আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি পুনর্ব্যক্ত করেছে ফ্যাসিবাদবিরোধী যুগপৎ আন্দোলনের অন্যতম শরিক জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট।

১০ দলের এই জোট শনিবার এক যৌথ বিবৃতিতে নির্বাচন বিষয়ে তাদের এই দাবি পুনর্ব্যক্ত করে।

পবিত্র রমজান, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক বা সমপর্যায়ের পরীক্ষা, আবহাওয়া ইত্যাদি বিবেচনায় এপ্রিল মাস জাতীয় নির্বাচনের জন্য উপযুক্ত সময় নয় বলে উল্লেখ করা হয় বিবৃতিতে।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠান কেন সম্ভব নয়, এমন কোনো সুনির্দিষ্ট কারণ প্রধান উপদেষ্টার ভাষণে উল্লেখ করা হয়নি। দেশের গণতন্ত্রকামী অধিকাংশ রাজনৈতিক দল ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে। তাই আমরা আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি পুনর্ব্যক্ত করছি।’

সমমনা জোটের শীর্ষ নেতারা বিবৃতিতে বলেন, ‘সরকারকে বলব, গণতন্ত্রকামী রাজনৈতিক দলগুলোর দাবি এবং দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে জাতীয় নির্বাচনের সময়সীমার বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করুন এবং নির্বাচনকে অহেতুক প্রলম্বিত না করে জন–আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে দ্রুততম সময়ে সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা করুন।’

বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের আহ্বায়ক ও ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, জাগপার সভাপতি খন্দকার লুৎফর রহমান, গণদলের চেয়ারম্যান এ টি এম গোলাম মাওলা চৌধুরী, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ নুরুল ইসলাম, বাংলাদেশ ন্যাপের চেয়ারম্যান এম এন শাওন সাদেকী, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম খান, এনডিপির চেয়ারম্যান কারি আবু তাহের, ডেমোক্রেটিক লীগের (ডিএল) সাধারণ সম্পাদক খোকন চন্দ্র দাস, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক পার্টির চেয়ারম্যান এস এম শাহাদাত হোসেন এবং পিপলস লীগের সভাপতি গরীবে নেওয়াজ।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক ৭ দিনের রিমান্ডে

দুর্নীতি ও রায় জালিয়াতির অভিযোগের মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। 

বুধবার (৩০ জুলাই) সকালে পুলিশ তার ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম মো. ছানাউল্ল্যাহর আদালত সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। 

২০২৪ সালের ২৭ অগাস্ট শাহবাগ থানায় দুর্নীতি ও রায় জালিয়াতির অভিযোগের মামলা করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মুজাহিদুল ইসলাম শাহীন। 

গত ২৪ জুলাই সকালে ঢাকার ধানমন্ডির বাসা থেকে সাবেক এ প্রধান বিচারপতিকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ।  

সম্প্রতি তার গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম। সংগঠনটি দাবি করেছে, ‘বিচার বিভাগ ও গণতন্ত্র ধ্বংসের মূল কারিগর’ তিনি।

খায়রুল হক ২০১০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর দেশের ১৯তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নেন এবং ২০১১ সালের ১৭ মে বয়স অনুযায়ী অবসর গ্রহণ করেন। বিচারপতি হিসেবে তার সবচেয়ে আলোচিত এবং বিতর্কিত রায় ছিল সংবিধানের ১৩তম সংশোধনী, অর্থাৎ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নিয়ে। ওই রায়ের পর দেশে আর কোনো নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হয়নি।

বিচারপতি খায়রুল হকের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ ২০১১ সালে এই রায় ঘোষণা করে। এতে বলা হয়, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অসাংবিধানিক এবং গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার পরিপন্থি। এরপর থেকে নির্বাচনের সময় রাজনৈতিক দলগুলো নিজেরাই সরকারে থেকে নির্বাচন পরিচালনা করছে। বিরোধী দলগুলোর দাবি, এই রায়ের মধ্য দিয়েই দেশে একতরফা নির্বাচন ও গণতন্ত্রহীনতার ভিত্তি তৈরি হয়।

২০১৩ সালের ২৩ জুলাই তাকে তিন বছরের জন্য আইন কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। ওই মেয়াদ শেষে কয়েক দফা কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে তাকে পুনর্নিয়োগ দেওয়া হয়। সেখানে তিনি আইন সংস্কার সংক্রান্ত নানা প্রস্তাব ও গবেষণায় যুক্ত ছিলেন। বিভিন্ন সময় আইনি সেমিনার, বক্তৃতা এবং পরামর্শমূলক কাজে অংশ নিয়েছেন তিনি।

আওয়ামী লীগপন্থি আইনজীবী ও মহলগুলো তাকে ‘সংবিধান রক্ষার সাহসী রূপকার’ হিসেবে অভিহিত করলেও, বিএনপি ও তাদের সহযোগী সংগঠনগুলোর মতে তিনি ‘বিচার বিভাগের রাজনৈতিকীকরণের পথপ্রদর্শক’। 

জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম বলেছে, ‘তত্ত্বাবধায়ক বাতিল করে তিনি দেশের নির্বাচনব্যবস্থা ধ্বংস করেছেন।’

ঢাকা/কেএন/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক ৭ দিনের রিমান্ডে
  • বিতর্কমুক্ত তত্ত্বাবধায়ক সরকারব‍্যবস্থা না হলে গণতন্ত্র আবার হুমকিতে পড়বে: এবি পার্টি
  • মানুষ ঠিকমতো ইভিএম বোঝে না, পিআর বুঝবে কী করে: মির্জা ফখরুল
  • স্থানীয় শাসনব্যবস্থায় নাগরিকেরা কোথায়