Samakal:
2025-11-01@23:41:51 GMT

ত্যাগ ও আনন্দের অনন্য উপলক্ষ

Published: 5th, June 2025 GMT

ত্যাগ ও আনন্দের অনন্য উপলক্ষ

আগামী শনিবার দেশব্যাপী পালিত হইতে যাইতেছে মুসলমানদের   অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা। আনন্দের সহিত ত্যাগেরও    বার্তাবাহী এই উৎসব উপলক্ষে সমকাল পরিবারের পক্ষ হইতে গ্রাহক, পাঠক, সাংবাদিক, কর্মচারী, এজেন্ট, বিজ্ঞাপনদাতাসহ সকল শুভানুধ্যায়ীকে  আন্তরিক শুভেচ্ছা। 

স্রষ্টার প্রতি পূর্ণ ও শর্তহীন আনুগত্য প্রদর্শন করিয়া হজরত ইব্রাহিম (আ.

) নির্দ্বিধায় আপন পুত্র ইসমাঈলকে (আ.) কোরবানি দিতে উদ্যত হন। কিন্তু আল্লাহর নির্দেশে কোরবানি হয় তাহার পুত্রের পরিবর্তে একটি পশু। স্রষ্টার প্রতি আনুগত্যের স্মারক সেই মহান ঘটনাই ধর্মীয় বিধানরূপে সমগ্র বিশ্বের মুসলমান‍ অনুসরণ করিয়া থাকেন। যাহার অংশ হিসাবে প্রতি বৎসর ঈদুল আজহায় বাংলাদেশের মুসলিমরাও স্বীয় সাধ্য অনুযায়ী পশু কোরবানি দেন। এ কারণেই কোরবানিকে আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামসহ অনেক মনীষী মনের পশু কোরবানির সহিত তুলনা করিয়াছেন। মনের পশু কোরবানির অর্থ সমস্ত হিংসা, দ্বেষ, অহম ত্যাগ; মানুষে মানুষে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনের জয়গান করা। আমাদের ন্যায় উন্নতিকামী একটা রাষ্ট্র ও সমাজে যাহার অপরিহার্যতা সম্পর্কে নূতন করিয়া বলিবার কিছু নাই। কোরবানির গোশতের একটা নির্ধারিত অংশ দরিদ্র ও অসহায় মুসলমানদের মাঝে বণ্টন করিবার যে বিধান, উহাও এই ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এই প্রক্রিয়ায় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির মধ্যে সকলের মাঝে নিজেকে বিলাইয়া দিবার মানসিকতাও গড়িয়া উঠে, যাহা বৃহত্তর সমাজে সম্প্রীতির বাতাবরণ সৃষ্টি করে। ঈদের জামাতে শ্রেণি-গোত্র-বর্ণসহ সকল প্রকার আর্থিক-সামাজিক ব্যবধান ভুলিয়া সকলে এক কাতারে শামিল হইবার রীতি এ শিক্ষাই তুলিয়া ধরে।

এইবার ঈদুল আজহা এমন সময়ে পালিত হইতেছে, যখন গণঅভ্যুত্থানের ফসল হিসাবে দেশে একটি অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব পালন করিতেছে। রাজনীতির ময়দানেও নূতন বিন্যাসের আয়োজন লক্ষ্য করা যাইতেছে। বলিতে গেলে সম্পূর্ণ জাতিই গণতান্ত্রিক উত্তরণের জন্য উন্মুখ। আমরা মনে করি, এই পথপরিক্রমা শান্তিপূর্ণ ও টেকসই করিবার ক্ষেত্রে ঈদুল আজহার ত্যাগের শিক্ষা উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখিতে পারে। সন্দেহ নাই, বৈশ্বিক টালমাটাল পরিস্থিতির সহিত দেশীয় বিবিধ কারণ যুক্ত হইয়া আমাদের জাতীয় অর্থনীতি বর্তমানে এক প্রকার চাপে রহিয়াছে। ডলার সংকট কাটিয়াও যেন কাটিতেছে না; মূল্যস্ফীতি দুই অঙ্কের নিম্নে নামিলেও সিংহভাগ মানুষের জন্য তাহা স্বস্তিকর নহে। বহু কলকারখানা বন্ধ হইবার কারণে অনেকে জীবিকা আহরণের উপায় হারাইয়াছে। অনেকের প্রকৃত আয় হ্রাস পাইয়াছে। উহার নেতিবাচক প্রভাব ঈদের বাজারেও পড়িয়াছে, বিশেষত পোশাকের দোকান ও কোরবানির হাটগুলি ক্রেতা-বিক্রেতার ভিড়ে অতীতের ন্যায় গমগম করিতেছে না। এতৎসত্ত্বেও সকল মুসলিম সাধ্য অনুযায়ী উৎসবে মাতিয়া উঠিবেন বলিয়া আমরা বিশ্বাস করি। সরকারের নানাবিধ উদ্যোগের কারণে বিগত ঈদুল ফিতরের ন্যায় ঈদুল আজহাতেও ঘরমুখী মানুষের চলাচল ভোগান্তিমুক্ত রহিয়াছে। আমাদের প্রত্যাশা, উৎসব শেষে মানুষের ফিরতি যাত্রাও অনুরূপ নিরাপদ ও স্বস্তিকর হইবে।

পবিত্র ঈদুল আজহায় বিপুলসংখ্যক পশু কোরবানির কারণে পশুর বর্জ্য পরিষ্কার বিষয়ে প্রতিবার যে ভজঘট অবস্থার সৃষ্টি হয়, এইবার তাহা দেখা যাইবে না বলিয়া আমরা বিশ্বাস করি। পশুচর্ম লইয়া এক শ্রেণির ব্যবসায়ী মুনাফা লুটিবার যে আয়োজনে মত্ত হয়; তাহার ফলে এই সকল পশুচর্মের প্রকৃত হকদার দরিদ্র মানুষ বঞ্চিত হইবার পাশাপাশি দেশের সম্ভাবনাময় চর্মশিল্পও দারুণ ক্ষতির শিকার হয়। এই দৃশ্যেরও পুনরাবৃত্তি আমরা দেখিতে চাহি না। মনে রাখিতে হইবে, পশুচর্মের আয় হইতে দেশের উল্লেখযোগ্য মাদ্রাসা ও ইয়াতিমখানা উপকৃত হইয়া থাকে।

ঈদের ছুটিতে হাসপাতাল, ফায়ার সার্ভিস, পুলিশসহ জরুরি সকল সেবা কার্যক্রম বিশেষ ব্যবস্থাধীনে হইলেও চালু থাকিতে হইবে। আমাদের প্রত্যাশা, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ধারাবাহিক নজরদারির মধ্যে সংশ্লিষ্ট পেশাজীবীগণের দায়িত্বশীল মনোভাব এই ক্ষেত্রে অতীতের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি রোধ করিবে। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ঈদ ল আজহ ক রব ন র আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

‘ফাতেমা রানীর তীর্থোৎসবে’ আলোয় ভাসল গারো পাহাড়

হাতে মোমবাতি, ঠোঁটে প্রার্থনার সুর—এভাবেই দুই কিলোমিটারেরও বেশি আঁকাবাঁকা পাহাড়ি পথ পাড়ি দিলেন হাজারো ভক্ত। গন্তব্য ছিল মা মারিয়ার আশীর্বাদপ্রাপ্ত স্থান শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার গারো পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ‘বারোমারি সাধু লিওর খ্রিষ্টধর্মপল্লি’। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এখানে শুরু হয়েছে খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের ‘ফাতেমা রানীর তীর্থোৎসব’।

দুই দিনব্যাপী এই তীর্থোৎসব আজ শুক্রবার শেষ হচ্ছে। শুধু ক্যাথলিক খ্রিষ্টানই নন, অন্য ধর্মাবলম্বীরাও প্রতিবছর অংশ নেন এই উৎসবে। আয়োজক ক‌মি‌টি সূত্রে জানা যায়, প্রতিবছর অক্টোবর মাসের শেষ বৃহস্পতি ও শুক্রবারে এই তীর্থযাত্রার আয়োজন করা হয়।

গতকাল বিকেল চারটায় পবিত্র খ্রিষ্টযোগের মধ্য দিয়ে শুরু হয় তীর্থোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা। এরপর রাত সা‌ড়ে আটটার দিকে অনুষ্ঠিত হয় বর্ণাঢ্য আলোক শোভাযাত্রা। রাত ১১টায় মা মারিয়ার মূর্তিকে সামনে রেখে বিশাল প্যান্ডেলে অনুষ্ঠিত হয় আরাধনা, আর রাত ১২টায় নিরাময় অনুষ্ঠান ও নিশিজাগরণের মধ্য দিয়ে শেষ হয় প্রথম দিনের ধর্মীয় কার্যক্রম।

আজ শুক্রবার সকাল আটটায় জীবন্ত ক্রুশের পথ অতিক্রম এবং সকাল ১০টায় মহাখ্রিষ্টযোগের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এবারের তীর্থোৎসব। এ বছরের উৎসবের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভ্যাটিকান সিটির রাষ্ট্রদূত কেভিন এস র‌্যান্ডেল। এ সময় জেলা প্রশাসক (ডি‌সি) তরফদার মাহমুদুর রহমান ও পু‌লিশ সুপার (এস‌পি) আমিনুল ইসলাম প্রমুখ উপ‌স্থিত ছি‌লেন।

১৯৪২ সালে ৪২ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত হয় বারোমারি সাধু লিওর ধর্মপল্লি। ১৯৯৮ সালে প্রয়াত বিশপ ফ্রান্সিস এ গমেজ স্থানটিকে ‘ফাতেমা রানীর তীর্থস্থান’ হিসেবে ঘোষণা করেন। তখন থেকেই প্রতিবছর আয়োজিত হয়ে আসছে এই ধর্মীয় উৎসব।
এ বছর প্রায় ৩০-৪০ হাজার দেশি-বিদেশি রোমান ক্যাথলিক তীর্থযাত্রী অংশ নিয়েছেন উৎসবে। সার্বিকভাবে উৎসব এলাকা ছিল আলো, প্রার্থনা ও শান্তির আবহে মোড়ানো।
খাগড়াছড়ি থেকে আসা তীর্থযাত্রী জুয়েল ত্রিপুরা বলেন, ‘আমি প্রথমবারের মতো এখানে এসেছি। এসে খুব ভালো লাগছে। এর পর থে‌কে প‌রিবা‌রের সবাইকে নি‌য়ে প্রার্থনায় আস‌ব।’

মুক্তাগাছা থেকে আসা কারিশমা চাম্বুগং বলেন, ‘মারিয়ার কাছে এলে মনে একধরনের শান্তি পাই। আমরা প্রার্থনা করি যেন জীবনের দুঃখ-কষ্ট দূর হয়। প্রতিবছর এই সময়টার অপেক্ষায় থাকি।’

তীর্থোৎস‌বে মা মা‌রিয়ার মূ‌তি নি‌য়ে মোমবা‌তি প্রজ্বালন ক‌রে আলোক শোভাযাত্রা বের করা হয়। গতকাল বৃহস্প‌তিবার রাতে শেরপু‌রের না‌লিতাবাড়ী‌র বা‌রোমা‌রি সাধু‌লিও ধর্মপ‌ল্লি থে‌কে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ইসমাইল হোসেন (মুরুব্বী) এর মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া 
  • টগি ফান ওয়ার্ল্ডে উদযাপিত হলো হ্যালোইন উৎসব
  • উদ্ভাবন–আনন্দে বিজ্ঞান উৎসব
  • নবীনদের নতুন চিন্তার ঝলক
  • যুবদলের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষ্যে সিদ্ধিরগঞ্জে বর্ণাঢ্য র‌্যালি
  • সরকারে এলে ৫০ লাখ নারীকে ফ্যামিলি কার্ড দিবে বিএনপি : সজল
  • সমবায়ভিত্তিক অর্থনৈতিক কার্যক্রমের মাধ্যমে আত্মনির্ভরশীল দেশ গড়া সম্ভব 
  • বিজ্ঞান উৎসব উদ্বোধন করল রোবট নাও
  • ‘ফাতেমা রানীর তীর্থোৎসবে’ আলোয় ভাসল গারো পাহাড়
  • আকিজ ভেঞ্চারের হাত ধরে দেশে স্প্যানিশ ব্র্যান্ড সিমনের যাত্রা শুরু