Samakal:
2025-08-01@04:31:13 GMT

ত্যাগ ও আনন্দের অনন্য উপলক্ষ

Published: 5th, June 2025 GMT

ত্যাগ ও আনন্দের অনন্য উপলক্ষ

আগামী শনিবার দেশব্যাপী পালিত হইতে যাইতেছে মুসলমানদের   অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা। আনন্দের সহিত ত্যাগেরও    বার্তাবাহী এই উৎসব উপলক্ষে সমকাল পরিবারের পক্ষ হইতে গ্রাহক, পাঠক, সাংবাদিক, কর্মচারী, এজেন্ট, বিজ্ঞাপনদাতাসহ সকল শুভানুধ্যায়ীকে  আন্তরিক শুভেচ্ছা। 

স্রষ্টার প্রতি পূর্ণ ও শর্তহীন আনুগত্য প্রদর্শন করিয়া হজরত ইব্রাহিম (আ.

) নির্দ্বিধায় আপন পুত্র ইসমাঈলকে (আ.) কোরবানি দিতে উদ্যত হন। কিন্তু আল্লাহর নির্দেশে কোরবানি হয় তাহার পুত্রের পরিবর্তে একটি পশু। স্রষ্টার প্রতি আনুগত্যের স্মারক সেই মহান ঘটনাই ধর্মীয় বিধানরূপে সমগ্র বিশ্বের মুসলমান‍ অনুসরণ করিয়া থাকেন। যাহার অংশ হিসাবে প্রতি বৎসর ঈদুল আজহায় বাংলাদেশের মুসলিমরাও স্বীয় সাধ্য অনুযায়ী পশু কোরবানি দেন। এ কারণেই কোরবানিকে আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামসহ অনেক মনীষী মনের পশু কোরবানির সহিত তুলনা করিয়াছেন। মনের পশু কোরবানির অর্থ সমস্ত হিংসা, দ্বেষ, অহম ত্যাগ; মানুষে মানুষে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনের জয়গান করা। আমাদের ন্যায় উন্নতিকামী একটা রাষ্ট্র ও সমাজে যাহার অপরিহার্যতা সম্পর্কে নূতন করিয়া বলিবার কিছু নাই। কোরবানির গোশতের একটা নির্ধারিত অংশ দরিদ্র ও অসহায় মুসলমানদের মাঝে বণ্টন করিবার যে বিধান, উহাও এই ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এই প্রক্রিয়ায় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির মধ্যে সকলের মাঝে নিজেকে বিলাইয়া দিবার মানসিকতাও গড়িয়া উঠে, যাহা বৃহত্তর সমাজে সম্প্রীতির বাতাবরণ সৃষ্টি করে। ঈদের জামাতে শ্রেণি-গোত্র-বর্ণসহ সকল প্রকার আর্থিক-সামাজিক ব্যবধান ভুলিয়া সকলে এক কাতারে শামিল হইবার রীতি এ শিক্ষাই তুলিয়া ধরে।

এইবার ঈদুল আজহা এমন সময়ে পালিত হইতেছে, যখন গণঅভ্যুত্থানের ফসল হিসাবে দেশে একটি অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব পালন করিতেছে। রাজনীতির ময়দানেও নূতন বিন্যাসের আয়োজন লক্ষ্য করা যাইতেছে। বলিতে গেলে সম্পূর্ণ জাতিই গণতান্ত্রিক উত্তরণের জন্য উন্মুখ। আমরা মনে করি, এই পথপরিক্রমা শান্তিপূর্ণ ও টেকসই করিবার ক্ষেত্রে ঈদুল আজহার ত্যাগের শিক্ষা উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখিতে পারে। সন্দেহ নাই, বৈশ্বিক টালমাটাল পরিস্থিতির সহিত দেশীয় বিবিধ কারণ যুক্ত হইয়া আমাদের জাতীয় অর্থনীতি বর্তমানে এক প্রকার চাপে রহিয়াছে। ডলার সংকট কাটিয়াও যেন কাটিতেছে না; মূল্যস্ফীতি দুই অঙ্কের নিম্নে নামিলেও সিংহভাগ মানুষের জন্য তাহা স্বস্তিকর নহে। বহু কলকারখানা বন্ধ হইবার কারণে অনেকে জীবিকা আহরণের উপায় হারাইয়াছে। অনেকের প্রকৃত আয় হ্রাস পাইয়াছে। উহার নেতিবাচক প্রভাব ঈদের বাজারেও পড়িয়াছে, বিশেষত পোশাকের দোকান ও কোরবানির হাটগুলি ক্রেতা-বিক্রেতার ভিড়ে অতীতের ন্যায় গমগম করিতেছে না। এতৎসত্ত্বেও সকল মুসলিম সাধ্য অনুযায়ী উৎসবে মাতিয়া উঠিবেন বলিয়া আমরা বিশ্বাস করি। সরকারের নানাবিধ উদ্যোগের কারণে বিগত ঈদুল ফিতরের ন্যায় ঈদুল আজহাতেও ঘরমুখী মানুষের চলাচল ভোগান্তিমুক্ত রহিয়াছে। আমাদের প্রত্যাশা, উৎসব শেষে মানুষের ফিরতি যাত্রাও অনুরূপ নিরাপদ ও স্বস্তিকর হইবে।

পবিত্র ঈদুল আজহায় বিপুলসংখ্যক পশু কোরবানির কারণে পশুর বর্জ্য পরিষ্কার বিষয়ে প্রতিবার যে ভজঘট অবস্থার সৃষ্টি হয়, এইবার তাহা দেখা যাইবে না বলিয়া আমরা বিশ্বাস করি। পশুচর্ম লইয়া এক শ্রেণির ব্যবসায়ী মুনাফা লুটিবার যে আয়োজনে মত্ত হয়; তাহার ফলে এই সকল পশুচর্মের প্রকৃত হকদার দরিদ্র মানুষ বঞ্চিত হইবার পাশাপাশি দেশের সম্ভাবনাময় চর্মশিল্পও দারুণ ক্ষতির শিকার হয়। এই দৃশ্যেরও পুনরাবৃত্তি আমরা দেখিতে চাহি না। মনে রাখিতে হইবে, পশুচর্মের আয় হইতে দেশের উল্লেখযোগ্য মাদ্রাসা ও ইয়াতিমখানা উপকৃত হইয়া থাকে।

ঈদের ছুটিতে হাসপাতাল, ফায়ার সার্ভিস, পুলিশসহ জরুরি সকল সেবা কার্যক্রম বিশেষ ব্যবস্থাধীনে হইলেও চালু থাকিতে হইবে। আমাদের প্রত্যাশা, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ধারাবাহিক নজরদারির মধ্যে সংশ্লিষ্ট পেশাজীবীগণের দায়িত্বশীল মনোভাব এই ক্ষেত্রে অতীতের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি রোধ করিবে। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ঈদ ল আজহ ক রব ন র আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

সিডনিতে ড্র অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের কেউ না থাকায় হতাশ প্রবাসীরা

সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে সিডনির ঐতিহাসিক টাউন হল যেন পরিণত হলো এক রঙিন উৎসবের মঞ্চে। ঝকঝকে আলোর ঝলকানি, দৃষ্টিনন্দন সাজসজ্জা, নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা আর বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে দলে দলে আসা অতিথিদের পদচারণে মনে হচ্ছিল এ যেন কোনো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব বা পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান। অথচ এটি ছিল ২০২৬ নারী এশিয়ান কাপ ফুটবলের ড্র অনুষ্ঠান, যেখানে এশিয়ার সেরা নারী ফুটবল দলগুলোর ভাগ্য নির্ধারিত হচ্ছিল।

বিকেল সাড়ে পাঁচটায় দরজা খোলার আগেই টাউন হলের সামনে জড়ো হয়েছিলেন নানা দেশের ফুটবলপ্রেমীরা। তাঁদের হাতে নিজ নিজ দেশের পতাকা, পরনে ঐতিহ্যবাহী পোশাক। অস্ট্রেলিয়া, চীন, উত্তর কোরিয়া, জাপান, ভারত, ভিয়েতনাম, উজবেকিস্তান, ফিলিপাইন, ইরানসহ ১১টি দেশের ফুটবল দলের প্রতিনিধি, অধিনায়ক বা কোচের কেউ না কেউ সেখানে উপস্থিত ছিলেন। বিশ্ব ফুটবলের এই মিলনমেলায় সবাই নিজ দেশের নাম উজ্জ্বল করতে এসেছেন। কিন্তু এই আলো ঝলমলে মঞ্চে ছিলেন না বাংলাদেশের নারী ফুটবল দলের কোনো প্রতিনিধি।

অস্ট্রেলিয়ায় বিশ্ব ফুটবলের এত বড় এবং গুরুত্বপূর্ণ একটি আয়োজন হলো, অথচ বাংলাদেশের কোনো প্রতিনিধি নেই—এটা মেনে নেওয়া যায় না, এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা এখানে এসেছিলাম আমাদের মেয়েদের দেখতে, নিজেদের দেশের জার্সি গায়ে দেওয়া তারকাদের সঙ্গে ছবি তুলতে চেয়েছিলাম।সাঈদ ফয়েজ, অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী সাংস্কৃতিক কর্মী ও ইভেন্ট সংগঠক

অথচ এটা বাংলাদেশের জন্য ইতিহাস গড়ার বছর। এই প্রথম বাংলাদেশের মেয়েরা এশিয়ান কাপের মূল পর্বে জায়গা করে নিয়েছেন। কিন্তু সেই গৌরবময় মুহূর্তে, যখন বিশ্ব ফুটবল পরিবার সিডনিতে একত্র, তখন মঞ্চে অনুপস্থিত বাংলাদেশ। না কোনো ফুটবলার, না কোচ, না বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) কোনো কর্মকর্তা। এই অনুপস্থিতি ছিল অত্যন্ত দৃষ্টিকটু এবং বেদনাদায়ক, কারণ মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন ভারতের তারকা খেলোয়াড়সহ অন্যান্য দেশের ক্রীড়া ব্যক্তিত্বরা। তাঁরা ট্রফির পাশে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, বিশ্ব গণমাধ্যমের সামনে নিজেদের দেশকে তুলে ধরেছেন, আর স্মৃতির ক্যামেরায় ধরে রাখছেন ঐতিহাসিক মুহূর্ত। আর বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্বের জায়গাটিতে খাঁ খাঁ শূন্যতা।

ভারত নারী দলের মিডফিল্ডার সংগীতা বাসফোর ড্র–তে বাংলাদেশের নাম তোলেন

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জুলাইয়ের ১১ নাটক নিয়ে শিল্পকলায় উৎসব
  • শোক ও বিজয়ের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে জেলা আইনজীবী ফোরামের পদযাত্রা
  • ভৌতিক গল্প নিয়ে কানাডায় নুহাশ
  • রাবি উপাচার্যের চেয়ার টেনে পদ্মায় ফেলার আহ্বান ছাত্রদল সভাপতির
  • জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা
  • গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ঢাবি শিবিরের ৩ দিনব্যাপী কর্মসূচি
  • তাহলে তো স্পন্সর নিয়ে প্রোগ্রাম করলেই চাঁদাবাজি: সালাউদ্দিন
  • সিডনিতে ড্র অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের কেউ না থাকায় হতাশ প্রবাসীরা
  • ২৯ জুলাই-৮ আগস্ট ‘ফ্যাসিবাদী শক্তির’ নৈরাজ্যের আশঙ্কায় এসবির সতর্কতা
  • ২৯ জুলাই থেকে ৮ আগস্ট সময়কালে ফ্যাসিবাদী শক্তি নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে পারে, এসবির প্রতিবেদন