এবারের ঈদুল আজহায় দেশে মুক্তি পেয়েছে দুই বাংলার নন্দিত অভিনেত্রী জয়া আহসান অভিনীত দুটি সিনেমা। একটি রায়হান রাফীর ‘তাণ্ডব’, অন্যটি তানিম নূরের ‘উৎসব’। দুটি সিনেমাই দারুণ সাড়া ফেলেছে। হলে দর্শক টানছে। এই দুটি সিনেমায় সম্পূর্ণই ব্যতিক্রমী দুই আমেজ নিয়ে দর্শকের সামনে এসেছেন গুণী এই অভিনেত্রী। 

ঈদ উৎসবের রেশ কাটতে না কাটতেই ভারতের টালিগঞ্জে নতুন সিনেমার শুটিং শুরু করলেন অভিনেত্রী। গত শনিবার মহরতের মধ্য দিয়ে কলকাতায় শুরু হয়েছে কৌশিক গাঙ্গুলীর ‘আজও অর্ধাঙ্গিনী’ সিনেমার দৃশ্যাধারণ। সেখানে যোগ দিয়েছেন তিনি।

এ সিনেমার প্রথম পর্ব ‘অর্ধাঙ্গিনী’র মতো এবারও জয়ার সঙ্গে অভিনয় করবেন কৌশিক সেন ও চূর্ণী গাঙ্গুলী। এ তিনজনের সঙ্গে নতুন পর্বে যুক্ত হচ্ছেন ইন্দ্রাশিস রায়।

সুমনের (কৌশিক) অসুস্থতাকে কেন্দ্র করে তাঁর সাবেক স্ত্রী শুভ্রা (চূর্ণী) ও বর্তমান স্ত্রী মেঘনার (জয়া) দেখা হওয়া এবং টানাপোড়েনকে ঘিরে তৈরি হয়েছিল অর্ধাঙ্গিনীর প্রেক্ষাপট। আগের ঘটনার বছর দুয়েক পর একটা বিয়েকে কেন্দ্র করে আবার মুখোমুখি হন সুমন, শুভ্রা ও মেঘনা। নতুন সিনেমায় অভিনয় প্রসঙ্গে এই অভিনেত্রী বলেন, ‘কৌশিকদার সঙ্গে আমরা খুব এনজয় করে কাজ করি।

এবারও তেমনটি হবে। কাজের ক্ষেত্রে প্রতিদিন আলাদা অভিজ্ঞতা হয়। নিজেকে আরও উন্নত করি অভিনেত্রী হিসেবে। এতে আবারও আমার সহশিল্পী হিসেবে চূর্ণী গাঙ্গুলীকে পাচ্ছি। তার মতো অভিনেত্রীকে সহশিল্পী হিসেবে পাওয়া মানে নিজের চরিত্রের আরও উত্তরণ ঘটা। আশা করছি, বেশ ভালো অভিজ্ঞতা নিয়ে সিনেমার কাজ শেষ করতে পারব।’

আজও অর্ধাঙ্গিনীর শুটিংয়ে যোগ দেওয়ার আগের দিন পর্যন্ত জয়া ঢাকায় ব্যস্ত সময় পার করেছেন ঈদের দুই সিনেমার প্রচারে। হলে হলে ঘুরছেন তিনি। দর্শকের ইতিবাচক সাড়া পাচ্ছেন তিনি।

এ বিষয়ে জয়া বলেন, “সিনেপ্লেক্সের ভেতরেও ‘তাণ্ডব’ দেখার সময় দর্শক যেভাবে শিস বাজাচ্ছে, হাততালি দিচ্ছে, সেটাতেই বলে দেয় সিনেমাটি মানুষের কতটা ভালোবাসা পাচ্ছে। আর ‘উৎসব’ নিয়ে ফিডব্যাকটা পাচ্ছি খানিকটা অন্যরকন ইমোশনাল। হল থেকে বেরিয়ে অনেক দর্শক বলছে, সিনেমাটি অনেক দিন থেকে যাবে মানুষের মনে। দর্শক আসলে ভালো গল্পের সিনেমা দেখতে চায়। এটি বারবারই প্রমাণ হচ্ছে।  দুটি সিনেমা নিয়েই আমি খুব আনন্দিত।”

জানা গেছে, চলতি বছরেই মুক্তি পাবে জয়া অভিনীত ‘আজও অর্ধাঙ্গিনী’ সিনেমাটি। সিনেমাটি নিয়ে বেশ আশাবাদী এই অভিনেত্রী।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: জয় আহস ন অর ধ ঙ গ ন

এছাড়াও পড়ুন:

তুলশীগঙ্গার তীরে সন্ন্যাসতলীর শতবর্ষী ঘুড়ির মেলা

জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার মামুদপুর ইউনিয়নের মহব্বতপুর গ্রাম ঘেঁষে তুলশীগঙ্গা নদীর অদূরে সন্ন্যাসতলীর বটতলা। জায়গাটিতে প্রায় একশ বছর আগে থেকে বাংলা জ্যৈষ্ঠ মাসের শেষ শুক্রবার আয়োজন হয় ঘুড়ির মেলা। এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি। অন্তত ৫০ গ্রামের হাজারো মানুষের উপস্থিতিতে শুক্রবার সন্ন্যাসতলী ঘুড়ি উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

মেলার দিনক্ষণ মনে রেখে সময়মতো দোকানিদের পাশাপাশি দর্শনার্থীরা ভিড় জমান নিভৃত পল্লীতে। আগে মেলার দিন বৃষ্টি হওয়া যেন নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছিল। কিন্তু এবার ব্যতিক্রম ঘটনা ঘটেছে। প্রচণ্ড গরম ও তাপপ্রবাহের মধ্যেই চলে এ আয়োজন। বৈরী পরিবেশের কারণে উৎসবের স্বাভাবিক কর্মকাণ্ডে কিছুটা ব্যাঘাত ঘটেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

স্থানীয় প্রবীণ বাসিন্দারা বলছেন, সন্ন্যাসতলীর এ ঘুড়ি উৎসব শুরুর দিন বিকেলে বটতলায় স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায় সন্ন্যাস পূজা পালন করেন। তাদের এ পূজা-অর্চনা ঘিরেই মূলত এ মেলার উৎপত্তি। তবে শুরুর কথা কেউ বলতে পারেননি। প্রবীণরা শুধু জানেন, একশ বছরের বেশি সময় ধরে তারা এ মেলার আয়োজন দেখে আসছেন।

মেলার নিজস্ব জায়গা না থাকলেও এর ব্যাপ্তি প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে। প্রচণ্ড গরমের মধ্যেই এক দিনের এ মেলা ঘিরেই জেলার জামালগঞ্জ চারমাথা থেকে ঐতিহাসিক আছরাঙ্গাদীঘি পর্যন্ত রকমারি পণ্যের দোকান বসে। এখান থেকে সংসারের প্রয়োজনীয় বিভিন্ন আসবাব থেকে শুরু করে ছোট মাছ ধরার বাঁশের তৈরি পণ্য খলসানি, টোপা, ডালা, চালুন কিনে নেন অনেকে।

সুতার তৈরি তৌরা জাল, গৃহস্থালি কাজে ব্যবহৃত দ্রব্যাদি, বিভিন্ন ধরনের খেলনা, মিষ্টান্ন, প্রসাধনী, মাটির তৈজসপত্রসহ বিভিন্ন সামগ্রী বিক্রি হয়। শিশুদের বিনোদনের জন্য ছিল নাগরদোলার ব্যবস্থাও। আর মেলার বড় আকর্ষণ ঘুড়ি ওড়ানো ও বিক্রি। পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন জেলা থেকে ব্যবসায়ীরা এসেছিলেন ঘুড়ি বিক্রি করতে।

প্রচণ্ড গরমের পাশাপাশি তেমন হাওয়া-বাতাস না থাকায় এবার ঘুড়ি ওড়ানোর প্রতিযোগিতা সেভাবে জমে ওঠেনি। তবে ঘুড়ি বেচাকেনা ও শিশু-কিশোরদের উচ্ছ্বাস ছিল চোখে পড়ার মতো। এ উপলক্ষে আসা হাজার হাজার দর্শনার্থীর নিরাপত্তার জন্য মেলায় সার্বক্ষণিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের টহল ছিল।

আদমদীঘির শিববাটি গ্রামের ঘুড়ি ব্যবসায়ী সালাম হোসেনের ভাষ্য, সন্ন্যাসতলীর মেলা বড় হওয়ায় তিনি এসেছেন ঘুড়ি বিক্রির জন্য। মেলায় প্রত্যাশা অনুযায়ী ঘুড়ি বিক্রি করতে পেরে তিনি খুশি। জয়পুরহাটের পার্বতীপুর এলাকার ঘুড়ি ব্যবসায়ী মফিজ উদ্দিন ও মজনু সরদার বলেন, পূর্বপুরুষের আমল থেকে এ মেলার কথা শুনে আসছেন তারা।

মেলা উদযাপন ও পূজা কমিটির সদস্য মহব্বতপুর গ্রামের মন্টু মণ্ডল বলেন, মেলাটি হিন্দু সম্প্রদায়ের হলেও এটি আসলে সব ধর্মালম্বীর মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে। 

মামুদপুর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মিলন হোসেনের ভাষ্য, এক দিনের আয়োজনে যে এত লোকের সমাগম হতে পারে, তা চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন। মেলায় যেন অনৈতিক কর্মকাণ্ড না হয়, সে ব্যাপারে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

ক্ষেতলাল থানার ওসি মোহাম্মদ ফরিদ হোসেন বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এবং মেলায় আসা দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ প্রশাসন সতর্ক আছে। মেলায় অনৈতিক আচরণ লক্ষ্য করা গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বকুলতলায় বৃষ্টির সুর
  • বর্ষা উৎসবে বন ও পরিবেশ ধ্বংসের প্রতিবাদ, পান্থকুঞ্জ পার্ক রক্ষাসহ কয়েকটি দাবি
  • নাচ-গান-আবৃত্তিতে চারুকলায় বর্ষাবরণ
  • মেঘ-রোদের লুকোচুরির সকালে নাচে-গানে বর্ষাবরণ 
  • মেঘ-রোদের লুকোচুরি সকালে নাচে-গানে বর্ষাবরণ 
  • আষাঢ়ের প্রথম দিন আজ
  • কলিজা ঠান্ডা করে দেওয়া ছবি ‘উৎসব’
  • তুলশীগঙ্গার তীরে সন্ন্যাসতলীর শতবর্ষী ঘুড়ির মেলা
  • ভালোবাসার ফ্রেমে মেহজাবীন-রাজীব, পেছনে আইফেল টাওয়ার