৯ বছরের দাম্পত্য জীবনের ইতি টানলেন সাবেক টেনিস তারকা আনা ইভানোভিচ ও জার্মান ফুটবল কিংবদন্তি বাস্তিয়ান শোয়াইনস্টাইগার।

দীর্ঘদিন ধরে চলা গুঞ্জনের পর ইভানোভিচের প্রতিনিধি ক্রিশ্চিয়ান শার্টৎস আনুষ্ঠানিকভাবে এই বিচ্ছেদের খবর নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, এই তারকা দম্পতির ‘অমীমাংসিত মতপার্থক্য’ই যা শেষ পর্যন্ত দুজনকে বিচ্ছেদের পথে নিয়ে গেছে।

আনা ইভানোভিচ ২০০৮ সালে ফ্রেঞ্চ ওপেন জিতে টেনিস বিশ্বে আলোড়ন তোলেন। একই বছর তিনি অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের ফাইনালে হেরে যান মারিয়া শারাপোভার কাছে। ২০১৬ সালে টেনিস থেকে বিদায় নেন ইভানোভিচ।

এর আগে ২০১৪ সালে ইভানোভিচ সম্পর্কে জড়ান জার্মানির বিশ্বকাপজয়ী ফুটবলার শোয়াইনস্টাইগারের সঙ্গে। ২০১৬ সালে ইতালির ভেনিসে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন এই ক্রীড়াজুটি। তাঁদের সংসারে তিন সন্তান। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় বেশির ভাগ সময় সন্তানদের নিয়ে নিজ দেশ সার্বিয়ায় কাটিয়েছেন ইভানোভিচ।

শোয়াইনস্টাইগার জার্মানির ইতিহাসের অন্যতম সেরা ফুটবলার। বিশ্বকাপ জেতার পাশাপাশি তিনি বায়ার্ন মিউনিখ এবং ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়েও আলো ছড়িয়েছেন। অবসর নেওয়ার পর টেলিভিশনে ফুটবল বিশ্লেষকের দায়িত্ব পালন করছেন সাবেক এই মিডফিল্ডার। পেশাগত কারণে তাঁকে প্রায়ই বিদেশে থাকতে হয়। ধারণা করা হচ্ছে, ভিন্ন জীবনধারাই দুজনের সম্পর্কের মাঝে দেয়াল তুলে দিয়েছে।

এর আগে চলতি বছরের এপ্রিল মাসে মেইল স্পোর্টসের এক প্রতিবেদনে এ দুজনের দাম্পত্য কলহের খবর সামনে আসে। সেই প্রতিবেদনে বলা হয়, আনা (ইভানোভিচ) ও বাস্তিয়ানের (শোয়াইনস্টাইগার) সম্পর্ক ‘গভীর এক সংকটে’ পড়েছে। এর পেছনে প্রধান কারণ তাঁদের বিপরীতমুখী জীবনযাপন।

শোয়াইনস্টাইগার নিয়মিত ভ্রমণ ও পেশাদার দায়িত্বে ব্যস্ত থাকলেও ইভানোভিচ পারিবারিক জীবনে বেশি জড়িয়ে ছিলেন। আর এই টানাপড়েনই শেষ পর্যন্ত কাল হয়েছে। তবে এই বিচ্ছেদ নিয়ে দুজনের কেউ প্রকাশ্যে কোনো মন্তব্য করতে চাননি। আইনজীবী শার্টৎস অনুরোধ করেছেন, ভক্তরা যেন এই সময়টাতে তাঁদের ব্যক্তিগত পরিসরকে সম্মান করেন।

এদিকে গত জুনে জার্মান সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, বাস্তিয়ান শোয়াইনস্টাইগারকে তাঁর কথিত নতুন প্রেমিকার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ অবস্থায় দেখা গেছে। সিলভা নামের বুলগেরিয়ান সেই নারীর সঙ্গে শোয়াইনস্টাইগারের স্পেনের মায়োর্কায় ঘুরতে গিয়েছিলেন বলেও জানানো হয় ওই প্রতিবেদনে। গুঞ্জন আছে, শোয়াইনস্টাইগার ও সিলভা এর আগে মরক্কোতেও একসঙ্গে ছুটি কাটিয়েছেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ফ টবল

এছাড়াও পড়ুন:

সোনার টয়লেট ‘আমেরিকা’ নিলামে উঠছে, সর্বনিম্ন দর কত জানেন

নিলামঘর সদবিস গতকাল শুক্রবার ইতালীয় শিল্পী মরিজিও ক্যাটেলানের তৈরি সম্পূর্ণ সোনার টয়লেটটি নিলামে তোলার কথা ঘোষণা করেছে। এ ভাস্কর্যটির নাম ‘আমেরিকা’।

সদবিস জানিয়েছে, এ শিল্পকর্ম এটাই দেখাতে চায়, কখনো কখনো শিল্পের ‘মূল্য’ আর তার বাজারে বিক্রির ‘মূল্য’ এক নয়। এটি শুধু শিল্পকর্মই নয়, একটি পুরোপুরি ব্যবহারযোগ্য টয়লেটও। এ টয়লেটেরই অনুরূপ একটি সংস্করণ ২০১৯ সালে ইংল্যান্ডের বিখ্যাত ব্লেনহাইম প্রাসাদ থেকে চুরি হয়ে বিশ্বজুড়ে আলোচনায় আসে।

১৮ নভেম্বর নিউইয়র্কে এ নিলাম অনুষ্ঠিত হবে। টয়লেটটির সর্বনিম্ন দর ধরা হয়েছে এর সোনার বর্তমান বাজারমূল্য অনুযায়ী। এতে ব্যবহৃত হয়েছে প্রায় ১০১ দশমিক ২ কিলোগ্রাম (২২৩ পাউন্ড) খাঁটি সোনা, যার দাম এখন প্রায় ১০ মিলিয়ন (১ কোটি) মার্কিন ডলার (প্রায় ১২২ কোটি টাকা)।

সদবিসের নিউইয়র্ক শাখার সমসাময়িক শিল্প বিভাগের প্রধান ডেভিড গ্যালপারিন বলেন, ক্যাটেলান হচ্ছেন এমন একজন শিল্পী, যিনি তাঁর কাজের মাধ্যমে সবাইকে ভাবাতে ও চমক দিতে পছন্দ করেন।

ক্যাটেলান শুধু বিতর্ক সৃষ্টিকারীই নন; বরং অত্যন্ত সফল শিল্পী। তাঁর আরেকটি কাজ, ‘কমেডিয়ান’। অর্থাৎ দেয়ালে টেপ দিয়ে আটকানো একটি কলা। গত বছর নিউইয়র্কের এক নিলামে ৬২ লাখ ডলারে বিক্রি হয়েছিল শিল্পকর্মটি।

‘আমেরিকা’র দুটি সংস্করণ ২০১৬ সালে তৈরি করা হয়েছিল। যেটি এবার নিলামে উঠছে, সেটি ২০১৭ সাল থেকে এক অজ্ঞাত সংগ্রাহকের কাছে রয়েছে। অন্য সংস্করণটি ২০১৬ সালে নিউইয়র্কের গুগেনহাইম জাদুঘরের একটি বাথরুমে প্রদর্শনের জন্য স্থাপন করা হয়। সেখানে ১ লাখের বেশি দর্শক সার বেঁধে এসেছিলেন।

এর আগে ২০১৬ সালে ক্রিস্টিস নিলামে ক্যাটেলানের আরেকটি ভাস্কর্য ‘হিম’ ১ কোটি ৭২ লাখ ডলারে বিক্রি হয়। ভাস্কর্যটিতে নাৎসি নেতা অ্যাডলফ হিটলারকে হাঁটু গেড়ে প্রার্থনার ভঙ্গিতে দেখা যায়।

ক্যাটেলান নিজেই বলেছেন, তাঁর ‘আমেরিকা’ ভাস্কর্যটি অতিরিক্ত সম্পদ ও বিলাসিতাকে ব্যঙ্গ করে তৈরি করা হয়েছে। তিনি একবার বলেছিলেন, ‘তুমি ২০০ ডলারের দুপুরের খাবার খাও বা ২ ডলারের হটডগ, শেষ ফলাফল টয়লেটে গিয়ে একই হয়।’

‘আমেরিকা’র দুটি সংস্করণ ২০১৬ সালে তৈরি করা হয়েছিল। যেটি এবার নিলামে উঠছে, সেটি ২০১৭ সাল থেকে এক অজ্ঞাত সংগ্রাহকের কাছে রয়েছে। অন্য সংস্করণটি ২০১৬ সালে নিউইয়র্কের গুগেনহাইম জাদুঘরের একটি বাথরুমে প্রদর্শনের জন্য স্থাপন করা হয়। সেখানে ১ লাখের বেশি দর্শক সার বেঁধে এসেছিলেন।

মরিজিও ক্যাটেলান হচ্ছেন এমন একজন শিল্পী, যিনি তাঁর কাজের মাধ্যমে সবাইকে ভাবাতে ও চমক দিতে পছন্দ করেন।ডেভিড গ্যালপারিন, সদবিস-এর নিউইয়র্ক শাখার সমসাময়িক শিল্প বিভাগের প্রধান

ওই সময় গুগেনহাইম ভাস্কর্যটি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে তাঁর প্রথম দফায় ক্ষমতায় থাকাকালে ধার দেওয়ার প্রস্তাব দেয়। কারণ তিনি জাদুঘর থেকে একটি ভ্যান গঘ চিত্রকর্ম ধার নিতে চেয়েছিলেন।

২০১৯ সালে ‘আমেরিকা’ প্রদর্শিত হয় উইনস্টন চার্চিলের জন্মস্থান হিসেবে বিখ্যাত ব্লেনহাইম প্রাসাদে। কিন্তু প্রদর্শনীর কয়েক দিনের মধ্যেই একদল চোর ভবনে ঢুকে সেটি পাইপলাইন থেকে খুলে নিয়ে পালিয়ে যায়।

চলতি বছরের শুরুতে দুই ব্যক্তিকে ওই চুরির দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তবে সোনার টয়লেটটি আজও উদ্ধার করা যায়নি। তদন্তকারীরা ধারণা করছেন, এটি সম্ভবত ভেঙে গলিয়ে ফেলা হয়েছে।

গ্যালপারিন বলেন, তিনি অনুমান করতে চান না ‘আমেরিকা’ শেষ পর্যন্ত কত দামে বিক্রি হতে পারে। তবে তাঁর ভাষায়, ক্যাটেলানের ‘ডাকটেপে আটকানো কলা’ শিল্পকর্মটি যেমন ‘অমূল্য ধারণা থেকে মূল্য তৈরি করা’ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল, ‘আমেরিকা’ ঠিক তার উল্টো। এখানে মূল উপকরণটিই (সোনা) অত্যন্ত মূল্যবান, যা বেশির ভাগ শিল্পকর্মে থাকে না।

ক্যাটেলান বলেছেন, তাঁর ‘আমেরিকা’ ভাস্কর্যটি অতিরিক্ত সম্পদ ও বিলাসিতাকে ব্যঙ্গ করে তৈরি করা হয়েছে। তিনি একবার বলেছিলেন, ‘তুমি ২০০ ডলারের দুপুরের খাবার খাও বা ২ ডলারের হটডগ, শেষ ফলাফল টয়লেটে গিয়ে একই হয়।’

‘আমেরিকা’ প্রদর্শিত হবে সদবিসের নতুন নিউইয়র্ক কার্যালয় ব্রয়্যার বিল্ডিংয়ে, ৮ নভেম্বর নিলাম শুরু হওয়ার আগপর্যন্ত। এটি একটি বাথরুমে স্থাপন করা হবে, যা দর্শকেরা কাছ থেকে দেখতে পাবেন।

তবে গুগেনহাইম ও ব্লেনহাইম প্রাসাদের মতো এবার দর্শকদের টয়লেটটি ব্যবহার করার সুযোগ থাকবে না। তাঁরা শুধু দেখতে পারবেন, কিন্তু ফ্লাশ করতে পারবেন না।

আরও পড়ুনসোনার আস্ত একটি কমোড চুরি করেছিলেন তিনি০৩ এপ্রিল ২০২৪

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সোনার টয়লেট ‘আমেরিকা’ নিলামে উঠছে, সর্বনিম্ন দর কত জানেন