ট্রাম্প আইএসের জন্য যেভাবে দরজা খুলে দিচ্ছেন
Published: 16th, November 2025 GMT
লেবাননবিষয়ক ওয়াশিংটনের কৌশল নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরে যেন নতুন একটি নীতিগত বিতর্ক তৈরি হয়েছে। সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্টের (জো বাইডেন) একজন উপদেষ্টা আমোস হকস্টাইন হিজবুল্লাহর নিরস্ত্রীকরণে ট্রাম্প প্রশাসনের অতিরিক্ত জোর দেওয়ার নীতিকে পরোক্ষভাবে সমালোচনা করেছেন।
হকস্টাইন বলেন, ‘আমরা বাস্তবতা বুঝে এগোই। শুধু হিজবুল্লাহকে নিরস্ত্রীকরণে জোর দিলে হবে না। দ্বিমুখী পথেই এগোতে হবে—অর্থনীতি গড়ে তুলে বিনিয়োগ আনা এবং লেবানিজ সশস্ত্র বাহিনীকে শক্তিশালী করা।’
বাইডেন প্রশাসনের এই সাবেক কূটনীতিক সতর্ক করেন, হিজবুল্লাহকে নিরস্ত্রীকরণের জন্য লেবানন সরকারের ওপর অতিরিক্ত চাপ প্রয়োগ করলে গৃহযুদ্ধের ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে লেবাননের পুনর্গঠন প্রচেষ্টায় সহায়তার আহ্বান জানান।
এর বিপরীতে হিজবুল্লাহর নিরস্ত্রীকরণে অতিরিক্ত চাপাচাপিতে লেবাননকে যদি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করা হয়, তাহলে তা যুক্তরাষ্ট্রের আঞ্চলিক পরিকল্পনাকে দুর্বল করবে। এটি যুক্তরাষ্ট্রের সেই অন্ধকার রেকর্ডে আরেকটি সংযোজন হবে, যেখানে তারা ইরাক, আফগানিস্তান, লিবিয়া কিংবা অন্যত্র ব্যর্থ রাষ্ট্র তৈরিতে ভূমিকা রেখেছে।ওই কূটনীতিকের এই বক্তব্য আসে এমন এক সময়ে, যখন তুরস্কে মার্কিন রাষ্ট্রদূত ও সিরিয়াবিষয়ক বিশেষ দূত টম ব্যারাক লেবাননকে ‘ব্যর্থ রাষ্ট্র’ আখ্যা দেন। তিনি বলেন, হিজবুল্লাহকে নিরস্ত্রীকরণে ব্যর্থ হওয়া দেশটির রাজনৈতিক নেতাদের তিনি ‘ডাইনোসর’ মনে করেন।
পক্ষপাতহীন অবস্থান থেকেই হকস্টাইনের এই মন্তব্য এসেছে। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর সাবেক সদস্য হকস্টাইন ছিলেন বাইডেন প্রশাসনের লেবানন-সম্পর্কিত মুখ্য ব্যক্তি। তাঁর মধ্যস্থতায় লেবানন-ইসরায়েলের সামুদ্রিক সীমান্ত নির্ধারণে ঐতিহাসিক চুক্তি হয়, হিজবুল্লাহও যা সমর্থন করেছিল।
হকস্টাইনের মন্তব্য ইঙ্গিত করে যে দ্রুত হিজবুল্লাহ নিরস্ত্রীকরণে ট্রাম্প প্রশাসনের বাড়াবাড়ি আসলে লেবাননকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। দেশটি হয়তো ‘দুর্বল রাষ্ট্র’। কিন্তু বর্তমান পদ্ধতি সবকিছু অরাজকতার দিকে ঠেলে দিতে পারে।
বাস্তববাদী দৃষ্টিভঙ্গিএদিকে হিজবুল্লাহ এক বিবৃতিতে লেবানন-ইসরায়েল আলোচনার প্রতি কঠোর আপত্তি জানিয়েছে। তবে গত সপ্তাহে প্রেসিডেন্ট জোসেফ আউন যখন বলেন, সংঘাত বন্ধের একমাত্র পথ হলো আলোচনায় বসা। তাঁর পরিপ্রেক্ষিতে হিজবুল্লাহর বিবৃতি পুরোপুরি আলোচনার অস্বীকৃতি নয়।
এক কর্মকর্তা পরে গবেষক ও সাংবাদিকদের বলেন, তাঁরা ‘রাজনৈতিক’ আলোচনার কথা বলেছিলেন, অর্থাৎ ‘অরাজনৈতিক’ আলোচনার পথ খোলা থাকতে পারে। তিনি এটিও বলেন, যেকোনো আলোচনার একটি স্পষ্ট চূড়ান্ত লক্ষ্য থাকা উচিত।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, হিজবুল্লাহ তাদের বিবৃতিতে ২০২৪ সালের নভেম্বরের যুদ্ধবিরতি চুক্তির একটি ধারার উল্লেখ করে, যা লেবাননের যেকোনো সশস্ত্র গোষ্ঠীকে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে হামলা চালানো থেকে বিরত থাকতে বলে। ইসরায়েলের পক্ষ থেকে সম্ভাব্য ভবিষ্যৎ হামলার অভিযোগের প্রতিক্রিয়া হিসেবেই এটি দেওয়া হয়েছে।
এই অবস্থান টেলিভিশন ভাষণে দলটির নেতা শেখ নাঈম কাসেমও পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, ইসরায়েল লেবাননে হামলা চালিয়ে গেলে হিজবুল্লাহ বাধ্য হবে প্রতিক্রিয়া জানাতে, তবে তারা নিজেরা হামলা শুরু করতে চায় না।
হিজবুল্লাহর এই ব্যবহারিক অবস্থান বিবেচনায় ট্রাম্প প্রশাসনের উচিত হবে হকস্টাইনের পরামর্শ গ্রহণ করে নিরস্ত্রীকরণ ইস্যুতে আরও নমনীয় হওয়া এবং একই সঙ্গে ইসরায়েলকে লেবাননে চলমান হামলা বন্ধে চাপ দেওয়া।
এতে যুক্তরাষ্ট্রের পৃষ্ঠপোষকতায় একধরনের স্থায়ী ‘শীতল শান্তি’ প্রতিষ্ঠা হতে পারে, যা লেবানন-ইসরায়েলের দীর্ঘ সংঘাতের পরিপ্রেক্ষিতে ট্রাম্প প্রশাসনের আঞ্চলিক অবস্থানকে শক্তিশালী করবে। এই সাফল্যের গুরুত্ব হয়তো ট্রাম্প প্রশাসনের আরেক বড় লক্ষ্য, যা সৌদি আরব-ইসরায়েল সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের সমতুল্য হবে, যদিও সৌদি ও ইসরায়েলের মধ্যে কখনো যুদ্ধ হয়নি।
এ ধরনের ‘শীতল শান্তি’ বৃহত্তর কৌশলগত স্বার্থেও যুক্তরাষ্ট্রকে সুবিধা দেবে। ওয়াশিংটন বৈরুতে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম মার্কিন দূতাবাস কমপ্লেক্স নির্মাণ করছে (বাগদাদের পর)। ফলে লেবানন ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্রের আঞ্চলিক নীতিতে গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হবে, দেশটির স্থিতিশীলতা তাই যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি স্বার্থের বিষয়।
আইএসের জন্য দরজা খুলে দেওয়াএর বিপরীতে হিজবুল্লাহর নিরস্ত্রীকরণে অতিরিক্ত চাপাচাপিতে লেবাননকে যদি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করা হয়, তাহলে তা যুক্তরাষ্ট্রের আঞ্চলিক পরিকল্পনাকে দুর্বল করবে। এটি যুক্তরাষ্ট্রের সেই অন্ধকার রেকর্ডে আরেকটি সংযোজন হবে, যেখানে তারা ইরাক, আফগানিস্তান, লিবিয়া কিংবা অন্যত্র ব্যর্থ রাষ্ট্র তৈরিতে ভূমিকা রেখেছে।
এর ফলে ট্রাম্পের উত্তরাধিকারের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়বে, বিশেষত আইএস হুমকির ক্ষেত্রে। এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ব্যর্থ রাষ্ট্রে ভালোভাবে টিকে থাকে এবং লেভান্ত অঞ্চলে তাদের আগ্রহ বিশেষভাবে গভীর, যা ইরাক ও সিরিয়ায় তাদের পুনরুত্থানের চেষ্টায় প্রমাণিত। লেবাননে বিশৃঙ্খলা আইএসের জন্য সুবর্ণ সুযোগ তৈরি করবে।
এই বাস্তবায় যুক্তরাষ্ট্রের জন্য লেবানন বিষয়ে ইসরায়েলের এজেন্ডা থেকে দূরত্ব বজায় রাখা যুক্তিযুক্ত। হিজবুল্লাহ নিরস্ত্রীকরণের ওপর একমাত্র জোর দেওয়া ইসরায়েলের জন্য কাঙ্ক্ষিত। কারণ, এতে তাদের ভূখণ্ড বিস্তারের নীতির পথ সুগম হয়। কিন্তু এই পরিস্থিতি যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থে নয়, ট্রাম্পের রাজনৈতিক উত্তরাধিকারের জন্যই নয়।
আলি রিজক বৈরুতভিত্তিক নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক। রেসপনসিবল স্টেটক্রাফট ও দ্য আমেরিকান কনজারভেটিভসহ বিভিন্ন মাধ্যমে লেখেন।
মিডল ইস্ট আই থেকে নেওয়া
ইংরেজি থেকে সংক্ষেপিত অনুবাদ।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র র স ইসর য় ল র র জন ত ক অবস থ ন র জন য দ র বল ল ব নন র র জন
এছাড়াও পড়ুন:
ট্রাম্প আইএসের জন্য যেভাবে দরজা খুলে দিচ্ছেন
লেবাননবিষয়ক ওয়াশিংটনের কৌশল নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরে যেন নতুন একটি নীতিগত বিতর্ক তৈরি হয়েছে। সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্টের (জো বাইডেন) একজন উপদেষ্টা আমোস হকস্টাইন হিজবুল্লাহর নিরস্ত্রীকরণে ট্রাম্প প্রশাসনের অতিরিক্ত জোর দেওয়ার নীতিকে পরোক্ষভাবে সমালোচনা করেছেন।
হকস্টাইন বলেন, ‘আমরা বাস্তবতা বুঝে এগোই। শুধু হিজবুল্লাহকে নিরস্ত্রীকরণে জোর দিলে হবে না। দ্বিমুখী পথেই এগোতে হবে—অর্থনীতি গড়ে তুলে বিনিয়োগ আনা এবং লেবানিজ সশস্ত্র বাহিনীকে শক্তিশালী করা।’
বাইডেন প্রশাসনের এই সাবেক কূটনীতিক সতর্ক করেন, হিজবুল্লাহকে নিরস্ত্রীকরণের জন্য লেবানন সরকারের ওপর অতিরিক্ত চাপ প্রয়োগ করলে গৃহযুদ্ধের ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে লেবাননের পুনর্গঠন প্রচেষ্টায় সহায়তার আহ্বান জানান।
এর বিপরীতে হিজবুল্লাহর নিরস্ত্রীকরণে অতিরিক্ত চাপাচাপিতে লেবাননকে যদি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করা হয়, তাহলে তা যুক্তরাষ্ট্রের আঞ্চলিক পরিকল্পনাকে দুর্বল করবে। এটি যুক্তরাষ্ট্রের সেই অন্ধকার রেকর্ডে আরেকটি সংযোজন হবে, যেখানে তারা ইরাক, আফগানিস্তান, লিবিয়া কিংবা অন্যত্র ব্যর্থ রাষ্ট্র তৈরিতে ভূমিকা রেখেছে।ওই কূটনীতিকের এই বক্তব্য আসে এমন এক সময়ে, যখন তুরস্কে মার্কিন রাষ্ট্রদূত ও সিরিয়াবিষয়ক বিশেষ দূত টম ব্যারাক লেবাননকে ‘ব্যর্থ রাষ্ট্র’ আখ্যা দেন। তিনি বলেন, হিজবুল্লাহকে নিরস্ত্রীকরণে ব্যর্থ হওয়া দেশটির রাজনৈতিক নেতাদের তিনি ‘ডাইনোসর’ মনে করেন।
পক্ষপাতহীন অবস্থান থেকেই হকস্টাইনের এই মন্তব্য এসেছে। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর সাবেক সদস্য হকস্টাইন ছিলেন বাইডেন প্রশাসনের লেবানন-সম্পর্কিত মুখ্য ব্যক্তি। তাঁর মধ্যস্থতায় লেবানন-ইসরায়েলের সামুদ্রিক সীমান্ত নির্ধারণে ঐতিহাসিক চুক্তি হয়, হিজবুল্লাহও যা সমর্থন করেছিল।
হকস্টাইনের মন্তব্য ইঙ্গিত করে যে দ্রুত হিজবুল্লাহ নিরস্ত্রীকরণে ট্রাম্প প্রশাসনের বাড়াবাড়ি আসলে লেবাননকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। দেশটি হয়তো ‘দুর্বল রাষ্ট্র’। কিন্তু বর্তমান পদ্ধতি সবকিছু অরাজকতার দিকে ঠেলে দিতে পারে।
বাস্তববাদী দৃষ্টিভঙ্গিএদিকে হিজবুল্লাহ এক বিবৃতিতে লেবানন-ইসরায়েল আলোচনার প্রতি কঠোর আপত্তি জানিয়েছে। তবে গত সপ্তাহে প্রেসিডেন্ট জোসেফ আউন যখন বলেন, সংঘাত বন্ধের একমাত্র পথ হলো আলোচনায় বসা। তাঁর পরিপ্রেক্ষিতে হিজবুল্লাহর বিবৃতি পুরোপুরি আলোচনার অস্বীকৃতি নয়।
এক কর্মকর্তা পরে গবেষক ও সাংবাদিকদের বলেন, তাঁরা ‘রাজনৈতিক’ আলোচনার কথা বলেছিলেন, অর্থাৎ ‘অরাজনৈতিক’ আলোচনার পথ খোলা থাকতে পারে। তিনি এটিও বলেন, যেকোনো আলোচনার একটি স্পষ্ট চূড়ান্ত লক্ষ্য থাকা উচিত।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, হিজবুল্লাহ তাদের বিবৃতিতে ২০২৪ সালের নভেম্বরের যুদ্ধবিরতি চুক্তির একটি ধারার উল্লেখ করে, যা লেবাননের যেকোনো সশস্ত্র গোষ্ঠীকে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে হামলা চালানো থেকে বিরত থাকতে বলে। ইসরায়েলের পক্ষ থেকে সম্ভাব্য ভবিষ্যৎ হামলার অভিযোগের প্রতিক্রিয়া হিসেবেই এটি দেওয়া হয়েছে।
এই অবস্থান টেলিভিশন ভাষণে দলটির নেতা শেখ নাঈম কাসেমও পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, ইসরায়েল লেবাননে হামলা চালিয়ে গেলে হিজবুল্লাহ বাধ্য হবে প্রতিক্রিয়া জানাতে, তবে তারা নিজেরা হামলা শুরু করতে চায় না।
হিজবুল্লাহর এই ব্যবহারিক অবস্থান বিবেচনায় ট্রাম্প প্রশাসনের উচিত হবে হকস্টাইনের পরামর্শ গ্রহণ করে নিরস্ত্রীকরণ ইস্যুতে আরও নমনীয় হওয়া এবং একই সঙ্গে ইসরায়েলকে লেবাননে চলমান হামলা বন্ধে চাপ দেওয়া।
এতে যুক্তরাষ্ট্রের পৃষ্ঠপোষকতায় একধরনের স্থায়ী ‘শীতল শান্তি’ প্রতিষ্ঠা হতে পারে, যা লেবানন-ইসরায়েলের দীর্ঘ সংঘাতের পরিপ্রেক্ষিতে ট্রাম্প প্রশাসনের আঞ্চলিক অবস্থানকে শক্তিশালী করবে। এই সাফল্যের গুরুত্ব হয়তো ট্রাম্প প্রশাসনের আরেক বড় লক্ষ্য, যা সৌদি আরব-ইসরায়েল সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের সমতুল্য হবে, যদিও সৌদি ও ইসরায়েলের মধ্যে কখনো যুদ্ধ হয়নি।
এ ধরনের ‘শীতল শান্তি’ বৃহত্তর কৌশলগত স্বার্থেও যুক্তরাষ্ট্রকে সুবিধা দেবে। ওয়াশিংটন বৈরুতে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম মার্কিন দূতাবাস কমপ্লেক্স নির্মাণ করছে (বাগদাদের পর)। ফলে লেবানন ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্রের আঞ্চলিক নীতিতে গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হবে, দেশটির স্থিতিশীলতা তাই যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি স্বার্থের বিষয়।
আইএসের জন্য দরজা খুলে দেওয়াএর বিপরীতে হিজবুল্লাহর নিরস্ত্রীকরণে অতিরিক্ত চাপাচাপিতে লেবাননকে যদি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করা হয়, তাহলে তা যুক্তরাষ্ট্রের আঞ্চলিক পরিকল্পনাকে দুর্বল করবে। এটি যুক্তরাষ্ট্রের সেই অন্ধকার রেকর্ডে আরেকটি সংযোজন হবে, যেখানে তারা ইরাক, আফগানিস্তান, লিবিয়া কিংবা অন্যত্র ব্যর্থ রাষ্ট্র তৈরিতে ভূমিকা রেখেছে।
এর ফলে ট্রাম্পের উত্তরাধিকারের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়বে, বিশেষত আইএস হুমকির ক্ষেত্রে। এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ব্যর্থ রাষ্ট্রে ভালোভাবে টিকে থাকে এবং লেভান্ত অঞ্চলে তাদের আগ্রহ বিশেষভাবে গভীর, যা ইরাক ও সিরিয়ায় তাদের পুনরুত্থানের চেষ্টায় প্রমাণিত। লেবাননে বিশৃঙ্খলা আইএসের জন্য সুবর্ণ সুযোগ তৈরি করবে।
এই বাস্তবায় যুক্তরাষ্ট্রের জন্য লেবানন বিষয়ে ইসরায়েলের এজেন্ডা থেকে দূরত্ব বজায় রাখা যুক্তিযুক্ত। হিজবুল্লাহ নিরস্ত্রীকরণের ওপর একমাত্র জোর দেওয়া ইসরায়েলের জন্য কাঙ্ক্ষিত। কারণ, এতে তাদের ভূখণ্ড বিস্তারের নীতির পথ সুগম হয়। কিন্তু এই পরিস্থিতি যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থে নয়, ট্রাম্পের রাজনৈতিক উত্তরাধিকারের জন্যই নয়।
আলি রিজক বৈরুতভিত্তিক নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক। রেসপনসিবল স্টেটক্রাফট ও দ্য আমেরিকান কনজারভেটিভসহ বিভিন্ন মাধ্যমে লেখেন।
মিডল ইস্ট আই থেকে নেওয়া
ইংরেজি থেকে সংক্ষেপিত অনুবাদ।