উৎসবমুখর ও বর্ণিল আয়োজনের মধ্যে দিয়ে পর্দা নামল দুই দিনব্যাপী টরোন্টো বাংলা বইমেলার। এবার বইমেলায় বিপুল সংখ্যক বইপ্রেমী, লেখক, প্রকাশক, শিশু-কিশোর ও নারী-পুরুষের পদচারণায় মুখর ছিল। প্রবাসীরা একঘেয়েমি জীবন থেকে বেরিয়ে এসে আনন্দ উৎসবে মেতেছিলেন এই মিলনমেলায়।

কানাডার টরেন্টোর ড্যানফোর্থের ডেন্টোনিয়া পার্কের শহীদ মিনারে ৩১ মে দুই দিনব্যাপী ১৯তম টরোন্টো বাংলা বইমেলা উদ্ধোধন করেন বাংলাদেশি কানাডিয়ান এম.

পি.পি ডলি বেগম। এ সময়ে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বইমেলা এর আহবায়ক সাদি আহমেদ।

মেলায় বাংলাদেশ ও উত্তর আমেরিকার শীর্ষ স্থানীয় লেখক ও প্রকাশকগণ পাঠকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। কবি লেখক সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিদের আড্ডায় প্রবাসীরা পেয়েছিলেন বাঙালিয়ানা স্বাদ।

‘অন্যমেলার’ আয়োজনে ৩১ মে শুরু হওয়া এই উৎসবে ২৫টিরও বেশি প্রকাশনা সংস্থা অংশগ্রহণ করে এবং তিন হাজারের বেশি নতুন ও পুরাতন বই প্রদর্শিত হয়।

ডন অন ডেনফোর্থ মিলনায়তনে দুই দিনব্যাপী এই মেলায় ছিল সাহিত্য আলোচনা ও কর্মশালা, কবিতা ও আবৃত্তি কর্মশালা, নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন ও লেখক পরিচিতি, প্রকাশক পরিচিতি, সামাজিক সমস্যা ভিত্তিক সেমিনার, গুণীজন স্মরণ অনুষ্ঠান, চলচ্চিত্র ও ডকুমেন্টারি প্রদর্শনী এছাড়াও ছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

মেলার শেষ দিনে মাহমুদুল ইসলাম সেলিমের নিদের্শনায় নাটক ‘কর্ণকুন্তি সংবাদ’ দর্শকদের ভূয়সী প্রশংসা অর্জন করে।

আয়োজকরা জানান, প্রাণের ভাষা বাংলাকে বিশ্বের বুকে তুলে ধরা এবং প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে আমাদের শিল্প সাহিত্য ও সংস্কৃতি কে বাঁচিয়ে রাখাই টরোন্টো বাংলা বইমেলার মূল লক্ষ্য।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: বইম ল বইম ল

এছাড়াও পড়ুন:

সোনারগাঁয়ে লোকনাথ ব্রহ্মচারীর তিরোধান দিবস উদযাপন

সোনারগাঁয়ে বারদীতে হিন্দু সম্প্রদায়ের আধ্যাত্মিক সাধক লোকনাথ ব্রহ্মচারীর ১৩৫ তম তিরোধান দিবস বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনায় উদযাপন হয়েছে। উৎসবকে কেন্দ্র করে আশ্রমের আশপাশের এলাকা ভক্তদের পদচারনায় মুখরিত হয়ে উঠেছে।

মঙ্গলবার (৩ জুন) সকালে পুজা আর্চনার মধ্য দিয়ে তিরোধান দিবসের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। এর আগে গত দু’দিন ধরে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন স্থান থেকে লোকনাথ ভক্ত আশ্রমে তিরোধান উৎসবে যোগ দিয়েছেন। মঙ্গলবার সকালে ঊষা কীর্তন অনুষ্ঠিত হয়। এরপর চলে পূজা অর্চনা, গীতা পাঠ, কীর্তন, রাজভোগ, বাল্য ভোগ ও প্রসাদ বিতরণ।

মঙ্গলবার বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে লোকজনেরও সমাগম বাড়ে। তবে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় তিরোধান উৎসবকে কেন্দ্র করে আশ্রম এলাকায় সকল ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে উপজেলার বারদী এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোড়দার করা হয়েছে।

এদিকে তিরোধান উৎসবকে ঘিরে বারদী এলাকায় বসেছে ৫ দিন ব্যাপী মেলা। এলাকাবাসীর অভিযোগ এ মেলায় বিভিন্ন স্থানে জুয়ার আসর বসেছে। স্থানীয় প্রশাসন এ বিষয়ে নীরব ভূমিকা পালন করছে।

হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মতে, লোকনাথ ব্রহ্মচারী ১৭৩০ খ্রিষ্টাব্দে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশ পরগনা জেলার বারাসাতের দে গঙ্গা থানার কচুয়া (কাঁকড়া) গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা রামনারায়ণ ঘোষাল ও মা কমলা দেবী। লোকনাথ ছিলেন তাঁর মা-বাবার ছোট ছেলে। তিনি হিমালয়ে গিয়ে ৪০ বছর সাধনা করেন। তিনি আফগানিস্তানের কাবুলে আরবি ভাষা ও কোরআন শাস্ত্র শিক্ষা করে ইসলাম ধর্ম এবং এর দর্শন সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করেন।

লোকনাথের যখন মাত্র ১০ বছর বয়স তখনই তাকে সর্বশাস্ত্র পারদর্শী সন্ন্যাসী ভগবান গাংগুলীর হাতে তুলে দেন বাবা রামনারায়ণ। মানবতাই মানুষের শ্রেষ্ঠ ধর্ম এ বাক্য অন্তরে লালন করে মানবজাতির কল্যাণে কাজ করে দীর্ঘ ২৬ বছর নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের বারদী এলাকায় অবস্থান করেন মহাসাধক লোকনাথ ব্রহ্মচারী।

১৬০ বৎসর বয়সে ১৯ জৈষ্ঠ্য তারিখে বারদী আশ্রমে এ সাধকের মহাপ্রয়াণ ঘটে। এরপর থেকেই প্রতিবছর ১৯ জৈষ্ঠ্য লোকনাথ ব্রহ্মচারীর তিরোধান দিবস পালন করে আসছে আশ্রম কর্তৃপক্ষ।

তিরোধান উৎসব উপলক্ষে লোকনাথ ব্রহ্মচারী আশ্রম কর্তৃপক্ষ আয়োজন করেছে দিনব্যাপী বিভিন্ন নানা অনুষ্ঠানমালার। এতে রয়েছে প্রভাত কীর্তন, গীতাপাঠ, লোকনাথ ব্রহ্মচারীর জীবন বৃত্তান্ত নিয়ে আলোচনা, বাল্যভোগ, রাজভোগ বিতরণ, ভক্তিমূলক গান, সন্ধ্যা আরতি, ফল প্রসাদ, জল প্রসাদ বিতরণসহ বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠান।

আগত লোকনাথ ভক্তরা সকাল সন্ধ্যা আরাধনা করছেন মনোষ্কামনা পূরণের আশায়। এ ছাড়াও উৎসবে আগতদের জন্য বিনামূল্যে শিশুদের দুধ বিতরণ, ঔষধসহ চিকিৎসা সেবা, মিষ্টি, চিড়ামুড়ি, বাতাসা, পানি ও শরববত বিতরণের ব্যবস্থা নিয়েছে লোকনাথ সেবা সংঘ, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদ, সীতা রাম সংঘ, শারদাঞ্জলি ফোরাম বাংলাদেশসহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।

এদিকে তিরোধান উৎসবের উদ্বোধনী দিনে আশ্রম পর্যবেক্ষণে আসেন লেফটেন্যান্ট কর্ণেল মো: জুবায়ের আলম (৪৫ এম এল আর এস)। এসময় তিনি দূর-দূরান্ত থেকে আগত ভক্তদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। 

বারদী লোকনাথ ব্রহ্মচারী আশ্রম পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব সাংবাদিক শংকর কুমার দে জানান, তিরোধান উৎসবে অংশ নিতে প্রতিবেশী দেশ ভারত, নেপাল, ভুটান ও শ্রীলঙ্কা থেকেও বিপুল সংখ্যক লোকনাথ ভক্ত বারদী আশ্রমে এসেছেন। তাদের থাকা ও খাওয়ার সু-ব্যবস্থা করা হয়েছে।

পূজা, অর্চনা, ঊষাকীর্তন, বাল্যভোগ, রাজভোগ বিতরণ, গীতা পাঠ, প্রসাদ বিতরণ, লোকনাথ ব্রহ্মচারীর জীবন নিয়ে আলোচনা, সন্ধ্যা কীর্তনসহ বিভিন্ন ধর্মীয় কর্মসূচি পালন করা হয়। এলাকা পরিদর্শন করে লোকনাথ ভক্তদের বিনামূল্যে স্বাস্থ্য সেবা, খাবার স্যালাইন ও পানি এবং শিশুদের জন্য দুধ বিতরণ করেন।

সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা রহমান জানান, লোকনাথ ব্রহ্মচারীর আশ্রমে আসা ভক্তদের নিরাপত্তায় পুলিশ সর্বদা কাজ করেছে। আশ্রম এলাকায় সেনাসদস্য, পুলিশ, র‌্যাব, আনসারসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মোতায়েন ছিল।

এছাড়াও আশ্রম এলাকায় অপ্রীতিকর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে সিসি টিভি ক্যামেরার আওতায় ছিল। কোন অপ্রতীকর ঘটনা ঘটে নি। লোকনাথ ভক্তরা শান্তিপূর্ণভাবে দিবসটি পালন করে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • উৎসবের যত রং
  • সোনারগাঁয়ে লোকনাথ ব্রহ্মচারীর তিরোধান দিবস উদযাপন
  • দুই বিভাগে পুরস্কার পেল ‘সাইলেন্স ইন দ্য ক্যাওয়াস’
  • সাদাকালোর ঈদ সংগ্রহ
  • ঈদ উৎসবে নারীর স্বাস্থ্যের দিকে নজর দিন 
  • সোনারগাঁয়ে অবৈধ মেলা বসাতে মরিয়া বিএনপি নেতারা  
  • যাত্রাপথে দুর্ভোগ না হোক
  • ফ্রান্সে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ের উৎসবে সহিংসতা: নিহত ২, আটক ৫০০’র বেশি
  • নাইজেরিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় ২১ অ্যাথলেট নিহত