শেখ হাসিনা দেশে বাকশাল কায়েম করেছিলেন: সালাহউদ্দিন আহমদ
Published: 6th, December 2025 GMT
গণতন্ত্রের মুখোশের শেখ হাসিনা এই দেশে বাকশাল কায়েম করেছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেছেন, নামমাত্র বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা, সাংবিধানিক শাসনব্যবস্থা চালু থাকলেও প্রকৃতপক্ষে সবাই জানেন, গণতন্ত্রের মুখোশে শেখ হাসিনা এই দেশে বাকশাল কায়েম করেছিলেন। একদলীয় শাসনব্যবস্থা কায়েম করেছিলেন। বাংলাদেশের জনগণ রক্ত দিয়ে সেই ফ্যাসিবাদের পতন ঘটিয়েছে।
আজ শনিবার দুপুরে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার কৈয়ারবিল ইউনিয়নের ইসলামনগরে স্থানীয় বিএনপি আয়োজিত এক নারী সমাবেশে এ কথা বলেন সালাহউদ্দিন আহমদ।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আমি নির্বাসিত জীবন কাটাতে বাধ্য হয়েছি প্রায় ১০ বছর। আপনারা জানেন, ফ্যাসিস্ট হাসিনা আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুম করেছিলেন। আপনারা নামাজ পড়ে, রোজা রেখে দোয়া করেছিলেন বলেই আল্লাহ আমাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন।’
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আজ জাতীয় রাজনীতিতে একটা গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণ। শক্তিশালী গণতান্ত্রিক রূপান্তরের সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আমরা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য অপেক্ষা করছি। আশা করি এ সপ্তাহের মধ্যেই আগামী নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবে নির্বাচন কমিশন। আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে এই ঐতিহাসিক বাংলাদেশের পরিবর্তনের সূচনাকারী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’
আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘যাঁরা এখনো আওয়ামী লীগের সমর্থন করেন, তাঁদের কী যুক্তি আছে সমর্থন করার, আমি জানি না। যে আওয়ামী লীগের নেত্রী এবং তাঁদের মন্ত্রী-এমপিরা নিজেরা রক্ষা পাওয়ার জন্য সহায়–সম্পদ নিয়ে, জীবন নিয়ে পালিয়ে গেছেন, সে আওয়ামী লীগকে সমর্থন করা কি উচিত? আমি চাই, তাঁরা গণতন্ত্রের পথে ফেরত আসুন।’
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আমরা সবাই মিলে একটি ঐক্যবদ্ধ বাংলাদেশ নির্মাণ করব। একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ নির্মাণ করব। এ দেশের গণ-অভ্যুত্থানের শহীদদের রক্তের প্রত্যাশা, এ দেশের জনমানুষের প্রত্যাশা বাংলাদেশে সত্যিকারভাবে একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থার সরকার প্রতিষ্ঠা হোক।’
বেহেশতের লোভ দেখিয়ে যাঁরা ভোটের কথা বলেন, তাঁদের কাছ থেকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আজ ধর্মের দোহাই দিয়ে সরলমনা মা-বোনদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, অমুক মার্কায় ভোট দিলে বেহেশতে যাওয়া যাবে।’
কয়েক দিনের মধ্যে আগামী নির্বাচনের ইশতেহার ঘোষণা করা হবে জানিয়ে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, আগামী দিনে বিএনপির নির্বাচনী ইশতেহার হবে এ দেশের মানুষের মুক্তির সনদ, গণতন্ত্রের মুক্তির সনদ, বাংলাদেশের অধিকার বাস্তবায়নের সনদ।
আজ শনিবার সালাহউদ্দিন আহমদ চকরিয়া উপজেলার কৈয়ারবিল, কাকারা ও ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করেন। এ সময় তিনি অন্তত আটটি পথসভায় বক্তব্য দেন। এসব পথসভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন সাবেক সংসদ সদস্য হাসিনা আহমদ, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শামীম আরা, চকরিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি এনামুল হক, সাধারণ সম্পাদক এম মোবারক আলী। বিকেল চারটার দিকে তিনি ২০১৩ সালে নিহত ছাত্রদল কর্মী মোহাম্মদ মিজানের কবর জিয়ারত করেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গণত ন ত র ক গণতন ত র র ম কর ছ ল ন ব এনপ র যবস থ
এছাড়াও পড়ুন:
গণতন্ত্রবিরোধী পরাজিত শক্তির যেন আর পুনরুত্থান না ঘটে: তারেক রহমান
গণতন্ত্রবিরোধী পরাজিত শক্তির যেন আর পুনরুত্থান না ঘটে, সেই আহ্বান জানিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, “অবিস্মরণীয় একটি দিন ৬ ডিসেম্বর। ১৯৯০ সালের এ দিনে রক্তাক্ত পিচ্ছিল পথে অবসান হয়েছিল স্বৈরশাসনের। এরশাদ ৮২’র ২৪ মার্চ পেশাগত বিশ্বস্ততা ও শপথ ভেঙে অস্ত্রের মুখে নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আব্দুস সাত্তারকে ক্ষমতাচ্যুত করে গণতন্ত্র হত্যা করে জারি করেছিল অসাংবিধানিক শাসন।”
শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) নিজের ভ্যারিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে তারেক রহমান এসব কথা বলেন।
আরো পড়ুন:
জার্মানি থেকে ‘ভাড়া করে’ এয়ার অ্যাম্বুলেন্স পাঠাচ্ছে কাতার
এভারকেয়ার থেকে মায়ের বাসায় জুবাইদা রহমান
তারেক রহমান আরে বলেন, “যে সাংবিধানিক রাজনীতি ছিল বহুদলীয় গণতন্ত্রের নিশ্চয়তা, যার সূচনা করেছিলেন স্বাধীনতার মহান ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। একনায়ক হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেন। গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে দীর্ঘ নয় বছর দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে নিরন্তর সংগ্রাম চালিয়ে আপসহীন নেত্রী হিসেবে খ্যাতি লাভ করেন। গড়ে তুলেন এক দুর্বার গণআন্দোলন। এরই ধারাবাহিকতায় ’৯০ এর ৬ ডিসেম্বর এই দিনে ছাত্র-জনতার মিলিত শক্তিতে স্বৈরাচারকে পরাজিত করে মুক্ত হয়েছিল গণতন্ত্র।”
তারেক রহমান আরো বলেন, “সেই অর্জিত গণতন্ত্রের চেতনায় আবারও ছাত্র-জনতা ২০২৪ সালের ৫ই আগস্ট এক হিংস্র ফ্যাসিবাদী শক্তিকে পরাস্ত করে। ঐতিহাসিকভাবেই ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ছিল গণতন্ত্রের ভয়ঙ্কর শত্রু। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার দুঃশাসনের অবসানের পর আবারও গণতন্ত্রের সম্পূর্ণ পুনরুজ্জীবন এবং রাষ্ট্র ও সমাজে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা করতে আমাদের নিরলস সংগ্রাম অব্যাহত রাখতে হবে।”
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, “শেখ হাসিনার দুঃশাসনে ‘গণতন্ত্রের মা’ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ওপর জেল-জুলুমসহ নানামাত্রিক নিপীড়ন নামিয়ে আনা হয়েছিল। অবিরাম নির্যাতনের কষাঘাতে অসুস্থ দেশনেত্রীর জীবন এখন চরম সংকটে। আল্লাহ’র কাছে তার আশু সুস্থতা কামনা করছি। এছাড়াও দেশের জাতীয়তাবাদী শক্তির লাখ লাখ নেতাকর্মীকে সীমাহীন অত্যাচার-নির্যাতন করা হয়েছিল। সারা দেশকে অবরুদ্ধ করা হয়েছিল।”
তারেক রহমান আরো বলেন, “আজকের এ দিনে আমি ’৮২ থেকে ’৯০ পর্যন্ত রক্তস্নাত স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে আত্মদানকারী বীর শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই এবং তাদের রুহের মাগফিরাত কামনা করি। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের এ স্মরণীয় দিনে আমি শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী গণতন্ত্রের হেফাজতকারী দেশবাসীকে।”
গণতন্ত্রবিরোধী পরাজিত শক্তির যাতে আর পুনরুত্থান না ঘটে সেজন্য গণতান্ত্রিক শক্তির সবসময় ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান তারেক রহমান।
ঢাকা/এসবি