এই পাঁচ তথ্য চ্যাটজিপিটিকে দিয়ে ভুল করছেন না তো?
Published: 17th, June 2025 GMT
অফিসের কাজ হোক বা পড়াশোনা, ফেসবুকে ক্যাপশন ঠিক করা থেকে শুরু করে আজকাল আমাদের মন খারাপের সঙ্গী হয়ে উঠেছে চ্যাটজিপিটি। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার এই বন্ধু এখন কেবল প্রশ্নের উত্তর দেওয়া নয়, গবেষণা, লেখালেখি ও প্রতিদিনের সিদ্ধান্ত গ্রহণেও সাহায্য করছে। তবে এ ধরনের প্রযুক্তির সুবিধার পাশাপাশি কিছু ঝুঁকিও আছে; বিশেষ করে যদি এসব ব্যবহার করা হয় অসচেতনভাবে। প্রযুক্তির এই যুগে তথ্যই বড় সম্পদ, তাই কোথায়, কখন, কার সঙ্গে কী তথ্য ভাগাভাগি করে নিচ্ছেন, তা খেয়াল রাখা অতি জরুরি। জেনে নিন কোন পাঁচটি সংবেদনশীল ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য কখনোই চ্যাটজিপিটি বা অন্য কোনো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার চ্যাটবটের সঙ্গে শেয়ার করা উচিত নয়।
১.
ব্যক্তিগত শনাক্তকরণ তথ্য (পার্সোনালি আইডেন্টিফাইঅ্যাবল ইনফরম্যাশন বা পিআইআই)
ব্যক্তিগত শনাক্তকরণ তথ্য বলতে বোঝায় এমন যেকোনো তথ্য, যা কারও পরিচয় স্পষ্টভাবে নির্ধারণ করে বা বর্ণনা করে। যেমন ব্যবহারকারীর পূর্ণ নাম, জন্মতারিখ, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, ঠিকানা, ফোন নম্বর ও ই–মেইল। চ্যাটজিপিটি ইচ্ছাকৃতভাবে এসব তথ্য সংরক্ষণ করে না বটে, তবে সাইবার আক্রমণ বা তথ্য ফাঁসের মতো ঘটনার ঝুঁকি থেকেই যায়। হ্যাকাররা এসব তথ্য ব্যবহার করে পরিচয় চুরি, ব্যাংক জালিয়াতির মতো ঘটনা ঘটাতে পারে। তাই নিজের পরিচয় ও আর্থিক নিরাপত্তা রক্ষা করতে এসব তথ্য এআইকে না দেওয়াই শ্রেয়।
আরও পড়ুনইংরেজি শিখতে চ্যাটজিপিটি কাজে লাগাবেন কীভাবে১৫ জুন ২০২৫২. আর্থিক ও ব্যাংকিং তথ্য
ক্রেডিট কার্ড নম্বর, ব্যাংক অ্যাকাউন্টের খুঁটিনাটি, মোবাইল ব্যাংকিং পিন বা পেমেন্ট গেটওয়ে সম্পর্কিত যেকোনো তথ্য চ্যাটজিপিটির মতো প্ল্যাটফর্মে ব্যবহার করাটা অত্যন্ত বিপজ্জনক। এ ধরনের তথ্য যদি কোনোভাবে ফাঁস হয়, তাহলে অসাধু লোকেরা এসব তথ্য ব্যবহারের মাধ্যমে ব্যাংক জালিয়াতি করে ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট খালি করে দিতে পারে মুহূর্তেই। আর্থিকভাবে দেউলিয়া হয়ে যাওয়ার মতো ভয়াবহ ফল ডেকে আনতে পারে।
ক্রেডিট কার্ড নম্বর, ব্যাংক অ্যাকাউন্টের খুঁটিনাটি, মোবাইল ব্যাংকিং পিন চ্যাটজিপিটির মতো প্ল্যাটফর্মে ব্যবহার করাটা বিপজ্জনকউৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব যবহ র কর
এছাড়াও পড়ুন:
সিআইডিতে বিচারবহির্ভূত হত্যার তদন্ত বিষয়ে আন্তর্জাতিক কর্মশালা
বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের নিরপেক্ষ তদন্ত নিশ্চিত করতে ‘সম্ভাব্য অবৈধ মৃত্যুর তদন্তসংক্রান্ত মিনেসোটা নীতিমালা’ শীর্ষক দুই দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর (ইউএনআরসি) কার্যালয় এবং বাংলাদেশ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) যৌথ আয়োজনে ৩০ ও ৩১ জুলাই ঢাকার সিআইডি সদর দপ্তরে এই কর্মশালার আয়োজন করা হয়। বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় সিআইডি।
কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন সিআইডির প্রধান ও বাংলাদেশ পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মো. ছিবগাত উল্লাহ। উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘সিআইডি এখন একটি আধুনিক, তথ্যভিত্তিক ও প্রযুক্তিনির্ভর তদন্ত সংস্থা হিসেবে গড়ে উঠছে। মানবাধিকার রক্ষা ও বিচারপ্রাপ্তি নিশ্চিত করতে প্রমাণনির্ভর নিরপেক্ষ তদন্ত অপরিহার্য এবং এ ধরনের আন্তর্জাতিক কর্মশালা আমাদের সে লক্ষ্যে পৌঁছাতে সহায়তা করে।’
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাতিসংঘের বিচারবহির্ভূত, সংক্ষিপ্ত বা ইচ্ছামতো মৃত্যুবিষয়ক বিশেষ প্রতিবেদক মরিস টিডবল-বিন্জ। তিনি বলেন, মিনেসোটা নীতিমালা একটি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত মানদণ্ড, যা সন্দেহজনক মৃত্যুর নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে বিচারব্যবস্থার প্রতি আস্থা সৃষ্টি করে। উপস্থাপনায় তিনি লিবিয়া ও ফকল্যান্ড দ্বীপপুঞ্জে আইনবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের তদন্তের উদাহরণ তুলে ধরেন।
কর্মশালার শুরুতে সিআইডির ফরেনসিক বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার শম্পা ইয়াসমীন দেশের ডিএনএ ও ফরেনসিক সক্ষমতা নিয়ে আলোচনা করেন। দুই দিনব্যাপী এই কর্মশালায় অংশ নেন দেশের বিভিন্ন পুলিশ ইউনিটের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিচারক, চিকিৎসক ও ফরেনসিক সংক্রান্ত বিশেষজ্ঞ, মানবাধিকার সংস্থার প্রতিনিধি এবং প্রযুক্তি ও অনুসন্ধান-সংশ্লিষ্ট পেশাজীবীরা।
আলোচনার মূল বিষয়গুলোর মধ্যে ছিল, আন্তর্জাতিক নীতিমালা অনুযায়ী মৃতদেহ শনাক্তকরণ (দুর্যোগে নিহত ব্যক্তি শনাক্তকরণ), নিরপেক্ষ ফরেনসিক প্রতিবেদন তৈরির কৌশল, মানবাধিকার সংরক্ষণে তদন্তকারীদের নৈতিক ও পেশাগত দিকনির্দেশনা এবং বাস্তব ক্ষেত্রভিত্তিক কেস স্টাডি উপস্থাপন।
বিশেষ অধিবেশন পরিচালনা করেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মমতাজ আরা, পুলিশ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক জান্নাতুল হাসান এবং সিআইডির ডিএনএ বিশ্লেষক আহমেদ ফেরদৌস। তাঁদের আলোচনায় জুলাই আন্দোলনে সংঘটিত অপরাধের তদন্তের অগ্রগতি, সীমাবদ্ধতা ও চ্যালেঞ্জও উঠে আসে।
সমাপনী দিনে বক্তারা বলেন, প্রযুক্তি, প্রশিক্ষণ এবং আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে দেশের তদন্তপ্রক্রিয়াকে আরও মানবিক, কার্যকর ও স্বচ্ছ করা সম্ভব। সিআইডির প্রধান ভবিষ্যতে ফরেনসিক সক্ষমতা সম্প্রসারণ এবং অবকাঠামোগত উন্নয়নে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
সমাপনী বক্তব্যে মরিস টিডবল-বিন্জ বলেন, আইনবহির্ভূত মৃত্যুর তদন্তে প্রযুক্তির ব্যবহার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভ্রাম্যমাণ ডিএনএ পরীক্ষাগার, ঘটনাস্থলে মরদেহ শনাক্তকরণ পদ্ধতি ও অন্যান্য প্রযুক্তিনির্ভর উদ্যোগে জাতিসংঘ প্রয়োজনীয় সহায়তা দিতে প্রস্তুত।