ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের ছিনতাইপ্রবণ এলাকায় যৌথ অভিযান চালিয়েছে সেনাবাহিনী। এক ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তারের পর তার দেওয়া তথ্যে সাভারের বিভিন্ন স্থান থেকে মোট ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। 

সোমবার (১৬ জুন) রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় সেনাবাহিনী।

এর আগে রোববার দিবাগত রাতে শুরু হয়ে সোমবার সকাল পর্যন্ত চলে এই অভিযান।

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সাভার সেনানিবাসস্থ ৯ পদাতিক ডিভিশনের অধীন ২৭ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট এই অভিযান পরিচালনা করে।

অভিযানে নেতৃত্ব দেন ইউনিটের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আসিফ রহমান, পিএসসি। পাশাপাশি মেজর মো.

সালাহউদ্দিন, পিএসসি ও ক্যাপ্টেন শামীম অভিযানে অংশগ্রহণকারী সেনা ও পুলিশ সদস্যদের সমন্বয় করেন।

সেনাবাহিনীর একাধিক সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের বিভিন্ন অংশে সক্রিয় ছিল তিন ভাগে বিভক্ত একটি সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী চক্র। এদের একটি দল সাভার থেকে বিশমাইল পর্যন্ত, আরেকটি দল সিএমবি মোড় পর্যন্ত এবং তৃতীয়টি নবীনগর পর্যন্ত এলাকা ভাগ করে ছিনতাই কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল।

অভিযানে গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন চক্রের মূলহোতা সোহেল (৩৪), সম্রাট (২৮), সুমন (২৬), দুর্জয় (২৪) ও সমর (২৫)। সোহেল সাভারের নামাবাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার হন। তার বিরুদ্ধে খুন, ছিনতাই, চাঁদাবাজি ও হয়রানির একাধিক মামলা রয়েছে।

সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারা জানান, এই চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক ছড়াচ্ছিল। তাদের গ্রেপ্তারের ফলে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে নিরাপত্তা পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

সেনাবাহিনী জানিয়েছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ভবিষ্যতেও এমন অভিযান অব্যাহত থাকবে।

ঢাকা/সাব্বির/টিপু 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম, এখানে সাম্প্রদায়িকতার জায়গা নেই: জেড আই খান পান্না

মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে মন্তব্য করে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেছেন, এই দেশে সাম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান নেই।

আজ শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট বারের হলরুমে ‘বাংলাদেশে মানবাধিকার সংকট ও আইনি প্রতিকার পাওয়ার পথ’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জেড আই খান পান্না। সেমিনারটির আয়োজন করে আন্তর্জাতিক সংস্থা হিউম্যান রাইটস কংগ্রেস ফর বাংলাদেশ মাইনোরিটিস (এইচআরসিবিএম), বাংলাদেশ চ্যাপ্টার।

বক্তব্যে জেড আই খান পান্না বলেন, ‘এখানে সংখ্যালঘুর কথা বলা হচ্ছে। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এখন আমি সবচেয়ে বেশি সংখ্যালঘু। আজ মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা দেখি, জুতা দিয়ে বাড়ি দিতে দেখি, কিন্তু কিছু করতে পারি না। তাই আমি সবচেয়ে বড় অসহায়।’

এসব কথা বলতে বলতে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না কেঁদে ফেলেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, জীবনে কখনো জেনে-বুঝে অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেননি। যাঁরা মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করেন, তাঁদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।

জেড আই খান পান্না আরও বলেন, ৩০ লাখ শহীদ আর ২ লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, কারও সঙ্গে এর তুলনা চলে না। এটা সাম্প্রদায়িকতার দেশ না। সংবিধানে যেন কেউ হাত না দেয়। সরকারের অনেকেই বিদেশি হয়েও স্বদেশি ভাব দেখাচ্ছেন।

সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকার যেন নিঃশেষ হয়ে গেছে। সমাজে ন্যায়বিচার বা সুবিচার পাওয়ার কথা থাকলেও তা মিলছে না। সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিচার হয় না। কেউ কেউ ধরা পড়লেও পরে বেরিয়ে যায়।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুমন কুমার রায় বলেন, সব সরকারের আমলেই বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা নির্যাতিত। বর্তমান নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেও সবচেয়ে বেশি উপেক্ষিত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী। সংস্কার কমিশনে সংখ্যালঘুদের কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই। রংপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় হামলা হলেও সরকারের কোনো প্রতিক্রিয়া আসে না, এমনকি দুঃখও প্রকাশ করে না।

গত বছরের ৫ আগস্টের পর সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের প্রেক্ষিতে প্রতিবাদ শুরু হলে তা দমন করতেই ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে উল্লেখ করে সুমন কুমার দাবি করেন, বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সনাতনী সম্প্রদায়ের বাক্‌স্বাধীনতা বন্ধ করতে, নেতৃত্ব দমন করতে এসব করা হচ্ছে।

সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জে কে পাল। সঞ্চালনায় ছিলেন এইচআরসিবিএমের বাংলাদেশ চ্যাপটারের আহ্বায়ক লাকি বাছাড়। সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরশেদ ও মো. গোলাম মোস্তফা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ