ঝালকাঠিতে ছেলের বিরুদ্ধে মারধর ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ এনে মামলা করেছেন শতবর্ষী এক মা। বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) দুপুরে ঝালকাঠি সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১১০ বছর বয়সের আমিরুল নেছা বাদী হয়েছে ছেলে ইউনুস মোল্লার বিরুদ্ধে এ মামলা দায়ের করেন। 

আদালতের বিচারক রুবেল শেখ অভিযোগ আমলে নিয়ে আসামির বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট ইস্যু করেছেন। মায়ের বিরুদ্ধে ছেলের এমন আচরণ মানতে পারছেন না স্থানীরা। তারা দোষী ছেলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।

মাকে কিছু অর্থের জন্য মারধর করেছেন ঝালকাঠি সদর উপজেলার বাসন্ডা ইউনিয়নের ধারাখানা গ্রামের বাসিন্দা ও এলজিইডির গাড়ি চালক ইউনুস মোল্লা। বাধ্য হয়ে শতবর্ষী ওই মা তার ছেলের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

আরো পড়ুন:

‎বেরোবি উপাচার্য কলিমউল্লাহসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

কিশোরগঞ্জে মাদক মামলায় নারীর যাবজ্জীবন

মামলার অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, বৃদ্ধ মা আমিরুল নেছা তিন বছর আগে জমি বিক্রি করে তিন লাখ টাকা তার ছোট ছেলে ইউনুস মোল্লার কাছে জমা রাখেন। গত ১২ জুন চিকিৎসার জন্য এই টাকা চাইতে গেলে ছেলে মায়ের ওপরে ক্ষিপ্ত হন। এক পর্যায়ে মাকে লাথি মারেন ছেলে ইউনুস মোল্লা। এ সময় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। পরে আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ঝালকাঠি সদর হাসপাতলে চিকিৎসা করানো হয়। বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) দুপরে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়।

আদালতে বারান্দায় বসে মা আমিরুল নেছা বলেন, ‘‘জমি বিক্রি করে তিন লাখ টাকা আমি আমার ছোট ছেলে ইউনুস মোল্লার কাছে জমা রাখি। চিকিৎসার জন্য টাকার প্রয়োজন হলে আমি ওই টাকা চাই। সে টাকা না দিয়ে আমাকে লাথি মারে। এতে আমি আমার ডান পায়ে ব্যথা পাই। কিন্তু এর পরও আমার ছেলে আমাকে নানাভাবে হুমকি দিয়ে আসছিলেন। তাই বাধ্য হয়ে আজ আমি আদালতে মামলা করেছি।’’ 

অভিযুক্ত ইউনুস মোল্লা তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘‘আমি আমার মাকে মারধর করিনি। যে মা আমাকে গর্ভে ধারণ করেছেন, তাকে মরাব কেন? আমার অন্য ভাইরা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন।’’

মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী মুহাম্মদ সোলায়মান বলেন, ‘‘এটা দুঃখজনক যে ছেলের বিরুদ্ধে মায়ের মামলা করতে হয়েছে। তবে বিজ্ঞ আদালত বৃদ্ধা আমিরুল নেছার অভিযোগ আমলে নিয়ে সরাসরি ওয়ারেন্ট ইস্যু করেছেন। আমরা আশা করছি, তিনি ন্যায়বিচার পাবেন।’’

ঢাকা/অলোক/বকুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইউন স ম ল ল আম র ল ন ছ কর ছ ন ঝ লক ঠ ম রধর

এছাড়াও পড়ুন:

‘কবর’ কবিতার শতবর্ষ পূর্তি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক

পল্লিকবি জসীমউদ্‌দীনের ‘কবর’ কবিতা বাংলা সাহিত্যের এক অবিস্মরণীয় সৃষ্টি। ১৯২৫ সালে লেখা অমর এ কবিতার শতবর্ষ এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। ‘কবর’ কবিতা তৎকালীন সময়ের সমাজের চিত্রকে তুলে ধরেছে।

‘কবর’ কবিতার শতবর্ষ উপলক্ষে প্রকাশিত ‘শতবর্ষে কবর’ গ্রন্থের প্রকাশনা উৎসবে এ কথা বলেন বক্তারা। শনিবার বিকেলে রাজধানীর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের মিলনায়তনে ফরিদপুর সাহিত্য পরিষদ এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

‘শতবর্ষে কবর’ গ্রন্থটি সম্পাদনা করেছেন মফিজ ইমাম মিলন। ৪৮ জন লেখকের লেখা নিয়ে প্রকাশিত এই গ্রন্থ প্রকাশ করেছে নয়নজুলি প্রকাশনাী।

অনুষ্ঠানে অতিথিদের বক্তব্যে উঠে আসে জসীমউদ্‌দীনের অবিস্মরণীয় সৃষ্টি ‘কবর’ কবিতার নানান প্রসঙ্গ। কবিতাটি ১৯২৫ সালে ‘গ্রাম্য কবিতা’ পরিচয়ে প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল কল্লোল পত্রিকার তৃতীয় বর্ষ তৃতীয় সংখ্যায়।

আলোচকেরা বলেন, ‘কবর’ প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গেই বিপুল সাড়া জাগিয়েছিল। কবিতাটি দীনেশচন্দ্র সেন, অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মনোযোগ আকর্ষণ করেছিল। এমনকি ‘কবর’ পড়ে দীনেশচন্দ্র সেন ‘অ্যান ইয়াং মোহামেডান পোয়েট’ শিরোনামে একটি আলোচনাও লিখেছিলেন ফরওয়ার্ড পত্রিকায়।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তৃতায় শিক্ষা উপদেষ্টা চৌধুরী রফিকুল (সি আর) আববার বলেন, ‘কবর’ কবিতার শত বছর পূর্তির ঘটনা একটা গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। কবিতাটির শতবর্ষ নিয়ে বই প্রকাশ ব্যতিক্রমী প্রয়াস।

এ সময় শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, প্রতিটি শহরে ফরিদপুর সাহিত্য পরিষদের মতো সংগঠন থাকা উচিত। একটা বৃহত্তর পরিবারের মতো কাজ করে তারা। তিনি বলেন, এ ধরনের নাগরিক সমাজ রাষ্ট্রের বাইরে থেকে দেশ ও সমাজ সম্পর্কে ভাবে। এটা বিশাল শক্তি।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ফরিদপুর ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি জালাল আহমেদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কথাসাহিত্যিক আন্দালিব রাশদী, পক্ষিবিশারদ ইনাম আল হক, কথাসাহিত্যিক ফারুক মঈন উদ্দীন। গবেষক, সাংবাদিক ও ফরিদপুর সাহিত্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মফিজ ইমাম মিলনের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন নয়নজুলি প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ আলী খান, অধ্যাপক এম এ সামাদ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের অধ্যক্ষ কাকলী মুখোপাধ্যায়, ডেইলি স্টারের সাহিত্য সম্পাদক ইমরান মাহফুজ প্রমুখ।

‘শতবর্ষে কবর’ গ্রন্থের প্রকাশনা অনুষ্ঠান শুরু হয় ‘কবর’ কবিতা আবৃত্তির মধ্য দিয়ে। স্বাগত বক্তব্য দেন ফরিদপুর সাহিত্য পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক আলতাফ হোসেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘কবর’ কবিতার শতবর্ষ পূর্তি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক
  • শতবর্ষী গাছ উপড়ে ভবনের ওপর, আহত ১
  • শতবর্ষী ‘হাতির বাংলো’