হলেন মো. মিলন আলী (৬০) ও তাঁর আলম আলী (৫৫)। তাঁদের বাড়ি উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের সনকাই গ্রামে। মিলনের মৃত্যুর প্রায় দুই ঘণ্টা পরে মারা যান আলম আলী।
আরও পড়ুনচাঁপাইনবাবগঞ্জে বিএনপির দুই পক্ষের দ্বন্দ্বের জেরে হামলায় আহত ১৪, বাড়িঘর ভাঙচুর১৪ অক্টোবর ২০২৫মৃত দুই ভাইয়ের মরদেহ রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রয়েছে। নাচোল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, এ ঘটনায় হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের ভাষ্য, গোমস্তাপুর উপজেলার রূপপুর পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি আবদুস সালাম (তুহিন) ও নাচোল থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবু তাহেরের (খোকন) সমর্থকদের সঙ্গে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আমিনুল ইসলামের সমর্থকদের মধ্যে দ্বন্দ্ব রয়েছে। গত রোববার তুহিন-খোকন পক্ষের লোকজনের মারধরে আমিনুলের পক্ষের এক ব্যক্তি গুরুতর আহত হন। ওই ঘটনার জেরে গতকাল মঙ্গলবার আমিনুলের সমর্থকদের হামলায় ওই দুই ভাইসহ ১৪ জন আহত হন।
মিলন আলীর ছোট ভাই সাইফুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, হামলায় আহত হয়ে তাঁর আরও দুই ভাই ও এক ভাতিজা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। নিহত মিলন আলীর ছেলে রাব্বানীর অবস্থা গুরুতর।
বিএনপির দুই পক্ষের দ্বন্দ্বে জের ধরে এই হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হলেও দলটির নেতাদের ভাষ্য, এটা রাজনৈতিক কারণে হয়নি।
মঙ্গলবার হামলার বিষয়ে সাবেক সংসদ সদস্য আমিনুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেছিলেন, দুই পক্ষে বিএনপির লোকজন থাকলেও হামলা কোনো রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের কারণে হয়নি। স্থানীয় গ্রাম্য রাজনীতি থেকে এ ঘটনা ঘটেছে। একই কথা বলেছিলেন, নাচোল থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবু তাহের। তিনি বলেন, ‘এটা কোনো রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব থেকে নয়, স্থানীয় গ্রাম্য রাজনীতির দ্বন্দ্ব থেকে ঘটেছে।