আমরা আরও প্রযুক্তিনির্ভর ঋণ প্রক্রিয়া চালু করব
Published: 26th, June 2025 GMT
সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংকের উদ্যোগ থাকলেও বাস্তবে অনেক উদ্যোক্তা এখনও আনুষ্ঠানিক ঋণ পাওয়ার বাইরে। তথ্যের ঘাটতি, ঋণ ইতিহাসের অনুপস্থিতি, জামানতের অভাব ও দুর্বল ব্যবসা পরিকল্পনা এ খাতে অর্থায়নের প্রধান বাধা
সমকাল: দেশের অর্থনীতিতে এসএমই খাতের অবদানকে আপনি কীভাবে দেখেন?
কামরুল মেহেদী: বাংলাদেশের অর্থনীতিতে এসএমই খাত একটি শক্তিশালী ভিত্তি হিসেবে কাজ করছে। প্রায় ৮৫ শতাংশ কর্মসংস্থান এ খাতের গুরুত্বকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। যদিও কভিড-১৯-পরবর্তী সংকট, মূল্যস্ফীতি ও বৈদেশিক মুদ্রার চাপ এসএমই খাতকে সাম্প্রতিক সময়ে কিছুটা দুর্বল করেছে, তবুও এটি এখনও দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির অন্যতম প্রধান চালিকাশক্তি।
সমকাল: এসএমই খাতে সিটি ব্যাংকের সম্পৃক্ততা জানতে চাই
কামরুল মেহেদী: আমাদের প্রতিষ্ঠান এসএমই উদ্যোক্তাদের অর্থায়ন, পরামর্শ, প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তি সহায়তার মাধ্যমে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। এসএমই ডেস্কের মাধ্যমে ঋণ প্রক্রিয়ায় সহায়তা প্রদান, প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আর্থিক সাক্ষরতা বাড়ানো এবং ডিজিটাল পেমেন্ট, ক্লাউড অ্যাকাউন্টিং ও ই-কমার্স বিষয়ে জ্ঞান বাড়ানো হচ্ছে। নারীদের জন্য রয়েছে আলাদা ইউনিট ও উপশাখা।
সমকাল: এসএমই খাতে পর্যাপ্ত অর্থায়ন হচ্ছে? অর্থায়নের প্রতিবন্ধকতা কোথায়?
কামরুল মেহেদী: সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংকের উদ্যোগ থাকলেও বাস্তবে অনেক উদ্যোক্তা এখনও আনুষ্ঠানিক ঋণ পাওয়ার বাইরে। তথ্যের ঘাটতি, ঋণ ইতিহাসের অনুপস্থিতি, জামানতের অভাব ও দুর্বল ব্যবসা পরিকল্পনা এ খাতের অর্থায়নের প্রধান বাধা। তবে জামানতবিহীন ঋণ স্কিম ও বিকল্প ক্রেডিট স্কোরিংয়ের মাধ্যমে এ সমস্যা কাটিয়ে ওঠার প্রচেষ্টা চলছে।
সমকাল: এ খাতের উন্নয়নে সরকারের দিক থেকে কী কী করা উচিত?
কামরুল মেহেদী: সরকারি সহায়তা আরও কার্যকর করতে হলে দরকার একটি সমন্বিত উদ্যোগ। যেমন–একটি শক্তিশালী কেন্দ্রীয় তথ্যভাণ্ডার, নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য সহজ শর্তে ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কিম, কম সুদে পুনঃঅর্থায়ন সুবিধা এবং সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার মধ্যে বাস্তবসম্মত সমন্বয়। এছাড়া, এসএমইবান্ধব নীতিমালা বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে।
সমকাল: এসএমই খাতে নারীর সম্পৃক্ততা বাড়াতে করণীয় কী?
কামরুল মেহেদী: নারীর অংশগ্রহণ বাড়াতে প্রয়োজন বিশেষ উদ্যোগ। সিটি ব্যাংক দেড় কোটি টাকা পর্যন্ত জামানতবিহীন ঋণ, দক্ষতা বৃদ্ধিমূলক প্রশিক্ষণ, নেতৃত্ব উন্নয়ন, মেন্টরশিপ প্রোগ্রাম ও নেটওয়ার্কিং ইভেন্টের আয়োজন করছে। ‘সিটি আলো’-এর মতো নারী-নিবেদিত ইউনিট নারী উদ্যোক্তাদের আত্মবিশ্বাস ও সক্ষমতা বাড়াতে কার্যকর ভূমিকা রাখছে।
সমকাল: এসএমই খাতের উন্নয়নে সিটি ব্যাংকের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা জানতে চাই।
কামরুল মেহেদী: ভবিষ্যতে আমরা আরও প্রযুক্তিনির্ভর ঋণ প্রক্রিয়া চালু করব, যেখানে বিকল্প ডেটা (যেমন মোবাইল ব্যাংকিং, ইউটিলিটি বিল) ব্যবহারে নতুন ক্রেডিট স্কোরিং মডেল তৈরি করা হবে। উদ্যোক্তাদের জন্য সহজলভ্য সফটওয়্যার, অনলাইন প্রশিক্ষণ এবং ই-কমার্স সক্ষমতা বাড়ানোর মাধ্যমে আমরা এসএমই খাতকে আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক ও আধুনিক
করতে চাই।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: এসএমই খ ত র অর থ জ ম নত সমক ল সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
পূজার ছুটির পর গকসুর অভিষেক
৭ বছরের বিরতির পর গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে (গবি) অনুষ্ঠিত হলো চতুর্থ কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (গকসু) নির্বাচন। গত ২৫ সেপ্টেম্বর ভোটগ্রহণ ও ফলাফল ঘোষণার মধ্য দিয়ে নির্বাচিত হয়েছেন নতুন নেতৃত্ব।
তবে পূজার ছুটি শেষ না হওয়ায় এখনও হয়নি অভিষেক ও শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান। ফলে দায়িত্বভার নিতে পারছেন না নবনির্বাচিতরা।
আরো পড়ুন:
গকসুর জিএস, এজিএসের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা নিয়ে আপত্তি, পুনর্নির্বাচন দাবি
চাকসু নির্বাচন: দুই নারী প্রার্থীকে সাইবার বুলিংয়ের অভিযোগ
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, দুর্গাপূজার পর অনুষ্ঠিত হবে নির্বাচিত নেতৃবৃন্দের অভিষেক। তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনও নির্দিষ্ট তারিখ জানানো হয়নি। এতে নির্বাচনের পর যে উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়েছিল, তা এখন রূপ নিয়েছে অপেক্ষার আবহে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে ২৫ সেপ্টেম্বর দিনটি স্মরণীয় হয়ে থাকবে। ৭ বছরের ব্যবধান ঘুচিয়ে শিক্ষার্থীরা সরাসরি ভোটের মাধ্যমে নেতৃত্ব বেছে নেন। ভোটারদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ, প্রার্থীদের প্রচারণা আর ভোটের দিন ক্যাম্পাসজুড়ে উৎসবমুখর পরিবেশ শিক্ষার্থীদের উচ্ছ্বাসে ভরিয়ে তোলে।
ভোট শেষে বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হলেও আনুষ্ঠানিক অভিষেক না হওয়ায় এখনো কার্যক্রম শুরু করতে পারেননি তারা।
আইন বিভাগের শিক্ষার্থী রেশমা আক্তার বলেন, “গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্প্রতি কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন সম্পন্ন হলেও নির্বাচিত সদস্যরা এখনও শপথ গ্রহণ করেননি। এই বিলম্বের সুযোগে কিছু মহল নির্বাচন নিয়ে অপপ্রচার ও মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছে, যা শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে। এই গণতান্ত্রিক নির্বাচনকে সফল করতে এবং অপপ্রচার রোধে নির্বাচিত সদস্যদের দ্রুত শপথ গ্রহণের ব্যবস্থা করা জরুরি। প্রশাসনের উচিত অবিলম্বে এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া, যাতে নির্বাচিত প্রতিনিধিরা তাদের দায়িত্ব পালন শুরু করতে পারেন।”
সদ্য নির্বাচিত সহ-সভাপতি ইয়াছিন আল মৃদুল দেওয়ান বলেন, “নির্বাচনের পরের দিনটি সাপ্তাহিক ছুটির দিন ছিল এবং দুর্গাপূজার ছুটির কারণে ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কম ছিল। উপাচার্য স্যারের সঙ্গে কথা বলেছি, তিনি জানিয়েছেন পূজার ছুটির পর যতদ্রুত সম্ভব অভিষেক ও শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. ওহিদুজ্জামান বলেন, “ছুটি শেষে শপথ গ্রহণ ও অভিষেক অনুষ্ঠান সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা করা হবে। এখন পর্যন্ত কোনো তারিখ নির্ধারিত হয়নি।”
২০১৩ সালে প্রথমবার গকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সর্বশেষ ২৫ সেপ্টেম্বর চতুর্থ নির্বাচনে সম্পাদকীয় ও অনুষদ প্রতিনিধি মিলিয়ে মোট ১২টি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন ৫৮ জন প্রার্থী। ভোটার ছিলেন ৪ হাজার ৭৬১ জন।
ঢাকা/সানজিদা/মেহেদী