ভারতেই থাকবেন কি না, সিদ্ধান্ত শেখ হাসিনাই নেবেন: জয়শঙ্কর
Published: 6th, December 2025 GMT
বিশেষ এক পরিস্থিতিতে ভারতে আশ্রয় নেওয়া বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেখানেই থাকবেন কি না, সেই সিদ্ধান্ত একান্তই তাঁর ওপর নির্ভর করছে। এমনই বলেছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।
আজ শনিবার নয়াদিল্লিতে হিন্দুস্তান টাইমসের লিডারশিপ সামিটে এনডিটিভির সিইও ও প্রধান সম্পাদক রাহুল কানওয়ালের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ভবিষ্যতে উন্নতির আশাও প্রকাশ করেন তিনি।
বাংলাদেশে ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতা ছেড়ে গত বছরের ৫ আগস্ট ভারতে আশ্রয় নেন শেখ হাসিনা। তার পর থেকে সেখানেই রয়েছেন তিনি। আন্দোলন দমনে হত্যাকাণ্ডসহ মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের দায়ে গত মাসে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন। এরপর বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার তাঁকে ফেরত পাঠাতে অনুরোধ করলেও নয়াদিল্লি কোনো সাড়া এখনো দেখায়নি।
রাহুল কানওয়াল হিন্দুস্তান টাইমসের লিডারশিপ সামিটে নানা বিষয়ে আলোচনার ফাঁকে জয়শঙ্করের কাছে জানতে চেয়েছিলেন, শেখ হাসিনা যতদিন চান ততদিনই ভারতে থাকতে পারবেন কি না? জবাবে জয়শঙ্কর প্রথমেই বলেন, ‘আচ্ছা, এটি একটা ভিন্ন বিষয়, তাই না?’
আরও পড়ুনশেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে ভারত এখনো সাড়া দেয়নি : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা০৫ ডিসেম্বর ২০২৫এরপর তিনি বলেন, ‘তিনি (শেখ হাসিনা) একটা বিশেষ পরিস্থিতিতে এখানে এসেছিলেন। আমি মনে করি, সেই পরিস্থিতির স্পষ্ট প্রভাব এই ঘটনার (ভারতে আশ্রয় নেওয়া) ওপর ছিল। আবার শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্তটা তাঁকে নিজেকেই নিতে হবে।’
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ভারতে অবস্থান নেওয়ার পর প্রতিবেশী দেশটির সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছে।
এ নিয়ে এনডিটিভর প্রধান সম্পাদক রাহুল কানওয়ালের প্রশ্নে জয়শঙ্কর বাংলাদেশে একটি বিশ্বাসযোগ্য গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে নয়াদিল্লির অবস্থান তুলে ধরেন।
আরও পড়ুনযে কারণে শেখ হাসিনাকে ফেরত দেবে না ভারত২৬ নভেম্বর ২০২৫বাংলাদেশের অতীত রাজনৈতিক বিষয়গুলোর কথা উল্লেখ করে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যা শুনেছি তা হলো, বাংলাদেশের মানুষ, বিশেষ করে যারা এখন ক্ষমতায় আছেন, তাদের আগের নির্বাচনগুলো কীভাবে পরিচালিত হয়েছিল, সেটা নিয়ে সমস্যা ছিল। এখন সমস্যা যদি নির্বাচনই হয়; তাহলে প্রথম কাজ হবে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন করা।’
দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ভবিষ্যতে উন্নত হওয়ার আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের মঙ্গল কামনা করি। আমরা মনে করি, একটি গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে যেকোনো গণতান্ত্রিক দেশের মতোই বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটাতে চায়।’
‘আমি নিশ্চিত যে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ফলাফল যা–ই আসুক না কেন, তা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্যপূর্ণ ও পরিপক্ব দৃষ্টিভঙ্গির হবে। আশা করি, পরিস্থিতির উন্নতি হবে,’ বলেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
আরও পড়ুনদ্য উইকে শেখ হাসিনার নিবন্ধ, অস্বীকারের রাজনীতি ও অসত্য চর্চার নমুনা১৪ নভেম্বর ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গণত ন ত র ক পর স থ ত ত র পর
এছাড়াও পড়ুন:
ভারতে অবস্থানের ব্যাপারে শেখ হাসিনাই সিদ্ধান্ত নেবেন: জয়শঙ্কর
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেছেন, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে কতদিন অবস্থান করবেন সেই সিদ্ধান্ত তাকেই নিতে হবে।
শনিবার এইচটি লিডারশিপ সামিটে এনডিটিভির সিইও এবং প্রধান সম্পাদক রাহুল কানওয়ালকে তিনি এ কথা বলেছেন।
আরো পড়ুন:
পাঁচ মাস পর ভারতে ফিরে গেলেন সোনালি
‘দৃশ্যম থ্রি’ নিয়ে নতুন খবর পাওয়া গেল
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা গত বছরের আগস্টে ভারতে পালিয়ে যান। তার বিরুদ্ধে আন্দোলনে শত শত মানুষ মারা যায় এবং হাজার হাজার আহত হয়। তার সরকারের নৃশংস দমন-পীড়নের জন্য ‘মানবতাবিরোধী অপরাধের’ দায়ে ৭৮ বছর বয়সী শেখ হাসিনাকে গত মাসে ঢাকার একটি বিশেষ ট্রাইব্যুনাল মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে।
রাহুল কানওয়ালের সাথে কথা বলার সময় জয়শঙ্করকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল যে হাসিনা ‘যতদিন চান’ ভারতে থাকতে পারবেন কিনা।
জবাবে জয়শঙ্কর বলেন, “আচ্ছা, এটি একটি ভিন্ন বিষয়, তাই না? তিনি একটি নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে এখানে এসেছিলেন এবং আমি মনে করি সেই পরিস্থিতি স্পষ্টতই তার সাথে যা ঘটেছে তার একটি কারণ। কিন্তু আবারও বলছি, এটি এমন একটি বিষয় যেখানে তাকে তার মন তৈরি করতে হবে।”
ওই আলোচনায় নয়াদিল্লি-ঢাকার সম্পর্ক নিয়েও কথা বলেছেন এস জয়শঙ্কর। বাংলাদেশে একটি বিশ্বাসযোগ্য গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে ভারতের অবস্থানের ওপর জোর দেন তিনি।
বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, “আমরা যা শুনেছি তা হলো; বাংলাদেশে, বিশেষ করে যারা এখন ক্ষমতায় রয়েছে, তাদের আগের নির্বাচনগুলো কীভাবে হয়েছে; সে বিষয়ে আপত্তি ছিল। এখন, যদি সমস্যাটি নির্বাচন নিয়ে হয়, তাহলে প্রথম কাজ হওয়া উচিত একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করা।”
জয়শঙ্কর দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ভবিষ্যতের জন্য আশাবাদ ব্যক্ত করে বক্তব্য শেষ করেন। প্রতিবেশীর প্রতি ভারতের গণতান্ত্রিক অগ্রাধিকারের উপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, “আমরা যতদূর সম্ভভ বাংলাদেশের মঙ্গল কামনা করি। আমরা মনে করি একটি গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে, যেকোনো গণতান্ত্রিক দেশ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জনগণের ইচ্ছা নিশ্চিত হতে চায়।”
তিনি বলেন, “আমি বেশ আশাবাদী, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া থেকে যে সরকারই আসুক না কেন, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিষয়ে তাদের একটি ভারসাম্যপূর্ণ ও পরিপক্ক দৃষ্টিভঙ্গি থাকবে এবং আশা করি পরিস্থিতির উন্নতি হবে।”
ঢাকা/শাহেদ