দক্ষিণ আফ্রিকায় সন্ত্রাসীদের গুলিতে আকাশ ওরফে আমিনুর রহমান নামে এক বাংলাদেশি ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। গতকাল শুক্রবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় তাঁর ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে সন্ত্রাসীরা গুলি করলে তিনি ঘটনাস্থলেই নিহত হন।

নিহত আমিনুর রহমানের বাড়ি টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার ভাতগ্রাম ইউনিয়নের গোড়াইল গ্রামে। তাঁর ভাই আসলাম সিদ্দিকী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

নিহত ব্যক্তির ভাই আসলাম বলেন, ২০০৯ সালে আমিনুর দক্ষিণ আফ্রিকায় যান। সেখানে ব্যবসা শুরু করেন। মাঝেমধ্যে তিনি দেশে আসতেন। গতকাল তাঁর ভাই দক্ষিণ আফ্রিকার মেছিনা শহরের কাছে মাটিম্বোতে নিজের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে অবস্থান করছিলেন। সন্ধ্যায় হঠাৎ কয়েকজন সন্ত্রাসী এসে তাঁর মাথায় গুলি চালিয়ে পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থলেই আমিনুর প্রাণ হারান।

নিহত আমিনুরের ভাই আসলাম আরও বলেন, গতকাল রাত সোয়া ১১টায় তাঁরা মৃত্যুসংবাদ পান। পরিবারের মধ্যে অসুস্থ মা, দুই ভাই, দুই বোন ছাড়াও আমিনুরের স্ত্রী, এক ছেলে ও দুই মেয়ে আছে।

নিহত ব্যক্তির ভাইয়ের অভিযোগ, উপজেলার আজগানা গ্রামের মোল্লাবাড়ি এলাকার আছমান মোল্লার ছেলে জাফর মোল্লা দক্ষিণ আফ্রিকায় থাকার সময় আমিনুরের ব্যবসায়িক অংশীদার ছিলেন। তিনি আমিনুরকে কিছু না বলে প্রায় এক কোটি টাকা নিয়ে হঠাৎ উধাও হন। এ ঘটনায় ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে মির্জাপুর থানায় একটি অভিযোগ করা হয়। পাওনা টাকার জন্য বিভিন্ন সময় আমিনুরের পরিবারের পক্ষ থেকে জাফরের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হতো। কিন্তু টাকা দেওয়ার বদলে উল্টো বিভিন্নভাবে হুমকি দেওয়া হতো। নিহত ব্যবসায়ীর হত্যার সঙ্গে বিষয়টির যোগ থাকতে পারে।

তবে এ অভিযোগের বিষয়ে জানতে জাফর মোল্লার সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আম ন র র সন ত র স ব যবস য়

এছাড়াও পড়ুন:

কুড়িগ্রামে বিএডিসি ডিলারের বিরুদ্ধে সার পাচারের অভিযোগ, ৮০ বস্তা সার জব্দ

কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার রায়গঞ্জ ইউনিয়নের এক বিএডিসি ডিলারের বিরুদ্ধে সার পাচারের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল শুক্রবার রাতে গোডাউন থেকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া সময় উপজেলার রায়গঞ্জ ইউনিয়নের সাপখাওয়া এলাকায় মাস্টার মোড় থেকে ৮০ বস্তা ডিএপি সারসহ দুটি নছিমন জব্দ করা হয়।

অভিযুক্ত ডিলারের নাম মোছা. হালিমা খাতুন। সাপখাওয়া ও ব্যাপারীটারী এলাকার জন্য বিএডিসি অনুমোদিত ওই সার ডিলারের প্রতিষ্ঠানের নাম মেসার্স রাদিয়া ট্রেডার্স।

পুলিশ ও স্থানীয় একাধিক বাসিন্দার সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রাত আটটার দিকে মেসার্স রাদিয়া ট্রেডার্সের গোডাউন থেকে ৮০ বস্তা ডিএপি সার (প্রতি বস্তায় ৫০ কেজি) দুটি নছিমনে করে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হচ্ছিল। মাস্টার মোড় বাজারসংলগ্ন ভেতরের রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় গাড়িটি থামান স্থানীয় বাসিন্দারা। এ সময় চালকেরা সার পরিবহনের কারণ ব্যাখ্যা করতে না পারায় তাঁরা গাড়ি দুটি আটকে দেন। পরে খবর পেয়ে নাগেশ্বরী থানা-পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে সারসহ নছিমনটি থানায় নিয়ে যায়।

এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন স্থানীয় কয়েকজন কৃষক। কৃষক আজিজুল হক ও আরিফ হোসেনের অভিযোগ, এলাকায় নিয়মিত সারসংকট চলছে। ডিলারের কাছে সার পাওয়া যায় না, পেলেও অতিরিক্ত দামে কিনতে হয়। অথচ রাতে গোপনে সার পাচারের চেষ্টা চলছে। এর আগেও একই ডিলার অনিয়মের কারণে জরিমানা দিয়েছিলেন।

সারের বস্তাগুলো জব্দের সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে নাগেশ্বরী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নাদিম বলেন, ‘সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও থানার ওসির নির্দেশে সার ও গাড়ি জব্দ করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্তাধীন।’

ওই সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকলেও ডিলার হালিমা খাতুন গণমাধ্যমের সঙ্গে কোনো কথা বলেননি। একপর্যায়ে তিনি দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে চলে যান।

গোডাউন থেকে সার স্থানীয় এক খুচরা ব্যবসায়ীর কাছে নেওয়া হচ্ছিল বলে জেনেছেন নাগেশ্বরী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহরিয়ার হোসেন। তিনি বলেন, এ বিষয়ে আজ শনিবার তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে নাগেশ্বরীর সহকারী কমিশনার (ভূমি) বদরুজ্জামান রিশাদ আজ দুপুরে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল জব্দ করা সার ও নছিমন নাগেশ্বরী থানা-পুলিশি হেফাজতে আছে। ওই সার গোডাউন ও নছিমন আটকের স্থানটি পরিদর্শন করে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ