ফেসবুকে লাশবাহী স্পিডবোট চালুর খবর দিয়েছিলেন প্রবাসী, তাঁকে দিয়েই যাত্রা শুরু
Published: 19th, October 2025 GMT
চট্টগ্রামের সন্দ্বীপে লাশবাহী স্পিডবোট চালু হচ্ছে—নিজের ফেসবুক আইডিতে এমন খবর পোস্ট করে স্বস্তি প্রকাশ করেছিলেন প্রবাসী মোহাম্মদ আমীন। গতকাল শনিবার মোহাম্মদ আমীনের লাশ বহনের মধ্য দিয়েই শুরু হয়েছে সন্দ্বীপের সেই লাশবাহী স্পিডবোটের।
৮ অক্টোবর ওমানে সড়ক দুর্ঘটনায় মোহাম্মদ আমীনসহ সন্দ্বীপের সাত প্রবাসী প্রাণ হারান। অন্যরা আমীনের অধীনে সেখানে কাজ করতেন। গতকাল রাতে নিহত সাত প্রবাসীর লাশ সন্দ্বীপে পৌঁছায়। আজ রোববার সকালে জানাজা শেষে তাঁদের নিজ নিজ গ্রামে দাফন করা হয়েছে।
প্রবাসী মোহাম্মদ আমীন সন্দ্বীপের সারিকাইত ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের আলী কব্বরের ছেলে। সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর মাত্র এক দিন আগে সন্দ্বীপে লাশবাহী স্পিডবোট চালুর বিষয়ে ফেসবুকে ওই পোস্ট দিয়েছিলেন তিনি। ঘরে দুই মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে তাঁর। এর মধ্যে বড় মেয়ের বিয়ের কথা চূড়ান্ত হয়েছিল। আলী কব্বর জানান, কিছুদিন পর দেশে এসে মেয়ের বিয়ের আয়োজন করার কথা ছিল আমীনের।
দুর্ঘটনায় নিহত অন্য ব্যক্তিরা হলেন মো.
দুর্ঘটনায় মারা যাওয়া মো. সাহাবুদ্দিনের পরিবারে মা–বাবা, স্ত্রী ও চার মাস বয়সী একটি সন্তান রয়েছে। পরিবারের আর্থিক সচ্ছলতা আনতে বিদেশ যাওয়া নিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে প্রায়ই গল্প করতেন তিনি। মাঝেমধ্যে ফেসবুকেও পরিবারকে নিয়ে নিজের স্বপ্নের কথা লিখতেন। মারা যাওয়ার কয়েক দিন আগে তিনি লেখেন, ‘মধ্যবিত্ত মানে হাজারটা স্বপ্ন, কিন্তু দিন শেষে ভাগ্যের খাতাটা শূন্য।’
স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দুর্ঘটনায় নিহত হওয়া সাত প্রবাসীর মধ্যে ছয়জনই অসচ্ছল। ভাঙা টিনের বাড়িই তাঁদের সম্বল। এর মধ্যে পাঁচজনেরই চার থেকে ছয় মাস বয়সী সন্তান রয়েছে।
আরও পড়ুনওমানে নিহত সন্দ্বীপের সাত প্রবাসীর লাশ দেশে ফিরল১৫ ঘণ্টা আগে‘এমন দৃশ্য আর দেখতে চাই না’
গতকাল রাত ৯টা ২০ মিনিটে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নিহত ব্যক্তিদের স্বজনেরা লাশ গ্রহণ করেন। সকাল আটটায় পূর্বনির্ধারিত জানাজার স্থান সন্দ্বীপের পূর্ব সন্দ্বীপ উচ্চবিদ্যালয়ে লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্স পৌঁছায়। সেখানে ভিড় করেন হাজারো মানুষ।
এলাকায় লাশ পৌঁছানোর খবরে সকাল থেকেই স্বজনদের বিলাপে ভারী হয়ে ওঠে চারপাশ। এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। একসঙ্গে বাক্সবন্দী সাতটি লাশ দেখে স্বজনদের আর্তনাদে এলাকার মানুষও চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি।
আরও পড়ুন‘জীবনে এক আছিল, মরণেও একলগে গেল’০৯ অক্টোবর ২০২৫নিহত ব্যক্তিদের জানাজায় অংশ নিতে আসা মুছাপুর ইউনিয়নের আবদুল হাই (৭২) প্রথম আলোকে বলেন, ‘নিহত ব্যক্তিরা আমার স্বজন নয়। কিন্তু তারাই আমার সন্তান। সাতটা কফিনে সাতটি ছেলের লাশ, এমন যেন আর না হয়। এমন দৃশ্য সহ্য করা যায় না, আর এমনটা দেখতে চাই না।’
দাফন শেষে প্রবাসী সাহাবুদ্দিনের পিতা মো. সিদ্দিক বলেন, ‘আমার জীবন তো ফুরাই যাইব, কিন্তু আমার সাহাবুদ্দিনের চার মাস বয়সী মেয়েটার কী হইব। ছেলে হারানোর শোকের মধ্যে ছোট্ট এই নাতিনটার ভবিষ্যতের কথা ভাইবতে গেলেই কলিজায় মোচড় দিয়ে ওঠে।’
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সন দ ব প র স স ত প রব স দ র ঘটন য় ফ সব ক
এছাড়াও পড়ুন:
ফতুল্লায় পরিত্যাক্ত দোকান থেকে যুবকের লাশ উদ্ধার, স্বজনদের দাবি হত্যা
ফতুল্লার পাগলা মুন্সিখোলার একটি পরিত্যাক্ত দোকান থেকে বশির (৪০) নামের এক যুবকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহতের স্বজনদের দাবি বশির কে হত্যা করে লাশ ফেলে রাখা হয়েছে। নিহত বশির ফতুল্লা মডেল থানার পাগলা জেলেপাড়া এলাকার বাসীন্দা।
শুক্রবার বেলা ১২ টার দিকে ফতুল্লা মডেল থানার পাগলা মুন্সিখোলাস্থ একটি পরিত্যক্ত দোকান ঘর থেকে নিহত বশিরের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহতের মেয়ে জানায়, সকাল ১০ টার দিকে তার বাবা বাসা থেকে বের হয়। বের হওয়ার সময় তাকে জিজ্ঞেস করেছিলো কিছু খাবে কিনা। কিন্ত মেয়েটি বলে কিছু খাবেনা। কিছুক্ষণ পর লোকমুখে জানতে পারে তার বাবার লাশ দোকানের ভিতর পড়ে আছে।
ঘটনাস্থলে এসে দেখতে পায় তার বাবার মৃত দেহ দোকানের ভিতর পরে আছে। তার দাবী পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করে লাশ ফেলে রাখা হয়েছে। পাশের দোকানের লোকজনই তাকে হত্যা করেছে।
প্রত্যক্ষ্যদর্শীরা জানান, সকাল ১০ থেকে সাড়ে দশটার দিকে নিহত বশির পরিত্যক্ত ঐ দোকান থেকে রড নিয়ে বের হয়। পরবর্তীতে আবার ঐ দোকান ঘরে প্রবেশ করে। তারপর আর বের হয়নি। তাদের দাবী তাকে হত্যা করা হয়েছে। তারা জানান, নিহত বশীর একজন মাদকাসক্ত ছিলো।
এ বিষয়ে নারায়নগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(ক অঞ্চল) মোঃ হাসিনুজ্জামান জানান, সংবাদ পেয়ে তিনি সহ ফতুল্লা থানা পুলিশের একাধিক টিম বেলা ১২ টার দিকে ঘটনাস্থলে পৌছান। সেখানে গিয়ে ঘটনাস্থলের পাশের একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সিসি ফুটেজে দেখতে পান সকাল ১০টার দিকে নিহত বশির পরিত্যক্ত ঐ দোকান থেকে একটি লোহার রড নিয়ে বের হয়।
পরবর্তীতে আবার এক ঘন্টা পর বশির দৌড়ে ঐ পরিত্যাক্ত দোকান ঘরে প্রবেশ করে। বেলা ১২টার দিকে সংবাদ পেয়ে তারা ঘটনাস্থলে পৌছান। নিহতের শরীরে দৃশ্যমান কোন আঘতের চিন্থ নেই।
তবে নিহতের নাক দিয়ে রক্ত বের হয়েছিলো।নিহতের লাশ উদ্ধার করে সুরহতাল রিপোর্ট তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারন জানা যাবে। নিহত বশির মাদকাসক্ত ছিলো বলে তিনি তার(নিহতের) পরিবারের নিকট থেকে জানতে পেরেছেন।
আরো পড়ুন
মাদক সম্রাট ব্লাক জনীর মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষনা
মাসদাইরে আনোয়ার প্রধানের উদ্যোগে লিফলেট বিতরণ
না’গঞ্জ সদর উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন পরিষদে মশক নিধন ঔষধ বিতরণ
না’গঞ্জ সদরে জলবায়ু পরিবর্তন ও স্বাস্থ্য বিষয়ক অবহিতকরণ সভা
ডেঙ্গু প্রতিরোধে সোনারগাঁয়ে ছাত্র ফেডারেশনের সচেতনতামূলক কর্মসূচি
৩১ দফা বাস্তবায়নে বন্দর উপজেলা বিএনপির লিফলেট বিতরণ
স্বৈরাচারী কায়দায় ভোট কেন্দ্র দখল করতে দেয়া হবে না : ডক্টর ইকবাল
আড়াইহাজারে দুই পক্ষের সংঘর্ষে নিহত ১
২৩১/১ বঙ্গবন্ধু সড়ক (৬ষ্ঠ তলা, লিফটের ৫)
নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাব ভবন, নারায়ণগঞ্জ
নির্বাহী সম্পাদক: মোশতাক আহমেদ (শাওন)
ফোন:+৮৮০১৯৩৩-৩৭৭৭২৪
ইমেইল : [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া অন্য কোথাও প্রকাশ বা ব্যবহার করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
© ২০২৫ | সকল স্বত্ব নারায়ণগঞ্জ টাইমস কর্তৃক সংরক্ষিত | উন্নয়নে ইমিথমেকারস.কম