জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন স্বেচ্ছায় রক্তদাতাদের সংগঠন ‘বাঁধন’ এর সভাপতি মোসা. উম্মে মাবুদা। 

শনিবার (২২ নভেম্বর) তিনি রাইজিংবিডিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি সমাজকর্ম বিভাগের ২০২০–২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।

আরো পড়ুন:

জকসু: ছাত্রদলের প্যানেল থেকে লড়বেন জুলাইয়ে গুলিবিদ্ধ অনিক

তারেক রহমানের জন্মদিনে ছাত্রদলের ব্যতিক্রমী উদ্যোগ

স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে উম্মে মাবুদা বলেন, “প্যানেলভিত্তিক রাজনীতি আমার পছন্দ নয়। প্যানেলে ব্যক্তিগত মত ও স্বাধীন অবস্থান হারিয়ে যায়, সেখানে দলীয় স্বার্থই প্রাধান্য পায়। ছাত্র সংসদ হওয়া উচিৎ স্বাধীন মত প্রকাশের জায়গা, রাজনৈতিক এজেন্ডার বাহক নয়। শিক্ষার্থীদের স্বার্থে স্বাধীনভাবে কাজ করতে চাই, তাই স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছি।”

জকসু নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার অনুপ্রেরণা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচনে প্রচারণার ইতিবাচক পরিবেশ আমাকে দারুণভাবে উৎসাহিত করেছে। প্রার্থীরা পজিটিভ প্রচারণা চালায়, পেপার বিলায়, ভোট চায়—পুরো ক্যাম্পাসেই এক ধরনের উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়।”

মাবুদা জানান, বিভিন্ন সংগঠনে নেতৃত্ব দেওয়ার অভিজ্ঞতা তাকে আত্মবিশ্বাসী করেছে। বর্তমানে বাঁধনেএর সভাপতি হিসেবে কাজ করছেন তিনি। পাশাপাশি বিএনসিসিতে সার্জেন্ট হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া, দ্রুত পরিস্থিতি বুঝে ব্যবস্থা নেওয়া এবং একটি টিমকে এগিয়ে নেওয়ার মতো অভিজ্ঞতা থেকেই নেতৃত্বের দৃঢ়তা এসেছে তার।

নারী শিক্ষার্থীদের বাস্তবতা ও গ্রুমিং প্রয়োজনীয়তা সমাজিক বাস্তবতায় নারীদের রাজনৈতিক ও সামাজিক সচেতনতার ঘাটতির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “একটা দশম শ্রেণির ছেলে যখন রাত অবধি বাইরে চায়ের দোকানে আড্ডা দেয়, তখন তারা পলিটিকস সম্পর্কে জানতে পারে। কিন্তু একটা মেয়ে মানুষ মায়ের সঙ্গে বসে স্টার জলসা ও জি বাংলা দেখে—সে আসলে বাইরের জগৎ সম্পর্কে ততটা জানে না। সে যখন সেই দুনিয়া থেকে বের হয়ে বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে, তখন তার অনেক গ্রুমিংয়ের দরকার পড়ে।”

ক্লাস মনিটরিং ব্যবস্থা চালুর প্রতিশ্রুতি শিক্ষার্থীদের একাডেমিক ও ব্যক্তিগত সমস্যার সমাধানে একটি বিশেষ উদ্যোগের কথাও জানান তিনি। মাবুদা বলেন, “আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস মনিটরিং ব্যবস্থা চালু করব, যার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা তাদের বিভিন্ন সমস্যার কথা সুপারভাইজারকে ডেকে বলতে পারবে।”

জকসু নির্বাচনে নতুন নেতৃত্বের আশা নিয়ে তিনি শিক্ষার্থীদের স্বার্থকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করাই তার মূল লক্ষ্য বলে জানান।

ঢাকা/লিমন/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর জকস জকস

এছাড়াও পড়ুন:

‘নকীব পদক’ পেলেন ঢাবি অধ্যাপক গোলাম রব্বানী

শিশু সাহিত্য অবদানের জন্য নকীব পদক পেয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উর্দু বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ গোলাম রব্বানী। 

শুক্রবার (২১ নভেম্বর) বিকেলে বাংলাদেশ শিশু একাডেমি মিলনায়তনে জাতীয় শিশু-কিশোর পত্রিকা ‘মাসিক নকীব’ আয়োজিত সিরাত কার্নিভাল-২০২৫ অনুষ্ঠানে এ সম্মাননা প্রদান করা হয়। 

আরো পড়ুন:

ঢাবির ৩০ শিক্ষার্থীকে ডিনস অ্যাওয়ার্ড ও বৃত্তি প্রদান

ঢাবিতে ডিনস অ্যাওয়ার্ড পেলেন শতাধিক শিক্ষক-শিক্ষার্থী

শিশু কিশোরদের জন্য ‘মাসিক নকীব’ দীর্ঘ দুই দশক ধরে কাজ করে আসছে। এই পত্রিকাটির উদ্যোগে নকীব পদক প্রদান, জাতীয় সীরাত শিশু সাহিত্য প্রতিযোগিতা, নকীব একাডেমির আত্মপ্রকাশ, নিয়মিত সাহিত্য আসর পরিচালনা করা হয়। পত্রিকাটি শিশুদের সাহিত্য চর্চার ক্ষেত্রে অনেক বড় অবদান রেখে চলছে।

এ বছর এই পদক পেয়েছেন কবি, তাত্ত্বিক ও গবেষক মুসা আল হাফিজ এবং জাতীয় শিশু কিশোর পত্রিকা মাসিক নকীবের সম্পাদক জিয়াউল আশরাফ। 

অনুষ্ঠানে শিশু সাহিত্য প্রতিযোগিতা’২৫ বিজয়ীদের পুরষ্কার, নগদ অর্থ ও সম্মাননা ক্রেস্ট এবং নকীবের সাবেক সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতিদের সম্মাননা স্বারক প্রদান করা হয়।

এ পদকে ভূষিত হওয়ায় নিজের অনুভূতি ব্যক্ত করে অধ্যাপক গোলাম রব্বানী বলেন, “প্রত্যেক পুরষ্কারের পর মানুষের দায়িত্ব বেড়ে যায়। যে কারণ আগের তুলনায় শিশু সাহিত্যে আমার দায়িত্ব আরো বেড়ে গেছে। এই পুরষ্কার শিশুদের প্রতি আমার নতুন অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে।”

শিশুদের নিয়ে কাজ বৃদ্ধির কথা জানিয়ে তিনি আরো বলেন, “একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে গবেষণার দিকে বেশি সময় ব্যয় করতে হয়। তবে শিশুদের নিয়ে এখন থেকে বেশি পরিমাণে কাজ করার চেষ্টা করব। শিশুরাই আগামীর ভবিষ্যত। আমরা যদি আমাদের শিশুকে ভালোভাবে গড়ে তুলতে পারি, তাহলে ভবিষ্যতে সুন্দর দেশ পাব।” 

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাসিক নকীবের উপদেষ্টা ও পীর সাহেব খুলনা অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ। 

মাসিক নকীবের সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি ইউসুফ আহমাদ মানসুর অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন এবং  নির্বাহী সম্পাদক আব্দুল আজিজ নোমান ও সহযোগী সম্পাদক সাঈদ আবরার সঞ্চালনা করেন। 

দেশি-বিদেশি জার্নালে অধ্যাপক গোলাম রববানীর প্রকাশিত গবেষণা প্রবন্ধের সংখ্যা বর্তমানে ২৫টি। আরো কয়েকটি প্রবন্ধ দেশ বিদেশে প্রকাশের অপেক্ষায় রয়েছে। এসব গবেষণা প্রবন্ধ ভারত, পাকিস্তান, আমেরিকা ও বাংলাদেশে প্রকাশ হয়েছে।

এছাড়া ২ শতাধিক সাধারণ প্রবন্ধ প্রকাশ হয়েছে। তার নির্দেশনায় নবীন লেখক হিসেবে গড়ে ওঠেছেন ৫ শতাধিক সাহিত্যপ্রেমী। যাদের অনেকেই বর্তমানে প্রতিষ্ঠিত লেখক।

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ