নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার চৌমুহনী পুলিশ ফাঁড়িতে কর্মরত কনস্টেবল মো. মোস্তফাকে চার হাজার ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গতকাল মঙ্গলবার রাত নয়টার দিকে চৌমুহনী হকার্স মার্কেট এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

মো. মোস্তফার বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়েছে এবং আজ বুধবার বিকেলে তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে জেলা পুলিশ। গতকাল জেলা পুলিশ অভিযান চালালেও বিষয়টি জানানো হয়েছে আজ।

নোয়াখালীর পুলিশ সুপার মো.

আবদুল্লাহ আল ফারুক প্রথম আলোকে বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে মোস্তফাকে ইয়াবাসহ হাতেনাতে ধরা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে বেগমগঞ্জ থানায় নিয়মিত মামলা করে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার রাত পৌনে নয়টার দিকে চৌমুহনী হকার্স মার্কেট এলাকায় অভিযান চালায় ডিবির একটি দল। সেখানে মোস্তফাকে আটক করে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আজ দুপুরে তাঁকে নোয়াখালী চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঠানো হয়। আদালত তাঁর জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

গ্রেপ্তার হওয়া কনস্টেবল মোস্তফার বাড়ি চট্টগ্রাম জেলায়। তিনি প্রায় তিন বছর ধরে চৌমুহনী পুলিশ ফাঁড়িতে কর্মরত ছিলেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: চ ম হন

এছাড়াও পড়ুন:

কুড়িগ্রামে গৃহবধূকে ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগ, বিচার দাবি

কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নে গৃহবধূ ফাতেমাকে দলবদ্ধ ধর্ষণের পর গলাটিপে হত্যা করে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রাখার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে নিহতের পরিবার।

বুধবার (১ অক্টোবর) দুপুরে কুড়িগ্রাম প্রেসক্লাবে আয়োজিত এ সংবাদ সম্মেলনে নিহতের স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন।

আরো পড়ুন:

পরকীয়া নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে কথা কাটাকাটি, যুবককে কুপিয়ে হত্যা

বাড়ির মেয়েদের দিকে কুদৃষ্টি দেওয়ায় আকবরকে হত্যা

নিহত গৃহবধূ ফাতেমার পিতা মো. আসাদ আলী (আসাবুদ্দিন) লিখিত বক্তব্যে অভিযোগ করে বলেন, “আমার মেয়েকে গত ১৪ আগস্ট রাতে উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের উত্তর বালাডোবা গ্রামে স্বামীর বাড়িতে সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণ করে হত্যা করা হয়। পরে লাশ ঘরের আড়ায় ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যা বলে প্রচার চালানো হয়।”

তিনি জানান, ফাতেমার স্বামী শামীম মোল্লা জীবিকার তাগিদে টাঙ্গাইল জেলায় থাকলেও নিয়মিত পরিবারের খোঁজখবর নিতেন। স্বামীর অনুপস্থিতিতে এলাকার কিছু দুষ্কৃতিকারী ও মাদকসেবী ফাতেমাকে দীর্ঘদিন ধরে উত্যক্ত করত। ঘটনার রাতে ফাতেমার শাশুড়ি ও জা নিজ বাড়িতে ছিলেন না। তারা আত্মীয়ের বাড়িতে ছিলেন। এ সময় প্রথমে সফিকুল ইসলাম সফি নামের এক যুবক তার বাড়িতে প্রবেশ করলে স্থানীয় কয়েকজন তাকে আটক করে। পরে তাকে ছেড়ে দেওয়ার বিনিময়ে টাকা নেয়। এরপর রাত গভীর হলে সফিকুলসহ প্রায় ১২ জন সংঘবদ্ধভাবে ফাতেমার ঘরে প্রবেশ করে পালাক্রমে ধর্ষণ ও হত্যা করে।

আসাদ আলীর অভিযোগ, ঘটনার পর বেগমগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বাবলু মিয়ার প্রত্যক্ষ তদবিরে স্থানীয় পুলিশ ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে। নামাজের চর পুলিশ ফাঁড়ি থেকে এসআই জাহাঙ্গীরের নেতৃত্বে ঘটনাস্থলে এসে লাশের সুরতহালে গলায় ও শরীরে জখম থাকার পরও আত্মহত্যার কাহিনি সাজায় পুলিশ। এমনকি থানায় মামলা করতে গেলে জোরপূর্বক সাদা কাগজে তার (আসাদ আলীর) নিকট থেকে স্বাক্ষর নিয়ে মেয়ের আত্মহত্যার স্বীকারোক্তি তৈরি করে পুলিশ। এখন পর্যন্ত তিনি মেয়ের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনও পাননি তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরো জানান, ঘটনাস্থল থেকে মেয়ের শাড়ি উদ্ধার করা হলেও লাশ ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায় সালোয়ার কামিজ পরিহিত অবস্থায়। এ নিয়ে গ্রামে নানা প্রশ্ন উঠলেও পুলিশ গুরুত্ব দেয়নি। অভিযুক্তরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও মামলা ও তদন্তে কোনো অগ্রগতি নেই। বরং ভিকটিমের পরিবারকেই হুমকি দেওয়া হচ্ছে।

ফাতেমার বাবা মো. আসাদ আলী বলেন, “আমার মেয়েকে গণধর্ষণ ও হত্যার পর ফাঁসিতে ঝুলিয়ে আত্মহত্যার নাটক সাজানো হয়েছে। পুলিশ ও জনপ্রতিনিধিরা টাকার বিনিময়ে সত্য গোপন করছে। একজন পিতা হিসেবে আমি আমার মেয়ে হত্যার ন্যায়বিচার চাই। অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। একইসঙ্গে সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে হবে।

ঢাকা/সৈকত/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কুড়িগ্রামে গৃহবধূকে ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগ, বিচার দাবি