শিশুদের হত্যার ভয় দেখিয়ে মিরসরাইয়ের দুই বাড়িতে ডাকাতি
Published: 16th, October 2025 GMT
চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে একই গ্রামের দুটি বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ডাকাত দল ওই দুই বাড়ির চার পরিবারের পরিবারের পুরুষ সদস্যদের বেঁধে শিশু ও নারীদের জিম্মি করে টাকা, স্বর্ণালংকার, কম্বল ও মুঠোফোন নিয়ে যায়। গতকাল বুধবার দিবাগত রাত দেড়টা থেকে ভোর সাড়ে চারটা পর্যন্ত উপজেলার হিঙ্গলী ইউনিয়নের একটি গ্রামের পাশাপাশি দুই প্রবাসী বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা জানান, বুধবার রাত দেড়টার দিকে ডাকাত দল প্রথম হানা দেয় কুয়েত প্রবাসীর বাড়িতে। দ্বিতল পাকা বাড়ির মূল ঘর লাগোয়া রান্নাঘরের গ্রিল কেটে ডাকাত দল ঘরে ঢোকে। দলে সাত থেকে আটজন ছিল বলে ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন। এ সময় প্রবাসীর স্ত্রী ও সন্তান একা ছিলেন ঘরে। ডাকাত দল ওই বাড়িতে ঢুকে প্রবাসীর স্ত্রীকে ধর্ষণ ও সন্তানকে হত্যার হুমকি দিয়ে ৫০ হাজার টাকা, দুই ভরি স্বর্ণালংকার ও একটি মুঠোফোন নিয়ে যায়।
ওই বাড়ির দ্বিতীয় তলায় দুই ভাড়াটিয়ার বাড়িতেও ডাকাতেরা হানা দেয়। সেখান থেকে চার হাজার টাকা ও দুটি মুঠোফোন নিয়ে যায় তারা।
রাত চারটার দিকে প্রথম বাড়ি থেকে ৫০০ মিটার পশ্চিমে আরেক প্রবাসীর বাড়িতে দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে পড়ে ডাকাত দলের সদস্যরা। সেখানে একতলা নির্মাণাধীন বাড়ির মালিক সৌদি আরব প্রবাসীর শ্বশুর, তাঁর স্ত্রী ও ছোট দুই শিশুপুত্র ছিল। শাবল দিয়ে সদর দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে পুরুষ সদস্যদের হাত পা বেঁধে ফেলে ডাকাতেরা। পরে দুই শিশুকে হত্যা ও বাড়ির নারীদের ধর্ষণের হুমকি দিয়ে নগদ ৫০ হাজার টাকা, সাতটি কম্বল ও একটি মুঠোফোন নিয়ে যায়। ২২ মিনিটের মধ্যে ডাকাতি শেষ করে নির্বিঘ্নে চলে যায় তারা।
ডাকাতির শিকার এক প্রবাসীর স্ত্রী প্রথম আলোকে বলেন, রাত দেড়টার দিকে রান্নাঘরের জানালা ভেঙে ডাকাত দলের সদস্যরা ঘরে ঢুকে পড়ে। তাদের পরনে হাফপ্যান্ট ও কালো রঙের মুখোশ ছিল। তাদের সবার হাতে দেশি ধারালো অস্ত্র ছিল। ডাকাতেরা তাকে ছুরি দিয়ে আঘাত করে। ধর্ষণের হমকি দেয়। তাঁর ছেলেকেও মারধর করে। এরপর তারা দ্বিতীয় তলায় তাঁর দুই ভাড়াটিয়ার ঘরেও হানা দেয়।
ডাকাতি হওয়া আরেক বাড়ির বাসিন্দা প্রবাসীর শ্বশুর প্রথম আলোকে বলেন, মেয়ের স্বামী প্রবাসে থাকায় একা বাড়িতে তিনি সবার দেখভাল করেন। বুধবার ভোর চারটার দিকে ঘরের দরজা ভেঙে সাত–আটজন ডাকাত ঢুকে দেশি অস্ত্রের মুখে তাঁকে বেঁধে ফেলে। এরপর মেয়েকে ধর্ষণ ও দুই নাতিকে হত্যার হুমকি দেয় তারা। এ সময় ঘরে থাকা ৫০ হাজার টাকা, ৭টি কম্বল ও একটি মুঠোফোন নিয়ে গেছে ডাকাতরা। ২২ মিনিট সময়ের মধ্যে ঘরের ভেতর তাণ্ডব চালিয়ে চলে যায় তারা।
দুই বাড়ির চারটি পরিবারে ডাকাতির ঘটনার বিষয় জানতে চাইলে জোরারগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এম আবদুল হালিম প্রথম আলোকে বলেন, বুধবার রাতে হিঙ্গুলী ইউনিয়নে এক বাড়িতে গ্রিল কেটে ও আরেক বাড়িতে দরজা ভেঙে চুরি বা ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার তদন্ত হচ্ছে। গ্রামটি ফেনী নদীর পাড়ে হওয়ায় নদীর উত্তর পাশের ছাগলনাইয়া উপজেলার সমিতির বাজার এলাকা থেকে শেষ রাতে ডাকাত দল এখানে এসে হানা দেয় বলে ধারণা করা হচ্ছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ড ক ত র ঘটন ড ক ত দল প রব স র পর ব র প রথম
এছাড়াও পড়ুন:
বাসে স্কুলছাত্রীর শ্লীলতাহানির অভিযোগ, চালক আটক
বন্ধুর সঙ্গে বগুড়ায় বেড়াতে যাওয়ার সময় বাসে দশম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রী শ্লীলতাহানির শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত বাসচালক শাকিবকে (২৮) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ঘটনার সঙ্গে জড়িত বাসের হেলপার পলাতক।
সোমবার (১৩ অক্টোবর) সন্ধ্যার পর বিষয়টি জানাজানি হয়। এর আগে, দুপুর ৩টার দিকে শহরতলীর বনানী এলাকার একটি মোটর গ্যারেজে ঘটনাটি ঘটে।
আরো পড়ুন:
১০ হাজার ইয়াবাসহ রেলওয়ে পুলিশ সদস্য গ্রেপ্তার
রাকসু নির্বাচন: ২ হাজার পুলিশ, ৬ প্লাটুন বিজিবি ও ১২ প্লাটুন র্যাব মোতায়ন
আটক শাকিব বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার মাঝিড়া বি-ব্লক এলাকার বাসিন্দা। রাত ৯টার দিকে টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা থেকে তাকে বগুড়া ডিবি পুলিশ আটক করে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, শ্লীলতাহানির শিকার স্কুলছাত্রী সিরাজগঞ্জের বাসিন্দা। ঢাকার মিরপুরের এক স্কুলছাত্রের সঙ্গে তার মোবাইল ফোনে পরিচয় হয়। সোমবার সকালে ছেলেটি ঢাকা থেকে কিশোরীর সঙ্গে দেখা করতে সিরাজগঞ্জের কড্ডার মোড়ে যান। এরপর তারা সেখান থেকে বগুড়াগামী ‘আর কে ট্রাভেলস’এর একটি বাসে ওঠেন। যাত্রাপথে হেলপার বুঝতে পারেন তারা বন্ধু।
দুপুর আড়াইটার দিকে বাসটি বগুড়ার বনানী মোড়ে পৌঁছানোর পর সব যাত্রী নেমে যান। কিশোরী ও তার বন্ধু বাস থেকে নামতে চাইলে তাদের বাধা দিয়ে বাসটি পর্যটন মোটেলের পাশে থাকা একটি মোটর গ্যারেজে নিয়ে যান চালক ও হেলপার। সেখানে হেলপার ওই ছাত্রীর বন্ধুকে ভয় দেখিয়ে সরিয়ে দেন। এরপর চালক শাকিব বাসের ভেতর কিশোরীর শ্লীলতাহানি করেন। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে তারা ঠনঠনিয়া বাস টার্মিনালে ফিরে আসেন। কিশোরীর কান্না দেখে কয়েকজন শ্রমিক ঘটনাটি জানতে পারেন। পরে তারা কিশোরী এবং তার বন্ধুকে ঢাকাগামী আরেকটি বাসে তুলে দেন।
বগুড়া জেলা পুলিশের মিডিয়া মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আতোয়ার রহমান বলেন, “বিষয়টি জানার পরপরই আমরা ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের আটকের চেষ্টা চালাই। সিরাজগঞ্জ হাইওয়ে পুলিশের সহযোগিতায় রাত ৯টায় টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা থেকে শাকিবকে আমাদের ডিবি পুলিশ আটক করে।”
তিনি বলেন, “ভুক্তভোগী আমাদের হেফাজতে আছেন। তার সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে ভুক্তভোগী আমাদের জানিয়েছেন, বাসচালক তার শ্লীলতাহানি করেছে। আমরা মেয়েটির অভিভাবককে ডেকেছি। তারা আসছেন। তারা যেভাবে অভিযোগ দেবেন, আমরা সেভাবে ব্যবস্থা নেব।”
ঢাকা/এনাম/মাসুদ