মুটিয়ে গেলে ভুগতে পারেন যেসব ব্যাধিতে
Published: 28th, June 2025 GMT
মুটিয়ে যাচ্ছে বিশ্বের মানুষ। বিশ্বের প্রতি ছয়জন বয়স্ক মানুষের মধ্যে একজন এতে আক্রান্ত।
আপনি কি স্থূলকায়?
এটি নিরূপণের মাপকাঠি হলো বিএমআই। এর পুরো অর্থ দাঁড়ায় বডি ম্যাস ইনডেক্স। ওজন আর উচ্চতা জানা থাকলে নির্ণয় করা যায় বিএমআই। ওজন নিতে হবে কেজিতে আর উচ্চতা মিটারে। মিটারের বর্গ দিয়ে কেজিকে ভাগ দিলেই বেরিয়ে আসবে স্থূলতা। যদি বিএমআই ২৩-এর বেশি হয় তবে আপনি অধিক ওজনধারী। ২৮ কিংবা এর ওপরে হলে আপনি স্থূলকায়। অবশ্য ইউরোপ-আমেরিকার মানুষের জন্য মাপকাঠিতে ভিন্নতা রয়েছে। তাদের ক্ষেত্রে এই মান ৩০-এর বেশি হলে স্থূলতা আক্রান্ত বলে বিবেচিত হবে।
কোমরের মাপ নিন
কোমরের মাপ নিয়েও স্থূলতা নির্ণয় করা যায়। কটিদেশের বহর যদি এশিয়ান পুরুষদের ৯০ এবং নারীদের ৮০ সেন্টিমিটারের বেশি হয় তবেই বিপত্তি। এটি নির্দেশ করে পেটে জমে গেছে চর্বির চাঁই।
কটিদেশ ও উচ্চতার অনুপাত বেশি নয় তো
স্থূলতার আরেক মানদণ্ড হলো কটিদেশ ও উচ্চতার অনুপাত। এটি যদি শূন্য দশমিক পাঁচের বেশি হয় তবে বিপদ। কারও উচ্চতা ৬০ ইঞ্চি আর কোমর যদি হয় ৩৬ তবে অনুপাত দাঁড়াবে ০.
কেন পেটের চর্বি ক্ষতিকর
শরীরের অন্য জায়গা আর পেটে চর্বির আস্তর জমে যাওয়ার মধ্যে বিপদের ফারাক রয়েছে। পেটের চর্বি হলো বিপজ্জনক। এটাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানে বলা হয় ভিসেরাল ফ্যাট। এই চর্বিই যত বিপত্তির উৎপত্তিস্থল। এখান থেকেই তৈরি হয় কয়েক পদের হরমোন; যা সুস্থতার বিপক্ষে কাজ করতে থাকে।
আপেল কিংবা নাশপাতি
দেহে চর্বি জমে যাওয়ার ওপর ভিত্তি করে দেহের আকৃতিকে কেউ বলেছেন আপেলের মতো। কেউ বলেছেন নাশপাতির মতো। আপেলের মতো পেটের আকৃতি বিপদের লক্ষণ। নাশপাতির মতো যদি হয় তবে বিপদ কম। নাশপাতির মতো মানে হলো, পেটে চর্বি কম কিন্তু নিতম্বদেশে বেশি। এটি ক্ষতিকর নয়। সে জন্য বলা হয় নাশপাতির মতো হও, আপেলের মতো নয়।
স্থূলতা থেকে বিপদ
মুটিয়ে গেলে বিভিন্ন ব্যাধি এসে হাজির হতে পারে। উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, হৃৎপিণ্ডের অসুখ, আর্থ্রাইটিস, ফ্যাটি লিভার, কোলেস্টেরলের আধিক্য, কিছু ক্যানসার, বিষণ্নতা– এগুলো সবই হতে পারে স্থূলতার কারণ। এটি পুরুষ কিংবা নারী উভয়ের প্রজনন স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। সুতরাং মুটিয়ে যাওয়া থেকে সাবধান হোন।
লেখক: মেডিসিন স্পেশালিস্ট ও এন্ডোক্রাইনোলজিস্ট, সিএমএইচ, ঢাকা।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
আধুনিক টিভির যত আধুনিক সুবিধা
টেলিভিশনকে বাংলায় বলা হয় ‘দূরদর্শন’। মাত্র কয়েক বছর আগেও এটি সত্যিই ছিল দূরদর্শনের মাধ্যম—দূরের কোনো ঘটনা চোখের সামনে এনে দেওয়ার একটি যন্ত্র। কিন্তু সময়ের সঙ্গে বদলে গেছে টিভির সংজ্ঞা, উদ্দেশ্য ও ব্যবহার। প্রযুক্তির দ্রুত অগ্রগতিতে আজকাল টিভি হয়ে উঠেছে একটি ‘স্মার্ট হাব’, যেখানে সিনেমা দেখা, গেম খেলা, ভিডিও কল করা, এমনকি বাড়ির অন্যান্য স্মার্ট ডিভাইসও নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। আধুনিক টিভিগুলোর সুবিধা কেবল ছবি বা সাউন্ডে সীমাবদ্ধ নয়, বরং এগুলো এখন ব্যবহারকারীদের এনে দিয়েছে একসঙ্গে বিনোদন, সংযোগ, যোগাযোগ ও নিয়ন্ত্রণের নতুন এক এক্সপেরিয়েন্স।
স্মার্ট অপারেটিং সিস্টেমবর্তমান প্রজন্মের টিভিগুলো শুধু নাটক কিংবা সিনেমা দেখার একটি স্ক্রিন নয়, বরং একটি সম্পূর্ণ স্মার্ট ডিভাইস। স্মার্ট টিভিতে অপারেটিং সিস্টেম (ওএস) হিসেবে টাইজেন, অ্যান্ড্রয়েড টিভি, রোকু টিভি এবং ওয়েবওএস ইত্যাদি ব্যবহৃত হয়। এই সিস্টেমগুলোর মাধ্যমেই বর্তমান যুগের টিভিগুলো হয়ে উঠছে আধুনিক থেকে আধুনিকতর। ব্যবহারকারীরা এখন চাইলেই স্মার্ট টিভিগুলোতে নেটফ্লিক্স, ইউটিউব, স্পটিফাই, অ্যামাজন প্রাইম কিংবা যেকোনো ওটিটি প্ল্যাটফর্মও সরাসরি উপভোগ করতে পারেন।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ‘অ্যাপ স্টোর ইন্টিগ্রেশন’। টিভিতেই এখন মোবাইলের মতো অ্যাপ ডাউনলোড করে ব্যবহার করা যায়। ওয়েদার অ্যাপ, গেমস, নিউজ—এমনকি ভিডিও কনফারেন্সিং অ্যাপও ব্যবহার করা যায় টিভির বড় স্ক্রিনে।
ভয়েস কন্ট্রোল: কথা বলেই নিয়ন্ত্রণরিমোট খোঁজার ঝামেলা এখন যেন অতীত। আগে টিভির সবকিছু রিমোট দ্বারা পরিচালিত হলেও এখনকার আধুনিক টিভিগুলোতে আছে ভয়েস কন্ট্রোল—যেখানে ব্যবহারকারীর ভয়েস দ্বারাই টিভি নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এই প্রযুক্তি বিক্সবি, গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট, অ্যালেক্সার মতো ভয়েস অ্যাসিস্ট্যান্টের মাধ্যমে কাজ করে। এর পাশাপাশি কিছু হাই-এন্ড মডেলে রয়েছে জেসচার কন্ট্রোল—যেখানে হাত নাড়লেই টিভি রেসপন্স করে। টিভি চালু-বন্ধ করা, চ্যানেল পরিবর্তন—এমনকি ভলিউম বাড়ানো-কমানোর মতো কাজও করা যায় হাতের ইশারায়। এ ক্ষেত্রে গ্যালাক্সি ওয়াচের কথা বলা যায়। এটি হাতের নড়াচড়াকে শনাক্ত করে এসব কমান্ড কার্যকর করে।
মাল্টি-ডিভাইস কানেকটিভিটি: এক স্ক্রিনে সব সংযোগবর্তমানে টিভি শুধু সম্প্রচার মাধ্যম নয়; এটি হয়ে উঠেছে একটি সেন্ট্রাল কন্ট্রোল ইউনিট। মোবাইল ফোন, স্পিকার, ল্যাপটপ, গেমিং কনসোল—সব ডিভাইস এখন টিভির সঙ্গে সহজেই সংযুক্ত করা যায়।
বেশির ভাগ স্মার্ট টিভিতে রয়েছে ওয়াই-ফাই, ব্লুটুথ, এইচডিএমআই এআরসি, এয়ার প্লে, মিরাকাস্টসহ বিভিন্ন সুবিধা। ফলে ব্যবহারকারী চাইলে নিজের ফোনের ছবি, ভিডিও বা প্রেজেন্টেশন মুহূর্তেই বড় স্ক্রিনে শেয়ার করতে পারেন। সেই সঙ্গে আধুনিক টিভিগুলোতে রয়েছে গেমারদের জন্য এইচডিএমআই ২.১ পোর্ট এবং কম ইনপুট ল্যাগযুক্ত ডিসপ্লে, যা গেমিং এক্সপেরিয়েন্সকে করে তোলে আরও স্মুথ।
আধুনিক টিভিগুলো ব্যবহারকারীদের এনে দিয়েছে একসঙ্গে বিনোদন, সংযোগ, যোগাযোগ ও নিয়ন্ত্রণের নতুন এক এক্সপেরিয়েন্স