আগামী শনিবার দেশব্যাপী পালিত হইতে যাইতেছে মুসলমানদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা। আনন্দের সহিত ত্যাগেরও বার্তাবাহী এই উৎসব উপলক্ষে সমকাল পরিবারের পক্ষ হইতে গ্রাহক, পাঠক, সাংবাদিক, কর্মচারী, এজেন্ট, বিজ্ঞাপনদাতাসহ সকল শুভানুধ্যায়ীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা।
স্রষ্টার প্রতি পূর্ণ ও শর্তহীন আনুগত্য প্রদর্শন করিয়া হজরত ইব্রাহিম (আ.
এইবার ঈদুল আজহা এমন সময়ে পালিত হইতেছে, যখন গণঅভ্যুত্থানের ফসল হিসাবে দেশে একটি অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব পালন করিতেছে। রাজনীতির ময়দানেও নূতন বিন্যাসের আয়োজন লক্ষ্য করা যাইতেছে। বলিতে গেলে সম্পূর্ণ জাতিই গণতান্ত্রিক উত্তরণের জন্য উন্মুখ। আমরা মনে করি, এই পথপরিক্রমা শান্তিপূর্ণ ও টেকসই করিবার ক্ষেত্রে ঈদুল আজহার ত্যাগের শিক্ষা উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখিতে পারে। সন্দেহ নাই, বৈশ্বিক টালমাটাল পরিস্থিতির সহিত দেশীয় বিবিধ কারণ যুক্ত হইয়া আমাদের জাতীয় অর্থনীতি বর্তমানে এক প্রকার চাপে রহিয়াছে। ডলার সংকট কাটিয়াও যেন কাটিতেছে না; মূল্যস্ফীতি দুই অঙ্কের নিম্নে নামিলেও সিংহভাগ মানুষের জন্য তাহা স্বস্তিকর নহে। বহু কলকারখানা বন্ধ হইবার কারণে অনেকে জীবিকা আহরণের উপায় হারাইয়াছে। অনেকের প্রকৃত আয় হ্রাস পাইয়াছে। উহার নেতিবাচক প্রভাব ঈদের বাজারেও পড়িয়াছে, বিশেষত পোশাকের দোকান ও কোরবানির হাটগুলি ক্রেতা-বিক্রেতার ভিড়ে অতীতের ন্যায় গমগম করিতেছে না। এতৎসত্ত্বেও সকল মুসলিম সাধ্য অনুযায়ী উৎসবে মাতিয়া উঠিবেন বলিয়া আমরা বিশ্বাস করি। সরকারের নানাবিধ উদ্যোগের কারণে বিগত ঈদুল ফিতরের ন্যায় ঈদুল আজহাতেও ঘরমুখী মানুষের চলাচল ভোগান্তিমুক্ত রহিয়াছে। আমাদের প্রত্যাশা, উৎসব শেষে মানুষের ফিরতি যাত্রাও অনুরূপ নিরাপদ ও স্বস্তিকর হইবে।
পবিত্র ঈদুল আজহায় বিপুলসংখ্যক পশু কোরবানির কারণে পশুর বর্জ্য পরিষ্কার বিষয়ে প্রতিবার যে ভজঘট অবস্থার সৃষ্টি হয়, এইবার তাহা দেখা যাইবে না বলিয়া আমরা বিশ্বাস করি। পশুচর্ম লইয়া এক শ্রেণির ব্যবসায়ী মুনাফা লুটিবার যে আয়োজনে মত্ত হয়; তাহার ফলে এই সকল পশুচর্মের প্রকৃত হকদার দরিদ্র মানুষ বঞ্চিত হইবার পাশাপাশি দেশের সম্ভাবনাময় চর্মশিল্পও দারুণ ক্ষতির শিকার হয়। এই দৃশ্যেরও পুনরাবৃত্তি আমরা দেখিতে চাহি না। মনে রাখিতে হইবে, পশুচর্মের আয় হইতে দেশের উল্লেখযোগ্য মাদ্রাসা ও ইয়াতিমখানা উপকৃত হইয়া থাকে।
ঈদের ছুটিতে হাসপাতাল, ফায়ার সার্ভিস, পুলিশসহ জরুরি সকল সেবা কার্যক্রম বিশেষ ব্যবস্থাধীনে হইলেও চালু থাকিতে হইবে। আমাদের প্রত্যাশা, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ধারাবাহিক নজরদারির মধ্যে সংশ্লিষ্ট পেশাজীবীগণের দায়িত্বশীল মনোভাব এই ক্ষেত্রে অতীতের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি রোধ করিবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ঈদ ল আজহ ক রব ন র আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
নাকুগাঁও স্থলবন্দরে ১০ দিন বন্ধ আমদানি-রপ্তানি
ঈদুল আজহা উপলক্ষে শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ী উপজেলার নাকুগাঁও স্থলবন্দরে টানা ১০ দিন আমদানি-রপ্তানি ও লোড-আনলোড কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। তবে ঈদের দিনসহ প্রতিদিন ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে পাসপোর্টধারীদের যাতায়াত স্বাভাবিক থাকবে। বুধবার স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
বন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, মুসলমানদের অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা উদযাপন উপলক্ষে নাকুগাঁও স্থলবন্দরের সব ধরনের বাণিজ্যিক কার্যক্রম যেমন আমদানি-রপ্তানি ও লোড-আনলোড আগামী বৃহস্পতিবার (৫ জুন) থেকে শনিবার (১৪ জুন) পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। ঈদের ছুটি শেষে আগামী রোববার (১৫ জুন) থেকে পুনরায় বাণিজ্যিক কার্যক্রম চালু হবে।
নাকুগাঁও আমদানি-রপ্তানিকারক সমিতির সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান মুকুল জানান, ভারত, ভুটান ও বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের যৌথ সিদ্ধান্তে ৫ জুন থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত বন্দরের সব কার্যক্রম বন্ধ রাখা হবে। তিনি আরও বলেন, বৃহস্পতিবার থেকেই বন্দর বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
নাকুগাঁও স্থলবন্দরের অতিরিক্ত পরিচালক (এডি) জাহিদুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ব্যবসায়ীদের সম্মতিতেই এই ছুটির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে ভারতীয় পাসপোর্টধারীদের জন্য ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট ঈদের দিনসহ প্রতিদিন খোলা থাকবে।