পর্দা কাঁপানো সেই হাসি আজও কানে বাজে, যদিও মানুষটা নেই ২২ বছর হলো। রবিবার (১৩ জুলাই) কিংবদন্তি কৌতুক অভিনেতা দিলদারের মৃত্যুবার্ষিকী। 

চার দশকের কম সময়ে দিলদার অভিনয় করেছেন পাঁচ শতাধিক সিনেমায়। ঢাকাই সিনেমার এক অনন্য নাম হয়ে ওঠা এই মানুষটি দর্শকদের কাঁদাতে নয়, হাসাতে জানতেন; হৃদয় ছুঁয়ে যেতেন নিছক উপস্থিতিতেই। 

মা-বাবা নাম রেখেছিলেন দেলোয়ার হোসেন। কিন্তু চলচ্চিত্রে এসে হয়ে যান দিলদার—এক নামেই দর্শকের হৃদয়ে গেঁথে যান চিরতরে। চাঁদপুরে জন্ম নেওয়া এই মানুষটি মাত্র ২০ বছর বয়সে প্রথম ক্যামেরার সামনে দাঁড়ান। ১৯৭২ সালে মুক্তি পাওয়া ‘কেন এমন হয়’ সিনেমার মাধ্যমে তার বড় পর্দায় অভিষেক। 

আরো পড়ুন:

আমি রাজনীতি বুঝিও না, করিও না: অপু বিশ্বাস

আত্মসমর্পণ করে জামিন পেলেন অপু বিশ্বাস

দিলদার অভিনীত জনপ্রিয় সিনেমাগুলোর মধ্যে রয়েছে—‘বেদের মেয়ে জোছনা’, ‘বিক্ষোভ’, ‘চাওয়া থেকে পাওয়া’, ‘অন্তরে অন্তরে’, ‘শুধু তুমি’, ‘আনন্দ অশ্রু’, ‘অজান্তে’, ‘প্রিয়জন’, ‘স্বপ্নের নায়ক’, ‘প্রাণের চেয়ে প্রিয়’, ‘নাচনেওয়ালী’ প্রভৃতি। 

শুটিং সেটে প্রাণবন্ত, হাসিখুশি, প্রাণখোলা—সবাইকে উৎসাহ দিতেন, সাহস জোগাতেন দিলদার। একবার পরিচালক মালেক আফসারীর ‘লাল বাদশা’ সিনেমার জন্য তিনি নিজেই গেয়েছিলেন ‘শুধু ডিম দিয়ে পরিচয়’ গানটি, যা দর্শকপ্রিয়তা পেয়েছিল। 

২০০০ সালে ‘তুমি শুধু আমার’ সিনেমার জন্য দিলদার পান জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। তবে তার প্রকৃত সম্মান তিনি পেয়েছেন জনগণের ভালোবাসা থেকে। 

২০০৩ সালের ১৩ জুলাই, হঠাৎ করেই না ফেরার দেশে চলে যান এই হাসির জাদুকর। তবে আজও সিনেমার পর্দায়, স্মৃতির গহীনে এবং দর্শকের মনের গভীরে বেঁচে আছেন দিলদার। তার মতো মানুষরা হারিয়ে যান না—তারা রয়ে যান, রসিকতায়, হৃদয়ের হাসিতে। বাংলা সিনেমা তাকে আজও শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় স্মরণ করে।

ঢাকা/রাহাত/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র

এছাড়াও পড়ুন:

নিজের সঙ্গে যে কাণ্ড ঘটালেন যুবক

লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলায় নিজের গোপনাঙ্গ এবং গলা কেটে আত্মহত্যার চেষ্টা করার অভিযোগ উঠেছে মাজেদুল ইসলাম (৩০) নামে এক পোশাক শ্রমিকের বিরুদ্ধে। পরিবারের ভাষ্য, মানসিক বিকারগ্রস্ত এই যুবক আগেও কয়েকবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।

রবিবার (২৬ অক্টোবর) সকালে উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নের দক্ষিণ বালাপাড়া হাজিপাড়া গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। মাজেদুল একই গ্রামের নুরল হোসেনের ছেলে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, মাজেদুল একটি পোশাক কারখানায় কাজ করে সংসার চালাতেন। সম্প্রতি তার মানসিক সমস্যা দেখা দেয়। তিনি আগেও কয়েকবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেও বেঁচে যান। গত বৃহস্পতিবার (২২ অক্টোবর) তিনি নারায়ণগঞ্জে একটি পাঁচতলা ভবন থেকে লাফিয়ে পড়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।

পরিবারের সদস্যরা জানান, শনিবার (২৪ অক্টোবর) মাজেদুলকে লালমনিরহাটে আনা হয়। রবিবার সকালে খাবার শেষে মাজেদুল পাশের চাচা ইংরেজ আলীর ফাঁকা বাড়িতে যান। সেখানে ছুরি দিয়ে প্রথমে নিজের গোপনাঙ্গ এবং পরে গলা কেটে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন তিনি। পরিবারের লোকজন বিষয়টি টের পেয়ে তাকে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে আদিতমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

মাজেদুলের চাচা সিরাজুল ইসলাম বলেন, “স্ত্রী ও মেয়ে নিয়ে মাজেদুল ঢাকায় থাকত। মানসিক বিকারগ্রস্ত হওয়ায় সে কয়েক দফা আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে। তার আচরণে আমরা আতঙ্কিত।”

চিকিৎসাধীন মাজেদুলের সঙ্গে থাকা তার শ্যালক (স্ত্রীর বড় ভাই) রিপন মুঠোফোনে বলেন, “মানসিক বিকারগ্রস্ত মাজেদুল কয়েক দফা আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে। সে গোপনাঙ্গের প্রায় পুরো অংশ এবং গলার প্রায় অর্ধেকাংশ কেটেছে। এমনকি সে চিকিৎসাও নিতে চাইছে না। চিকিৎসকরা অনেকটা জোর করে তার চিকিৎসা দিচ্ছেন। গলার সমস্যার কিছুটা সমাধান হলেও গোপনাঙ্গে চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা।”

আদিতমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. নুরনবী বলেন, “গলা ও গোপনাঙ্গে আঘাতের চিহ্নসহ মাজেদুল এসেছিলেন। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়।”

আদিতমারী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আলী আকবর বলেন, “ঘটনাস্থলে অফিসার পাঠানো হয়েছিল। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, আত্মহত্যা করার জন্যই তিনি এমনটি করেছেন।”

ঢাকা/সিপন/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ