বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে সুহেল আহমদ (২১) নিহতের ঘটনায় আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ও নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সাসংদ শামীম ওসমানের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে। মামলায় ১৫০-২০০ জনকে অজ্ঞাত হিসেবে আসামি করা হয়েছে।

হত্যার ঘটনার দশ মাস পর বৃহস্পতিবার রাতে নিহতের সহকর্মী ও বন্ধু আব্দুল হামিদ চৌধুরী ওরফে ফরহাদ বাদী হয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় মামলাটি দায়ের করেন। তবে শনিবার বিকেলে মামলার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, নিহত যুবক সুহেল আহমদ পেশায় একজন টাইলস মিস্ত্রি। আন্দোলন চলাকালীন তিনি এবং বাদী উভয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের শিমরাইল মোড়ে প্রিয়ম নিবাসের দ্বিতীয় তলার ডাচ বাংলা ব্যাংকের অফিসে টাইলসের কাজ করছিলেন।

ছাত্র-জনতা ২০ জুলাই যখন ভবনটির সামনে জড়ো হয়ে আন্দোলন করছিলেন, তখন প্রধান আসামি ওবায়দুল কাদেরের নির্দেশনায় এবং দ্বিতীয় আসামি শামীম ওসমানের উপস্থিতিতে অন্যান্য আসামিরা অস্ত্র নিয়ে জনতার ওপর হামলা চালায়। একপর্যায়ে আসামিরা ভিকটিম এবং বাদীর কর্মরত ভবনে আগুন জ্বালিয়ে দেয়।

এতে বাদী প্রাণ রক্ষায় ভবন থেকে লাফ দিয়ে পালাতে পারলেও ভিকটিম ভেতরে আটকা পড়ে পুড়ে মারা যায়। এই ঘটনার দুই দিন পর ভবনের ভেতর থেকে ভুক্তভোগী সুহেল আহমেদের পোড়া লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে নিহত সুহেল আহমেদের লাশ তার বাবা তাখলিসুর রহমানের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়।

মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহিনূর আলম বলেন, তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: হত য স দ ধ রগঞ জ শ ম ম ওসম ন ন র য়ণগঞ জ

এছাড়াও পড়ুন:

দুদককে চিঠি দেওয়ার বিষয়টিকে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে: ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব

বিটিসিএলের ৫জি রেডিনেস প্রকল্প চালিয়ে নিতে দুদককে চিঠি দেওয়ার বিষয়টিকে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার টেলিযোগাযোগ বিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি বলেছেন, ব্যক্তিস্বার্থে নয়, দেশের স্বার্থেই দুদকের সহায়তা চাওয়া হয়েছে। কারণ প্রকল্পটি থমকে গেলে সরকারের ৬০০ কোটি টাকা গচ্চা যাবে। 

আজ সোমবার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় ফয়েজ তৈয়্যব বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের বিশেষ সুবিধায় টেলিকম ব্যবসায়ীরা ১২ বছরে ৮ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব ক্ষতি করেছে। তিনি বলেন, নতুন টেলিযোগাযোগ লাইসেন্স নীতিমালা নিয়ে স্বার্থান্বেষী ব্যবসায়ীদের রোষানলে পড়েছেন। দেশি কোম্পানি বন্ধ হবে বলে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। 

এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম, আইসিটি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব মো. জহিরুল ইসলাম।

দেশের স্বার্থেই এই উদ্যোগ 
সংবাদ সম্মেলনে ফয়েজ তৈয়্যব বলেন, বিটিসিএল ফাইবার নেটওয়ার্ক বাড়ানোর প্রকল্পটি গত সরকারের আমলের। সে সময়ই দরপ্রক্রিয়া প্রভাবিত করা হয়েছে এবং একটা এলসিও করা হয়েছিল। আমি এবং নাহিদ ইসলাম দায়িত্ব নেওয়ার আগে সেই এলসির ২৯০ কোটি পরিশোধ করা হয়ে গেছে। এই সব কিছু আমলে নিয়ে আমরা দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলেছি। আমি নিজে ওনার অফিসে গিয়েছি। আমি বলেছি, যেহেতু ২৯০ কোটি টাকা চলে গেছে তাই প্রকল্পটি চালিয়ে নেওয়া যেতে পারে। এ ছাড়া বিটিসিএলের সক্ষমতা বৃদ্ধির আরও একটি ৩০০ কোটি টাকার প্রকল্প শেষ হয়েছে। ৫জি রেডিনেস প্রকল্পটি শেষ না হলে ওই প্রকল্পটি কাজে লাগানো যাচ্ছে না। এই প্রকল্প বাস্তবায়িত না হলে বিটিসিএল দুর্বল হয়ে মার্কেট আউট হয়ে যাওয়ার একটা সম্ভাবনা আছে। প্রতিদ্বন্দ্বী বেসরকারি কোম্পানিগুলো এটাই চাইছে। তাই দেশের স্বার্থে বিটিসিএলের প্রকল্প এগিয়ে নিতে বলিষ্ঠ উদ্যোগ নিয়েছি। 

কারো লাইসেন্স কেড়ে নেওয়া হবে না
নতুন টেলিযোগাযোগ নীতিমালা কার্যকর হলে আইসিএক্স, আইজিডব্লিউসহ দেশীয় বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে দাবি করা হচ্ছে- এ প্রশ্নের জবাবে বিশেষ সহকারী বলেন,  এটা সম্পূর্ণ একটা অপব্যাখ্যা। আমরা বলেছি, কারো লাইসেন্স কেড়ে নেওয়া হবে না। যেটা হবে, যেহেতু এই লাইসেন্সগুলো আন্তর্জাতিক স্তরের বা আন্তর্জাতিক স্বীকৃত নেই। আর এত স্তর থাকার জন্য গ্রাহকের প্রতি কলে খরচ বেড়ে যায়। নতুন লাইসেন্স ব্যবস্থায় এ গুলো আর থাকবে না। তাদের নতুন বিনিয়োগের মাধ্যমে লাইসেন্স নিয়ে নতুনভাবে ব্যবসা করতে হবে। এক্ষেত্রে পুরনো উদ্যোক্তাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। এর বাইরে যেসব আইসিএক্স, আইজিডব্লিউর লাইসেন্স ২০২৭ সালের দিকে শেষ হবে; তারা চাইলে আউটসোর্সিং হিসেবে বিদ্যমান লাইসেন্সে কাজ করার সুযোগ পাবে। সুতরাং এটা সম্পূর্ণ অপব্যাখ্যা যে দেশীয়দের ব্যবস্থা বন্ধ করা হচ্ছে। 

সরকারের ক্ষতি ৮ হাজার কোটি টাকা
টেলিযোগাযোগ খাতে বিগত সরকারের অনিয়ম দুর্নীতির উল্লেখ করে ফয়েজ তৈয়্যব বলেন, ‘২০১৩ সালে আন্তর্জাতিক কল টার্মিনেশন নিয়ন্ত্রণ করার জন্য সালমান এফ রহমানের নেতৃত্বে সাতটি আইজিডব্লিউ অপারেটর আইওএফ নামে একটি সংগঠন গঠন করে। বিটিআরসি এবং টেলিযোগাযোগ বিভাগ আইওএফকে বৈধতা দিতে এর পরীক্ষামূলক কার্যক্রম চালু করে, যা প্রায় ১২ বছরব্যাপী পরীক্ষামূলকই ছিল। মোবাইল অপারেটরদের সরাসরি আন্তর্জাতিক কল আনতে নিষিদ্ধ করা হয়। এদিকে আইওএফ প্রতি মিনিটে ০.০৩ ডলারে কল টার্মিনেট করলেও রাজস্ব ঘোষণা করত মাত্র ০.০০৬ ডলার। ২০২৪ সাল নাগাদ প্রকৃত আন্তর্জাতিক টার্মিনেশন রেট ০.০০১ ডলারে নেমে এলেও আইওএফ প্রতি মিনিটে মাত্র ০.০০০৪ ডলারই ঘোষণা করতে থাকে। এইভাবে গত ১২ বছরে সরকারের ৮ হাজার কোটি টাকারও বেশি রাজস্ব ক্ষতির কারণ হয়েছে। এ বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ক্ষতির পুরোটাই সালমান এফ রহমান গংদের পকেটে ঢুকেছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘বাংলাদেশে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় মেনে নেবে না হেফাজত’
  • ‘ঢাকায় মানবাধিকার কমিশনের কার্যালয় স্থাপন জনগণ মেনে নেবে না’
  • বড়লেখায় তিন ইউনিয়নকে জামায়াত নেতা ‘পাকিস্তান খ্যাত’ বলায় আলোচনা-সমালোচনা, প্রতিবাদ
  • দেশে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় মেনে নেবে না হেফাজত: আজিজুল হক
  • কক্সবাজার সমুদ্রে নিখোঁজ চবির আরেক শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার 
  • মিলেমিশে দুই ইজারাদারের সরকারি বালু আত্মসাৎ
  • জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক শামিম আহমদ আর নেই
  • দুদককে চিঠি দেওয়ার বিষয়টিকে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে: ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব
  • দুদক চেয়ারম্যানের সহযোগিতা চেয়েছি, কোনো নির্দেশ দিইনি: ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব
  • হবিগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রআন্দোলনের বহিষ্কৃত যুগ্ম আহ্বায়ক গ্রেপ্তার