ইউরোপে এক্সের ১৪ কোটি ডলার জরিমানা
Published: 6th, December 2025 GMT
অনলাইন কনটেন্টের নিয়ম–কানুন ভঙ্গ করার দায়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নে ১৪ কোটি ডলার জরিমানার মুখে পড়েছে ইলন মাস্কের মালিকানধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স। শুক্রবার এই জরিমানা আরোপ করা হয়েছে।
কিছুদিন আগেই ইউরোপে এ–সংক্রান্ত যুগান্তকারী আইন করা হয়েছে। সেই আইনের প্রথম শিকার হলো এক্স। ধারণা করা হচ্ছে, মার্কিন সরকার এই ঘটনায় খেপে যাবে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের সংশ্লিষ্ট নিয়ন্ত্রক সংস্থা বলেছে, এক্স প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারকারীরা চাইলে অর্থের বিনিময়ে তাদের প্রোফাইলে ব্লু বা নীল টিক চিহ্ন বা ব্যাজ যুক্ত করতে পারেন। এই নীল চিহ্নের ডিজাইন নিয়ে আপত্তি তুলেছে তাঁরা। ফলে ওই ব্লু টিকধারী অ্যাকাউন্ট নিয়ে ব্যবহারকারীদের মধ্যে ‘ভ্রান্ত ধারণা’ তৈরি হতে পারে। এতে অনেকে প্রতারণার শিকার হতে পারেন।
আরও অভিযোগ, এক্স বিজ্ঞাপনের তথ্য গোপন করেছে এবং গবেষকদের তথ্যভান্ডারে প্রবেশ করতে দেয়নি। এক্সের প্রতিযোগী টিকটকের বিরুদ্ধেও একই ধরনের অভিযোগ উঠেছিল। কিন্তু তারা কিছু ছাড় দিয়ে জরিমানা এড়াতে পেরেছে।
ইউরোপ মূলত বড় বড় প্রযুক্তি কোম্পানির রাশ টেনে ধরার চেষ্টা করছে। তাদের লক্ষ্য, ছোট প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর জন্যও জায়গা তৈরি করা। সেই সঙ্গে গ্রাহকদের হাতে যেন আরও স্বাধীনতা আসে, তা নিশ্চিত করা। কিন্তু ইউরোপের এই নীতির কারণে ট্রাম্প প্রশাসন খেপেছে। তাদের অভিযোগ, ইউরোপ কেবল মার্কিন প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোকে লক্ষ্যবস্তু বানাচ্ছে।
যদিও ইউরোপীয় ইউনিয়ন এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তারা বলেছে, ইউরোপের আইন কোনো নির্দিষ্ট দেশের কোম্পানি লক্ষ্য করে প্রণয়ন করা হয়নি। তারা কেবল ডিজিটাল ও গণতান্ত্রিক মানদণ্ড বজায় রাখছে। তাদের এই আদর্শ সারা বিশ্বের কাছে মানদণ্ড।
দুই বছরের তদন্ত
ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) ডিজিটাল সার্ভিসেস অ্যাক্ট (ডিএসএ) অনুযায়ী এক্সের বিরুদ্ধে দুই বছর ধরে তদন্ত হয়েছে। এরপর এই জরিমানা করা হয়েছে। ডিএসএর কাজ হচ্ছে, অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলোকে বেআইনি ও ক্ষতিকর কনটেন্ট মোকাবিলায় আরও কঠোর ব্যবস্থা নিতে বাধ্য করা।
ইউরোপীয় কমিশনের প্রযুক্তিবিষয়ক প্রধান হেনা ভির্কুনেন বলেন, এক্সকে তুলনামূলকভাবে কম জরিমানা করা হয়েছে। আইন লঙ্ঘনের ধরন, ইইউ ব্যবহারকারীদের ওপর এর প্রভাব ও লঙ্ঘনের স্থায়িত্ব বিবেচনা করে জরিমানা আরোপ করা হয়েছে।
হেনা ভির্কুনেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা সর্বোচ্চ জরিমানা আরোপের জন্য বসে নেই। আমাদের লক্ষ্য হলো, ডিজিটাল আইন সঠিকভাবে প্রয়োগ করা। আপনি যদি আমাদের নিয়ম মানেন, তাহলে জরিমানার প্রশ্নই আসে না। বিষয়টা এমনই সহজ–সরল।’
ভির্কুনেন আরও বলেন, ডিএসএর সঙ্গে সেন্সরশিপের সম্পর্ক নেই—এই কথাটা জোর দিয়ে বলা খুব গুরুত্বপূর্ণ। তিনি জানান, আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে অভিযুক্ত অন্যান্য কোম্পানি সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নিতে এত সময় লাগবে না। অর্থাৎ এক্সের বিরুদ্ধে যে দুই বছর তদন্ত করা হয়েছে, অন্যদের বেলায় এত দিন লাগবে না।
আরও অভিযোগ
অক্টোবর মাসে মেটা ও টিকটকের বিরুদ্ধে ডিএসএর স্বচ্ছতাসংক্রান্ত বিধান লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয়। চীনা অনলাইন মার্কেটপ্লেস টেমুকে বেআইনি পণ্য বিক্রি ঠেকানোর নিয়ম ভঙ্গের জন্য অভিযুক্ত করা হয়।
ইইউর সিদ্ধান্ত ঘোষণার আগে যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভান্স এক্সে পোস্ট করে বলেন, ‘সেন্সরশিপে অংশ না নেওয়ার’ জন্য ইউরোপীয় কমিশন এক্সকে কোটি কোটি ডলার জরিমানা করতে যাচ্ছে, বাজারে এমন গুজব ছড়িয়ে পড়েছে। ইইউর উচিত, মত প্রকাশে স্বাধীনতা সমর্থন করা, বাজে যুক্তিতে আমেরিকান কোম্পানিগুলোকে আক্রমণ করা নয়।
টিকটক তাদের বিজ্ঞাপন ভান্ডারকে আরও স্বচ্ছ করতে পরিবর্তন নিয়ে আসার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। নিয়ন্ত্রকদের প্রতি তাদের আহ্বান, সব প্ল্যাটফর্মের ক্ষেত্রে যেন আইনটি সমানভাবে প্রযোজ্য হয়। সেই সঙ্গে আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে যেন ধারাবাহিকতা থাকে, তা নিশ্চিত করারও আহ্বান জানানো হয়।
কমিশন জানিয়েছে, এক্সে বেআইনি কনটেন্ট ছড়ানোর ঘটনা এবং তথ্য–বিকৃতি মোকাবিলায় নেওয়া ব্যবস্থা নিয়ে এখনো তদন্ত চলছে। একই সঙ্গে টিকটকের ডিজাইন, কারিগরি বিষয় ও শিশু–সুরক্ষাসংক্রান্ত আইনের বাধ্যবাধকতা নিয়েও পৃথক তদন্ত চলছে।
ডিএসএ অনুযায়ী, কোনো কোম্পানির বৈশ্বিক বার্ষিক আয়ের সর্বোচ্চ ৬ শতাংশ পর্যন্ত জরিমানা করা যেতে পারে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইউর প য় লক ষ য এক স র তদন ত ট কটক
এছাড়াও পড়ুন:
ডেঙ্গু আক্রান্ত সানিকে দেখতে হাসপাতালে সাখাওয়াত-বদুসহ নেতৃবৃন্দ
শনিবার (৬ ডিসেম্বর) ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে নারায়ণগঞ্জ শহরের হেলথ রিসোর্ট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা (জাসাস) কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক দেশের আলো পত্রিকার প্রকাশক-সম্পাদক আনিসুল ইসলাম সানিকে দেখতে শনিবার সন্ধ্যায় হাসপাতালে ছুটে যান নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খান, হোসিয়ারী সমিতির সভাপতি ও বিএনপি নেতা বদিউজ্জামাল বদু, মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুস সবুর খান সেন্টু, বিএনপি নেতা কামাল হোসেন, বিএনপি নেতা আক্তার হোসেন খোকন সাহা, আনোয়ার মাহমুদ বকুল সহ বিএনপির বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী।
নেতৃবৃন্দ সানির শারীরিক অবস্থার খোঁজ-খবর নেন এবং তার দ্রুত আরোগ্য কামনা করে মহান আল্লাহর দরবারে বিশেষ মোনাজাত করেন। এ সময় হাসপাতাল কক্ষে উপস্থিত ছিলেন মহানগর বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী। তাদের উপস্থিতি ও দোয়ায় সানি ও তার পরিবার বেশ উজ্জীবিত বোধ করেন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, সানির শারীরিক অবস্থা ধীরে ধীরে উন্নতির দিকে।