সাহিত্যের মান উচ্চপর্যায়ে নিতে হবে তরুণ সাহিত্যিকদের
Published: 26th, July 2025 GMT
তরুণ সাহিত্যিকদের হাতে পুরস্কার তুলে দিয়ে বিশিষ্ট লেখক, চিন্তক, শিক্ষাবিদ ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেছেন, বাংলা ভাষার সাহিত্যের মান কমে যাচ্ছে। ভাষা বিকৃত করা হচ্ছে। ভাষার মানও কমে যাচ্ছে। তরুণ সাহিত্যিকদের ভাষা ও সাহিত্যের মান উচ্চপর্যায়ে নিয়ে যেতে হবে।
শনিবার সন্ধ্যায় সাহিত্য পত্রিকা কালি ও কলম আয়োজিত তরুণ সাহিত্যিকদের পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী এ মন্তব্য করেন।
সিটি ব্যাংক নিবেদিত ‘কালি ও কলম তরুণ কবি ও লেখক পুরস্কার ২০২৪’ বিতরণী অনুষ্ঠানে সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় পাঁচ তরুণ কবি ও লেখককে এই পুরস্কার দেওয়া হয়। ধানমন্ডির বেঙ্গল শিল্পালয় মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কলি ও কলম পত্রিকার সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি ইমেরিটাস অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম।
বক্তব্য দেন সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কথাশিল্পী মাসরুর আরেফিন। সভাপতিত্ব করেন কালি ও কলম–এর প্রকাশক আবুল খায়ের। সঞ্চালনা করেন বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক লুভা নাহিদ চৌধুরী। অনুষ্ঠানের শুরুতেই মাইলস্টোন স্কুল ও কলেজে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহতদের স্মরণে শোক প্রকাশ করে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
এবার পুরস্কার পেয়েছেন সতীতালয় কাব্যগ্রন্থের জন্য অস্ট্রিক ঋষি, কথাসাহিত্যে নির্বাচিত দেবদূত গল্পগ্রন্থের জন্য সাজিদ উল হক আবির, প্রবন্ধ ও গবেষণায় শতবর্ষে চা-শ্রমিক আন্দোলন: ডেডলাইন ২০ মে ১৯২১ গ্রন্থের জন্য মুহাম্মদ ফরিদ হাসান, মুক্তিযুদ্ধ ও বিপ্লব বিষয়ে একাত্তরের অবরুদ্ধ দিনের দুঃসাহস: সাগাই ফোর্ট এস্কেপ গ্রন্থের জন্য স্বরলিপি এবং শিশু-কিশোর সাহিত্যে তিলকুমারের যাত্রা গ্রন্থের জন্য নিয়াজ মাহমুদ। অতিথিরা তাঁদের হাতে পুরস্কারের ক্রেস্ট, সনদ ও অর্থমূল্যের চেক তুলে দেন।
অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, একদিকে পুঁজিবাদের শোষণ ও অন্যদিকে প্রযুক্তির উৎকর্ষের ধারাবাহিকতায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রভাবে মানবতা ও সৃজনশীলতা আজ বিপন্ন। সাহিত্য হলো সামাজিক সম্পদ। এই পরিস্থিতি থেকে সাহিত্যই মানবিকতা ও সৃজনশীলতাকে রক্ষা করতে পারে।
মাসরুর আরেফিন বলেন, অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে এখন লেখকদের জন্য বিপজ্জনক সময়। তাঁদের নানা রকমের ভীতি ও চাপের ভেতর দিয়ে যেতে হচ্ছে। যাঁরা লেখক হতে চান, তাঁদের এই বিপদ, ভয়ভীতির ভেতর দিয়েই নিজেদের সাধনা চালিয়ে যেতে হবে। কালি ও কলম–এর এই পুরস্কারের সঙ্গে সিটি ব্যাংক যুক্ত থাকবে।
অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেন, ২২ বছর ধরে কালি ও কলম নিয়মিত প্রকাশিত হচ্ছে। প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক আবুল হাসনাত ও সভাপতিমণ্ডলীর সভাপতি অধ্যাপক আনিসুজ্জামান পত্রিকাটিকে একটি উচ্চতর মাত্রায় নিয়ে গিয়েছিলেন। তাঁদের প্রয়াণের পরে সেই মান বজায় রাখা খুব কঠিন। তবে সে চেষ্টা করা হচ্ছে। তরুণ লেখকদের উৎসাহিত করার জন্য ২০০৮ সাল থেকে এই পুরস্কার প্রবর্তন করা হয়। ১৭ বছর ধরে এই পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে। পুরস্কারপ্রাপ্ত তরুণ লেখকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, লিখতে গেলে পড়তে হবে। এখন পর্যন্ত পড়ার কোনো বিকল্প তৈরি হয়নি। তিনি বলেন, বিপদের সময় সাহিত্যিকেরাই প্রজ্বলিত হন। সাহিত্যের শক্তিই বিপদকে অতিক্রম করতে সমাজে অনুপ্রেরণা জাগায়।
আবুল খায়ের তরুণ লেখকদের অভিনন্দন ও অতিথিদের ধন্যবাদ জানান।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে ছিল সংগীত পরিবেশনা। গানের দল ও শিল্পী কৃষ্ণকলি গানের পালা শুরু করেছিলেন রবীন্দ্রসংগীত ‘আকাশভরা সূর্য–তারা’ গেয়ে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: অন ষ ঠ ন ল খকদ র ল ইসল ম ও কলম
এছাড়াও পড়ুন:
বিয়ে বাড়িতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে বরের বাবার মৃত্যু
হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলায় বিয়ে বাড়ির আলোকসজ্জায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে প্রাণ হারালেন বরের বাবা বিষু পাল (৬৫)। বুধবার (৩০ জুলাই) উপজেলার গুনই মদনমুরত গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
বানিয়াচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কবির হোসেন জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। আইনানুগ প্রক্রিয়া শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
স্থানীয়রা জানান, বিষু পালের বড় ছেলে বিজয় পালের বিয়ে ঠিক হয় ৩১ জুলাই (বৃহস্পতিবার)। সেই উপলক্ষে বাড়িতে আলোকসজ্জার আয়োজন করা হয়। বাড়ির একটি গ্রিলে অস্থায়ী বিদ্যুৎ লাইনের তার ঝুলছিল। যেখানে লিকেজ ছিল। সকালে অসাবধানতাবশত সেই গ্রিলে হাত দিলে বিষু পাল বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। পরিবারের লোকজন তাকে উদ্দার করে হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
আরো পড়ুন:
কুড়িগ্রামে সাপের কামড়ে সাপুড়ের মৃত্যু
কিশোরগঞ্জে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ২ কৃষকের মৃত্যু
বানিয়াচং থানার এসআই সজিব ঘোষ জানান, ঘটনাটি মর্মান্তিক। বিয়ের আনন্দময় পরিবেশ হঠাৎ করে বিষাদে পরিণত হয়েছে। বিকেলে বিষু পালের পরিবারের সদস্যরা বিনা ময়নাতদন্তে লাশ নিয়ে যাওয়ার জন্য হবিগঞ্জ জেলা সদরে গিয়ে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বরাবর আবেদন করেছেন। এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
ঢাকা/মামুন/বকুল