Samakal:
2025-06-27@00:14:58 GMT

আমাদের বিনিয়োগের ৩০% এসএমইতে

Published: 26th, June 2025 GMT

আমাদের বিনিয়োগের ৩০% এসএমইতে

ব্যাংকিং যাত্রার গত ৪ বছরে আমরা দুই হাজারের বেশি এসএমই উদ্যোক্তাকে বিনিয়োগ করেছি। আমাদের মোট বিনিয়োগ পোর্টফোলিওর প্রায় ৩০ শতাংশ এসএমই, যা ক্রমাগতভাবে বেড়েই চলেছে

সমকাল : এসএমই খাতে কী কী অর্জন রয়েছে আপনাদের?
তারিক মোর্শেদ : বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংক ২০২১ সালের ১০ মার্চ ব্যাংকিং কার্যক্রম শুরু করে। দেশের অর্থনীতির অন্যতম স্টেকহোল্ডার এসএমই খাতের উদ্যোক্তা এবং ক্ষুদ্র বিনিয়োগে পরিচালিত ব্যবসায়ীরা অনেকে বিনিয়োগের সঠিক সহযোগিতা ও ব্যবস্থাপনা না থাকায় অর্থনীতিতে পিছিয়ে পড়েন। রয়েছেন এ জন্য সূচনালগ্ন থেকেই ব্যাংকের অগ্রাধিকারের মধ্যে এসএমই খাত অন্যতম। এসএমই খাতের উন্নয়নের জন্য আমরা প্রায় ১০টি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষর করেছি। এর  ফলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ও অ্যাসোসিয়েশনের কার্যনির্বাহী কমিটির সহায়তায় তাদের নিবন্ধিত সদস্য বা উদ্যোক্তাদের অতি সহজেই তুলনামূলক কম মুনাফায় বিনিয়োগ প্রদান করছি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য প্রতিষ্ঠান ও অ্যাসোয়িশনগুলো হচ্ছে– এসএমই ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি, বাংলাদেশ প্লাস্টিক দ্রব্য প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্প মালিক সমিতি, বাংলাদেশ পেপারকোন অ্যান্ড টিউব ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ ইলেক্ট্রিক্যাল মার্চেন্ডাইজ ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন, উইমেন ইন্টারপ্রেনারস নেটওয়ার্ক ফর ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ পিভিসি পাইপ প্রস্তুতকারক সমিতি।
মাইক্রোক্রেডিট কর্মসূচির আওতায় আমরা প্রায় আড়াই হাজার পরিবারকে বিভিন্ন রকম আর্থিক সহযোগিতা প্রদানের মাধ্যমে আনব্যাংকড পিপলকে ব্যাংকিংয়ের আওতায় আনতে সক্ষম হয়েছি। ১৭ কোটির জনসংখ্যার দেশে এসএমইর কোনো বিকল্প নেই। এ ক্ষেত্রে সরকারি ও বেসরকারি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের যুগোপযোগী, ব্যবসাবান্ধব, প্রযুক্তিনির্ভর উদ্যোগ এবং নতুন নীতিমালা প্রণয়নের মাধ্যমে শিগগিরই এই খাতের উন্নয়নের মাধ্যমে জিডিপিতে এসএমই খাতের অবদান দ্বিগুণ করা সম্ভব।
এ খাতে আমাদের কিছু উল্লেখযোগ্য অর্জন রয়েছে। ব্যাংকিং যাত্রার গত ৪ বছরে আমরা দুই হাজারের বেশি এসএমই উদ্যোক্তাকে বিনিয়োগ করেছি। আমাদের মোট বিনিয়োগ পোর্টফোলিওর প্রায় ৩০ শতাংশ এসএমই, যা ক্রমাগতভাবে বেড়েই চলেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নারী উদ্যোক্তা রয়েছেন। আমাদের ব্যাংক কর্মসংস্থান তৈরি এবং স্থানীয় পণ্য উৎপাদনে ভূমিকা রাখছেন। আমরা উদ্ভাবনী এবং টেকনোলজিক্যাল ব্যবসা বাড়াতে আমাদের ব্যাংকিং সাপোর্ট অব্যাহত রেখেছি। আমরা এসএমই উদ্যোক্তাদের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক এবং এসএমই ফাউন্ডেশন প্রদত্ত ফান্ড সুবিধা প্রদান করছি, যা অর্থনীতিতে বিরাট ভূমিকা রাখছে।
সমকাল : আপনারা অর্থায়নে কোন বিষয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন? আগামীতে ভাবনা কী?
তারিক মোর্শেদ : আমরা আগামীতে দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে ব্যাংকিং ব্যবস্থার আওতায় আনতে শিগগিরই এজেন্ট ব্যাংকিং ব্যবস্থা শুরু করার জন্য কাজ করছি। গ্রামীণ এবং শহর অঞ্চলের সব পর্যায়ের কৃষিবান্ধব ও নারী উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগে গুরুত্ব প্রদান করছি। 


ফিন্যান্সিয়াল ইনক্লুশনের আওতায় আমরা প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে ব্যাংকিং ব্যবস্থায় সঞ্চয়ে উদ্বুদ্ধ করা এবং নানামুখী ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত করে অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে ভূমিকা রাখছি। গ্রিন ব্যাংকিং, টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্ব প্রদান করছি এবং সে লক্ষ্যে সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী কাজ করছি। স্টার্টআপ ও প্রযুক্তিনির্ভর এসএমই ব্যাংকিংয়ে অধিক গুরুত্ব প্রদান করছি।
সমকাল : এসএমই খাতে রপ্তানি বাড়াতে কীভাবে অবদান রাখা যায়?
তারিক মোর্শেদ : বাংলাদেশ ব্যাংকের গাইডলাইন অনুযায়ী এসএমইকে নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে, যেখানে সর্বোচ্চ ৫০ কোটি টাকা পর্যন্ত এসএমই খাতে বিনিয়োগ করা যেতে পারে। তবে বাস্তবতা হলো এসএমই সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ও গ্রাহকের এ সম্পর্কিত ধারণা কম থাকায় জিডিপিতে এসএমই খাতের অবদান সেভাবে বাড়ছে না। সচেতনতা বৃদ্ধি ও তার বাস্তব প্রয়োগের মাধ্যমে এসএমই খাতের উন্নয়নের মাধ্যমে রপ্তানি বাড়ানো সম্ভব। তাই আমরা এসএমই উদ্যোক্তাসহ সব পর্যায়ের ব্যবসায়ীকে তাদের পণ্যের গুণগত মানোন্নয়ন এবং বিক্রয় পরবর্তী সেবা আরও উন্নত করতে পরামর্শ দিচ্ছি। এসএমই উদ্যোক্তাসহ সব পর্যায়ের ব্যবসায়ীর পণ্য রপ্তানির প্রশিক্ষণ ও সনদ প্রদান করছি। ব্যবসায়ীদের ই-কমার্স ব্যবহার করে স্বল্প সময়ে পণ্য বাজারজাতে উৎসাহ এবং সহযোগিতাও করছি আমরা।
সমকাল : এসএমই খাতে নারীর সম্পৃক্ততা বাড়াতে করণীয় কী?
তারিক মোর্শেদ : দেশে প্রায় ৩.

৮ মিলিয়ন নারী উদ্যোক্তা রয়েছেন, যাদের মধ্যে অনেকেরই সরকার-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে বিভিন্ন ধরনের সহযোগিতা প্রয়োজন। অনেক নারী উদ্যোক্তা রয়েছেন, যারা সঠিক গাইডলাইনের অভাবে যোগ্যতা থাকার পরও উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারছেন না। তাই নারী উদ্যোক্তাদের সহযোগিতার জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম থাকা প্রয়োজন। যেখানে যোগাযোগ করলে তারা তাদের মেধা, দক্ষতা এবং যোগ্যতা অনুযায়ী সহযোগিতা পেতে পারেন। নারী উদ্যোক্তাদের জন্য আকর্ষণীয় বিনিয়োগ স্কিম চালু করা উচিত। নারী উদ্যোক্তাদের বিভিন্ন পর্যায়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। সামাজিক ও পারিবারিক অঙ্গনেও নারী উদ্যোক্তাদের পজিটিভভাবে গ্রহণ করতে হবে। তাদের জন্য ব্যবসায়িক নেটওয়ার্ক বাড়ানো, পরামর্শ প্রদান এবং সব পর্যায়ের ব্যবসায় সমান সুযোগ নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
সমকাল : এসএমইবান্ধব নীতির প্রধান প্রধান বৈশিষ্ট্য কী হওয়া উচিত?
তারিক মোর্শেদ : এসএমই খাতের সার্বিক উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যাংকিং নীতিমালা করার সময় এসেছে। গ্রাম অঞ্চলের আমানতের অন্তত ৬০ শতাংশ ওই অঞ্চলের এসএমই খাতের উন্নয়নে বিনিয়োগ করা উচিত। এসএমই গ্রাহককে তাদের ব্যবসায়িক তথ্য সংরক্ষণে আরও যত্নশীল হতে হবে। এসএমই গ্রাহককে স্বল্প মুনাফায় বিনিয়োগ প্রদান নিশ্চিত করতে হবে। এসএমই গ্রাহকের জন্য ট্যাক্স ইনসেনটিভ ঘোষণা এবং ব্যবসাবান্ধব নীতির প্রয়োজন। তাদের ব্যবসায়িক নিবন্ধন, লাইসেন্স গ্রহণ এবং ব্যাংকিং ব্যবস্থায় প্রবেশ সহজতর করা দরকার। এসএমই গ্রাহকদের তাদের ব্যবসার ধরন অনুযায়ী সময়ে সময়ে প্রশিক্ষণ, পরামর্শ প্রদান এবং প্রযুক্তিগত সহযোগিতা প্রদান নিশ্চিত করতে হবে। এ ক্ষেত্রে বিশেষ করে নারী, যুব এবং প্রান্তিক পর্যায়ের উদ্যোক্তাদের প্রতি দিতে হবে বিশেষ দৃষ্টি।
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: এসএমই খ ত র সব পর য য় র এসএমই গ র ব ন য় গ কর র ব যবস য় ব যবস য় ক ব যবস থ সহয গ ত র আওত য় আম দ র র জন য অন য য় ত করত সরক র সমক ল

এছাড়াও পড়ুন:

ক্ষুদ্র উদ্যোগই বাংলাদেশকে নীরবে এগিয়ে নিচ্ছে

দেশের অনেক এসএমই প্রতিষ্ঠান পণ্যের ব্র্যান্ডিং, প্যাকেজিং, ডিজিটাল মার্কেটিং, বাজারসাপেক্ষে দাম নির্ধারণসহ বিভিন্ন মৌলিক ব্যবসায়িক দক্ষতার ঘাটতিতে ভুগছে

বাংলাদেশের প্রত্যন্ত কোনো গ্রামে একটি ছোট কারখানা, যেখানে কয়েকজন নারী প্রতিদিন নিজ হাতে তৈরি করছেন পাটের ব্যাগ। শহরের গলিতে তরুণ উদ্যোক্তা তাঁর ক্ষুদ্র কফিশপে বানাচ্ছেন নতুন স্বাদের পানীয়। মফস্বলের কোনো কিশোরী তার ছোট্ট টেইলারিং শপে বসে ভবিষ্যতে কোনো একদিন নিজের একটা বুটিক ব্র্যান্ড বানানোর স্বপ্নে নোটখাতায় এঁকে চলেছে নতুন সব ডিজাইন। এমন হাজারো স্বপ্ন, হাজারো ক্ষুদ্র উদ্যোগই বাংলাদেশকে এগিয়ে নিচ্ছে নীরবে। এসব স্বপ্ন টিকিয়ে রাখতে আমাদের করণীয় কী?
আজ আন্তর্জাতিক এসএমই দিবসে আমরা যখন ক্ষুদ্র, মাঝারি ও কুটির শিল্প খাতের সম্ভাবনা নিয়ে কথা বলছি, তখন এসব উদ্যোগের টিকে থাকা এবং লাভজনকভাবে এগিয়ে যাওয়ার জন্য কেমন সহযোগিতা প্রয়োজন, তা নতুন করে ভাবার সময় এসেছে। এসএমই অর্থাৎ ক্ষুদ্র ও মাঝারিশিল্প খাত বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ধারাবাহিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির ক্ষেত্রে অন্যতম চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করছে। শিল্প খাতের ৯০ শতাংশ কর্মসংস্থান এ খাতের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সম্পৃক্ত। সেই সঙ্গে দেশের জিডিপিতেও ৩০ শতাংশের কাছাকাছি অবদান রেখে খাতটি বিগত বছরগুলোতে প্রমাণ করেছে, সংকট মোকাবিলা করে টিকে থাকা ও এগিয়ে চলার জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি ও সম্ভাবনা দুটোই এর রয়েছে।
মূল্যস্ফীতি, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের বাড়ন্ত দাম, বাজারে চাহিদার ঘাটতি এবং রাজনৈতিক অস্থিরতাসহ নানা কারণে এসএমই খাতের অনেক উদ্যোক্তাই চাপের মুখে রয়েছেন। ব্যাংক ঋণের প্রবাহ কমেছে, যার বিপরীতে নতুন বিনিয়োগ হয়েছে হাতে গোনা। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধে ঋণ বিতরণে প্রায় ১৩ শতাংশ পতন এরই প্রমাণ দেয়। তবে ২০২৫ সাল আমাদের জন্য আবার আশার আলো নিয়ে এসেছে।
২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে এসএমই খাতকে ঘিরে বেশ কিছু ইতিবাচক উদ্যোগের কথা জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের বাজেট বক্তব্যে বলা হয়েছে, আগামী তিন অর্থবছরে দেশে অন্তত ১৫ হাজার নতুন উদ্যোক্তা তৈরি করার পরিকল্পনা রয়েছে। পাশাপাশি ২৫ হাজার উদ্যোক্তাকে দক্ষতা ও কারিগরি প্রশিক্ষণ দেওয়ার পরিকল্পনা জানান দেয়, আগামীতে দেশের এসএমই খাতে দক্ষ মানবসম্পদের অভাব কমে আসবে। বিভাগীয় শহরগুলোতে এসএমই পণ্যের প্রদর্শনী ও বিক্রয়কেন্দ্র গড়ে তোলার কথাও বলা হয়েছে। এ ধরনের উদ্যোগ এসএমই ব্যবসার প্রসার ও লাভজনকতা বাড়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
শুধু তাই নয়, ভবিষ্যতে দেশের ১০ হাজার এসএমই উদ্যোক্তাকে এক হাজার কোটি টাকার ঋণ সহায়তার প্রতিশ্রুতি জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা। জেলা শহরগুলোতে আঞ্চলিক এসএমই মেলার আয়োজন, নারী উদ্যোক্তাদের করপোরেট ক্রেতাদের সঙ্গে ডিজিটাল সংযোগ গঠন, কেন্দ্রীয় এসএমই তথ্যভান্ডার তৈরির পরিকল্পনাসহ অন্যান্য উদ্যোগের মধ্য দিয়ে বাস্তবভিত্তিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক এসএমই সহায়তা কাঠামো গড়ে তোলার প্রচেষ্টা দেখা যাচ্ছে।
তবে কেবল আর্থিক সহায়তা দিয়েই সম্ভাবনাময় খাতটি পুরোপুরি গতিশীল হতে পারবে না। দেশের অনেক এসএমই প্রতিষ্ঠান পণ্যের ব্র্যান্ডিং, প্যাকেজিং, ডিজিটাল মার্কেটিং, বাজারসাপেক্ষে দাম নির্ধারণসহ বিভিন্ন মৌলিক ব্যবসায়িক দক্ষতার ঘাটতিতে ভুগছে। ঢাকার বাইরের বেশির ভাগ উদ্যোক্তা প্রথাগত ও ডিজিটাল বিপণনের পার্থক্য জানেন না। কেমনভাবে নিজেদের উন্নত মানসম্পন্ন পণ্যকে জেলা, বিভাগ এমনকি দেশের সীমার বাইরে ক্রেতার সামনে তুলে ধরা যায়, সে বিষয়ে তাদের কোনো ধারণা নেই। ই-কমার্সের যুগেও এমন পিছিয়ে পড়া উদ্যোক্তাদের 

জন্য প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ জরুরি। বাজেটে প্রশিক্ষণের কথা উল্লেখ থাকলেও এর বাস্তবায়নে মনোযোগ না দিলে আশানুরূপ কার্যকারিতা আসবে না।

এসএমই খাতের অবকাঠামো উন্নয়নের আলোচনায় আরও একটি বিবেচ্য বিষয় হলো, ২০১৯ সালের এসএমই নীতিমালার মেয়াদ ২০২৪ সালেই শেষ হয়ে গেছে। ‘বৈষম্যহীন টেকসই ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের ক্ষমতায়ন’– এই রূপকল্প সামনে রেখে সম্প্রতি খসড়া এসএমই নীতিমালা ২০২৫ প্রণীত হয়েছে। এর মূল লক্ষ্য ২০৩০ সালের মধ্যে জিডিপিতে এসএমই খাতের অবদান ৩৫ শতাংশে উন্নীতকরণ। একটি নতুন, সময়োপযোগী ও বাস্তবমুখী নীতিমালার অধীনে আমাদের বর্তমানের চ্যালেঞ্জ ও ভবিষ্যতের সম্ভাবনা দুটিকেই সমানভাবে আমলে নিতে হবে। 

এসএমই ব্যবসা পরিচালনায় আইনি ও প্রশাসনিক শর্ত সহজ করা, কর ব্যবস্থা সহজ ও যৌক্তিক করা এবং রপ্তানিমুখী এসএমই খাতকে বিনিয়োগ, রাজস্ব ও অন্যান্য প্রণোদনা প্রদানসহ বিভিন্ন নতুন কর্মকৌশলকে আমাদের অবশ্যই সাধুবাদ জানাতে হবে। এসএমই খাতের উন্নয়নে সরকারের অঙ্গীকার বাস্তবায়নে সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী কমিটি জাতীয় এসএমই উন্নয়ন পরিষদ যেন দেশের লাখো তরুণ উদ্যোক্তাকে সহযোগিতা ও সমাধানের একটি নির্ভরযোগ্য ঠিকানা হতে পারে, সেই আশাবাদও ব্যক্ত করি।

সিএমএসএমই খাতে ঋণ প্রদানে নানা চ্যালেঞ্জ থাকলেও নিজেদের অভিজ্ঞতা, দূরদর্শিতা এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের রিফাইন্যান্সিং স্কিমের আওতায় এ খাতে ঋণসুবিধা সহজলভ্য করার চেষ্টা করে যাচ্ছে আইডিএলসি ফাইন্যান্স। একটি ‘ডিজিটালাইজড ও অ্যাসিস্টিভ’ মডেলে আমাদের এসএমই অর্থায়ন কার্যক্রম পরিচালিত হয়। উদ্যোক্তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী রিলেশনশিপ ম্যানেজারের সহায়তা, বিনামূল্যের ডিজিটাল লোন স্টেটমেন্ট ইত্যাদি সুবিধাও দিয়ে থাকে আইডিএলসি। বাংলাদেশে আমরাই প্রথম লোন ওরিজিনেশন সিস্টেম ও ক্রেডিট স্কোরকার্ডের ব্যবহার শুরু করি, যা গ্রাহকদের জন্য অর্থায়ন প্রাপ্তির সময় উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে এনেছে। এছাড়া আমরা ২০১৬ সাল থেকে ‘আইডিএলসি এসএমই পূর্ণতা’ নামে একটি বিশেষায়িত পণ্য চালু রেখেছি, যার মাধ্যমে ইতোমধ্যে ৭ হাজারের বেশি নারী উদ্যোক্তা নিজেদের ব্যবসায়ের স্বপ্নকে বাস্তব রূপদানে পূর্ণাঙ্গ আর্থিক সহায়তা পেয়েছেন।

বাংলাদেশের এসএমই খাতের ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রয়োজন টিকে থাকার শক্তিকে সামনে এগিয়ে যাওয়ার সাহসে রূপ দেওয়ার মতো পরিবেশ ও অবকাঠামো। সেই পরিবেশ যদি তৈরি করা যায়, তাহলে ছোট প্রতিটি উদ্যোগ একদিন দেশের অর্থনীতির বড় প্রভাবক হয়ে উঠবে। ধীরে ধীরে হলেও দেশের মূল্যস্ফীতি এখন কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসছে। সুদের হার ধীরে ধীরে স্থিতিশীল হচ্ছে, বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়ছে। এখনই দরকার সম্মিলিত প্রচেষ্টা, যথাযথ সহযোগিতা ও সময়োচিত নীতির ভিত্তিতে দেশের সম্ভাবনাময় এসএমই খাতের জন্য একটি শক্ত ভিত গড়ে তোলা। 


 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ব্র্যাংক ব্যাংকের বেশির ভাগ এসএমই ঋণ জামানতবিহীন
  • এক জায়গা থেকে সেবা চালু করা উচিত
  • এসএমই খাতের বিকাশই অর্থনীতির বিকাশ
  • অর্থনীতির প্রাণ ছোট ও মাঝারি উদ্যোগ
  • পাঁচ বছরে ১৪৪ কোটি টাকার মূলধন সংগ্রহ
  • কম সুদে ও সহজ শর্তে ঋণের সুযোগ রয়েছে
  • আমরা আরও প্রযুক্তিনির্ভর ঋণ প্রক্রিয়া চালু করব
  • ক্ষুদ্র উদ্যোগই বাংলাদেশকে নীরবে এগিয়ে নিচ্ছে
  • ব্যাংক ঋণে অস্থাবর সম্পত্তিকে জামানত হিসেবে গ্রহণের তাগিদ