অনেক সময় উদ্যোক্তারা ঋণের শর্তাবলি ঠিকভাবে বুঝতে পারেন না।  যার ফলে সঠিকভাবে আবেদন করতে পারেন না। রাষ্ট্রীয়ভাবে উদ্যোক্তা উন্নয়নের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো এ ক্ষেত্রে খুবই উপকারী হতো


বেসরকারি প্রাইম ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) এম. নাজিম এ. চৌধুরী মনে করেন, বাংলাদেশে এসএমই উদ্যোক্তা বিশেষত ক্ষুদ্র এবং নতুন উদ্যোক্তাদের ঋণ পাওয়ার বাস্তব চিত্র এখনও বেশ চ্যালেঞ্জিং। যদিও এ খাতে ঋণের চাহিদা অনেক, তবে অনেক উদ্যোক্তা প্রাতিষ্ঠানিকভাবে ঋণ পাওয়ার জন্য প্রস্তুত নন। বিশেষ করে অনেকেরই প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, ট্রেড লাইসেন্স কিংবা ট্রানজেকশন রেকর্ড নেই, যা ব্যাংকিং প্রক্রিয়ার অন্যতম শর্ত। ব্যাংকের প্রথাগত ঋণ প্রক্রিয়া এবং জটিল কাগজপত্রের কারণে নতুন বা ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা সহজেই পিছিয়ে পড়েন। নারী উদ্যোক্তাদের জন্য চিত্রটি আরও কঠিন, কারণ তারা পরিবার বা সমাজের বিভিন্ন স্তরের প্রয়োজনীয় সাহায্যটুক অনেক ক্ষেত্রে পান না। 
আন্তর্জাতিক এসএমই দিবস উপলক্ষে সমকালের প্রশ্নের উত্তরে তিনি আরও জানান, অনেক সময় উদ্যোক্তারা ঋণের শর্তাবলি ঠিকভাবে বুঝতে পারেন না।  যার ফলে সঠিকভাবে আবেদন করতে পারেন না। রাষ্ট্রীয়ভাবে উদ্যোক্তা উন্নয়নের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো এ ক্ষেত্রে খুবই উপকারী হতো। এ বাস্তবতায় জামানতবিহীন বা আংশিক জামানতভিত্তিক ঋণ, প্রশিক্ষণ ও হ্যান্ডহোল্ডিং সার্ভিস এবং ডিজিটাল মাধ্যমে সহজ আবেদন প্রক্রিয়া চালুর মাধ্যমে এসএমই উদ্যোক্তাদের আর্থিক অন্তর্ভুক্তিতে সহায়তা করা জরুরি। উদ্ভাবনী ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উদ্যোগের মাধ্যমে এসএমই খাতে ঋণপ্রাপ্তি সহজতর করা গেলে এ খাত দেশের অর্থনীতিতে আরও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারবে।
সিএমএসএমই খাতে প্রাইম ব্যাংকের সম্পৃক্ততা বিষয়ে নাজিম এ.

চৌধুরী বলেন, প্রাইম ব্যাংক সিএমএসএমই খাতে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে চলেছে। বর্তমানে এ খাতে ব্যাংকের ঋণের পরিমাণ ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকার বেশি এবং সাড়ে ১১ হাজারের বেশি সক্রিয় ঋণগ্রহীতা রয়েছেন। ব্যাংকের মোট সিএমএসএমই গ্রাহকের সংখ্যা ৯০ হাজারের বেশি, যা দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের প্রতি আমাদের অঙ্গীকারের প্রমাণ। প্রাইম ব্যাংক এ খাতে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি, সহজতর ঋণপ্রাপ্তি এবং উদ্যোক্তা সক্ষমতা বাড়াতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে, যাতে সিএমএসএমই খাত দেশের অর্থনীতিতে আরও বড় ভূমিকা রাখতে পারে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে এসএমই খাত অর্থনীতির মেরুদণ্ড। তবে এ খাতের অনেক প্রতিষ্ঠান অনানুষ্ঠানিক হওয়ায় তারা ব্যাংকিং সুবিধা ও সরকারি সহায়তা থেকে বঞ্চিত থাকে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এসএমই খাতকে আরও শক্তিশালী ও অন্তর্ভুক্তিমূলক করতে হলে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি। যেমন– সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ জামানতবিহীন ঋণ প্রদান বাধ্যতামূলক করা, ঋণ প্রক্রিয়াকে সহজতর করা, নীতিগতভাবে অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্যাংকিং সেবা চালু করা, ডিজিটাল রেকর্ড ও ক্রেডিট স্কোরিং ব্যবস্থা প্রবর্তন করা, নারী ও তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য বিশেষ কর্মসূচি গ্রহণ, ক্লাস্টারভিত্তিক উন্নয়ন ও দক্ষতা উন্নয়ন কার্যক্রম চালু করা এবং সংশ্লিষ্ট সরকারি সেবাগুলোকে সহজসাধ্য ও কার্যকর করা। এসব পদক্ষেপ বাস্তবায়নের মাধ্যমে এসএমই খাত দেশের টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে আরও শক্তিশালী ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে।
সুদহার বেড়ে যাওয়ায় এসএমই খাতের ওপর প্রভাব প্রসঙ্গে প্রাইম ব্যাংকের ডিএমডি বলেন, ব্যাংক ঋণের সুদহার মূলত বাজারভিত্তিক হওয়ায় এটি সময় ও অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট অনুযায়ী পরিবর্তিত হয়। সুদহার বৃদ্ধিতে ব্যবসায়িক খরচ বাড়লেও এসএমই উদ্যোক্তাদের জন্য তাদের খরচ কমাতে কর্মীদের দক্ষতা বাড়িয়ে ব্যবসা বৃদ্ধির মাধ্যমে ব্যবসা আরও পরিকল্পিত ও সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালনার সুযোগ করে দেয়। ভবিষ্যতে টেকসই প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নের পথকে আরও মসৃণ করে তুলবে। 
ঋণ বিতরণ পরিস্থিতির বিষয়ে তিনি জানান, দেশের সার্বিক বিবেচনায় ঋণ বিতরণে কিছুটা ধীরগতি পরিলক্ষিত হচ্ছে। তবে ভালো, পরিচ্ছন্ন ও দীর্ঘমেয়াদি সম্পর্কযুক্ত ক্লায়েন্টদের ঋণ অনুমোদন চলছে। খেলাপি নির্ণয়ে নতুন নিয়ম পরিপালন করার জন্য ঋণের প্রকৃত চিত্র বের হয়ে আসছে। বাংলাদেশ ব্যাংক ও এসএমই ফাউন্ডেশনের পুনঃঅর্থায়ন সুবিধা, নিয়মিত প্রশিক্ষণ ও উদ্যোক্তা উন্নয়ন প্রোগ্রামের সহায়তায় এসএমই খাত তুলনামূলক নমনীয় ও টিকে থাকার চেষ্টা করছে। তবে চাহিদা হ্রাস, মূল্যস্ফীতি ও সম্পদের সংকট এ খাতেও ধাক্কা দিচ্ছে। যারা প্রযুক্তি বা অনলাইনভিত্তিক ব্যবসায় এসেছে, তারা তুলনামূলকভাবে ভালো করছে। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স এমএসএমই এসএমই খ ত ত ম লক র জন য প রক র ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

পাঁচ বছরে ১৪৪ কোটি টাকার মূলধন সংগ্রহ

পরিশোধিত মূলধন ৩০ কোটি টাকার কম হলে ২০০৯ সালের পর কোনো কোম্পানি দেশের শেয়ারবাজার থেকে মূলধন সংগ্রহের অনুমতি পেত না। ২০২১ সালে অন্য সব কোম্পানির মতো এসএমই কোম্পানির জন্য এ সুযোগ অবারিত করা হয়েছে। এখন ৫ কোটি টাকা মূলধনি কোম্পানি চাইলে এ সুযোগ নিতে পারে। এ জন্য ‘কোয়ালিফায়েড ইনভেস্টরস অফার (কিউআইও)’ নামে পৃথক আইন করা হয়েছে। আইনি বাধ্যবাধকতা কমানো ছাড়াও প্রাথমিক শেয়ার বিক্রির খরচ ও নিয়ম-নীতিতে বহু ছাড় দেওয়া হয়েছে। এ সুবিধা পেয়ে গত ৫ বছরে ১৫টি কোম্পানি শেয়ার বিক্রি করে ১৪৪ কোটি টাকা মূলধন সংগ্রহ করেছে।
ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ সূত্রে জানা গেছে, আরও সাতটি কোম্পানি মোট সাড়ে ৬২ কোটি টাকার মূলধন সংগ্রহের জন্য আবেদন করেছে। এর বাইরে গত বছর দুটি কোম্পানিকে শেয়ার বিক্রি করে ১০ কোটি টাকা মূলধন সংগ্রহের অনুমতি দেওয়া হয়। অবশ্য আইনি জটিলতায় কোম্পানি দুটি এখনও মূলধন সংগ্রহ কার্যক্রম শুরু করতে পারেনি।
মূলধন সংগ্রহ করা এসএমই কোম্পানি
আচিয়া সি ফুডস একটি রপ্তানিমুখী সামুদ্রিক খাদ্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান। কোম্পানিটির পুঁজিবাজারে আসার সময় পরিশোধিত মূলধন ছিল ৩৭.৩৬ কোটি টাকা। কিআইও প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সংগ্রহ করে আরও ১৫ কোটি টাকা। এ অর্থ ব্যবহৃত হয়েছে প্রসেসিং সুবিধা সম্প্রসারণ ও রপ্তানিমান উন্নয়নে।
ভেটেরিনারি ওষুধ উৎপাদনে বিশেষায়িত কোম্পানি আল মদিনা ফার্মার পরিশোধিত মূলধন ২০.৪ কোটি টাকা। তারা ৫ কোটি টাকা সংগ্রহ করেছে ওষুধ উৎপাদনে কারখানা সম্প্রসারণ, মানোন্নয়নে। 
জৈব কৃষি উপকরণ এবং ফার্ম ইনপুট উৎপাদক প্রতিষ্ঠান অ্যাগ্রো অর্গানিকার পরিশোধিত মূলধন ৪৩.৩০ কোটি টাকা। কিআইও থেকে উত্তোলিত ৫ কোটি টাকা খামার পর্যায়ের গবেষণা ও প্যাকেজিং উন্নয়নে ব্যয় করেছে তারা।
দেশীয় রং ও কেমিক্যাল প্রস্তুতকারী বিডি পেইন্টস কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন ৬২ কোটি টাকা। বাজার থেকে কিআইওর মাধ্যমে উত্তোলন করেছে ১২ কোটি টাকা। নতুন কারখানা ইউনিট স্থাপন ও উৎপাদন সরঞ্জাম ক্রয়ে এ টাকা সংগ্রহ করে।
ক্রাফসটম্যান ফুটওয়্যার অ্যান্ড এক্সেসরিজ চামড়াজাত পণ্য ও জুতা উৎপাদনে নিয়োজিত। এ প্রতিষ্ঠানটি ২৮ কোটি টাকা পরিশোধিত মূলধন নিয়ে বাজারে আসে। কিআইও প্রক্রিয়ায় ৫ কোটি টাকা সংগ্রহ করেছে, যা রপ্তানি বাজার সম্প্রসারণে কাজে লাগিয়েছে।
কৃষিবিদ সিড বীজ উৎপাদন ও কৃষি গবেষণাভিত্তিক কোম্পানি। তাদের মূলধন ৩০ কোটি টাকা। কিআইও থেকে তুলেছে ১১.৬ কোটি টাকা। পোলট্রি ও ফিশ ফিড প্রস্তুতকারী কৃষিবিদ ফিড কোম্পানির মূলধন ৪৯.৫০ কোটি টাকা। কিআইও থেকে তারা ২২ কোটি টাকা সংগ্রহ করে কারখানা সম্প্রসারণ এবং প্রযুক্তি আপগ্রেড করেছে।
খাদ্য ও কৃষিপণ্য উৎপাদন ও প্রক্রিয়াজাতকরণে নিয়োজিত মামুন অ্যাগ্রো প্রোডাক্টসের পরিশোধিত মূলধন ৫০ কোটি টাকা। কিআইও থেকে ১০ কোটি টাকা সংগ্রহ করেছে তারা। প্রাণিখাদ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান মাস্টার ফিড অ্যাগ্রোটেকের পরিশোধিত মূলধন ৬৭.১৫ কোটি টাকা। তারা সংগ্রহ করেছে ১০ কোটি টাকা। 
এমকে ফুটওয়্যার নামের জুতা রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানটির মূলধন ছিল ৪৭.৮৫ কোটি টাকা। কিআইওর মাধ্যমে ১০ কোটি টাকা সংগ্রহ করে ডিজাইন ও প্রযুক্তি উন্নয়নে ব্যয় করেছে।
ধাতব সামগ্রী উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান মোস্তফা মেটাল ইন্ডাস্ট্রিজ কিআইও থেকে ১১ কোটি টাকা তুলে মোট মূলধন ৪৮.৮৬ কোটি টাকায় উন্নীত করেছে। তামা ও অ্যালুমিনিয়ামের অ্যালয় প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান নিয়ালকো অ্যালয় ২৮.৫ কোটি টাকা মূলধন নিয়ে এসএমই প্ল্যাটফর্মে আসে। কিআইওতে তুলেছে ৭.৫ কোটি টাকা।
ওরিজা অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ ধান ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ খাতে কাজ করা প্রতিষ্ঠানটি ৬৯.০৯ কোটি টাকা পরিশোধিত মূলধনসহ বাজারে আসে এবং কিআইওর মাধ্যমে সংগ্রহ করে ১০ কোটি টাকা। স্টার অ্যাডহেসিভ আঠা ও রাসায়নিক উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানটি। এর মূলধন ২০ কোটি টাকা এবং তুলেছে ৫ কোটি টাকা। ওয়েব কোস্ট নামের ছাপাখানা ও প্যাকেজিং খাতভিত্তিক কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন ৩৩.০১ কোটি টাকা। কিআইও থেকে তুলেছে ৫ কোটি টাকা।
এসএমইদের কেন পুঁজিবাজার দরকার
দেশের অর্থনীতিতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের (এসএমই) অবদান গুরুত্বপূর্ণ। শিল্প ও সেবা খাতে কর্মসংস্থান, উৎপাদন এবং আয় সৃষ্টিতে এই খাতের অংশগ্রহণ ব্যাপক। দেখা যায়, এসএমই প্রতিষ্ঠানগুলোর মূলধন বা ব্যবসায় অর্থায়ন আসে এর উদ্যোক্তার থেকে। তবে ব্যবসা বড় হতে থাকলে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই উদ্যোক্তার পক্ষে আর পর্যাপ্ত মূলধন জোগান দেওয়া সম্ভব হয় না। এ অবস্থায় ব্যাংকের দ্বারস্থ হলেও নানা জটিলতায় আর অর্থায়ন মেলে না। মিললেও উচ্চ সুদ মিটিয়ে ব্যবসা টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পড়ে।
শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টরা জানান, বাংলাদেশের মতো দেশে টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের বিকাশের বিকল্প নেই। সমস্যা হলো– কোম্পানিগুলো পর্যাপ্ত অর্থায়ন পায় না। কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে বাণিজ্যিক ও বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোকে এসএমই খাতের ঋণপ্রবাহ বাড়াতে বললেও নানা কারণে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জন হচ্ছে না। খাতসংশ্লিষ্টরা জানান, উচ্চ ব্যাংক সুদ এক্ষেত্রে অন্যতম প্রধান বাধা। অথচ পর্যাপ্ত অর্থায়নের অভাবে অনেক এসএমই সম্ভাবনা থাকার পরও ঝরে যায়। 

শেয়ারবাজার ভালো সমাধান
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) সাত্ত্বিক আহমেদ বলেন, বড় ব্যবসা বা শিল্পপ্রতিষ্ঠান ব্যাংক ঋণ নিয়ে সহজে ব্যবসা পরিচালনা করতে পারলেও এসএমই কোম্পানির জন্য এভাবে ব্যবসায় টিকে থাকা সহজ না। ব্যাংক ঋণ গ্রহণে নানা জটিলতার পাশাপাশি উচ্চ সুদের হার বড় বাধা। এ ক্ষেত্রে মালিকানার কিছু অংশ শেয়ার ছেড়ে শেয়ারবাজার থেকে পুঁজি সংগ্রহ করলে ঋণের বোঝা বহনের দরকার পড়ে না।
সাত্ত্বিক আহমেদ বলেন, এক্ষেত্রে ভালো সমাধান হলো শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া। এসএমই কোম্পানিগুলোর জন্য শেয়ার বিক্রি করে মূলধন সংগ্রহ প্রক্রিয়া বড় কোম্পানিগুলোর তুলনায় সহজ এবং আইন-কানুনেও অনেক শিথিলতা আছে। মুনাফায় থাকলে এসএমই খাতের যেকোনো কোম্পানি ৫ কোটি থেকে ২০ কোটি টাকার মূলধন সংগ্রহ করতে পারে। মুনাফা হলে শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ দেবে, মুনাফা না হলে ব্যাংকের মতো সুদ ব্যয় নেই। ফলে ব্যবসা টিকে থাকার জন্য শেয়ারবাজার এ ধরনের কোম্পানিগুলোর জন্য সবচেয়ে ভালো অর্থায়ন ব্যবস্থা।
ডিএসইর ভারপ্রাপ্ত এমডি বলেন, বিষয়টি এমন নয় যে প্রথমবার কিআইও প্রক্রিয়ায় শেয়ার বিক্রি করে মূলধন সংগ্রহের পর সংশ্লিষ্ট কোম্পানির আর মূলধন সংগ্রহের সুযোগ নেই। বরং তালিকাভুক্ত হওয়ার পর মূলধন সংগ্রহের সুযোগ অবারিত হয়। চাইলে পরিচালনা পর্ষদ ও এজিএমে শেয়ারহোল্ডারদের অনুমোদন সাপেক্ষে লভ্যাংশ নগদে না দিয়ে বোনাস শেয়ার ইস্যু করে মুনাফার টাকা পুনঃবিনিয়োগের জন্য রেখে দিতে পারে। এছাড়া রাইট শেয়ার বিক্রি করেও মূলধন সংগ্রহ করা যায়।
রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বিনিয়োগ সংস্থা ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, এসএমই খাতের বিকাশ হলে বাংলাদেশের অর্থনীতি বদলে দেওয়া যায়। যদি পরিকল্পিতভাবে শেয়ারবাজারে আনা যায়, তবে অর্থনীতির কাঠামোও পাল্টে যেতে পারে বলে অভিমত তাঁর।
তালিকাভুক্ত এসএমই কোম্পানিগুলোর শেয়ার কেনাবেচায় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে এসএমই বোর্ড নামে পৃথক লেনদেন প্ল্যাটফর্ম। ঢাকা ও চট্টগ্রামের উভয় স্টক এক্সচেঞ্জে এজন্য পৃথক লেনদেন বোর্ড রয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বর্তমানে ২০টি এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) ১৯টি এসএমই কোম্পানি তালিকাভুক্ত। 

 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আজ আন্তর্জাতিক এমএসএমই দিবস
  • ব্র্যাংক ব্যাংকের বেশির ভাগ এসএমই ঋণ জামানতবিহীন
  • ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের সহজে ব্যবসার সুযোগ দরকার
  • এক জায়গা থেকে সেবা চালু করা উচিত
  • এসএমই খাতের বিকাশই অর্থনীতির বিকাশ
  • অর্থনীতির প্রাণ ছোট ও মাঝারি উদ্যোগ
  • পাঁচ বছরে ১৪৪ কোটি টাকার মূলধন সংগ্রহ
  • এক বছরে এসএমই ঋণ বিতরণ ২ লাখ ১৪ হাজার কোটি টাকা
  • আমরা আরও প্রযুক্তিনির্ভর ঋণ প্রক্রিয়া চালু করব