এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বদলি স্বয়ংক্রিয় সফটওয়্যারে শুরু জুলাইয়ে
Published: 30th, June 2025 GMT
দেশের চার লাখ বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষক–কর্মচারী বদলির প্রক্রিয়া জুলাইয়ে স্বয়ংক্রিয় সফটওয়্যারের মাধ্যমে শুরু হতে যাচ্ছে। স্বয়ংক্রিয় সফটওয়্যার তৈরির কাজ চলছে, যা জুলাইয়ে শেষ হবে বলে জানিয়েছে শিক্ষা অধিদপ্তর।
২৬ জুন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব ড. খ ম কবিরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এ–সংক্রান্ত নীতিমালা প্রকাশ করা হয়েছে।
নীতিমালায় বলা হয়েছে, যেহেতু বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) কর্তৃক সুপারিশপ্রাপ্ত হয়ে এমপিওভুক্ত শিক্ষকেরা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বেসরকারি কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছেন এবং এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বদলি কার্যক্রম স্বয়ংক্রিয় সফটওয়্যারের মাধ্যমে একটি নীতিমালার আওতায় বাস্তবায়ন হওয়া প্রয়োজন, সেহেতু বেসরকারি কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত এনটিআরসিএ সুপারিশপ্রাপ্ত এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের জন্য বদলি নীতিমালা, ২০২৫ প্রণয়ন করা হলো।
নীতিমালা অনুযায়ী, সফটওয়্যার ব্যবহার করে এমপিওভুক্ত শিক্ষক–কর্মচারীরা অনলাইনে বদলির জন্য আবেদন করতে পারবেন। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শিক্ষক–কর্মচারীদের বদলি কার্যক্রম স্বয়ংক্রিয়ভাবে সম্পন্ন করা হবে। এ ক্ষেত্রে আবেদনকারী শিক্ষকেরা সর্বোচ্চ তিনটি কাঙ্ক্ষিত প্রতিষ্ঠানে বদলির জন্য ইচ্ছা প্রকাশ করে আবেদন করতে পারবেন।
প্রথম যোগদানের পর চাকরি দুই বছর পূর্ণ হলে বদলির আবেদন করার জন্য যোগ্য হবেন। বদলি নতুন কর্মস্থলে যোগদানের পর ন্যূনতম দুই বছর কর্মে নিয়োজিত থাকার পর পরবর্তী বদলির আবেদন করতে পারবেন।
নীতিমালা অনুযায়ী, একজন শিক্ষক কর্মজীবনে সর্বোচ্চ তিনবার বদলি হওয়ার সুযোগ পাবেন। একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে বছরে দুজন শিক্ষক বদলির সুযোগ পাবেন। যেকোনো শূন্য পদের জন্য একাধিক আবেদন পাওয়া গেলে নারীদের অগ্রাধিকার দিতে হবে। এ ছাড়া স্বামী কিংবা স্ত্রীর কর্মস্থলকে বিবেচনায় আনতে হবে।
গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বদলি নীতিমালা প্রকাশ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। নীতিমালা অনুযায়ী, শুধু মাউশির মহাপরিচালক (ডিজি) পারস্পরিক বদলির আবেদন নিষ্পত্তি করতে পারবেন। নীতিমালায় এই বদলি স্বয়ংক্রিয় সফটওয়্যারে হবে বলে জানানো হয়েছিল। এরই ধারাবাহিকতায় এবার সেই সফটওয়্যার তৈরির কাজ চলছে।
জারি করা নীতিমালায় বদলির সাধারণ শর্তে বলা হয়েছে, এনটিআরসিএ প্রতিষ্ঠানভিত্তিক শূন্য পদের চাহিদা বা বিবরণ আগামী ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে অনলাইনে প্রকাশ করবে, প্রকাশিত শূন্য পদের বিপরীতে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) বদলির আবেদন আহ্বান করবে। সমপদে পদ শূন্য থাকা সাপেক্ষে বদলির জন্য আগামী ১ থেকে ৩০ অক্টোবরের মধ্যে অনলাইনে আবেদন করতে পারবে। আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে বদলির আদেশ জারি হবে এবং ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে নতুন কর্মস্থলে যোগদান সম্পন্ন হবে।
আবেদনকারী শিক্ষক চাকরির আবেদনে উল্লেখ করা নিজ জেলায় বদলির জন্য আবেদন করবেন। তবে নিজ জেলায় পদ শূন্য না থাকলে নিজ বিভাগের যেকোনো জেলায় শূন্য পদের বিপরীতে বদলির আবেদন করতে পারবেন।
বদলির আবেদন নিষ্পত্তির প্রক্রিয়া যেভাবে হবেবদলির সব প্রক্রিয়া সফটওয়্যারের মাধ্যমে সম্পন্ন হবে। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর সফটওয়্যার তৈরি ও অনলাইন আবেদনের ফরম্যাট নির্ধারণ করবে। বদলিকৃত শিক্ষকের ইনডেক্স আগের প্রতিষ্ঠান থেকে বদলিকৃত প্রতিষ্ঠানে অনলাইনে ট্রান্সফার হবে।
পারস্পরিক বদলির ক্ষেত্রে লিখিত আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কর্তৃপক্ষ বদলি পদায়নের বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে পারবে। বদলিকৃত শিক্ষকের এমপিও, অন্যান্য আর্থিক সুবিধা ও জ্যেষ্ঠতার ধারাবাহিকতা আগের মতো বজায় থাকবে।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (মাধ্যমিক) প্রফেসর খান মইনুদ্দিন আল মাহমুদ সোহেল বলেন, সরকারি হাইস্কুলের জন্য ডায়নামিক ওয়েবসাইট ও বেসরকারি শিক্ষকদের বদলির জন্য বিশেষ সফটওয়্যার জুলাইয়ে চালু হতে যাচ্ছে। বেসরকারি শিক্ষক বদলি নীতিমালা অনুসারে সেই সফটওয়্যার থেকে তথ্য গ্রহণের মাধ্যমে বদলি করা হবে। তাই সব শিক্ষককে সময়ের চাহিদা অনুযায়ী কার্যকর তথ্যপ্রযুক্তিগত দক্ষতা অর্জন করতে হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: শ ক ষকদ র বদল বদল র জন য শ ন য পদ র ল র জন য প রক র য় দ র বদল ব সরক র অন য য় প রব ন এমপ ও ক বদল
এছাড়াও পড়ুন:
সফটওয়্যার কোম্পানির টাকায় যক্ষ্মা সম্মেলনে
আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যাওয়ার জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বিদেশি সফটওয়্যার কোম্পানির কাছে অর্থ চেয়েছে। ওই কোম্পানির সঙ্গে জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির লেনদেন আছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটা ক্রয় আইনের লঙ্ঘন। চারজন বিদেশগামী প্রথম আলোর কাছে দাবি করেন, তাঁরা নিজের অর্থে সম্মেলনে যাচ্ছেন।
যক্ষ্মা ও ফুসফুসের রোগের আন্তর্জাতিক বার্ষিক সম্মেলন ইউনিয়ন কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হবে ডেনমার্কের কোপেনহেগেনে। সম্মেলন শুরু হচ্ছে ১৮ নভেম্বর, শেষ হবে ২১ নভেম্বর। সারা বিশ্বের যক্ষ্মা ও ফুসফুসের রোগবিশেষজ্ঞ, বিজ্ঞানী ও গবেষকেরা এই সম্মেলনে যোগ দেবেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জাতীয় এইডস/এসটিডি নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির সদ্য সাবেক উপপরিচালক জোবায়দা নাসরিন ভারতের সফটওয়্যার কোম্পানি কিউর এআই-কে ৫ অক্টোবর চিঠি দিয়ে অর্থসহায়তার অনুরোধ করেন। বর্তমানে তিনি যক্ষ্মা ও কুষ্ঠরোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার উপপরিচালক।
এটি স্বার্থের দ্বন্দ্বের বিষয়। যে কোম্পানির সঙ্গে যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির ব্যবসা আছে, তার কাছে অর্থসহায়তা চাওয়া অনৈতিক। এটা সরকারি ক্রয়বিধির পরিপন্থী। আইনের লঙ্ঘন। এটা ভবিষ্যৎ ক্রয়প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করবে। এটা গ্রহণযোগ্য না, শাস্তিযোগ্য অপরাধ। ইফতেখারুজ্জামান, নির্বাহী পরিচালক, টিআইবিচিঠিতে বলা হয়, কোম্পানিটি যেন যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির পাঁচ কর্মকর্তাকে ওই সম্মেলনে যোগদান নিশ্চিত করতে অর্থসহায়তা দেয়। কোম্পানিটির কাছে অর্থসহায়তা বাবদ ২২ হাজার ২৭০ ডলারের (প্রায় ২৭ লাখ টাকা) একটি বাজেটও দেওয়া হয়।
সফটওয়্যার কোম্পানির কাছে পাঁচজনের একটি নামের তালিকা পাঠানো হয়। তাঁরা হচ্ছেন যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির উপপরিচালক মো. শাফিন জব্বার, জাতীয় কর্মসূচি সমন্বয়ক রূপালি শিশির বাণু, যক্ষ্মা ল্যাবরেটরি বিশেষজ্ঞ উম্মে তাসনিম মালিহা, বিভাগীয় যক্ষ্মাবিশেষজ্ঞ (ঢাকা উত্তর) ফারজানা জামান এবং সহকারী পর্যবেক্ষণ ও মূল্যায়ন বিশেষজ্ঞ এফ এম মনিরুল হক। প্রথমজন সরকারি কর্মকর্তা। বাকি চারজন দাতা সংস্থা গ্লোবাল ফান্ডের কর্মকর্তা। এই চারজন জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির অফিসে বসে কাজ করলেও তাঁদের বেতন–ভাতা দেয় গ্লোবাল ফান্ড।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি এর আগে ২০২১–২২ ও ২০২২–২৩ অর্থবছরে কিউর এআইয়ের কাছ থেকে সফটওয়্যার কিনেছে। এই সফটওয়্যার কেনা হয় গ্লোবাল ফান্ডের টাকায়। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার এই সফটওয়্যার যক্ষ্মা শনাক্তের কাজে ব্যবহৃত হয়।
সংশ্লিষ্ট একজন সরকারি, তিনজন বেসরকারি ও একজন দাতা সংস্থার প্রতিনিধি প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, আরও সফটওয়্যার কেনার প্রক্রিয়া চলমান। কোন কোম্পানির কাছ থেকে তা কেনা হবে, তা চূড়ান্ত হয়নি। এরই মধ্যে একটি কোম্পানির কাছে অর্থসহায়তা চেয়ে জোবায়দা নাসরিনের এই চিঠি নানা সন্দেহ তৈরি করেছে।
তাঁরা কিছুই জানতেন নাযক্ষ্মা একটি সংক্রামক রোগ