বিশ্বকাপের ড্রতেই ব্রাজিলের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার ইঙ্গিত
Published: 6th, December 2025 GMT
বিশ্বকাপ ফুটবলে এটা হবেই। পছন্দের দলের সাফল্যের পথ বের করতে আকাশ-বাতাস এক করে সমীকরণ মেলান ভক্তরা। এবার যেমন ব্রাজিলের ক্ষেত্রেও হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রে ওয়াশিংটন ডিসিতে গতকাল রাতে বিশ্বকাপের ড্র অনুষ্ঠানের পর থেকেই কেউ কেউ বলছেন, ব্রাজিল তো চ্যাম্পিয়ন হয়েই গেল!
অবশ্যই প্রশ্ন উঠছে—কীভাবে? সেটার ব্যাখ্যা শুনলে একটু অবাকও লাগতে পারে। তবে কাকতাল তো বটেই।
ব্রাজিল সর্বশেষ বিশ্বকাপ জিতেছে ২০০২ সালে। সেবার ‘সি’ গ্রুপ থেকে ধাপে ধাপে ফাইনালে উঠে এসেছিল পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। নিশ্চয়ই বুঝে ফেলেছেন ব্যাপারটি—ব্রাজিল এবার বিশ্বকাপেও তো ‘সি’ গ্রুপে! শুধু তাই নয়, ২০১৮ বিশ্বকাপ ও ২০২২ বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়ন দুই দলও কিন্তু ‘সি’ গ্রুপ থেকে উঠে এসেছে।
২০১৮ বিশ্বকাপে ‘সি’ গ্রুপের দল ছিল পরবর্তী সময়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়া ফ্রান্স। চার বছর পর কাতারে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনাও চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পথে উঠে এসেছিল ‘সি’ গ্রুপ থেকে। কাকতালে বিশ্বাস রাখা ব্রাজিলের ভক্তরা তাই বলতেই পারেন, এবার তাহলে কেন নয়? কারণ, ২০২৬ বিশ্বকাপে ব্রাজিল ‘সি’ গ্রুপের দল, যেখানে তাদের তিন প্রতিদ্বন্দ্বী—মরক্কো, হাইতি ও স্কটল্যান্ড।
মরক্কো ও স্কটল্যান্ড বিশ্বকাপে ব্রাজিলের চেনা প্রতিপক্ষ। ১৯৯৮ বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে দুটি দলকেই হারিয়েছে তারা। কিন্তু বিশ্বকাপে ব্রাজিল এর আগে কখনো হাইতির মুখোমুখি হয়নি। পরিসংখ্যান বলছে, বিশ্বকাপে হাইতি হবে ব্রাজিলের ৫০তম আলাদা প্রতিপক্ষ।
বিশ্বকাপের ড্র অনুষ্ঠানে স্ত্রী মারিয়ান ব্যারেনার সঙ্গে ব্রাজিল কোচ আনচেলত্তি.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব শ বক প র
এছাড়াও পড়ুন:
নোয়াখালীর ২৪৩ প্রাইমারি স্কুলের সব শিক্ষককে শোকজ
তিন দাবিতে প্রাথমিক সহকারী শিক্ষকদের চলমান কমপ্লিট শাটডাউন ও কর্মবিরতী কর্মসূচির কারণে নোয়াখালীর ৯টি উপজেলার ২৪৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বার্ষিক মূল্যায়ন পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি। এই পরিস্থিতিতে নোয়াখালী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস এসব প্রতিষ্ঠানের সব শিক্ষককে শোকজ নোটিশ দিয়েছেন। তাদের তিন কার্যদিবসের মধ্যে লিখিত জবাব দিতে বলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ইশরাত নাসিমা হাবীব পৃথকভাবে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন।
আরো পড়ুন:
কর্মবিরতি করা প্রাথমিকের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে মন্ত্রণালয়ের কড়া বার্তা
নেত্রকোণায় দুই স্কুলে আগুন, আসবাবপত্র পুড়ে কয়লা
নোটিশে উল্লেখ করা হয়, ২ ডিসেম্বর থেকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে বার্ষিক মূল্যায়ন পরীক্ষা চলছে। একাডেমিক ক্যালেন্ডার অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ে পরীক্ষা নেওয়া বাধ্যতামূলক। কিন্তু সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে পরীক্ষা নেননি। বরং কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় অংশগ্রহণে বাধা সৃষ্টি করেছেন এবং বিদ্যালয়ে তালা লাগানো হয়েছে, যা দায়িত্বহীন আচরণ।
নোটিশে আরো বলা হয়, সরকারি কর্মচারী হিসেবে এমন আচরণ সরকারি কর্মচারী আইন, ২০১৮ এবং সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮-এর স্পষ্ট লঙ্ঘন ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ। কেন তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, সে বিষয়ে আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে লিখিত ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক নেতা বলেন, আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া মোট ৪২ জনকে মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ আদেশে বিভিন্ন জেলায় বদলি করা হয়েছে। বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও নোয়াখালী সদরের কৃপালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. শামছুদ্দীন মাসুদও এর মধ্যে রয়েছেন।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ইশরাত নাসিমা হাবীব বলেন, “সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে ২০২৫ সালের তৃতীয় প্রান্তিক মূল্যায়ন পরীক্ষা নির্ধারিত সময়ে অনুষ্ঠিত না হওয়া এবং সরকারি দায়িত্ব পালন না করায় কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। কেন তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, সে বিষয়ে আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে লিখিত ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে।”
তিন দাবিতে দেশের ৬৫ হাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা গত ২৭ নভেম্বর থেকে কর্মবিরতি পালন করছেন। এর মধ্যে গত ২ দিন ধরে চলছে অনির্দিষ্টকালের কমপ্লিট শাটডাউন ও বিদ্যালয় তালাবদ্ধ রাখার কর্মসূচি।
তারপরও নোয়াখালীতে বেশ কিছু বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের উদ্যোগে ও অভিভাবকদের সহযোগিতায় পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এসব বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা পরীক্ষা গ্রহণে বাধা সৃষ্টি করেছেন বলে অভিযোগ ওঠে।
নাম প্রকাশে না করার শর্তে জেলা শহরের একটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা বলেন, “আমি আমার স্কুলে অভিভাবকদের সহায়তায় পরীক্ষা নিচ্ছিলাম। সহকারী শিক্ষকরা সকালে পরীক্ষার পর স্কুলের মূল ফটকে তালা মেরে দেওয়ার চেষ্টা করে। তাৎক্ষণিক অভিভাবকদের প্রতিরোধের মুখে তারা পিছু হঠেন।
আলাউদ্দিন নামে একজন অভিভাবক বলেন, “শিক্ষকতা একটি মহান পেশা। তারা (শিক্ষক) সমাজের সর্বজন শ্রদ্ধেয়। তাদের যদি কােনো দাবি থাকে, তাহলে তারা ঊর্ধ্বতন কতৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসতে পারেন। পরীক্ষা চলাকালীন তাদের শার্টডাউন ও কর্মবিরতী সমর্থনযোগ্য নয়।”
ঢাকা/সুজন/মাসুদ